Skip to main content
  • মূলপাতা
  • অর্থনীতি
  • বাংলাদেশ
  • আন্তর্জাতিক
  • খেলা
  • বিনোদন
  • ফিচার
  • ইজেল
  • মতামত
  • অফবিট
  • সারাদেশ
  • চাকরি
  • প্রবাস
  • English
The Business Standard বাংলা

Thursday
June 05, 2025

Sign In
Subscribe
  • মূলপাতা
  • অর্থনীতি
  • বাংলাদেশ
  • আন্তর্জাতিক
  • খেলা
  • বিনোদন
  • ফিচার
  • ইজেল
  • মতামত
  • অফবিট
  • সারাদেশ
  • চাকরি
  • প্রবাস
  • English
THURSDAY, JUNE 05, 2025
তাম্মাত বিল খয়ের: সাইকেলপাগল এক দস্যির গল্প

ফিচার

সুস্মিতা চক্রবর্তী মিশু
07 March, 2024, 09:15 pm
Last modified: 09 March, 2024, 01:53 pm

Related News

  • মাঠ থেকে মোবাইল: হারিয়ে যাওয়া গ্রামীণ খেলার জায়গায় যেভাবে অনলাইন গেমস
  • বিশ্বের দীর্ঘতম ট্রেনযাত্রা, কিন্তু শেষ করতে পারেনি কেউই 
  • অ্যান্টার্কটিকায় চোখধাঁধানো কয়েক দিন
  • ‘পৃথিবী খুবই শান্ত দেখাচ্ছিল’: মহাকাশ ভ্রমণের পর ফিরলেন মার্কিন পপতারকা কেটি পেরিসহ ৬ নারী
  • মার্কিন পপতারকা কেটি পেরিসহ মহাকাশ ভ্রমণে যাচ্ছেন ৬ নারী

তাম্মাত বিল খয়ের: সাইকেলপাগল এক দস্যির গল্প

প্রতিটি জেলার সার্কিট হাউজকে সেন্টার হিসেবে ধরে ২০১৭ সালে চট্টগ্রাম থেকে শুরু হয় তাম্মাতের সাইকেলে চড়ে দেশ ভ্রমণের সূচনা। প্রথমবারেই পুরো ২৫ দিনে বাংলাদেশের ৬৪ জেলা ভ্রমণ করেন তিনি। তাম্মাতের আগে অবশ্য চট্টগ্রামের আরও দুজন সাইক্লিস্ট সাইকেলে চড়ে ২৯ দিনে বাংলাদেশ ভ্রমণের রেকর্ড করেছিলেন। প্রথম ভ্রমণেই তাম্মাত ভেঙ্গে ফেলেন অতীতের সেই রেকর্ড।
সুস্মিতা চক্রবর্তী মিশু
07 March, 2024, 09:15 pm
Last modified: 09 March, 2024, 01:53 pm

ছবি: সৌজন্যে প্রাপ্ত

সাইকেলকে ভালোবেসে বাড়ি থেকে পালানোর গল্প কোনোদিন শুনেছেন? সাইকেলের প্যাডেলকে সঙ্গী করে দেশ-বিদেশ ঘোরার নেশা যার মাথায় চড়েছে, তাকে আটকানোর সাধ্য কার? বলছিলাম তাম্মাত বিল খয়েরের কথা। সাইকেলে চড়ে ১৪ দিন ২০ ঘণ্টায় পুরো বাংলাদেশ ঘোরার রেকর্ড করেছেন তিনি। পায়ে হেঁটে টেকনাফ থেকে তেঁতুলিয়া ভ্রমণ কিংবা বন্ধুদের সাথে বাজি ধরে ফুটবলার মেসিকে সম্মান জানানো– সাইকেলকে সঙ্গী করে তাম্মাত ছুটে বেড়িয়েছেন তেপান্তরের মাঠে। শুধু তাই নয়, সাইকেল নিয়ে স্পোর্টস কন্টেন্ট ক্রিয়েটর হিসেবেও অর্জন করেছেন জনপ্রিয়তা।

