Skip to main content
  • মূলপাতা
  • অর্থনীতি
  • বাংলাদেশ
  • আন্তর্জাতিক
  • খেলা
  • বিনোদন
  • ফিচার
  • ইজেল
  • মতামত
  • অফবিট
  • সারাদেশ
  • কর্পোরেট
  • চাকরি
  • প্রবাস
  • English
The Business Standard বাংলা

Thursday
July 31, 2025

Sign In
Subscribe
  • মূলপাতা
  • অর্থনীতি
  • বাংলাদেশ
  • আন্তর্জাতিক
  • খেলা
  • বিনোদন
  • ফিচার
  • ইজেল
  • মতামত
  • অফবিট
  • সারাদেশ
  • কর্পোরেট
  • চাকরি
  • প্রবাস
  • English
THURSDAY, JULY 31, 2025
কারও স্ত্রী চলে গেছে, কারও চাকরি: যেমন আছেন জুলাই আন্দোলনের আহতরা

ফিচার

সালেহ শফিক
20 November, 2024, 09:00 pm
Last modified: 24 November, 2024, 03:10 pm

Related News

  • গত এক বছরে আইন মন্ত্রণালয় যেসব সংস্কার কার্যক্রম হাতে নিয়েছে জানালেন আইন উপদেষ্টা
  • জুলাই অভ্যুত্থানের বর্ষপূর্তি ঘিরে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি অবনতির আশঙ্কা এসবি-র, ৬ নির্দেশনা
  • সমন্বয়ক পরিচয়ে চাঁদাবাজির খবরে বেদনায় নীল হয়ে গিয়েছি: মির্জা ফখরুল
  • গাজীপুরে হাসিনা, কাদেরসহ ৪২ জনের বিরুদ্ধে আরও একটি হত্যা মামলা
  • জুলাই গণঅভ্যুত্থানের মামলায় নির্দোষদেরও আসামি করা হয়েছে: স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা

কারও স্ত্রী চলে গেছে, কারও চাকরি: যেমন আছেন জুলাই আন্দোলনের আহতরা

কেন যোগ দিয়েছিলেন আন্দোলনে? কী দাবি ছিল আপনার? হাফিজুর রহমান উত্তর দিলেন, “আমার কোনো দাবি নেই। ভাইদের মারতেছে দেখে আর সহ্য করতে পারি নাই। আপনার সামনে মারলে আপনি দাঁড়ায়ে থাকতে পারবেন?”
সালেহ শফিক
20 November, 2024, 09:00 pm
Last modified: 24 November, 2024, 03:10 pm
যাত্রাবাড়িতে গুলিবিদ্ধ হয়েছিলেন মোহাম্মদ লিটন।

ছয় জন মানুষের ভরণপোষণের ভার লিটনের কাঁধে। অথচ গত তিন মাস ব্যয় ছাড়া তার কোনো আয় নেই। দুই হাতের কোনোটিতেই তিনি শক্তি পান না বিশেষ করে যেটায় গুলি লেগেছিল। 

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে লিটন শরিক হয়েছিলেন জুলাই মাসের মাঝামাঝি থেকে। ছাত্র ভাইদের সঙ্গে তার নিয়মিত যোগাযোগ ছিল। কিন্তু যাত্রাবাড়ি এলাকা ছাত্রলীগ-যুবলীগের শক্তিশালী ঘাঁটি, তাই লিটনদের সতর্ক থেকেই আন্দোলনে যোগ দিতে হয়েছে। একদিন শনির আখড়া, তো অন্যদিন দোলাইর পাড়, আরেকদিন যাত্রাবাড়ি চার রাস্তায় তারা মিছিল সমাবেশ করেছেন। 

লিটন ৮ নম্বর রুটের (যাত্রাবাড়ি থেকে গাবতলী) বাস ড্রাইভার। তাদের ৮ নম্বর রুটে ড্রাইভার-হেলপার মিলিয়ে দেড়শ জন নিয়মিতই আন্দোলনে অংশ নিতেন। কিন্তু কেন আন্দোলনে গিয়েছিলেন লিটনরা?

