Skip to main content
  • মূলপাতা
  • অর্থনীতি
  • বাংলাদেশ
  • আন্তর্জাতিক
  • খেলা
  • বিনোদন
  • ফিচার
  • ইজেল
  • মতামত
  • অফবিট
  • সারাদেশ
  • কর্পোরেট
  • চাকরি
  • প্রবাস
  • English
The Business Standard বাংলা

Monday
September 29, 2025

Sign In
Subscribe
  • মূলপাতা
  • অর্থনীতি
  • বাংলাদেশ
  • আন্তর্জাতিক
  • খেলা
  • বিনোদন
  • ফিচার
  • ইজেল
  • মতামত
  • অফবিট
  • সারাদেশ
  • কর্পোরেট
  • চাকরি
  • প্রবাস
  • English
MONDAY, SEPTEMBER 29, 2025
সাগর পাবলিশার্স : বেইলি রোডের যে বইয়ের দোকানই ছিল বইপ্রেমীদের তীর্থস্থান 

ফিচার

আসমা সুলতানা প্রভা
03 January, 2024, 04:15 pm
Last modified: 04 January, 2024, 02:53 pm

Related News

  • উলন দাস পাড়া: ঢাকার শেষ আদি জেলেপল্লী? 
  • বেইলি রোডে বহুতল ভবনের আগুন নিয়ন্ত্রণে, ১৮ জনকে জীবিত উদ্ধার
  • সাভার ও আশুলিয়ায় ফুটপাতে অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদে অভিযান, পুলিশের গাড়ির কাঁচ ভাঙচুর
  • একটি যুগের পরিসমাপ্তি: বন্ধ হচ্ছে ৪৫ বছরের ক্যামব্রিজ টাইপরাইটার কোম্পানি
  • কয়েক ঘণ্টা বন্ধের পর খুলে দেওয়া হলো যমুনা ফিউচার পার্ক 

সাগর পাবলিশার্স : বেইলি রোডের যে বইয়ের দোকানই ছিল বইপ্রেমীদের তীর্থস্থান 

কাউন্টারে চোখ পড়তেই দেখা গেল বোরকা পরা এক নারী বসে আছেন। এই নারীর মুখে দুঃখের ছাপ স্পষ্ট। তার মুখের অভিব্যক্তি সেটিকে আরও বেশি করেই জানান দিচ্ছে। কেউ তার সাথে কথা বলতে চাইলে এড়িয়ে যাচ্ছেন। আবার  বলতে গেলেও কয়েকবার থেমে  যাচ্ছেন। তার এমন মলিন চেহারার পেছনের কারণটা জানা গেলো আরো কিছুক্ষণ পর।
আসমা সুলতানা প্রভা
03 January, 2024, 04:15 pm
Last modified: 04 January, 2024, 02:53 pm
ছবি: সুস্মিতা চক্রবর্তী মিশু

সন্ধ্যা নেমে আঁধার ঘনিয়ে এসেছে তখন। কিছুটা কুয়াশায় আচ্ছন্ন চারপাশ। কিন্তু তাতে বেইলি রোডের চিরচেনা সেই ব্যস্ত পরিবেশের কোনো ব্যত্যয় ঘটেনি। রাস্তার দু'পাশে সারিবদ্ধ অসংখ্য দোকান। শত শত মানুষের আনাগোনা সেখানে। একটু একটু করে সে সংখ্যা বেড়েই চলেছে। এদের কেউ কেউ পথে দাঁড়িয়ে খোশগল্পে নিমগ্ন, আবার কেউ কেউ স্ট্রিট ফুড খেতে খেতে তুলছেন তৃপ্তির ঢেকুর। তবে কিছু মানুষের এইসবের কোনো কিছুতেই আগ্রহ নেই। তাদের সমস্ত উচ্ছ্বাস একটি দোকানকে ঘিরে।

এই মানুষগুলোর ভিড় করা দেখে আন্দাজ করা যাচ্ছিল ঠিক কোন দোকান হতে পারে সেটি। প্রায় সবার কাছেই পরিচিত এই দোকানের নাম, 'সাগর পাবলিশার্স'। এই দোকান নিয়ে চেনাজানা নেই এমন মানুষ বেইলি রোডে খুঁজে পাওয়া দুষ্করই বটে। যারা বইয়ের পাতায় শান্তি খুঁজে বেড়ান, একান্ত ব্যক্তিগত সময়ে বই যাদের নিত্যদিনের সঙ্গী, তাদের পছন্দের ঠিকানা এই সাগর পাবলিশার্স।