তাম্মাত বিল খয়েরের বেড়ে ওঠা চট্টগ্রামে। জন্ম চট্টগ্রাম পুলিশ লাইনে। খোলা প্রকৃতির মাঝে বেঁচে থাকার সুযোগ তার বরাবরই ছিল। সাইকেলের প্রতি টানও তাই কিঞ্চিৎ বেশিই ছিল। জগৎকে দুচোখ ভরে দেখার নেশায় তাম্মাত ছোট থাকতেই ঠিক করলেন, বড় হয়ে সাইক্লিস্ট হবেন।

কিন্তু হঠাৎ কেন সাইকেল? ভালোবাসার গল্প জানতে চাইলে তাম্মাত বলেন, "আমি ইত্যাদিতে দেখেছিলাম, একজন বৃদ্ধলোক সম্ভবত বাংলা সাইকেলে চড়ে পুরো বাংলাদেশ ভ্রমণ করেছিলেন। তখন আমি খুব ছোট ছিলাম। অতকিছু মনে নেই কিন্তু ওটা দেখে ইচ্ছে জাগে, আমিও একদিন সাইকেলে সারা বাংলাদেশ ঘুরবো।"

ছেলের সাইকেলের প্রতি এত ভালোবাসা দেখে দুশ্চিন্তা উঁকি দেয় তাম্মাতের বাবা-মায়ের মনে। পড়াশোনা করার বয়সে ছেলে কিনা সাইকেল নিয়ে ঘুরে বেড়াবে! তার ওপর পরিবারের কেউ সেভাবে খেলাধুলার সাথে যুক্তও ছিল না। ছেলের এমন অ্যাডভেঞ্চারের নেশাকে তাই আমলে নেননি বাবা-মা। কিন্তু হাল ছাড়েননি তাম্মাত। টিউশনের টাকা বাঁচিয়ে কিনে ফেলেন সাইকেল।

২০১৭ সালের কথা; শৈশবের স্বপ্নকে বাস্তবে রূপদানের জন্য উদ্যোগী হন তিনি। সেসময় তাম্মাত সবে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী। বাবা-মায়ের নজর এড়িয়ে কাঁধে ব্যাগ ও সাইকেলকে সঙ্গী করে মাঝরাতে বাড়ি থেকে পালিয়ে যান ৬৪ জেলা ঘোরার উদ্দেশ্যে। 

"সেদিনটিই আমার লাইফের টার্নিং পয়েন্ট ছিল। সেদিন যদি আমি বাড়ি থেকে না বের হতাম, তাহলে হয়তো এই কমিউনিটিতে আমার ঢোকা হতো না", বললেন তাম্মাত।

ছবি: সৌজন্যে প্রাপ্ত

২৫ দিনে বাংলাদেশ ভ্রমণ দিয়ে শুরু

প্রতিটি জেলার সার্কিট হাউজকে সেন্টার হিসেবে ধরে ২০১৭ সালে চট্টগ্রাম থেকে শুরু হয় তাম্মাতের সাইকেলে চড়ে দেশ ভ্রমণের সূচনা। প্রথমবারেই পুরো ২৫ দিনে বাংলাদেশের ৬৪ জেলা ভ্রমণ করেন তিনি। তাম্মাতের আগে অবশ্য চট্টগ্রামের আরও দুজন সাইক্লিস্ট সাইকেলে চড়ে ২৯ দিনে বাংলাদেশ ভ্রমণের রেকর্ড করেছিলেন। প্রথম ভ্রমণেই তাম্মাত ভেঙ্গে ফেলেন অতীতের সেই রেকর্ড।

