আমি আমার জনগণকে মাতৃস্নেহের সঙ্গে দেখি: প্রধানমন্ত্রী

বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আজ বলেছেন, তিনি মাতৃস্নেহের সঙ্গে দেশের জনগণকে দেখেন, লিঙ্গ পরিচয় তাঁর কাজের ক্ষেত্রে কোনো বাধা বলে তিনি মনে করেন না।
তিনি দেশের নেতৃত্ব দানকারী একজন নারী হিসেবে কোনও বাধা অনুভব করেন কি না এমন প্রশ্নের উত্তরে বলেন, 'আমি আমার জনগণের জন্য কাজ করার চেষ্টা করি এবং হ্যাঁ, আমি আপনাকে একটি জিনিস বলতে পারি। আপনি জানেন... একজন নারী হিসেবে একজন মা পরিবারের দেখাশোনা করেন, সন্তানদের দেখাশোনা করেন, (আমি) সন্তানদের লালন-পালন করেছি। সুতরাং, মাতৃস্নেহের সঙ্গে আমি আমার জনগণকে দেখি, আমি তাদের সহায়তা করার চেষ্টা করি।'
দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন উপলক্ষে সোমবার (৮ জানুয়ারি) গণভবনে বিদেশি সাংবাদিক ও নির্বাচন পর্যবেক্ষকদের সঙ্গে মতবিনিময়কালে শেখ হাসিনা এ মন্তব্য করেন।
বাংলাদেশের শীর্ষ পদে একজন নারীর দায়িত্ব পালনের বিষয়টি অস্বীকার করে তিনি বলেন, 'আসলে আপনি যখন দেশ চালাবেন, তখন আপনার চিন্তা করা উচিত নয় যে আপনি একজন পুরুষ না-কি নারী।'
তিনি বলেন, '... একটা জিনিস, আমি সবসময় আমার জনগণের প্রতি আমার দায়বদ্ধতা অনুভব করি যে, আমাকে তাদের সেবা করতে হবে। সুতরাং আমি কখনোই মনে করিনি যে, এটি এমন একটি দায়িত্ব যা আমাকে পালন করতে হবে, আমি মনে করি এটি আমার দেশ, আমার জনগণের সেবা করার এবং তারা যাতে উন্নত জীবন পায় তা নিশ্চিত করার একটি সুযোগ।
ভারতের সাবেক প্রধানমন্ত্রী ইন্দিরা গান্ধী, শ্রীলঙ্কার শ্রীমাভো বন্দরনায়েকে, চন্দ্রিকা কুমারাতুঙ্গা, বেনজির ভুট্টো, ইসরায়েলের গোল্ডামেয়ার এবং যুক্তরাজ্যের মার্গারেট থ্যাচারের মতো মহান নারীদের ছাড়িয়ে পঞ্চম মেয়াদে জয়ের বিষয়ে তিনি কেমন অনুভব করছেন তা জানতে চাওয়া হলে তিনি বলেন, 'আপনি যে নারী নেত্রীদের নাম নিয়েছেন তার মহান ছিলেন। আমি তাদেও মত নই। আমি একজন খুব সাধারণ মানুষ।
দুঃখের সঙ্গে শেখ হাসিনা আরও বলেন, 'আপনারা জানেন... খুনিরা আমার পুরো পরিবারকে হত্যা করেছে। আমার ছোট ভাইয়ের বয়স তখন মাত্র ১০ বছর। সম্ভবত তাদের মনে ছিল যে পরিবারের কেউ যেন আর কখনো ক্ষমতায় আসতে না পারে।
১৯৭৫ সালের আগস্টে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান, বঙ্গমাতা ফজিলাতুন নেছা মুজিবসহ পরিবারের অন্যান্য সদস্যদের নির্মমভাবে হত্যা করা হয়। তার মেয়ে শেখ হাসিনা ও শেখ রেহানা বিদেশে থাকায় প্রাণে বেঁচে যান।
শেখ হাসিনা বলেন, 'তবে হ্যাঁ, এটা মানুষের ব্যাপার। আমাদের জনগণ আমাকে এই সুযোগ দিয়েছে। বারবার মানুষ আমাকে ভোট দিচ্ছে এবং আমি এখানে আছি। আমি অনেকবার বেঁচে গেছি এবং আমি মনে করি, আল্লাহ আমাকে এই সুযোগ দিয়েছেন।'
দ্বাদশ সাধারণ নির্বাচনে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ দুই-তৃতীয়াংশেরও বেশি সংখ্যাগরিষ্ঠতার নিয়ে বিজয় অর্জন করেছে। ফলে আওয়ামী লীগ নেতৃত্বাধীন ১৪-দলীয় জোট টানা চতুর্থ মেয়াদে সরকার গঠন করতে যাচ্ছে।