দোকানের মালিক জুয়েলই ছিলেন 'মধ্যমণি'

মানুষের এত ভিড় দেখে কেউ কেউ হয়ত ভাবতেই পারেন, কী এমন আছে এই দোকানে?  খুব আহামরি কিছু ভেতরে  আছে তা তো নয়। ছোট্ট একটি দোকান। ৩-৪ জন দাঁড়ানোই যেন রীতিমতো কঠিন ব্যাপার। ধূসর রঙের পুরোনো দেয়াল। সেখান  থেকে খসে পড়ছে পলেস্তারা।  ধুলো জমে যাওয়া পুরাতন বইয়ের গন্ধ দোকানজুড়ে। হয়ত দীর্ঘদিন হাতই পড়েনি অনেক বইতে। কিন্তু তবুও মানুষ এসে দেখে যাচ্ছেন একবার। বই কিনছেন, কথা বলে যাচ্ছেন দোকানের কর্মচারী রাসেলের সাথে। মানুষের এমন আগ্রহ এবং উচ্ছ্বাস দেখার পরে  বুঝতে বাকি থাকার কথা নয়, দোকানের সাথে জড়িয়ে আছে এই মানুষগুলোর হাজারো স্মৃতি। দীর্ঘদিন বন্ধ ছিল এটি।  পরে পুনরায় চালু হলে পাঠকরা যেন স্মৃতির ডায়েরি ঘেটে দেখার সুযোগ পেয়ে যান আরও একবার।

কাউন্টারে চোখ পড়তেই দেখা গেল বোরকা পরা এক নারী বসে আছেন। এই নারীর মুখে দুঃখের ছাপ স্পষ্ট। তার মুখের অভিব্যক্তি সেটিকে আরও বেশি করেই জানান দিচ্ছে। কেউ তার সাথে কথা বলতে চাইলে এড়িয়ে যাচ্ছেন। আবার  বলতে গেলেও কয়েকবার থেমে  যাচ্ছেন। তার এমন মলিন চেহারার পেছনের কারণটা জানা গেলো আরো কিছুক্ষণ পর। তিনি এই দোকানের মালিক জুয়েলের বড় বোন।

ছবি: বিধান রিবেরুর সৌজন্যেপ্রাপ্ত

সাগর পাবলিশার্সের সাথে জড়িয়ে আছে দুই ব্যক্তির নাম। যারা ছিলেন মানুষের সবচেয়ে প্রিয় দুটি মুখ। মুক্তিযোদ্ধা  এম আর আখতার মুকুল এবং জুয়েল। আশির দশকের দিকে এম আর আখতার মুকুল গড়ে তুলেছিলেন সাগর পাবলিশার্স।। তখন বেইলি রোডের ছেলে-বুড়ো সকলের প্রিয় স্থান হয়ে ওঠে  এটি। নিজের ছেলের নামেই দোকানের নামকরণ করেছিলেন তিনি। মুকুল নিজেই করতেন দোকানের দেখাশোনা।  আড্ডায় তিনিও মেতে থাকতেন সবার সাথে। জমিয়ে তুলতেন গল্পের আসর। কিন্তু কোনো একটি কারণে  এটি বিক্রি করে দেন জুয়েলের কাছে। সেই থেকে জুয়েল হয়ে যান  এই দোকানের মালিক। এত বছর তিনিই চালিয়ে নিয়ে যাচ্ছিলেন এটি। ধীরে ধীরে সবার প্রিয় মুখও হয়ে ওঠেন জুয়েল। তবে তা দীর্ঘ সময়ের জন্য নয়। সদা হাস্যজ্বল  এই ব্যক্তি  বছর তিনেক আগে মস্তিষ্কে রক্তক্ষরণের ফলে মারা যান। তার অকালমৃত্যু  মেনে নিতে পারেননি পরিবারের কেউই। জুয়েলের এমন মৃত্য পীড়া দিতে থাকে তার বাবাকে। ছেলের শোকে তিনিও মারা যান। পরিবারের দুইজন মানুষকে হারানোর যে যন্ত্রণা, সেটিই যেন স্পষ্ট হয়ে ফুটে উঠেছে কাউন্টারে বসে থাকা তার বড় বোনের মুখে।

