আওয়ামী লীগের বিচার ও নিষিদ্ধের দাবিতে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ‘কফিন মিছিল’

গাজীপুরে মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক সাবেক মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হকের বাড়িতে হামলায় আহত আবুল কাশেমের (২০) মৃত্যুর ঘটনায় 'কফিন মিছিল' করেছে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন।
আজ বুধবার রাত সাড়ে ৯টায় কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার থেকে শাহবাগের উদ্দেশে কফিন মিছিল বের করে সংগঠনটির নেতা-কর্মীরা।
মিছিলে তারা 'আমার ভাইয়ের রক্ত, বৃথা যেতে দেব না', 'মুজিববাদ মুর্দাবাদ, ইনকিলাব জিন্দাবাদ', 'আওয়ামী লীগের ঠিকানা, এই বাংলায় হবে না', 'আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধ, করতে হবে, করতে হবে', 'আওয়ামী লীগের বিরুদ্ধে, ডাইরেক্ট একশন' ইত্যাদি বলে স্লোগান দেন।
এর আগে আজ বেলা ৩টার দিকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্রে (আইসিইউ) চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান আবুল কাশেম। তিনি গাজীপুর মহানগরের দক্ষিণ কলমেশ্বর এলাকার হাজি জামালের ছেলে।
মিছিলের আগে শহীদ মিনার প্রাঙ্গণে তার জানাযা নামাজ অনুষ্ঠিত হয়। সেখানে জাতীয় নাগরিক কমিটির সদস্য সচিব আখতার হোসেন বলেন, 'জাতিসংঘের রিপোর্টে স্পষ্ট বলা হয়েছে যে খুনি হাসিনার নির্দেশে জুলাই মাসে রাজপথে মানবতাবিরোধী অপরাধ সংঘটিত হয়েছে। ফেয়ার ট্রায়াল হলে খুনি হাসিনার শাস্তি সহজেই নিশ্চিত হবে।'

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সদস্য সচিব আরিফ সোহেল বলেন, 'গণঅভ্যুত্থানের ৬ মাস পরেও বিপ্লবীদের শহীদ হতে হচ্ছে আওয়ামী সন্ত্রাসীদের হাতে। আমরা অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের জবাবদিহি চাই। আমরা শহীদ ভাইয়ের সামনে শপথ নিচ্ছি আওয়ামী ফ্যাসিবাদের কবর নিশ্চিত না করা পর্যন্ত থামব না।'
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের আহ্বায়ক হাসনাত আব্দুল্লাহ বলেন, 'আয়নাঘর প্রকাশ্যে এসে খুনি হাসিনার অপরাধ প্রমাণ হলো। আওয়ামী লীগকে ৬ মাসেও নিষিদ্ধ করতে না পারা আমাদের কালেক্টিভ ফেইলিউর।'
তিনি আরও বলেন, 'আমরা দেখছি আওয়ামী ফ্যাসিবাদকে স্বাভাবিক করতে কালচারাল তৎপরতা শুরু হয়েছে। দ্রুততম সময়ের মধ্যে আইনগত প্রক্রিয়ায় আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধ করতে হবে। কাশেমের লাশ সামনে রেখে আমরা শপথ নিচ্ছি আওয়ামী লীগকে আমরা নিষিদ্ধ করবই।'
উল্লেখ্য, গাজীপুর মহানগরের ধীরাশ্রম দক্ষিণখান এলাকায় মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক সাবেক মন্ত্রী ও জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি আ ক ম মোজাম্মেল হকের বাড়িতে গত শুক্রবার রাতে দুষ্কৃতকারীরা হামলা ও ভাঙচুর চালান। খবর পেয়ে গাজীপুরের বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সদস্যরা হামলাকারীদের প্রতিহত করতে যান। এ সময় তাদের ওপর হামলা হয়। এতে ১৭ শিক্ষার্থী গুরুতর আহত হন।