আ.লীগ আমলে বিতর্কিত নির্বাচনগুলোয় দায়িত্ব পালন: ২২ সাবেক জেলা প্রশাসককে বাধ্যতামূলক অবসর

আওয়ামী লীগ সরকারের সময় বিতর্কিত নির্বাচনে দায়িত্ব পালন করা ২২ জন জেলা প্রশাসককে (ডিসি) বাধ্যতামূলক অবসরে পাঠানো হয়েছে বলে জানিয়েছেন জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব মো. মোখলেস উর রহমান।
বৃহস্পতিবার (২০ ফেব্রুয়ারি) সচিবালয়ের সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে প্রশ্নের জবাবে সিনিয়র সচিব এ কথা বলেন।
তিনি বলেন, ২০১৪, ২০১৮ ও ২০২৪ অনুষ্ঠিত নির্বাচন, সেটাকে আমরা কেউ বলি বিতর্কিত, কেউ বলি অগ্রহণযোগ্য আবার কেউ বলি দিনের ভোট রাতে ইত্যাদি। এ সমস্ত জায়গায় যেসব রিটার্নিং কর্মকর্তারা দায়িত্ব পালন করেছেন এবং এই ৩ সময়ের রিটার্নিং অফিসারদের সহযোগিতায় তৎকালীন সরকার তিন মেয়াদ থেকেছে।
'যার কারণে আজকে আমারা এ দুরবস্থায় পড়েছি। তারা (ওই সময়ের ডিসিরা) অনেক বড় নেগেটিভ [নেতিবাচক] ভূমিকা রেখেছিলেন। কোনো একজন ডিসিও বলেনি আমি প্রতিবাদ করব। আমি রিটার্নিং অফিসার থাকব না। আমি রিজাইন করলাম, কাজ করব না,' বলেন তিনি।
সিনিয়র সচিব বলেন, 'আমরাই এরই মধ্যে ৪৩ জনকে (ডিসি) ওএসডি করেছি। যাদের চাকরির বয়স ২৫ বছরের কম তাদের ওএসডি করা হয়। আর চাকরির বয়স ২৫ বছরের বেশি হলে আমরা বাধ্যতামূলক অবসর দিচ্ছি।'
মোখলেস উর রহমান বলেন, 'আজকে আমরা ২২ জন এরকম যারা ডিসি ছিলেন এবং এখন সচিব রয়েছেন—এমন ২২ জনকে বাধ্যতামূলক অবসর দেওয়ার আদেশ জারি হয়েছে।'
যাদেরকে বাধ্যতামূলক অবসরে পাঠানো হয়েছে তাদের মধ্যে তিনজন সচিব রয়েছেন।
তারা হলেন- শিল্প মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব জাকিয়া খানম, দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের সচিব কামরুল হাসান এবং জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ে বিশেষ ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা হিসেবে থাকা সচিব আবু হেনা মোরশেদ জামান।
এছাড়া, ১৮ জন অতিরিক্ত সচিবকে বাধ্যতামূলক অবসরে পাঠানো হয়েছে।
তারা হলেন- ভূমি সংস্কার বোর্ডের সদস্য উম্মে সালমা তানজিয়া, বিদ্যুৎ বিভাগের অতিরিক্ত সচিব ফয়েজ আহমেদ, সংযুক্ত আরব আমিরাতের আবুধাবি দুতাবাসে মিনিস্টার লেবার মো. আব্দুল আওয়াল, পরিসংখ্যান ও তথ্য ব্যবস্থাপনা বিভাগের অতিরিক্ত হামিদুল হক, বাংলাদেশ বিনিয়োগ উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের নির্বাহী সদস্য ড. দেওয়ান মুহাম্মাদ হুমায়ুন কবির, প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব এনামুল হাবীব, মহিলা ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব মোহাম্মদ মোখলেসুর রহমান সরকার, পরিকল্পনা বিভাগের অতিরিক্ত সচিব আবু ছালেহ মোহাম্মদ ফেরদৌস খান, তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিভাগের অতিরিক্ত সচিব কামরুন নাহার সিদ্দিকা, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় বিভাগের অতিরিক্ত সচিব মো. শফিউল আরিফ, বাংলাদেশ জাতীয় বিজ্ঞান ও জাতীয় কারিগরী তথ্য সংগ্রহ ও বিতরণ (ব্যান্সডক)-এর মহাপরিচালক মো. শওকত আলী, বাংলাদেশ কপিরাইট অফিসের কপি রাইট নিবন্ধক মো. তোফায়েল ইসলাম, বাস্তবায়ন পরিবীক্ষণ ও মূল্যায়ন বিভাগের অতিরিক্ত ড. সুভাষ চন্দ্র বিশ্বাস এবং কৃষি বিপনন অধিদপ্তরের মহাপরিচালক মাসুদ করিম।
এর বাইরে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ে বিশেষ ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওএসডি) অতিরিক্ত সচিব এস এম আলম, তন্ময় দাস, রাব্বি মিয়া, সায়লা ফারজানাকে ওএসডি করা হয়েছে।
একই অভিযোগে জাতীয় বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি যাদুঘরের পরিচালক (যুগ্মসচিব) ওয়াহিদুল ইসলামকে অবসরে পাঠানো হয়েছে।
এই আদেশগুলোর পাশাপাশি জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ে বিশেষ ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওএসডি) উপসচিব আহমেদ কবিরকে ওএসডি করা হয়েছে।
তবে তাকে কেন ওএসডি করা হয়েছে তা জানানো হয়নি।