লিটন বললেন, "পুলিশের সার্জেন্টরা জায়গায় জায়গায় আমাদের হ্যারাস করতো। সারাদিন গাড়ি চালিয়ে যা পেতাম, সব তাদেরই দিয়ে দিতে হতো। তাহলে আমাদের সংসার চলে কী দিয়ে? আমরা তাই পরিবর্তন চাইছিলাম। ভাবছিলাম, এই সরকারের (হাসিনা) পতন দরকার। তাই আন্দোলনে অংশ নিয়েছি।"

এক বৃদ্ধা নিয়ে গিয়েছিলেন হাসপাতালে

যাত্রাবাড়ি মোড়ে ৫ আগস্ট গুলিবিদ্ধ হন মোহাম্মদ লিটন। তখন বেলা ১২টা হবে। যাত্রাবাড়িতে ব্যাপক সংঘর্ষ। পুলিশ ও আওয়ামী লীগের ধাওয়ায় লিটনরা মহল্লার একটি গলিতে ঢুকে যায়। সেখানে পুলিশ লিটনকে ধরে হাতে রাইফেল ঠেকিয়ে গুলি করে, তিনি মাটিতে লুটিয়ে পড়লে আরেক হাতে রাইফেল দিয়ে আঘাত করতে থাকে। লিটন ৫-৬ ঘণ্টা অচেতন হয়ে রাস্তায় পড়েছিলেন। পরে চেতনা ফিরলে দেখেন তিনি মিটফোর্ড হাসপাতালে। 

কে নিয়ে এসেছে? জানতে চাইলে  বৃদ্ধ এক নারী এগিয়ে আসেন। অচেতন পড়ে থাকতে দেখে লিটনকে ওই নারী হাসপাতালে নিয়ে আসেন। লিটন নারীকে ধরে কেঁদে ফেলেন। বৃদ্ধাই ফোন করে লিটনের বাসায় খবর পাঠান। রাত ১২টার দিকে লিটনের বাসা থেকে লোকজন যায়। ততক্ষণে তার হাতে প্লাস্টার করে দেওয়া হয়েছে। অধিকতর চিকিৎসার জন্য তাকে পঙ্গু হাসপাতালে যাওয়ার পরামর্শ দেওয়া হয়। 

পরদিন সকালে পঙ্গু হাসপাতালে গেলে বিশেষজ্ঞ ডাক্তার তাকে কিছু ওষুধ দিয়ে এক সপ্তাহ পরে আসতে বলেন। পরের সপ্তাহে তাকে কিছু টেস্ট করাতে বলা হয় এবং আরও ৭ দিন পরে এসে ভর্তি হতে বলা হয়। নির্দিষ্ট দিনে গেলে লিটনকে ভর্তি করিয়ে নেওয়া হয় এবং পরের দিন ২২ আগস্ট তার অপারেশন হয় । 

তাকে হাসপাতাল থেকে ছেড়ে দেওয়া হয়েছে ঠিকই, কিন্তু তার কোনো হাতই আগের মতো কার্যক্ষম নেই। প্রতিদিন ওষুধ লাগে ৪০০ টাকার। 

লিটন বললেন, "জুলাই আন্দোলনে আহত-নিহতের পূর্ণাঙ্গ তালিকা করা খুব মুশকিল। শুরুর দিকের অনেককে চুপিসারে কবর দেওয়া হয়েছে, যেন আওয়ামী লীগ জানতে না পারে।" 

জুরাইন কবরস্থানে, দোলাইরপাড়ে এমন কয়েকজনকে কবর দিতে লিটন স্বচক্ষে দেখেছেন বলে দাবি করেন। বললেন, "আমি নিহতদের পরিবারদের বলেছি, জুলাই ফাউন্ডেশনের সঙ্গে যোগাযোগ করতে, কিন্তু তারা বলে আমাদের কাছে কোনো প্রমাণপত্র নেই। সে সময়ে আমরা কাঁদতেও পারি নাই, হাসপাতালে নেওয়া দূরে থাক। আওয়ামী লীগ জানতে পারলেই এসে হামলা করত।" 