এরপর থেকে শুরু হয় তাম্মাতের নতুন জীবন। বিভিন্ন স্পোর্টস ইভেন্টে অংশগ্রহণ করার পাশাপাশি পুরোদমে জড়িয়ে পড়েন সাইকেলের সাথে। সাইকেলে ভ্রমণের পাশাপাশি অংশ নিতে শুরু করেন বিভিন্ন ম্যারাথন, ক্লাইম্বিং, ট্রেকিং, হাইকিং কার্যক্রমে। ২০১৮ সালে তাম্মাত সিদ্ধান্ত নেন, পায়ে হেঁটে টেকনাফ থেকে তেঁতুলিয়া পাড়ি দেবেন। এবারেও ভাবনাকে কাজে রূপান্তরিত করতে বেশি সময় নিলেন না তিনি।

যদিও খেলাধুলার সাথে এভাবে জড়িয়ে পড়া তাম্মাতের পরিবার তখনও ভালোভাবে নেয়নি। তাই অনেকটা ঝুঁকি নিয়েই পথে নামেন তাম্মাত। হাঁটাহাঁটি নিয়ে সকলকে উদ্বুদ্ধ করতেই টেকনাফ থেকে তেঁতুলিয়া পায়ে হেঁটে চলার উদ্যোগ নেন তিনি। পায়ে হেঁটে ১,০০১ কিলোমিটার পাড়ি দিতে তাম্মাতের সময় লাগে ২৪ দিন।  

ছবি: সৌজন্যে প্রাপ্ত

১৪ দিনে দেশ ভ্রমণের পরম আকাঙ্ক্ষিত মুহূর্ত

সাইকেলে ২৫ দিনে ৬৪ জেলা ভ্রমণের পর তাম্মাতের মনে হলো, পরিকল্পনা করে বের হলে আরও কম সময়ের মধ্যেই পুরো বাংলাদেশ ঘোরা সম্ভব। পরিকল্পনা অনুযায়ী, ২০১৯ সালে তাম্মাত ঘোষণা দেন, তিনি ১৫ দিনের মধ্যে ৬৪ জেলার ৪ হাজার কিলোমিটার পথ পাড়ি দেবেন। নিজেই ভাঙবেন নিজের রেকর্ড।

পাশাপাশি সিদ্ধান্ত নেন, সাইকেলে চড়ে দেশ ভ্রমণের প্রমাণও রাখবেন। তাম্মাত বলেন, "এবার ঠিক করি, আমার সাথে একটা বাইক থাকবে। বাইক পিছনে থাকবে এবং আমার পেজ থেকে বাইকের আরোহী একটানা লাইভ করবে। ১-২ ঘণ্টা পর পর আপডেট দেবেন কোথায় আছি। এটার ফলে কারো কোনো প্রশ্নও থাকবে না এবং যারা আমার জার্নি ফলো করতে চাচ্ছে, ওরা আমাকে মোটামুটি ভাল নজরে রাখতে পারবে।"

তাম্মাতের লক্ষ্য তখন একটাই, যেভাবেই হোক ১৫ দিনে পুরো দেশ পাড়ি দিতেই হবে। সব ঠিকঠাকই আগাচ্ছিলো। পথে বাধ সাধে দুর্ঘটনা। জামালপুর থেকে রৌমারী যাওয়ার পথে তাল সামলাতে না পেরে দুর্ঘটনার কবলে পড়েন তাম্মাত। আর তাতে জ্বর বাঁধিয়ে একাকার কাণ্ড করেন তিনি। চিকিৎসা শেষে আবার যাত্রা শুরু করেন তাম্মাত। ওদিকে ১৫ দিনের ঘণ্টা বাজতেও বেশি সময় বাকি ছিল না। কিন্তু সব বাধা কাটিয়ে ১৪ দিন ২০ ঘণ্টায় ৬৪তম জেলা হিসেবে পাড়ি দেন কক্সবাজার।

'স্পোর্টস অ্যাডভেঞ্চারকে ক্যারিয়ার হিসেবে ভাবা আসলে খুবই কঠিন'