জুয়েলের মৃত্যু পরে প্রাণ হারায় এই দোকান। কিছুই আগের মত নেই এখন। বন্ধ হয়ে পড়ে ছিল দীর্ঘদিন। পাঠকরা দোকান খোলার অপেক্ষায় থাকতেন। অনেকদিন পর তার বোনই সেটি আবার খোলার সিদ্ধান্ত নেন। কিন্তু সেটিও সীমিত পরিসরে। মাসে ২-৪ বার খোলা থাকে এটি। তাও আবার রাতে। ফলে পুরনো কোনো পাঠক দোকান খোলা পেলেই উচ্ছ্বসিত মনে একটিবার দেখে আসছেন তাদের প্রিয় বইয়ের দোকানটি।

'আড্ডার এক জমজমাট পরিবেশ বিরাজ করতো সেখানে'

কিন্তু এক সময় এমনটা ছিল না। অন্যান্য বুক হাউজের মত শুধু বই ক্রয়-বিক্রয় হতো তা নয়। এখানে মন খুলে গল্প করতেন সবাই। গ্রাহকরাই ছিলেন দোকানের প্রাণ। ঘণ্টার পর ঘণ্টা আড্ডা হতো। দিন পেরিয়ে সন্ধ্যা গড়ালেও চলত সেটি। গান হতো। সাথে চা-মুড়ি মাখার উৎসব।  শামিল হতেন অনেক বিখ্যাত ব্যক্তিরাও। বই পড়তে পড়তে গল্পের আসর জমাতেন তারা।  অট্টহাসিতে মেতে থাকত চারপাশ। দিন বা রাত, যে সময়ই হোক, পাঠকের উপচে পড়া ভিড়, তাদের বই কেনার ধুম পড়ে যেত তখন।  কিন্তু তাতে বিন্দুমাত্র বিরক্তবোধ করতেন না জুয়েল। বরং হাসিমুখে সবাইকে আমন্ত্রণ জানাতেন। আড্ডার মাঝে চায়ের জোগান দিতেন তিনি। সুযোগ করে দিতেন  বান্ধবরা একসাথে এসে কিনে নিতেন পছন্দের বই। দূর থেকেও অনেকেই আসতেন প্রিয় বইয়ের সন্ধানে৷ আশ-পাশের স্কুলের  শিক্ষার্থীরা নিয়ম করে ঢুঁ মেরে যেতেন একবার।

সাগরের নিয়মিত গ্রাহক বিধান রিবেরু। প্রায় বিভিন্ন বইয়ের দোকানে ঘুরে ঘুরে সংগ্রহ করেন পছন্দের বই। সাগর পাবলিশার্স তার একটি। সেখান থেকে কিনে নিতেন নন-ফিকশন বই। তিনি বলেন, "প্রায় দোকানে ভিড় থাকত। দাঁড়ানোর জায়গা পর্যন্ত ঠিকঠাক পাওয়া যেত না। আড্ডার এক জমজমাট পরিবেশ ছিল সেখানে। জুয়েল তাদের সবার জন্য চায়ের ব্যবস্থা করে দিতেন। বইয়ের সাথে তারা অনেক ভালো একটা সময়ও কাটাতেন। এভাবে জমিয়ে গল্প করে বইয়ের সাথে সময় কাটানো ছিল নিত্যদিনের দৃশ্যপট।"

"অফিস শেষে সন্ধ্যার পর প্রায়ই সাগরে যেতাম আমি। ১৫ বছর ধরে এটিই ছিল আমার নিয়মিত রুটিন। তবে যে সময়েই যাই না কেন, উৎসবমুখর পরিবেশ থাকত দোকানের অন্দরে। অনেক সময় আড্ডার জন্য বই বিক্রি বিঘ্নিত হতো। পরিসরে ছোট ছিল বলে অনেকেই ঢুকতে পারতেন না ভেতরে। ফলে বই না কিনে ফিরে যেতেন কেউ কেউ"- বলছিলেন সাগর পাবলিশার্সের আরেক পাঠক জালাল আহমেদ।

এখন সেই জৌলুস, জমজমাট পরিবেশ আর নেই। পাঠকের আনাগোনা কমেছে। গল্পের আসরও জমিয়ে তুলে না কেউ। জুয়েলের মৃত্যুর মধ্য দিয়ে যেন প্রাণ হারাল এই দোকানটিও।

'আমাদের কাছে সাগর পাবলিশার্স ছিল একটি তীর্থস্থানের মতো'