জুলাই আন্দোলনে আহতদের জন্য সংরক্ষিত নিটোরের বি ওয়ার্ড।

টাইগার পাসে ছিলেন হাফিজ

১৪ নভেম্বর সন্ধ্যায় লিটনকে পেয়েছিলাম নিটোরের (পঙ্গু হাসপাতাল) গেটে। সকালেই এসেছেন, থাকবেন যতক্ষণ না প্রতিনিধিরা সচিবালয় থেকে ফিরে আসেন। 

ঘটনার শুরু আগের দিন দুপুর বেলায়। অপেক্ষার শুরু অবশ্য সেই সকাল থেকেই, কারণ স্বাস্থ্য উপদেষ্টা আসবেন, জুলাই আন্দোলনে আহতদের সুবিধা-অসুবিধা জানবেন। তিনতলায় বি ওয়ার্ডে আছেন চট্টগ্রামের হাফিজুর রহমান। তার বয়স উনিশ মাত্র। তিনিও একজন ড্রাইভার।  লেগুনা চালান নিউমার্কেট থেকে কালুরঘাট। ৪ আগস্ট টাইগার পাসে ছররা গুলি লেগেছে তার মাথায় আর চোখে। তিনি আন্দোলনে যোগ দেন ১৮ জুলাই। মুরাদপুরে সেদিন সিরিয়াস অবস্থা তৈরি হয়েছিল।

কেন যোগ দিয়েছিলেন আন্দোলনে? কী দাবি ছিল আপনার? হাফিজুর রহমান উত্তর দেন, "আমার কোনো দাবি নেই। ভাইদের মারতেছে দেখে আর সহ্য করতে পারি নাই। আপনার সামনে মারলে আপনি দাঁড়ায়ে থাকতে পারবেন?"

উপদেষ্টা আসবেন বলে

উপদেষ্টা আসবেন, তাই হাফিজ সকাল থেকে ফ্রেশ হয়ে বসেছিল বেডের ওপরে। গুলিতে তার বাম চোখ নষ্ট হয়ে গেছে, মাথায় কয়েকটি আছে, সেগুলো অপসারণের জন্যই এ দফায় হাসপাতালে এসেছেন। কাজ কর্ম তো কিছু নেই, সারাদিন  বসেই থাকা। আজকে একটা উপলক্ষ পাওয়া গেছে, উপদেষ্টা আসবেন। তাকে দেখাটাও একটা বড় কাজ। আর তিনি যদি কোনো পরামর্শ দেন, সেগুলো মেনে চলাও গুরুত্বপূর্ণ। হাফিজ তাই প্রস্তুত হয়েছিলেন। 

কিন্তু অপেক্ষা করতে করতে শেকড় গজিয়ে যাওয়া দশা, শেষে  উপদেষ্টা আসতে দুপুর ১২টা বাজিয়ে ফেললেন, আর গেলেনও কেবল চার তলার এ ওয়ার্ডে, তিন তলায় নামলেনই না। হাফিজেরও রাগ হয়েছিল। "একটু আসলে কি তার কোটি টাকা লোকসান হয়ে যেত? দেখা দিলে তো মানুষের মন জয় করা যায়," বলছিলেন হাফিজ।

ক্ষোভে কষ্টে আহত ব্যক্তিরা উপদেষ্টার পথ আটকে দাঁড়িয়েছিলেন। আরও পরে তারা আগারগাঁও–শ্যামলী সড়ক বন্ধ করে দিয়ে বিক্ষোভ করতে থাকেন। বিদেশে উন্নত চিকিৎসা, আর্থিক সহায়তা ও স্বাস্থ্য উপদেষ্টার সঙ্গে সাক্ষাৎ— এমন ৩টি নিরীহ  ও নম্র  দাবিতে তারা বিক্ষোভ করতে থাকেন। মোহাম্মদ লিটন ফেসবুক লাইভে দেখে বিকালেই চলে এসে যোগ দিয়েছিলেন বিক্ষোভে।