নতুন আরেকটি রেকর্ড তাম্মাতের আত্মবিশ্বাস বাড়িয়ে দেয় বহুগুণ। সিদ্ধান্ত নেন খেলাধুলার সাথেই নিজেকে যুক্ত রাখবেন, গড়বেন ক্যারিয়ার। মুকুটে একেকটি জয়ের পালক যুক্ত হতে থাকলেও তাম্মাতকে নিয়ে পরিবারের ভয় কোনোভাবেই কাটছিলো না। পড়ালেখার বয়সে তাম্মাতের সকাল-সন্ধ্যা খেলাধুলায় আটকে থাকা নিয়ে তাদের উদ্বেগ ছিল অনেক। এই উদ্বেগ থেকেই হয়তো বেশিরভাগ সময় বাধার মুখোমুখি হতেন তাম্মাত।

তাম্মাত বলেন, "বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে যদি বলি, তাহলে স্পোর্টস অ্যাডভেঞ্চারকে ক্যারিয়ার হিসাবে ভাবা আসলে খুবই কঠিন। পরিবারের সমর্থন খুব একটা পাওয়া যায় না। পরিবার যে ভালো চায় না, তা নয়। পরিবার থেকে আসলে ইন্সিকিউরিটি ফিল করে যে এমন একটা পেশায় যাচ্ছি, যেখানে আসলে সফলতার খুব বেশি উদাহরণ নেই। থাকলেও তার যে খুব ভালো ভবিষ্যত আছে, সেটিও নয়। আমাদের দেশে যদি এমন হতো, এর একটা সংস্কৃতি আগে থেকেই তৈরি করা আছে, তাহলে পরিবার এবং আশপাশ থেকে বিষয়টাকে সহজভাবেই নিতো।"

২০২০ সালে এশিয়ার চ্যাম্পিয়নশিপে যাওয়ার সুযোগ হলেও বাধ সাধে করোনা মহামারি। ততদিনে সাইক্লিংয়ে তাম্মাতের দক্ষতা নজর কাড়ে অনেকের। বিভিন্ন বাহিনীর হয়ে একাধিকবার খেলায় অংশ নিয়ে পদক জেতার রেকর্ডও রয়েছে তাম্মাতের ঝুলিতে।

ছবি: সৌজন্যে প্রাপ্ত

সাইক্লিস্ট থেকে কন্টেন্ট ক্রিয়েটর!

২০২২ সালের ফুটবল বিশ্বকাপের আগ মুহূর্তে তাম্মাত সিদ্ধান্ত নেন খেলাধুলা নিয়ে নিয়মিত কন্টেন্ট তৈরি করবেন। তারপর থেকে শুরু হয় স্পোর্টস বা অ্যাডভেঞ্চার সংক্রান্ত খুঁটিনাটি নিয়ে কন্টেন্ট বানানো।

তাম্মাত বলেন, "কনটেন্ট তৈরিতে যখন ঢুকে যাই, তখন আসলে দায়িত্বও অনেক বেড়ে যায়। আপনি যখন কিছু একটা করবেন, তখন কিন্তু আপনার শুভাকাঙ্ক্ষীরাও বাড়তি কিছু আশা করবে আপনার থেকে। তখন আমি সিদ্ধান্ত নেই, আন্তর্জাতিক কোনো কিছুতে অংশ নেব। প্রথম পরিকল্পনা ছিল, ভারতের দীর্ঘতম জাতীয় সড়কের কাশ্মীর থেকে কন্যাকুমারী, প্রায় ৪০০০ কিলোমিটার পথ সাইকেলে পাড়ি দেব।"

কিন্তু সেসময় ভিসা রিফিউজ হওয়ার কারণে ভারত পরিক্রমা ব্যর্থ হয় তাম্মাতের। এরপর তাম্মাত সিদ্ধান্ত নেন নেপালের একটি জাতীয় সড়ক ইস্ট-ওয়েস্ট হাইওয়ে সাইকেলে পাড়ি দেবেন। অতঃপর ৯ দিনে সম্পন্ন করেন সড়কটি পাড়ি দেওয়া। তাম্মাতের ভাষ্যানুযায়ী, তিনিই প্রথম বাংলাদেশি, যিনি নেপালের হাজার কিলোমিটারের দীর্ঘপথ সাইকেলে পাড়ি দিয়েছেন। দেশের বাইরেও তাম্মাত যে একইভাবে পথ চলতে পারদর্শী, এ অভিযানটি ছিল তারই প্রমাণ।