'১৯৯২ সালের কথা। আমি তখন ইন্টারের শিক্ষার্থী। কুমিল্লা থেকে প্রথম ঢাকায় আসি। ভর্তি হই ভিকারুননেসা নুন  কলেজে। সে সময়ে বেইলি রোড ছিল সবচেয়ে ব্যস্ত এবং একই সাথে শান্তির জায়গা। এসেই সবার মুখে বেইলি রোডের সুইস বেকারি, সাগর পাবলিশার্স নিয়ে অনেক গল্প শুনতাম। সেখানের আড্ডার কথা শুনতাম। কলেজ শেষ করে আমিও বন্ধুদের সাথে সাগর পাবলিশার্সে যাওয়া শুরু করি। বই কিনতে না পারলেও নতুন কোন বই এসেছে, কোনটা বেশি বিক্রি হচ্ছে সেটা দেখার জন্য হলেও  একবার ঘুরে আসতাম সেখান থেকে'- বলছিলেন সাগর পাবলিশার্সের একজন নিয়মিত পাঠক লীনা পারভীন।

এই দোকানের নারী পাঠক ছিলেন সর্বাধিক। ভিকারুননিসা নুন স্কুল এন্ড কলেজ, সিদ্ধেশ্বরী গার্লস স্কুলে পড়তেন যারা সবাই এখানে একবার হলেও বই কিনতে আসতেন। লীনা পারভিন ছিলেন তাদেরই একজন।

তবে দূর থেকেও বই কিনতে আসতেন কেউ কেউ। সায়কা শাহরিন এমনই একজন।  থাকতেন সোবহানবাগে। সেই সুবাদে নিয়মিত বই কিনতেন জ্ঞানকোশ থেকেই। কিন্তু সেখানে ভারতীয় সব লেখকদের বই পেতেন না বলে হানা দিতেন সাগর পাবলিশার্সে। মতি নন্দী ছিলেন তার প্রিয় লেখক। কিন্তু তার বই খুব বেশি পাওয়া যেতো না বলে জুয়েলের কাছে অর্ডার দিয়ে রাখতেন পূর্বেই। জুয়েলও মনে করে নিয়ে আসতেন তার পছন্দের বই।

সায়কা বলেন, 'জুয়েল ভাই খুবই হেল্পফুল মানুষ ছিলেন। অন্য কোনো বুক হাউজে এত হেল্পফুল আচরণ করে কিনা আমার জানা নেই। তার(জুয়েল) অন্যতম একটি গুণ ছিলো তিনি বই নিয়ে খুব জানতেন। অনেক সময় লেখকের নাম বলতে না পারতাম না। তখন তিনি শুরু বিবরণ শুনেই বুঝে যেতেন কী চাচ্ছি।'

'বেইলি রোডের এই দোকানটি ছিলো অনেক বুদ্ধিজীবীর আড্ডাস্থল। প্রায় অনেক চিন্তাশীল মানুষদের দেখা যেতো একপ্রকার বুদ্ধির চর্চা হতো এখানে। সাহিত্য,রাজনীতি, দর্শন বিষয়ে আলাপ হতো জোরেশোরে। আমিও অনেক সময় শরিক হয়েছি তাদের আলাপে। ফলে আমাদের কাছে সাগর পাবলিশার্স ছিল তীর্থস্থানের মতো'-কথাগুলো বলতে বলতে বিধান যেন হারিয়ে গেলেন পুরোনো সেই দিনগুলোতে।

ভিড় করতেন বিখ্যাত ব্যক্তিরাও

সাগর পাবলিশার্স সবার কাছে পরিচিত হওয়ার আরও একটি অন্যতম কারণ ছিল। প্রায় অনেক নাটকের শ্যুটিং হতো এখানে। সে সময়ে নাটকের ব্যাপক জনপ্রিয়তা ছিল। নাট্যাঙ্গনের অনেক মানুষ এসে ভিড় করতেন শ্যুটিং এর কাজে। এর বাইরে বই নিয়েও আড্ডায় শামিল হতেন তারা। ফলে এই বিষয়টিকে কেন্দ্র করে মানুষের আগ্রহও বাড়তে থাকে।

