Skip to main content
  • মূলপাতা
  • অর্থনীতি
  • বাংলাদেশ
  • আন্তর্জাতিক
  • খেলা
  • বিনোদন
  • ফিচার
  • ইজেল
  • মতামত
  • অফবিট
  • সারাদেশ
  • কর্পোরেট
  • চাকরি
  • প্রবাস
  • English
The Business Standard বাংলা

Wednesday
June 18, 2025

Sign In
Subscribe
  • মূলপাতা
  • অর্থনীতি
  • বাংলাদেশ
  • আন্তর্জাতিক
  • খেলা
  • বিনোদন
  • ফিচার
  • ইজেল
  • মতামত
  • অফবিট
  • সারাদেশ
  • কর্পোরেট
  • চাকরি
  • প্রবাস
  • English
WEDNESDAY, JUNE 18, 2025
কর্পোরেট কাঠামোর সমস্যা না কর্মীর ছলচাতুরী? কোনো কাজ না করেই কিভাবে কর্মস্থলে টিকে থাকা যায়?  

ফিচার

মিকেল এচারি, এল পাইস
18 June, 2023, 03:55 pm
Last modified: 18 June, 2023, 04:01 pm

Related News

  • আগামী নির্বাচনে দাঁড়িপাল্লা প্রতীকের পক্ষে গণজোয়ার সৃষ্টি করতে হবে: গোলাম পরওয়ার
  • জুলাই অভ্যুত্থানের শুরু বেকার সমস্যা থেকে, কিন্তু বাজেটে এর সমাধানে উদ্যোগ নেই: নাহিদ
  • দেশে বেকারত্বের হার বেড়ে ৪.৬৩ শতাংশ, বর্তমানে কর্মহীন ২৭.৪ লাখ
  • বাংলাদেশ থেকে সৌদি আরবে আরও দক্ষ কর্মী নিয়োগের আহ্বান আসিফ নজরুলের
  • ভারত-পাকিস্তান নিয়ে মধ্যস্থতায় আগ বাড়িয়ে কিছু করতে চাই না: পররাষ্ট্র উপদেষ্টা

কর্পোরেট কাঠামোর সমস্যা না কর্মীর ছলচাতুরী? কোনো কাজ না করেই কিভাবে কর্মস্থলে টিকে থাকা যায়?  

লেখক অ্যালিসন গ্রিন বলেন, “কাজের জন্য সবচেয়ে বেশি নিবেদিতপ্রাণ এবং সবচেয়ে অনুপ্রাণিত কর্মীরাই গুরুত্বপূর্ণ কাজের সিংহভাগ নিজেদের কাঁধে নিয়ে নেয় এবং বাকিদের অধিকাংশই নীরবে কাজ এড়িয়ে যায় এবং যতটা সম্ভব কম কাজ করে। এদের মধ্যে সর্বশেষ শ্রেণীর কর্মীরা একদম কিছুই না করে পার পেয়ে যায়।“
মিকেল এচারি, এল পাইস
18 June, 2023, 03:55 pm
Last modified: 18 June, 2023, 04:01 pm
নিজের ডেস্কে চেয়ারে বসে আরাম করছেন জনৈক ব্যক্তি। ছবি: ফেয়ারফ্যাক্স মিডিয়া/গেটি ইমেজেস

কর্মস্থলে গিয়ে কোনো কাজ না করেই সময় কাটানো…এমনটা আমরা অনেকেই হয়তো কল্পনাও করতে পারি না। বেশিরভাগ মানুষেরই দৈনন্দিন জীবনের একটা বড় অংশ হলো তাদের পেশাদার জীবন, চাকরি ও কাজ নিয়ে চিন্তাভাবনা। কিন্তু অনেকেই এই কাজের চাপ এড়িয়ে যাওয়ার কৌশল ভালোভাবেই রপ্ত করেন! আর কর্মস্থলে গিয়ে 'লুকিয়ে থাকা'র প্রসঙ্গে ইম্পেরিয়াল জাপানিজ আর্মির একজন সার্জেন্ট শোইচি ইয়োকোই এর কথা বলতেই হয়।

দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর আত্মসমর্পণ করবেন না বলে গুয়ামের মারিয়ানা দ্বীপপুঞ্জের জঙ্গলে তিন দশক লুকিয়ে ছিলেন তিনি, যতক্ষণ না পর্যন্ত সরাসরি উর্ধ্বতন কর্মকর্তার কাছ থেকে নির্দেশ পান। গভীর জঙ্গলে দিনের পর দিন সাপ, বিছা, পোকামাকড়ের কামড় খেয়ে টিকে ছিলেন তিনি; তবুও ধরা দেননি। ইয়োকোই এর এই পরিকল্পনা কাজও করেছিল- ১৯৭৪ সালে এই সার্জেন্ট নিজে থেকে জঙ্গল ছেড়ে বেরিয়ে আসার আগপর্যন্ত কেউই তাকে খুঁজে পায়নি।

বর্তমানে যুগে কর্পোরেট দুনিয়ার লড়াইয়েও ইয়োকোই এর মতো 'সৈন্য', অর্থাৎ 'অফিসের কর্মী' রয়েছে, যারা বছরের পর বছর ধরে কর্মস্থলে নিজেদের নিষ্ক্রিয়তাকে সযত্নে গোপন করে গিয়েছে। আমেরিকান নিউজ ওয়েবসাইট ভক্স-এ লিখতে গিয়ে সাংবাদিক এমিলি স্টুয়ার্ট এ ধরনের অলস কর্মীদের 'কর্মহীনভাবে কর্মরত' বলে অভিহিত করেছেন। সাম্প্রতিক বছরগুলোতে স্পেনে এরকম কিছু কর্মীর কথা প্রকাশ্যে এসেছে। যেমন, ভ্যালেন্সিয়ান সরকারি কর্মচারী কার্লেস রেসিও কাজ থেকে পালিয়ে থাকার ব্যাপারে একজন বিশ্বরেকর্ডধারী লোক! পুরো এক দশক তিনি রোজ সকালে অফিসে গিয়েছেন, সারাদিক বেকার বসে থেকে পার করেছেন এবং কখনো একটি কাজও সম্পন্ন করেননি।

স্টুয়ার্টের দৃষ্টিতে, করোনাভাইরাস মহামারি, অফিসের বাইরে থেকে কাজ করা, স্বয়ংক্রিয় প্রযুক্তি, আউটসোর্সিং এবং এসকল ফ্যাক্টর মিলিয়ে সাংগঠনিক বিঘ্ন ঘটায় কর্পোরেট খাতেও নতুন করে 'সার্জেন্ট ইয়োকোই'দের জন্ম হয়েছে। কর্মবিমুখ এবং পেশাদারভাবে অনুপস্থিত ব্যক্তিরা সবসময়ই ছিল, কিন্তু বর্তমানে আগের চেয়ে এরা সংখ্যায় বেশি। শুরুর দিকে এসব কর্মীরা আংশিকভাবে কাজে অনুপস্থিত থাকতো, কিন্তু সময়ের সাথে সাথে তারা তাদের অলসতা ও ধোকাবাজির কৌশল আরও ভালোভাবে আয়ত্ত করেছে এবং কর্মস্থলে নিজেকে পুরোপুরি 'অনুপস্থিত' হিসেবে উপস্থাপন করেছে। অর্থাৎ, তারা অফিসে আসবে ঠিকই, কিন্তু তারা কোনো কাজ করবে না।

'তুমি কাজ করো, আমি হাসি'