পরবর্তী সময়ে অবশ্য কাশ্মীর থেকে কন্যাকুমারী পাড়ি দেওয়ার সুযোগ হয় তাম্মাতের। সে যাত্রা কাশ্মীরের শ্রীনগর থেকে শুরু করে দক্ষিণের সর্বশেষ কন্যাকুমারী পর্যন্ত গিয়ে ঠেকে। প্রায় ৪ হাজার কিলোমিটার সাইকেলে চড়ে সম্পন্ন করেন ভারত সফর।

নেপাল ও ভারত ভ্রমণের সমস্তকিছু তাম্মাত ভিডিও হিসেবে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের পাতায় সংরক্ষণ করে রেখেছিলেন। কন্টেন্ট ক্রিয়েটর হিসেবে অনন্য পরিচয় তৈরি করতে সেগুলোও তাকে সাহায্য করেছিল। খাবার নষ্ট না করা বা হাঁটা-চলা বাড়ানো- প্রত্যেক যাত্রাতেই তাম্মাতের কিছু বার্তা থাকে। দ্বিচক্রযানে চড়ে তাম্মাত চেষ্টা করেন সেসব বার্তা সকলের মাঝে ছড়িয়ে দেওয়ার।  

ছবি: সৌজন্যে প্রাপ্ত

৬৪ দিনে ৬৪ জেলা ভ্রমণ

২০২৩ সালে তাম্মাত সিদ্ধান্ত নেন, ৬৪ দিনে ৬৪ জেলা পাড়ি দেবেন। সারা বাংলাদেশে খেলাধুলা নিয়ে যারা উৎসাহী তাদের সাথে যোগাযোগ বজায় রাখাই ছিল এই প্রজেক্টের মূল উদ্দেশ্য।

তাম্মাত বলেন, "গত কয়েকবছর ধরেই বাংলাদেশের স্পোর্টস কমিউনিটিকে আমি দূর থেকে দেখছি। আমার মনে হচ্ছিল, যারা নতুন নতুন এই কমিউনিটিতে যুক্ত হয়েছে তাদের সাথে আমাদের কোনোভাবে একটা কমিউনিকেশন গ্যাপ তৈরি হয়েছে। যে অভিজ্ঞতা আমাদের হয়েছে, সেটা আসলে ওদেরও হওয়া উচিত। তখন আমি সিদ্ধান্ত নিই, ৬৪ দিনে বাংলাদেশের ৬৪ জেলা সাইকেলে পাড়ি দেব। পাশাপাশি প্রত্যেক জেলায় যেসব সাইক্লিং কমিউনিটি আছে বা যারা স্পোর্টস অ্যাডভেঞ্চার ভালোবাসে, তাদের সাথে দেখা করব এবং আমি আমার অভিজ্ঞতা ভাগ করে নেব।"

এই প্রজেক্টটির মাধ্যমে তাম্মাত দেশের বিভিন্ন জায়গায় ঘুরে ঘুরে সেসব জায়গার ছেলে-মেয়েদের খেলাধুলার প্রতি আগ্রহ জুগিয়েছেন। কারো মনে কোনো প্রশ্ন থাকলে সেগুলোর জবাব দিয়েছেন।

তবে এই অভিজ্ঞতা তাম্মাতকে অনেক মধুর স্মৃতি উপহার দিয়েছে। বিভিন্ন জেলার মানুষ তাম্মাতকে আপন করে নিয়েছেন। আপ্যায়ন করেছেন ঘরের ছেলের মতো। তিনি বলেন, "সাইকেলে একা ঘোরা আমি অনেক উপভোগ করি। নতুন কোনো জায়গায় গিয়ে সেখানকার মানুষের সাথে যখন পরিচিত হই, তখন তারা নিজেরাই তাদের সংস্কৃতি সম্পর্কে জানায়। তারা আমাকে তাদের বাসায় নিয়ে যায়। যেটা আসলে আমার খুব ভালাও লাগে'

ছবি: সৌজন্যে প্রাপ্ত

বাজি ধরে মেসিকে ট্রিবিউট!

