ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় বিএনপির সম্মেলন ঘিরে শেষ পর্যন্ত রক্তপাত; নির্বাহী সদস্যকে কুপিয়ে জখম

ব্রাহ্মণবাড়িয়ার বাঞ্ছারামপুরে বিএনপির সম্মেলন শেষে দলের নির্বাহী কমিটির সদস্য তকদির হোসেন মো. জসিমকে কুপিয়ে গুরুতর জখম করা হয়েছে। সম্মেলনের বিরোধীতাকারীরা এ হামলা করেছেন বলে অভিযোগ উঠেছে।
বুধবার (২০ নভেম্বর) দুপুরে ঢাকায় ফেরার পথে উপজেলার উজানচর ইউনিয়নের রাধানগর এলাকায় জসিমের ওপর এ হামলা করা হয়। তাকে আশঙ্কাজনক অবস্থায় ঢাকার একটি হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
এর আগে বাঞ্ছারামপুর উপজেলা সদরের এস. এম. মডেল পাইলট উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে সম্মেলন করার সিদ্ধান্ত নিয়েছিল উপজেলা বিএনপির একাংশ। তবে সম্মেলনে আওয়ামী লীগের লোকজনদের ভোটার করা হয়েছে, এমন অভিযোগ তুলে সেটির বিরোধিতা করে বিএনপির অপর একটি অংশ।
এ নিয়ে কেন্দ্রীয় কৃষকদলের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মেহেদী হাসান পলাশ এবং উপজেলা বিএনপির সদস্য সচিব এ. কে. এম. মুসার সমর্থকদের সঙ্গে বিএনপির নির্বাহী কমিটির সদস্য আব্দুল খালেকের সমর্থকদের মধ্যে উত্তেজনা দেখা দেয়।
দুপক্ষের মধ্যে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়লে সব ধরনের সভা-সমাবেশের ওপর নিষেধাজ্ঞা দিয়ে গতকাল উপজেলা প্রশাসন সম্মেলনস্থল ও আশপাশ এলাকায় ১৪৪ ধারা জারি করে।
সম্মেলনের বিরোধিতা করে বুধবার সকাল পৌনে ১১টায় আব্দুল খালেকের সমর্থকেরা উপজেলার উজানচর ইউনিয়নের কৃষ্ণনগর এলাকায় সড়ক অবরোধ করে আগুন জ্বালিয়ে বিক্ষোভ ও গাড়ি ভাংচুর করেন।
তবে এ দিন দুপুরে রাধানগর মাদরাসা মাঠে সম্মেলন আয়োজন করে বিএনপির একাংশ। সেখানে বিশেষ অতিথি ছিলেন তকদির হোসেন মো. জসিম।
সম্মেলনে কৃষকদল নেতা মেহেদী হাসান পলাশকে সভাপতি ও এ. কে. এম. মুসাকে সাধারণ সম্পাদক করে নতুন উপজেলা কমিটি ঘোষণা করা হয়।

প্রত্যক্ষদর্শীদের বরাতে জানা গেছে, সম্মেলন শেষে ঢাকা ফেরার পথে একদল লোক ধারালো অস্ত্র দিয়ে মো. জসিমের ওপর হামলা চালান। হামলাকারীরা তার মাথা ও পিঠসহ শরীরের বিভিন্ন স্থানে কুপিয়ে গুরুতর জখম করেন। পরে তাকে উদ্ধার করে ঢাকায় পাঠানো হয়।
হামলার অভিযোগ সম্পর্কে জানতে চাইলে বিএনপি নেতা আব্দুল খালেক বলেন, দলীয় তৃণমূলের নেতাকর্মীদের বাদ দিয়ে সম্মেলন করার প্রস্তুতি নেওয়ার পর থেকেই বাঞ্ছারামপুরে বিক্ষোভ চলছে।
'তবে তকদির হোসেন মো. জসিমের ওপর হামলা হয়েছে কি না বা কারা হামলা করেছে, সে বিষয়ে আমি কিছুই জানি না। আমি ঢাকায় আছি,' বলেন তিনি।
ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা বিএনপির সদস্য সচিব সিরাজুল ইসলাম বলেন, 'আওয়ামী লীগের সাবেক এমপি তাজুল ইসলামের সহযোগীদের নিয়ে আব্দুল খালেক উপজেলা বিএনপির সম্মেলন বানচাল করার জন্য চেষ্টা করেছেন।
'আমরা কেন্দ্রের নির্দেশে সম্মেলন করেছি এবং তা সফল হয়েছে। সম্মেলন বানচালের চেষ্টাকারীরাই তকদির হোসেন মো. জসিমের ওপর হামলা চালিয়েছে।'
তবে হামলার বিষয়ে কোনো তথ্য জানেন না বলে জানিয়েছেন বাঞ্ছারামপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোরশেদুল আলম চৌধুরী।
এর আগে এ সম্মেলনকে কেন্দ্র করে গত সোমবার দুপুরে আব্দুল খালেক ও মেহেদী হাসান পলাশের সমর্থকদের মধ্যে সংঘর্ষ বাঁধলে উভয় পক্ষের অন্তত ৩০ জন আহত হন।