অফিসকর্মীদের গাইডবুক 'আস্ক আ ম্যানেজার: হাও টু নেভিগেট ক্লুলেস কলিগস, লাঞ্চ-স্টিলিং বসেস, অ্যান্ড স্য রেস্ট অব ইওর লাইফ অ্যাট ওয়ার্ক' বইয়ের লেখক অ্যালিসন গ্রিন মনে করেন, 'বেকার' কর্মচারীদের উপস্থিতি এমনিতেই যথেষ্ট বিরক্তিকর। তার ভাষ্যে, বেশিরভাগ কর্মস্থলেই কাজের সুষ্ঠু বণ্টন হয় না। অযৌক্তিক এবং ত্রুটিপূর্ণভাবে কাজ ভাগ করে দেওয়া হয় কর্মীদের মধ্যে। তিনি বলেন, "কাজের জন্য সবচেয়ে বেশি নিবেদিতপ্রাণ এবং সবচেয়ে অনুপ্রাণিত কর্মীরাই গুরুত্বপূর্ণ কাজের সিংহভাগ নিজেদের কাঁধে নিয়ে নেয় এবং বাকিদের অধিকাংশই নীরবে কাজ এড়িয়ে যায় এবং যতটা সম্ভব কম কাজ করে। এদের মধ্যে সর্বশেষ শ্রেণীর কর্মীরা একদম কিছুই না করে পার পেয়ে যায়।"

অফিসে বসে আয়েশ করছেন জনৈক ব্যক্তি। ছবি: এইচ আর্মস্ট্রং রবার্টস/ক্লাসিকসটিওসি

বার্সেলোনার ৪৩ বছর বয়সী কম্পিউটার সায়েন্স বিজ্ঞানী ক্রিস্টিয়ান এস. (ছদ্মনাম) নিজেই স্বীকার করেন যে তিনি তৃতীয় শ্রেণীটির অন্তর্ভুক্ত। এ প্রতিবেদনের জন্য যাদের সাক্ষাৎকার নেওয়া হয়েছে, তাদের মতো ক্রিস্টিয়ানও পরিচয় না প্রকাশের শর্তে এল পাইস-এর কাছে মুখ খুলতে রাজি হয়েছেন। সংবাদমাধ্যমটিকে তিনি জানান যে, তিনি চার বছরেরও বেশি সময় ধরে কর্মক্ষেত্রে 'সময় নষ্ট' করে আসছেন। তিনি প্রতিদিন অফিসে যান বটে, কিন্তু কোম্পানির উন্নতিতে উল্লেখযোগ্য কোনো অবদান তার নেই। "আপনি ব্যাপারটা এভাবে বলতে পারেন: আমি একটা নির্দিষ্ট অংকের বেতন পাই এবং অফিসে সপ্তাহে অন্তত ৪০ ঘণ্টা সময় ব্যয় করি; কিন্তু মহামারির কয়েক মাস আগে আমাদের অভ্যন্তরীণ সার্ভার পুনরায় ডিজাইনের পেছনে কাজ করার পর থেকে আমি অফিসে আর কোনো কাজই করিনি বলা চলে", বলেন ক্রিস্টিয়ান।

এর কিছুদিন পরেই ক্রিস্টিয়ানের কোম্পানিটি অন্য একটি প্রতিষ্ঠান নিয়ে নেয় এবং মালিকেরা আইটি সহায়তা আউটসোর্সিং এর সিদ্ধান্ত নেন। ক্রিস্টিয়ান বলেন, "আমাকে চাকরিতে রাখা হয়েছিল এই ভেবে যে আমি সমন্বয় ও তত্ত্বাবধানের কাজটি করব, কিন্তু বাস্তবতা হচ্ছ- এখানে কোনোকিছুই তদারকি করার নেই। যাদেরকে তদারকি করার কথা আমার, তারা কখনো আমার সাথে যোগাযোগই করেনি, আর আমার বসেরা বোধহয় জানেই না যে এই অফিসে আমার অস্তিত্ব আছে।

আর এই কর্মহীনতার সুযোগ নেওয়া যাবে টের পেয়েই ক্রিস্টিয়ান তার ভূমিকায় আরও জাঁকিয়ে বসেন। কোনো কাজ না করেই যখন মাসে মাসে বেতন পাওয়া যাচ্ছে, তখন তার আর আপত্তি কি! শীঘ্রই এটা তার অভ্যাসে পরিণত হয় যে তিনি সকালে অফিসে যাবেন, নিজের কর্পোরেট ইমেইল একাউন্টে ঢুকবেন, এরপর সারাদিন একটি কাজও না করে বসে থাকবেন। ২০২০ সালের দিকে পুনরায় যোগদানের পরে তিনি ভেবেছিলেন, তার নতুন নিয়োগকর্তারা তার বেকার বসে থাকার বিষয়টি তের পেয়ে তাকে চাকরিচ্যুত করবেন।