হাফিজও বিক্ষোভে ছিলেন গভীর রাত অবধি, যখন ৪ উপদেষ্টা এসে বিক্ষোভকারীদের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন সেই পর্যন্ত। উপদেষ্টাদের সঙ্গে আলাপের মাধ্যমেই পরদিন সচিবালয়ে বৈঠক নির্ধারিত হয়। সেখানে কী সিদ্ধান্ত হচ্ছে, তা জানতে অপেক্ষা করছেন মোহাম্মদ লিটন।

হাফিজের সঙ্গে বেশিক্ষণ থাকার সুযোগ পেলাম না। প্রহরারত আনসার বললেন, পরিচালকের অনুমতি লাগবে। তাই লিটনকে নিয়ে চারতলার এ ওয়ার্ডে গেলাম। 

পঙ্গু হাসপাতালের তৃতীয় ও চতুর্থ তলার বি ও এ ওয়ার্ড জুলাই আন্দোলনে আহতদের জন্য সংরক্ষিত। এগুলোতে প্রবেশে কড়াকড়ি আছে। রোগীর অ্যাটেনডেন্ট ছাড়া সাধারণত কাউকে ঢুকতে দেওয়া হয় না। আমি সাংবাদিক পরিচয় দিয়ে ঢুকতে চাইলে প্রহরারত আনসার বললেন, "পরিচালকের অনুমতি ব্যতিত আমরা কিছুই করতে পারছি না।" 

ততক্ষণে সন্ধ্যা ঘনিয়ে এসেছে। পরিচালককে  পাওয়ার আশা  ছেড়ে দিয়ে ওয়ার্ডের বাইরে দাঁড়িয়ে থাকলাম এই আশায় যে, কেউ যদি বাইরে আসেন, তবে কিছু তথ্য নিতে পারব। 

দুলাল হোসেনের বোন।

একমাত্র ছেলে জুবায়ের

এর মধ্যে জুবায়ের হোসেনের (২৯) বোন রত্না বেরিয়ে এলেন। জুবায়ের কবে গুলি খেয়েছিলেন, তার ঠিক তারিখ রত্নার মনে নেই; তবে জুলাইয়ের ২০ বা ২২ তারিখ হতে পারে। আর সেটা ছিল জুম্মাবার। 

জুবায়ের একটি ডেভেলপার কোম্পানিতে জব করতেন, বাবাও কাজ করেন কাছাকাছি আরেকটি অফিসে। জুবায়ের তার বাবার সঙ্গে এক বাসাতেই থাকতেন। 

জুবায়ের আন্দোলনে গেছেন জেনে বাবা বলেছিলেন, 'আর মিছিলে যেও না বাবা, তুমি আমাদের একমাত্র ছেলে।' 

কিন্তু জুবায়ের বন্ধুদের সঙ্গে আন্দোলনে যাওয়া থামাননি। পরে এক জুম্মাবারে রামপুরা-বনশ্রীতে আন্দোলন যখন তুঙ্গে, জুবায়েরের বুকের ওপর রাইফেল ঠেকায় পুলিশ। জুবায়ের মারমুখি ভাব লক্ষ্য করে একটু ঘুরে গেলে তার ডান বাহুতে গিয়ে লাগে গুলি। জুবায়েরকে তারপর ছাত্ররা কাছের এক হাসপাতালে নিয়ে যায়। কিন্তু সে হাসপাতালের চিকিৎসকরা জরুরি ভিত্তিতে তাকে পঙ্গু হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার কথা বলেন। 

তবে সেদিন বিক্ষোভের মাত্রা ছিল অনেক বেশি। রাস্তায় রাস্তায় ছিল ব্যারিকেড। অ্যাম্বুলেন্স পাওয়া যাচ্ছিল না। শেষে জুবায়েরের অফিসের এক কর্মকর্তা একটি অ্যাম্বুলেন্স জোগাড় করে দেন। খবর পেয়ে জুবায়েরের বাবা ততক্ষণে হাসপাতালে পৌঁছান। তিনি ছেলের অবস্থা দেখে কান্নায় বুক ভাসান। 