চাকরির সুবাদে বেইলি রোডেই বাস করতেন পাঠক জালাল আহমেদ। বই পড়তে এবং ভারতীয় বিভিন্ন লেখকের বই সংগ্রহ করতে ভালোবাসেন তিনি। সাগর পাবলিশার্সে বই কিনতে যেতেন প্রায়ই। এমনকি মাঝেমধ্যে অর্ডার দিয়ে বই আনাতেন। এর সূত্র ধরে জুয়েলের সাথে ভালো একটি সম্পর্ক হয়ে যায় তার।

(বাঁ থেকে) জুয়েল, কেরামত মওলাসহ অন্যরা। ছবি: সংগৃহীত

তিনি বলেন, 'দোকানে গেলে প্রায়ই দেখা হতো কেরামত মওলা (অভিনেতা), ওবায়দুল কাদের, আসাদ্দুজ্জামান নূরের সাথে। মন্ত্রী হওয়ার পরও তারা আসতেন। বিভিন্ন ইস্যু, বই নিয়ে কথা বলতেন তারা। অনেকবার তাদের সাথে দেখা হতো। তারাও আমাকে ব্যক্তিগতভাবে চিনতেন। অন্য যারা আসতেন তাদের সাথেও পরিচয় ছিল। আমরা গেলে জুয়েল আমাদের চা খাওয়াতেন। এভাবে করে অনেকের সাথেই আমার ভালো সম্পর্ক তৈরি হয়।'

'আমি কলেজ শেষ করেই যেতাম দোকানে। দোকানের এক কোণায় বসে গল্প করতে দেখা যেতো আবুল হায়াত, রামেন্দু মজুমদার, আবদুল্লাহ আল মামুনকে। তারা বই কিনতেন। বসে বসে সে বই পড়তেন। এমনকি শমী কায়সার, বিপাশা হায়াতরাও নাটকের শ্যুটিং এর জন্য আসতেন সেখানে'- বলছিলেন লীনা।

প্রেমিক-প্রেমিকার সাক্ষাতের জায়গা ছিল সাগর পাবলিশার্স

শুধু যে বই কেনার উদ্দেশ্যে বা বিখ্যাত ব্যক্তিদের একনজর দেখার জন্য দোকানে যেতেন তা নয়। মানুষের দেখা করার স্থান ছিল এটি। নতুন প্রেমিক দেখা করবেন তার প্রেমিকার সাথে। কিন্তু প্রেমিকা দ্বিধায় পড়তেন ঠিক কোন ঠিকানা দেওয়া যায়। পরক্ষণেই মনে হতো এই দোকানের চেয়ে ভালো জায়গা আর কী হতে পারে । ব্যস , যে চিন্তা সে কাজ । প্রেমিকের কাছে পাঠানোর প্রেমিকার চিঠিতে ঝরঝরে ছাপা অক্ষরে লিখে দেওয়া হতো সাগর পাবলিশার্সের ঠিকানা। প্রেমিকের কাজও সহজ হয়ে যেতো এতে।  বেইলি রোড এসে যে কাউকে জিজ্ঞেস করলেই সহজে বলে দিতেন ঠিকানা। ফলে কোনো ভোগান্তি ছাড়াই প্রেমিক পেয়ে যেতেন তার প্রেমিকার দেখা।

"আমাদের সময়ে প্রেমও হতো বইকে কেন্দ্র করে। বই পড়তে পড়তে প্রেম , বই নিয়ে আলাপ করতে করতে প্রেম এসবই হতো।  ভিকারুন্নেসা নুন, সিদ্ধেশ্বরী স্কুল-কলেজে যারা পড়তেন প্রত্যেকের ভালোবাসার মানুষের সাথে এখানে স্মৃতি থাকার কথা- খানিকটা রসবোধ যুক্ত করেই কথাগুলো বলছিলেন লীনা পারভীন।

বিধান বলেন, 'আমি তখন নটর ডেম কলেজে পড়তাম। আমার স্ত্রী পড়তো সিদ্ধেশ্বরী গার্লস স্কুলে। আমরা যখন একে অপরের সাথে দেখা করতাম সাগর পাবলিশার্সকেই স্থান হিসেবে বেছে নিতাম। আমার স্ত্রী আমার জন্য সেখানে অপেক্ষা করতেন। আমরা বই কিনতাম একসাথে। এখনো আমরা বইয়ের দোকানে একসাথে যাই।'

'ওখানে যাওয়া প্রেসটিজিয়াস ইস্যুও ছিল'

