গণহত্যায় জড়িত নন, আওয়ামী লীগের এমন ব্যক্তিরা ক্ষমা চেয়ে নির্বাচন করতে পারবেন: আসিফ মাহমুদ

স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া বলেছেন, আওয়ামী লীগের যারা গণহত্যা বা কোনো অপরাধের সঙ্গে জড়িত নন, তারা ক্ষমা চেয়ে এরপর নির্বাচন করতে চাইলে বাধা নেই।
'বিশ্বে গণহত্যাকারী ফ্যাসিস্টদের যে অবস্থা হয়েছে, আওয়ামী লীগেরও সে রকম অবস্থা হওয়া উচিত। তবে আওয়ামী লীগ করেছেন, কিন্তু কোনো অন্যায়, গণহত্যা বা অপরাধের সঙ্গে জড়িত নন, তারা ক্ষমা চেয়ে মেইনস্ট্রিমে [মূলধারায়] স্বাভাবিক অবস্থায় ফিরে আসতে পারেন। কেউ নির্বাচন করতে চাইলেও বাধা নেই,' বলেন তিনি।
মঙ্গলবার (১৮ ফেব্রুয়ারি) রাজধানীর ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তনে জেলা প্রশাসক সম্মেলনে স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয় এবং যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়–সম্পর্কিত অধিবেশন শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে এসব কথা বলেন তিনি।
তবে আওয়ামী লীগ যে গণহত্যা ঘটিয়েছে, তা আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃত মন্তব্য করে উপদেষ্টা আসিফ বলেন, এ কারণে দলীয়ভাবে আওয়ামী লীগের শাস্তি নিশ্চিত হওয়া উচিত।
'অর্থাৎ বিশ্বে গণহত্যাকারী ফ্যাসিস্টদের যে অবস্থা হয়েছে, আওয়ামী লীগেরও সে রকম অবস্থা হওয়া উচিত।… [আওয়ামী লীগের] কেউ যদি গণহত্যায় অভিযুক্ত থাকে, তাহলে কোনোভাবেই নির্বাচনে অংশগ্রহণ করার সুযোগ থাকবে না,' বলেন তিনি।
একজন সাংবাদিক জানতে চান, স্থানীয় সরকার নির্বাচনে যদি আওয়ামী লীগের লোকজন অংশগ্রহণ করেন, তাহলে সে ক্ষেত্রে সরকারের অবস্থান কী হবে এবং জাতীয় নির্বাচনে আওয়ামী লীগের অংশগ্রহণ নিয়ে সরকারের ভাবনা কী?
জবাবে আসিফ মাহমুদ বলেন, 'আমরা মনে করি, যে ধরনের গণহত্যা বাংলাদেশে আওয়ামী লীগ দলীয়ভাবে সংঘটিত করেছে এবং জাতিসংঘের মানবাধিকার রিপোর্টে তা এসেছে, এটি আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃত। সে জায়গা থেকে পৃথিবীর অন্যান্য গণহত্যাকারী ফ্যাসিস্টদের যে পরিণতি হয়েছে, আওয়ামী লীগেরও সে রকম পরিণতি হওয়া উচিত।'
তিনি বলেন, 'আমরা তো গণতন্ত্রের দিক দিয়ে ইউরোপের দেশগুলোকে মডেল হিসেবে দেখি। জার্মানিতে ফ্যাসিস্টদের কী হয়েছিল বা ইতালিতে কী হয়েছিল, তা আমাদের সামনে রয়েছে। যেহেতু আন্তর্জাতিকভাবে এ গণহত্যা ডকুমেন্টেড হয়েছে, আমরা মনে করি, দলীয়ভাবে আওয়ামী লীগের এক ধরনের শাস্তি নিশ্চিত হওয়া উচিত।'
'এখন সেটি কোন প্রক্রিয়ায় হতে পারে, কী ধরনের শাস্তি হতে পারে—এ নিয়ে সবার মতামত নেওয়া প্রয়োজন। আশা করি, এরপর সরকার একটি সিদ্ধান্তে পৌঁছাতে পারবে।'
জাতীয় সংসদ নির্বাচন না স্থানীয় সরকার নির্বাচন—কোনটি আগে অনুষ্ঠিত হবে, জানতে চাইলে তিনি বলেন, ব্যক্তিগতভাবে তিনি জাতীয় নির্বাচনের আগে স্থানীয় সরকার নির্বাচন করার পক্ষে। তবে এ বিষয়ে এখনো চূড়ান্ত কোনো সিদ্ধান্ত হয়নি। শিগগিরই সরকারের পক্ষ থেকে সিদ্ধান্ত আসবে বলে জানান তিনি।
স্থানীয় সরকার নির্বাচনে আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীরা বিক্ষিপ্তভাবে অংশ নিলে সরকারের অবস্থান কী হবে—এমন প্রশ্নের জবাবে আসিফ মাহমুদ বলেন, 'যারা গণহত্যার সঙ্গে জড়িত এবং বিগত ফ্যাসিবাদের সময়ে জনগণের বিরুদ্ধে বিভিন্ন কার্যক্রমে যুক্ত ছিলেন, তাদের অধিকাংশই পলাতক অবস্থায় আছেন। তাদের বিরুদ্ধে মামলা রয়েছে বিধায় তারা কারাগারে বা আত্মগোপনে রয়েছেন।'
তিনি আরও বলেন, 'উপদেষ্টা নাহিদ ইসলাম ইতিমধ্যে বলেছেন, যারা আওয়ামী লীগ করেছেন, কিন্তু কোনো অপরাধের সঙ্গে যুক্ত নন, তারা ক্ষমা চেয়ে মূলধারায় ফিরতে পারেন। সে জায়গা থেকে যদি কেউ নির্বাচন করেন, তাতেও কোনো বাধা নেই। তবে সাজাপ্রাপ্ত কেউ বা গণহত্যার সঙ্গে জড়িত কেউ নির্বাচনে অংশ নিতে পারবেন না।'