পঙ্গু হাসপাতালে নিয়ে গিয়ে তাকে ভর্তি করানো হলে বরিশালের বাড়িতে থাকা মায়ের কাছেও খবর পৌঁছে যায়। এই পর্যায়ে মা এসে আমাদের সঙ্গে আলোচনায় যোগ দেন। 

বলেন, "ছেলের প্রথম অপারেশন সফল হয়নি। বরিশালের একটি হাসপাতালে নিয়েও বেশ কিছুদিন রেখেছিলাম। এখন আবার এই হাসপাতালে (পঙ্গু হাসপাতাল) এসেছি নতুন অপারেশনের ডেট ঠিক করতে। ছেলেটার ডান হাত অকেজো হয়ে আছে। তার চাকরিটা আর নেই। অবশ্য কর্মকর্তারা বলেছেন, যদি হাত ঠিক হয়, তবে যেন আবার এসে যোগাযোগ করে।"

জুবায়েরের মা আরও বললেন, "আমাদের একমাত্র ছেলে সে। তার বাবাও চাকরি করে, তবে সংসার জুবায়েরের ওপরই নির্ভরশীল। সরকার যদি তার একটা চাকরির ব্যবস্থা করে দেয়, খুব ভালো হয়।" 

জুলাই ফাউন্ডেশন থেকে জুবায়েরকে এক লাখ টাকা দেওয়া হয়েছে, কিন্তু খরচ হয়েছে আরও অনেক বেশি। এই অবস্থায় আরও কতদিন ধার-দেনা করে চলতে হবে জানেন না জুবায়েরের মা।

স্ত্রীর সঙ্গে ছাড়াছাড়ি হয়ে গেছে

কিছুক্ষণ পর একহাতে টিফিন ক্যারিয়ার অন্যহাতে এক শিশুর হাত ধরে এক নারী বেরিয়ে এলেন। জুবায়েরের বোন রত্না পরিচয় করিয়ে দিয়ে বললেন, "ইনি দুলাল হোসেনের বোন। আপনি তার সঙ্গে কথা বলতে পারেন।"

আমি এগিয়ে গিয়ে বললাম, "আপা যদি আপনার হাতে কিছু সময় থাকে আমি দুলাল ভাইয়ের অবস্থা সম্পর্কে জানতে চাই।" 

তিনি বললেন, "আমার ছোট ভাই দুলাল। বয়স হবে ৩৪ বা ৩৫। উত্তরায় ভবন নির্মাণ কাজের সঙ্গে জড়িত। ৫ আগস্ট তার গুলি লাগে। আগে থেকেই সে আন্দোলনে শরিক ছিল। ৫ আগস্টে শেখ হাসিনা দেশ ছাড়লে দুলাল আনন্দ মিছিলে যোগ দিতে গিয়ে গুলি খায়।" 

"গুলি তার পাকস্থলী ও মূত্রথলী ভেদ করে কোমড়ের হাড় ভেঙে দিয়েছে। ছাত্ররা প্রথম তাকে ক্রিসেন্ট হাসপাতালে নিয়ে গিয়েছিল, তারপর লেকভিউ হাসপাতালে। ব্লাডার ফুটো হয়ে গিয়েছিল বলে রক্ত থামানো যাচ্ছিল না, তাৎক্ষণিক অপারেশন দরকার হয়ে পড়েছিল। তাই নিজেদের তরফ থেকে ৩-৪ লাখ টাকা খরচ হয়ে গেছে। আত্মীয়-স্বজনের কাছ থেকে ধার করে হাসপাতালের টাকা মিটিয়ে ছাড়িয়ে আনতে ২২ আগস্ট পর্যন্ত সময় লেগে যায়," যোগ করেন তিনি।

আগস্ট মাসের ২২ তারিখ থেকে পঙ্গু হাসপাতালে আছেন দুলাল। নিজে নিজে বিছানা থেকে ওঠা তার পক্ষে সম্ভব নয়। বোন আর ভাগ্নি পালা করে তার সেবা করছেন,  বোন সপ্তাহে ৫ দিন আর ভাগ্নির বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্লাস থাকে বলে সপ্তাহে ২ দিন। 