'সুইস প্লাস এ একটু ঢুঁ মেরে দেখি
কম্পিটেসন চলে কে সুন্দরি বেশি
সাগর পাবলিশার্স– এ অনেকেই ঢুকে
অকারণে কেউ কেউ ঘোরাঘুরি করে
মনে হয় যেন সর্বদা উৎসব চলে
শান্তি নিকেতনি ব্যাগ কার কাঁধে
আর্ট কালচার যেন সব এখানে'

উপরের লাইনগুলো আইয়ুব বাচ্চুর গাওয়া 'বেইলি রোড' গানের। সাগর পাবলিশার্স তখন এতই জনপ্রিয় ছিল যে অনেক নাটক, গানেও স্থান করে নিয়েছিল।

এই দোকানে প্রায় আড্ডা দিতেন চিন্তাশীল, সৃজনশীল গোছের মানুষেরা। চায়ের কাপে চুমুক দিতে দিতে বইয়ের দুনিয়ায় হারিয়ে যেতেন তারা। তাদের আড্ডার বিষয়বস্তুও ছিল বইকে কেন্দ্র করে। যে কেউ যেকোনো সময়ে ভেতরে ঢুকতেই এমন ব্যক্তিদের সাক্ষাৎ পেতেন। বিভিন্ন জ্ঞানী ব্যক্তিদের দেখতে পেতেন বলে লীনা পারভীনের মতো অনেকের মতে সেখানে  যাওয়া ছিল সম্মানের বিষয়। লীনা বলেন, "অসাধারণ চিন্তার মানুষ এখান থেকেই বই কিনে নিতেন।বই নিয়ে বসে পড়তেন।

তাদের এভাবে সামনে থেকে দেখতে পাওয়া অন্যরকম ব্যাপার ছিল আমাদের জন্য। তাই ওখানে যাওয়া প্রেস্টিজিয়াস ইস্যুও ছিল।"

ড. মুহাম্মদ ইউনূসের ভাই ও উপস্থাপক মুহাম্মদ জাহাঙ্গীর ও জুয়েল। ছবি: সংগৃহীত।

তবে সবার প্রিয় এই বইয়ের দোকান আর থাকবে না বলেই জানান জুয়েলের বড় বোন।  বিক্রি করে দেওয়া হবে এটি। সেখানটায় গড়ে উঠবে উঁচু দালান।  দোকান বন্ধের ব্যাপারে বিষণ্ন কণ্ঠে তিনি বলেন, 'যতদিন আমার ভাই ছিল এই দোকানে, ততদিন জৌলুস ছিল। এখন আমার ভাই নাই, সবকিছুই তার সাথে শেষ হয়ে গেছে।  আগের মত দোকানে আর ভিড় নাই, বিক্রি নাই।'

একটা বই কেবল বই নয়, চিন্তার বাহকও বটে।  মানুষ তার সেই নতুন চিন্তার খোঁজ করতেই আসতেন সাগর পাবলিশার্সে। তাই পাঠকদের স্মৃতির কোঠায় আজীবন রয়ে যাবে এই নাম। সাথে কেউ কেউ হয়ত মনে করবে জুয়েলের কথাও! হয়ত আবার শহরের অলি গলিতে দেখা মিলবে এমন কোনো এক দোকান।  সেখানের সুপ্ত বার্তাও হবে, 'তবুও বই পড়ুন'।

Related Topics

টপ নিউজ

বইপ্রেমী / বেইলি রোড / দোকান

Comments

While most comments will be posted if they are on-topic and not abusive, moderation decisions are subjective. Published comments are readers’ own views and The Business Standard does not endorse any of the readers’ comments.