বন্ধুদের সাথে বাজি ধরে মানুষ কত কী করে! কেউ হয়তো খাবারের আবদার মেটায় আবার কেউবা উপহার সামগ্রীর! এখানে ব্যতিক্রম তাম্মাত। বন্ধুদের সাথে বাজি ধরে সাইকেলকে সঙ্গী করে মেসির জন্য পাড়ি দিয়েছেন ১,০০৩ কিলোমিটার পথ।

ঘটনার সূত্রপাত ২০২২ সালে। মেসির বিশ্বকাপ জয়ের আনন্দে তাম্মাত সিদ্ধান্ত নেন, পাড়ি দেবেন হাজার কিলোমিটার পথ। ছোটবেলা থেকেই তিনি ছিলেন মেসির অন্ধভক্ত। ২০১৪ সালে বিশ্বকাপ জয়ের মুখ থেকে ফিরে আসার দুঃখ যেমন মেসিকে কাঁদিয়েছিল, তেমনি কাঁদিয়েছিল তাম্মাতকেও। এবার তাই শুরু থেকেই মেসির জয়ের জন্য মুখিয়ে ছিলেন তিনি।  

তাম্মাত বলেন, "ফাইনালে যখন খেলতে নামে আর্জেন্টিনা, তখন জানতে পারলাম এটা মেসির ১,০০৩ তম ম্যাচ। তখন বন্ধুদের সামনে মুখ ফসকে বেরিয়ে যায়, যদি মেসি জেতে তাহলে ওকে ম্যাচের জন্য ১,০০৩ কিলোমিটার ট্রিবিউট দেব। বিশাল একটা যুদ্ধ করে ফাইনাল জেতে আর্জেন্টিনা। যেহেতু কথা দিয়েছি, তাই কথার ওপর ভরসা করে বেরিয়ে পড়ি টেকনাফ থেকে তেঁতুলিয়া।"

মেসির জন্য পুরো যাত্রা শেষ করেন তাম্মাত ৯ দিনে। এ সংবাদ বাংলাদেশ ছাড়িয়ে পৌঁছে যায় আর্জেন্টিনাতেও। সেখানকার গণমাধ্যমও যোগাযোগ করে তাম্মাতের সাথে। আমন্ত্রণ জানায় আর্জেন্টিনার সড়ক পাড়ি দেওয়ার জন্য।

ছবি: সৌজন্যে প্রাপ্ত

তাম্মাত বলেন, "আমি যদি সাপোর্ট পাই তাহলে মেসির শহরে গিয়ে আর্জেন্টিনার দীর্ঘতম সড়ক সাইকেলে পাড়ি দেব। এই সড়ক শুরু হয়েছে পৃথিবীর শেষ সীমানা থেকে। আমি শেষ সীমানা থেকে মেসির শহর রোসারিও পর্যন্ত ৪,৭০০ কিলোমিটার সাইকেলিং করতে চাই। বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশনে এটি নিয়ে একটি চিঠিও আমি দেই, যাতে মেসি পর্যন্ত এই বার্তা পৌঁছায়।"

অর্থ সংকটের কারণে এবং যথাযথভাবে স্পন্সর না পাওয়ায় এখনও তাম্মাতের আর্জেন্টিনা যাত্রার স্বপ্ন সফল হয়নি। তবে তাম্মাত আশাবাদী, অচিরেই আর্জেন্টিনা যাত্রা সফল হবে।