দুলাল বিয়ে করেছিলেন। তবে স্ত্রীর সঙ্গে তার বনিবনা হচ্ছিল না, আর এই ঘটনা (গুলি খাওয়ার) ঘটার পর স্ত্রী তাকে ছেড়ে একবারে চলে গেছে। বোন আর ভাগ্নিই এখন তার অবলম্বন। 

দুলালের সঙ্গে দেখা করার সুযোগ পাইনি, তবে তার আরোগ্য কামনা করলাম সর্বান্তঃকরণে; তিন তলায় বি ওয়ার্ডের কাছে গিয়ে দাঁড়ালাম।

নেছারউদ্দিন এমিল আবারও স্লোগান দিয়েছেন।

আবার স্লোগান দিয়েছেন এমিল

কিছুক্ষণ পরে বি ওয়ার্ড থেকে বের হয়ে এলেন নেছারউদ্দিন এমিল। তার হাতে প্লাস্টার লাগানো। তিনি চকবাজারে এক দোকানের কর্মচারী ছিলেন। বৃদ্ধা মা ও নিজের পরিবার নিয়ে থাকেন হাজারীবাগ। গুলি খেয়েছেন ৪ আগস্ট ফার্মগেটে। 

তাকে জিজ্ঞেস করলাম, "গতকালের বিক্ষোভে যোগ দিয়েছিলেন?" 

উত্তর দিলেন, "হ্যা যোগ দিয়েছিলাম।  স্লোগান দিতে দিতে গলা ভেঙে ফেলেছি।" 

বললাম, "নতুন করে আন্দোলনে নামতে ভালো লেগেছে?" 

এমিল বললেন, "স্বাস্থ্য উপদেষ্টা আমাদের সঙ্গে দেখা করেননি, আমরা মনে করেছি তিনি আমাদের অপমান করেছেন। মূলত আন্দোলনটা সে কারণে হয়েছে। এই সুযোগে যদি আমাদের সমস্যাগুলোও মিটে যায় তাহলে বেশি ভালো হয়।"

এমিলকে শুভকামনা জানিয়ে গেটের কাছে গিয়ে লিটনকে খুঁজলাম। 

তিনি বললেন, "মাত্রই খবর পেলাম প্রতিনিধিদের সঙ্গে সরকারের ফলপ্রসূ আলোচনা হয়েছে। আহত যোদ্ধাদের ইউনিক কার্ড দেওয়া হবে। সব সরকারি হাসপাতাল থেকে আমরা সারা জীবন বিনামূল্যে সেবা পাব। চিকিৎসার পাশাপাশি পুনর্বাসন আর কর্মসংস্থানের সিদ্ধান্তও নেওয়া হয়েছে।"

লিটনকে অভিনন্দন জানালাম এজন্য যে, বিক্ষোভের ইতিবাচক ফলাফল পাওয়া গেছে। জানতে চাইলাম, "এখন কি যাত্রাবাড়ি রওনা হবেন?" 

লিটন জানালেন, প্রতিনিধিরা ফিরে না আসা পর্যন্ত হাসপাতালেই অবস্থান করবেন। 

তাকে আগের চেয়ে অনেক বেশি প্রাণবন্ত দেখাচ্ছে, উদ্যমী এবং আশাবাদী। আমি শেষবারের মতো শুভকামনা জানিয়ে বাড়ির পথ ধরলাম।


ছবি: সালেহ শফিক/টিবিএস 
 

Related Topics

টপ নিউজ

জুলাই আন্দোলন / গণঅভ্যুত্থান / জুলাই গণঅভ্যুত্থান / ছাত্র-জনতা আন্দোলন

Comments

While most comments will be posted if they are on-topic and not abusive, moderation decisions are subjective. Published comments are readers’ own views and The Business Standard does not endorse any of the readers’ comments.

