নোয়াখালীতে হামলার ঘটনায় গ্রেপ্তার ১২২, ১ জনের স্বীকারোক্তি, ৪ তদন্ত কমিটি

কুমিল্লায় পূজা মণ্ডপে পবিত্র কোরআন শরীফ রাখার ঘটনাকে কেন্দ্র করে গত ১৫ অক্টোবর শুক্রবার নোয়াখালীর বেগমগঞ্জ উপজেলার চৌমুহনী বাজারে বিভিন্ন মন্দিরে হামলার ঘটনায় শনিবার সন্ধ্যা পর্যন্ত ১২২ জনকে গ্রেপ্তার করেছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। এরমধ্যে পুলিশ, মন্দির কর্তৃপক্ষ ও ক্ষতিগ্রস্তদের দায়ের করা ৭টি মামলায় এজাহারনামা আসামি ৬৩ জন।
গ্রেপ্তারকৃতদের মধ্যে একলাশপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ও বিএনপি নেতা খলিলুর রহমান এবং চৌমুহনী কলেজ ছাত্রদলের সাবেক সভাপতি সিরাজ মিয়া রয়েছেন।
শনিবার দুপুরে জেলা পুলিশ সুপার মো. শহীদুল ইসলাম জানান, চৌমুহনীর ঘটনায় পুলিশ বাদি হয়ে ৪টি, ইসকন ১টি, পোড়া বাড়ি মন্দিরের পক্ষ থেকে ১টি ও ক্ষতিগ্রস্ত একজন ব্যবসায়ী ১টি মামলা দায়ের করেন। ঘটনার পর থেকে চৌমুহনী বাজার ও ক্ষতিগ্রস্ত প্রতিষ্ঠানগুলোর আশপাশের সিসিটিভি ফুটেজ সংগ্রহ করে তা পর্যালোচনা করে হামলাকারীদের শনাক্ত এবং গ্রেপ্তারে নামে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর একাধিক দল।
আরও পড়ুন: নোয়াখালীতে তাণ্ডব: মামলায় অভিযুক্ত ও গ্রেপ্তারকৃতদের বেশিরভাগই কিশোর-তরুণ
গ্রেপ্তারকৃতদের মধ্যে আব্দুর রহিম সুজন (১৯) নামে এক যুবক হামলার ঘটনায় নিজের দায় স্বীকার করে বৃহস্পতিবার বিকেলে বিচারিক আদালতে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন। গ্রেপ্তারের সময় তার কাছ থেকে বিভিন্ন মন্দির থেকে লুট হওয়া কিছু মালামাল উদ্ধার করা হয়। সহিংসতাকারীদের গ্রেপ্তারের জন্য অভিযান অব্যাহত রয়েছে বলে জানান পুলিশ সুপার।
তিনি আরও জানান, ঘটনার পর পুলিশ হেডকোয়ার্টার থেকে ১টি, চট্টগ্রাম ডিআইজি কার্যালয় থেকে ১টি, জেলা পুলিশ থেকে ১টি এবং জেলা প্রশাসক থেকে ১টি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। অতি দ্রুত সময়ের মধ্যে তদন্ত কমিটিগুলো প্রতিবেদন জমা দেবে বলেও জানান তিনি।
শনিবার সন্ধ্যায় আরেকটি সংবাদ সম্মেলনে জেলা পুলিশ সুপার মো. শহীদুল ইসলাম জানান, ওইদিনের হামলাটি ছিল পূর্ব পরিকল্পিত। হামলাকারীদের এক পক্ষ বাজারের প্রধান সড়কে থাকা পুলিশকে ইট-পাটকেল নিক্ষেপ করে, আর ৭টি গ্রুপ এক যোগে ৭টি মন্দিরে হামলা চালিয়েছে বলে আমরা বিভিন্ন সূত্রে নিশ্চিত হয়েছি।
তিনি বলেন, "ভিডিও ফুটেজ দেখে সহিংসতাকারিদের চিহ্নিত করে শনিবার দিনব্যাপী অভিযান পরিচালনার মাধ্যমে তাদেরকে গ্রেপ্তার করা হচ্ছে । বেগমগঞ্জে হামলার ঘটনায় এ পর্যন্ত ১০টি মামলায় ১২২জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। অপর আসামিদের গ্রেপ্তারে অভিযান অব্যাহত রয়েছে।"