যথাযথ স্পন্সর না পাওয়ার চ্যালেঞ্জ

বিশ্বভ্রমণের প্রতি যাত্রায় তাম্মাত তার পছন্দের সাইকেলকে সঙ্গী হিসেবে নিয়ে যান। তাতে চড়ে পাড়ি দেন মাইলের পর মাইল। তার মতে, সাইকেলের চড়ে বিশ্বভ্রমণের মূল বাধা আসলে অর্থ সংকট। তাছাড়া আমাদের পারিপার্শ্বিক পরিবেশও অতটা উদারমনস্ক হতে পারেনি।

বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে ক্রিকেট-ফুটবল যতটা জনপ্রিয়, ততটা জনপ্রিয় অন্যান্য খেলাধুলা নয়। তাই স্পন্সরদের প্রতি খানিকটা ক্ষোভ প্রকাশ করে তাম্মাত বলেন, "অন্যান্য স্পোর্টসে যারা কাজ করে তাদের প্রতি স্পন্সরদের কিছুটা অনীহা কাজ করে বলে আমার মনে হয়। আমার কাছে মনে হয়েছে, যদি প্রাইভেট কোম্পানিগুলো ক্রিকেট-ফুটবল ছাড়াও অন্যান্য স্পোর্টসে যারা কাজ করে তাদের সাহায্য করে, তাহলে সেখান থেকে বড় কমিউনিটি তৈরি হবে। বাংলাদেশে সাইক্লিং কমিউনিটি এখন অনেক শক্ত হয়ে গেছে।"

"বড় বড় প্রতিষ্ঠান যেগুলো আছে, যারা আসলে স্পন্সর করে, তাদের একটু সমর্থন দরকার। সেই সাপোর্ট অবশ্য এখনও পুরোপুরি খোলামেলা হয়নি। তাই যারা খেলাধুলার সাথে যুক্ত হবে, তাদের অর্থনৈতিক সংকট একটা বড় বাধা থাকবে। এটা মেনে নিয়েই আগাতে হবে আসলে," বলেন তাম্মাত।

ছবি: সৌজন্যে প্রাপ্ত

স্বপ্ন এভারেস্টের বেস ক্যাম্পে ভ্রমণ

তাম্মাতের স্বপ্ন, এভারেস্টের বেস ক্যাম্পে প্রথম বাংলাদেশি হিসেবে সাইকেল নিয়ে ভ্রমণ। এখন পর্যন্ত সফর দক্ষিণ এশিয়াতে সীমাবদ্ধ হলেও একদিন পুরো বিশ্ব সাইকেলে ঘুরবেন এমন পরিকল্পনাও আছে তার। গিনেজ বুকের তালিকায় নিজেকে দেখতে পাওয়ার স্বপ্নও দেখেন তাম্মাত। ইতোমধ্যে গিনেজবুকে নাম তোলার জন্য হাত ছেড়ে দ্রুত সাইকেল চালানোর জন্য চেষ্টাও চালিয়েছিলেন। পরিস্থিতি অনুকূলে না থাকায় প্রথম যাত্রায় ব্যর্থ হন। তবে দ্রুতই আবার চেষ্টা করে গিনেজ বুকের তালিকায় নিজেকে দেখতে চান তিনি।

নতুনদের জন্য পরামর্শ আছে কিনা জানতে চাইলে তাম্মাত বলেন, "এখানে পরিপূর্ণভাবে নিজের ডেডিকেশন থাকতে হবে। এটা হচ্ছে এমন একটা প্ল্যাটফর্ম, যেটা আসলে উপভোগ করতে হবে। আমি সকালে সাইকেল চালাতে বের হবো, এটা যাতে কোনোভাবে আমার জন্য বোঝা হয়ে না দাঁড়ায়। আর এখন বাংলাদেশের জেলা-উপজেলা পর্যায়ে স্পোর্টসের বিভিন্ন ছোট ছোট গ্রুপ কমিউনিটি তৈরি হয়েছে; যেকোনো একটি কমিউনিটিতে যুক্ত হয়ে তাদের সাপ্তাহিক ইভেন্টগুলোতে যোগ দেওয়া যেতে পারে।'