MOST VIEWED

  • কিয়ার স্টারমারের সঙ্গে আমিরুল ইসলাম (ডানে)। ফাইল ছবি
    ৪১ জন আত্মীয়-পরিজনকে আনতে ভিসার তদবির, যুক্তরাজ্যে তদন্তের মুখে লেবারদলের মেয়র
  • স্ট্যান্ডার্ড চার্টার্ড ব্যাংকের ক্রেডিট কার্ড থেকে যেভাবে ২৭ লাখ টাকা হাতিয়ে নিল প্রতারক চক্র
    স্ট্যান্ডার্ড চার্টার্ড ব্যাংকের ক্রেডিট কার্ড থেকে যেভাবে ২৭ লাখ টাকা হাতিয়ে নিল প্রতারক চক্র
  • বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। ফাইল ছবি: টিবিএস
    প্রফেসর ইউনূস যখন কথা বলছিলেন, মনে হচ্ছিল জিয়াউর রহমানের কণ্ঠ শুনছি: মির্জা ফখরুল
  • ছবি: সংগৃহীত
    ভারতে থালাপতি বিজয়ের জনসভায় পদদলিত হয়ে নারী-শিশুসহ অন্তত ৩৯ জন নিহত
  • নিষেধাজ্ঞা পেছাতে ১৫ সদস্যের জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদে রাশিয়া ও চীনের পক্ষে আনা প্রস্তাবে মাত্র চারটি দেশ সমর্থন দেয়। ছবি: রয়টার্স
    রাশিয়া, চীনের চেষ্টা ব্যর্থ, ইরানের ওপর জাতিসংঘের নিষেধাজ্ঞা পুনর্বহাল হচ্ছে
  • পিয়ানোর আভিজাত্য: ঢাকায় পিয়ানো কারা শেখে, কোথায় শেখে
    পিয়ানোর আভিজাত্য: ঢাকায় পিয়ানো কারা শেখে, কোথায় শেখে

Related News

  • উলন দাস পাড়া: ঢাকার শেষ আদি জেলেপল্লী? 
  • বেইলি রোডে বহুতল ভবনের আগুন নিয়ন্ত্রণে, ১৮ জনকে জীবিত উদ্ধার
  • সাভার ও আশুলিয়ায় ফুটপাতে অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদে অভিযান, পুলিশের গাড়ির কাঁচ ভাঙচুর
  • একটি যুগের পরিসমাপ্তি: বন্ধ হচ্ছে ৪৫ বছরের ক্যামব্রিজ টাইপরাইটার কোম্পানি
  • কয়েক ঘণ্টা বন্ধের পর খুলে দেওয়া হলো যমুনা ফিউচার পার্ক 

Most Read

1
কিয়ার স্টারমারের সঙ্গে আমিরুল ইসলাম (ডানে)। ফাইল ছবি
আন্তর্জাতিক

৪১ জন আত্মীয়-পরিজনকে আনতে ভিসার তদবির, যুক্তরাজ্যে তদন্তের মুখে লেবারদলের মেয়র

2
স্ট্যান্ডার্ড চার্টার্ড ব্যাংকের ক্রেডিট কার্ড থেকে যেভাবে ২৭ লাখ টাকা হাতিয়ে নিল প্রতারক চক্র
অর্থনীতি

স্ট্যান্ডার্ড চার্টার্ড ব্যাংকের ক্রেডিট কার্ড থেকে যেভাবে ২৭ লাখ টাকা হাতিয়ে নিল প্রতারক চক্র

3
বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। ফাইল ছবি: টিবিএস
বাংলাদেশ

প্রফেসর ইউনূস যখন কথা বলছিলেন, মনে হচ্ছিল জিয়াউর রহমানের কণ্ঠ শুনছি: মির্জা ফখরুল

4
ছবি: সংগৃহীত
আন্তর্জাতিক

ভারতে থালাপতি বিজয়ের জনসভায় পদদলিত হয়ে নারী-শিশুসহ অন্তত ৩৯ জন নিহত

5
নিষেধাজ্ঞা পেছাতে ১৫ সদস্যের জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদে রাশিয়া ও চীনের পক্ষে আনা প্রস্তাবে মাত্র চারটি দেশ সমর্থন দেয়। ছবি: রয়টার্স
আন্তর্জাতিক

রাশিয়া, চীনের চেষ্টা ব্যর্থ, ইরানের ওপর জাতিসংঘের নিষেধাজ্ঞা পুনর্বহাল হচ্ছে

6
পিয়ানোর আভিজাত্য: ঢাকায় পিয়ানো কারা শেখে, কোথায় শেখে
ফিচার

পিয়ানোর আভিজাত্য: ঢাকায় পিয়ানো কারা শেখে, কোথায় শেখে

EMAIL US
contact@tbsnews.net
FOLLOW US
WHATSAPP
+880 1847416158
The Business Standard
  • About Us
  • Contact us
  • Sitemap
  • Privacy Policy
  • Comment Policy
Copyright © 2025
The Business Standard All rights reserved
Technical Partner: RSI Lab

Contact Us

The Business Standard

Main Office -4/A, Eskaton Garden, Dhaka- 1000

Phone: +8801847 416158 - 59

Send Opinion articles to - oped.tbs@gmail.com

For advertisement- sales@tbsnews.net