'তারা আমার কথা ভুলে গেছে'

কিন্তু ক্রিস্টিয়ান পে রোলে রয়ে গেছেন। তাকে এমন একটা জায়গায় অফিস কক্ষ দেওয়া হয় যা ছিল বেজমেন্টে। সেখানে তার আশেপাশে শুধুই ফাঁকা অফিসকক্ষ এবং সবচেয়ে কাছের সহকর্মীও বসেন ২০ মিটার দূরত্বে! নিজের এই অফিসকক্ষকে ক্রিস্টিয়ান 'নিঃসঙ্গ বাড়ি' বলে অভিহিত করেছেন। তিনি জানান, অফিসে বেশিরভাগ সময়ই তিনি ধূমপান, হাঁটাহাঁটি, কফি পান করে বা সিনেমা-সিরিজ দেখে কাটান; এমনকি বাথরুমে ঘুমিয়েও কাটান।

ভিনসেন্ট ভ্যান গখের আঁকা 'দ্য সিয়েস্তা' (১৮৮৯-১৮৯০)। ছবি: গেটি ইমেজেস

ক্রিস্টিয়ান অবশ্য কোনো মিথ্যা আশা নিয়ে বাঁচেন না, তিনি জানেন আগে হোক, পরে হোক তিনি একদিন 'ধরা পড়বেনই'। আর সেটা যখন হবে, তিনি শুধু চান যে 'সম্মানের সহিত' চাকরিচ্যুত হওয়ার বাইরে আর কোনো খারাপ পরিণতি যেন তার না হয়। "কারণ যারা আমার সরাসরি সুপারভাইজার, তারাও আমার মতোই দোষী", বলেন ক্রিস্টিয়ান। তিনি নিজের অলসতা নিয়ে গর্বিত নন ঠিকই, কিন্তু তার আগে তিনি ওই সকল উর্ধ্বতন কর্মকর্তা ও মালিকদেরকে 'অযোগ্যতার' দিকে প্রশ্ন তোলেন। তিনি বিষয়টি নিয়ে উদ্বিগ্ন, কিন্তু এটাও জানান যে কোনো খারাপ আচরণ থেকে তার এ অবস্থা হয়নি। বরং মালিকপক্ষ স্রেফ তার কথা ভুলে গেছে! "আর আমার নিজের অনুপ্রেরণার অভাবে আমিও এই পরিস্থিতি চালিয়ে নিতে সহায়তা করে গেছি।"

এমতাবস্থায়, ক্রিস্টিয়ান নিজে থেকে বিষয়টি কর্তৃপক্ষের বা এইচআর বিভাগের দৃষ্টিগোচর করতেও চান না। "তিন বছর আগে হয়তো এই পদক্ষেপ নিলে ভাল হতো, কিন্তু এখন যদি আমি এটা করি, আমাকে অনেক জবাবদিহি করতে হবে যে এত বছর কেন জানালাম না। আর এসব প্রশ্নের সদুত্তর আমার কাছে নেই। কারণ স্পষ্টত, কোনো কাজ না করেই আমি ভালো অংকের বেতন নিয়েছি এতদিন।"

বিবাহবিচ্ছেদ ও উদ্বিগ্নতা

সন্দেহ দূর করতে ক্রিস্টিয়ান আরও জানান, তার কাছেও কর্মস্থলে এভাবে বসে থাকাটা খুব একতা উপভোগ্য নয়। যখন তিনি সত্যিই কাজে সক্রিয় ছিলেন, ওই সময়টায় তার বিবাহবিচ্ছেদ হয় এবং প্রায়ই অ্যাংজাইটি অ্যাটাক হতো তার। কোনো কাজ না করায় তার উপর আরও খারাপ প্রভাব পড়ে।