ছবি: সৌজন্যে প্রাপ্ত

তবে তাম্মাতের সফলতায় তার পরিবারের উদ্বেগ এখন কমেছে। বরং তারা এখন তাম্মাতের রঙিন দুনিয়ার নিয়মিত দর্শক। একগাল হেসে তাম্মাত বললেন, "এখন আমার আম্মু আমাকে ফোন দিয়ে জিজ্ঞাসা করেন, ভিডিও কখন আসবে? কেন ভিডিও আসছে না।"

Related Topics

টপ নিউজ

সাইক্লিস্ট / সাইকেল ভ্রমণ / ভ্রমণ / খেলাধুলা

Comments

While most comments will be posted if they are on-topic and not abusive, moderation decisions are subjective. Published comments are readers’ own views and The Business Standard does not endorse any of the readers’ comments.

MOST VIEWED

  • বীর মুক্তিযোদ্ধার সংজ্ঞায় পরিবর্তন এনে অধ্যাদেশ জারি; আহতদের সেবাদানকারী চিকিৎসক, নার্সরাও পেলেন স্বীকৃতি
  • ডিজিটাল ওয়ালেটের লাইসেন্স পেল গ্রামীণ টেলিকমের প্রতিষ্ঠান 'সমাধান'
  • আঞ্চলিক পরমাণু জোট নিজ দেশে হলে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে চুক্তি করবে ইরান
  • টাকার নতুন নোটের খোলাবাজারে দ্বিগুণ মূল্য, গ্রাহক হয়রানি চরমে
  • কোম্পানির তহবিলের ওপর করের চাপ কমাল সরকার
  • দোকানে হানা দিলো হাতি, খাবার খেয়ে ‘টাকা না দিয়েই’ পালালো!

Related News

  • মাঠ থেকে মোবাইল: হারিয়ে যাওয়া গ্রামীণ খেলার জায়গায় যেভাবে অনলাইন গেমস
  • বিশ্বের দীর্ঘতম ট্রেনযাত্রা, কিন্তু শেষ করতে পারেনি কেউই 
  • অ্যান্টার্কটিকায় চোখধাঁধানো কয়েক দিন
  • ‘পৃথিবী খুবই শান্ত দেখাচ্ছিল’: মহাকাশ ভ্রমণের পর ফিরলেন মার্কিন পপতারকা কেটি পেরিসহ ৬ নারী
  • মার্কিন পপতারকা কেটি পেরিসহ মহাকাশ ভ্রমণে যাচ্ছেন ৬ নারী

Most Read

1
বাংলাদেশ

বীর মুক্তিযোদ্ধার সংজ্ঞায় পরিবর্তন এনে অধ্যাদেশ জারি; আহতদের সেবাদানকারী চিকিৎসক, নার্সরাও পেলেন স্বীকৃতি

2
বাংলাদেশ

ডিজিটাল ওয়ালেটের লাইসেন্স পেল গ্রামীণ টেলিকমের প্রতিষ্ঠান 'সমাধান'

3
আন্তর্জাতিক

আঞ্চলিক পরমাণু জোট নিজ দেশে হলে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে চুক্তি করবে ইরান

4
অর্থনীতি

টাকার নতুন নোটের খোলাবাজারে দ্বিগুণ মূল্য, গ্রাহক হয়রানি চরমে

5
অর্থনীতি

কোম্পানির তহবিলের ওপর করের চাপ কমাল সরকার

6
অফবিট

দোকানে হানা দিলো হাতি, খাবার খেয়ে ‘টাকা না দিয়েই’ পালালো!

EMAIL US
contact@tbsnews.net
FOLLOW US
WHATSAPP
+880 1847416158
The Business Standard
  • About Us
  • Contact us
  • Sitemap
  • Privacy Policy
  • Comment Policy
Copyright © 2025
The Business Standard All rights reserved
Technical Partner: RSI Lab

Contact Us

The Business Standard

Main Office -4/A, Eskaton Garden, Dhaka- 1000

Phone: +8801847 416158 - 59

Send Opinion articles to - oped.tbs@gmail.com

For advertisement- sales@tbsnews.net