MOST VIEWED

  • কুড়িগ্রামে সাপুড়ের প্রাণ নেয়া সাপকে কাঁচা চিবিয়ে খেয়ে নিলেন আরেক সাপুড়ে
  • আইএফআইসি আমার বন্ড কেলেঙ্কারি: সালমান-শায়ান-শিবলী রুবাইয়াতকে আজীবন পুঁজিবাজারে অবাঞ্ছিত ঘোষণা
  • জাতীয় সরকার নিয়ে মির্জা ফখরুলের বক্তব্য সত্য নয়; সাদিক কায়েম সমন্বয়ক ছিল না: নাহিদ ইসলাম
  • সাংবাদিক আরিফকে তুলে নিয়ে নির্যাতন: সাবেক ডিসি সুলতানা ও ৩ ম্যাজিস্ট্রেটের বিরুদ্ধে চার্জশিট
  • ‘অবৈধভাবে’ পাহাড় কাটার দায়ে লামায় কোয়ান্টাম ফাউন্ডেশনকে ৫৫ লাখ টাকা জরিমানা
  • চট্টগ্রাম ইপিজেডে দীর্ঘদিনের পরিত্যক্ত কারখানা ষষ্ঠবারের মতো নিলামে, পুরো প্রকল্প হস্তান্তরের উদ্যোগ বেপজার

Related News

  • গত এক বছরে আইন মন্ত্রণালয় যেসব সংস্কার কার্যক্রম হাতে নিয়েছে জানালেন আইন উপদেষ্টা
  • জুলাই অভ্যুত্থানের বর্ষপূর্তি ঘিরে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি অবনতির আশঙ্কা এসবি-র, ৬ নির্দেশনা
  • সমন্বয়ক পরিচয়ে চাঁদাবাজির খবরে বেদনায় নীল হয়ে গিয়েছি: মির্জা ফখরুল
  • গাজীপুরে হাসিনা, কাদেরসহ ৪২ জনের বিরুদ্ধে আরও একটি হত্যা মামলা
  • জুলাই গণঅভ্যুত্থানের মামলায় নির্দোষদেরও আসামি করা হয়েছে: স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা

Most Read

1
বাংলাদেশ

কুড়িগ্রামে সাপুড়ের প্রাণ নেয়া সাপকে কাঁচা চিবিয়ে খেয়ে নিলেন আরেক সাপুড়ে

2
বাংলাদেশ

আইএফআইসি আমার বন্ড কেলেঙ্কারি: সালমান-শায়ান-শিবলী রুবাইয়াতকে আজীবন পুঁজিবাজারে অবাঞ্ছিত ঘোষণা

3
বাংলাদেশ

জাতীয় সরকার নিয়ে মির্জা ফখরুলের বক্তব্য সত্য নয়; সাদিক কায়েম সমন্বয়ক ছিল না: নাহিদ ইসলাম

4
বাংলাদেশ

সাংবাদিক আরিফকে তুলে নিয়ে নির্যাতন: সাবেক ডিসি সুলতানা ও ৩ ম্যাজিস্ট্রেটের বিরুদ্ধে চার্জশিট

5
বাংলাদেশ

‘অবৈধভাবে’ পাহাড় কাটার দায়ে লামায় কোয়ান্টাম ফাউন্ডেশনকে ৫৫ লাখ টাকা জরিমানা

6
বাংলাদেশ

চট্টগ্রাম ইপিজেডে দীর্ঘদিনের পরিত্যক্ত কারখানা ষষ্ঠবারের মতো নিলামে, পুরো প্রকল্প হস্তান্তরের উদ্যোগ বেপজার

EMAIL US
contact@tbsnews.net
FOLLOW US
WHATSAPP
+880 1847416158
The Business Standard
  • About Us
  • Contact us
  • Sitemap
  • Privacy Policy
  • Comment Policy
Copyright © 2025
The Business Standard All rights reserved
Technical Partner: RSI Lab

Contact Us

The Business Standard

Main Office -4/A, Eskaton Garden, Dhaka- 1000

Phone: +8801847 416158 - 59

Send Opinion articles to - oped.tbs@gmail.com

For advertisement- sales@tbsnews.net