কিন্তু ওই বিবাহবিচ্ছেদের সময়টায়ও তিনি অসুস্থতার কথা বলে ছুটি নিতে নারাজ ছিলেন। তিনি জানান, অফিসের সাথে তার এক ধরনের কুসংস্কারাচ্ছন্ন বা 'ভুল বিশ্বাসের' সম্পর্ক গড়ে উঠেছিল, যেটিকে তিনি তার 'লিটল ইজি চেয়ার' বলে অভিহিত করেছেন। তিনি জানান, এই অফিসে তার নিজেকে 'সুরক্ষিত' মনে হয়। অন্য একটি চাকরি খোঁজার বিষয়ে তার মনে হয় যে তিনি নতুন কর্পোরেট পরিবেশে মানিয়ে নিতে পারবেন না। তিনি একটা 'অদ্ভূত ও শূন্যতাময়' পরিবেশের সাথে নিজেকে মানিয়ে নিয়েছেন।

মাদ্রিদ-ভিত্তিক একটি কমিউনিকেশনস ফার্মে কাজ করা ড্যানিয়েলের (ছদ্মনাম) একই অবস্থা। ১৯৯৩ সাল থেকে তিনি এই প্রতিষ্ঠানে কর্মরত। একটা অব্যক্ত চুক্তির ফলাফল হিসেবে তার এই 'কর্মহীন চাকরি'র অবস্থা তৈরি হয়েছে। "কয়েক বছর আগে অফিসে যাদের প্রমোশন দেওয়া হবে তাদের একটা তালিকায় আমি ছিলাম, কিন্তু শেষ পর্যন্ত আমাকে প্রমোশন না দিয়ে নতুন যোগ দেওয়া একটা ছেলেকে প্রমোশন দিয়ে দেওয়া হয়", বলেন ড্যানিয়েল।

অফিসে কাজের ফাঁকে ঘুমিয়ে পড়েছেন এক নারী। ছবি: সংগৃহীত

এর কয়েক মাস পর তার কোম্পানির নতুন বস তাকে বলেন যে, তাকে চাকরিচ্যুত করতে হবে বা অন্য বিভাগে ট্রান্সফার করা হবে। "কিন্তু এইচ আর বিভাগ বলে যে আমি সিনিয়র কর্মী হওয়ায় এবং আমার বেতন অনুসারে আমি 'সেভারেন্স প্যাকেজ' এর আওতায় পড়ি যা কোম্পানি তখন গ্রহণ করতে প্রস্তুত না", বলেন ড্যানিয়েল।

এরপরেই শুরু হয় সেই দীর্ঘ অপেক্ষার সময়; "যতদিন না পর্যন্ত আমরা একটা চুক্তিতে যাচ্ছি, ততদিন পর্যন্ত এবং অবসর নেওয়ার আগপর্যন্ত আমাকে এই কোম্পানিতেই থাকতে হবে।" অবশ্যই আমার এটা ভেবে হতাশ লাগে যে এমন একটা কোম্পানি, যেখানে অনেক কাজ করার আছে, সেখানে আমার জ্ঞান ও দক্ষতাকে কেউ কাজে লাগাচ্ছে না। কিন্তু আমার রুটিন বেশ সুখকর। আমার অফিসে টিভি আছে, আমি টিভি দেখে, খবরের কাগজ পড়ে দিন পার করি। আবার পুরনো সহকর্মীদের সাথে চা-নাস্তা খাই।"

ড্যানিয়েল মনে করে, কর্পোরেট কাঠামোর কারণে তার এমন অবস্থা তৈরি হয়েছে। সেইসঙ্গে উর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের সততার ও সাধারণ জ্ঞান-বোধের অভাবও রয়েছে। তিনি বলেন, হয় তাকে চাকরিচ্যুত করা উচিত ছিল অথবা কোনো পদে রাখা উচিত ছিল। কারণ তার দাবি, তিনি কখনো কোনো দায়িত্ব পালনে অস্বীকৃতিও জানাননি।

"আমাকে একটা পুরনো আসবাবের মতো দেখা হচ্ছে, যেন আমি দায়িত্ব পালনে অক্ষম। কিন্তু সত্যটা হচ্ছে, আমি এখনো স্বাস্থ্যবান এবং বুদ্ধিমত্তাসম্পন্ন; তারা কোনো কাজ দিলে আমি করতে পারব", বলেন ড্যানিয়েল। কিন্তু তিনি চুক্তি অনুযায়ী টাকা না নিয়ে এই কোম্পানি ছাড়তেও নারাজ। কারণ তার ভাষ্যে, এটা তার অধিকার। "তাছাড়া, আমার এই সময়ে এসে আমাকে নতুন করে কে-ই বা গুরুত্বপূর্ণ পদে নেবে?" প্রশ্ন করেন ৫৯ বছর বয়সী ড্যানিয়েল।

৩৬ বছর বয়সী ক্লারা জি. এবং ৪১ বছর বয়সী কার্লোস এম. (দুজনেরই ছদ্মনাম) এর ঘটনা আরও অদ্ভুত। তারা একটি ফাইন্যান্সিয়াল ফার্মের স্ট্র্যাটেজিক মার্কেটিং বিভাগে কর্মরত, যে পরিষেবার দুই বছর ধরে ব্যবহারই করা হয় না!

মহামারির পর যখন ক্লারা ও কার্লোস অফিসে যোগ দিলেন, তখন বুঝতে পারলেন যে তাদের অফিসে আর এই বিভাগের দরকারই নেই; "তবুও অদ্ভুত এক কর্পোরেট মর্যাদা রক্ষার্থে তারা এই বিভাগ রেখে দিয়েছে", বলেন তারা। ফলে কোম্পানি তাদেরকে বলেছে, তারা যেন সহজলভ্য থাকে, কিন্তু খুব একটা গুরুত্ব থাকবে না এদিকে। তাদেরকে ৮০ শতাংশ কর্মঘণ্টা বাসা থেকেই কাজ করার অনুমতি দেওয়া হয়। ক্লারার ভাষ্যে, এতা একটা ফাঁকা আনুষ্ঠানিকতা ছাড়া আর কিছুই নয়।

তবে ক্লারা ও কার্লোস দুজনেই জানেন যে একসময় তাদের চাকরি চলে যাবে। তারাও চান এটা হোক। সার্জেন্ট ইয়োকোইয়ের মতো তারাও উপলব্ধি করছেন যে এই লুকোচুরি খেলা বন্ধ হওয়া উচিত।

কিন্তু তবুও ক্লারা বলেন, "আপনি কিভাবে বার্ষিক ৫০,০০০ ইউরো বেতনের একটা চাকরি ছেড়ে দেবেন, শুধুমাত্র এই কারণে যে আপনার বসরা জানে না যে তারা আপনাকে নিয়ে কি করবে? আবার আপনাকে চাকরিচ্যুতও করতে চায় না? আমরা পেশাদার ব্যক্তি, আমরা নতুন আইডিয়া নিয়ে আসতে জানি যার মূল্য রয়েছে। কিন্তু কিছু বিক্রি করতে গেলে সেটা কেনার মতো মানুষও লাগবে।"

অন্যদিকে, কার্লোস জানান, তিনি এই অদ্ভুত পরিস্থিতির সঙ্গে নিজেকে মানিয়ে নিয়েছেন। "এটা আমাকে অবসর সময় উপভোগ করার সুযোগ দেয়। আমার পরিবারকে সময় দিতে পারি। এর আগে ১৫ বছর ধরে আমি প্রচুর চাপ নিয়ে কাজ করেছি, কারণ আমার কাজই ছিল আমার প্রথম গুরুত্বের জায়গা। এরপর আমার মনে হলো যে আমার এটা কমিয়ে দেওয়া উচিত। আর পরিস্থিতিও এখন আমার অনুকূলে গিয়েছে, সেই সাথে ভালো বেতনও পাচ্ছি।"

এমিলি স্টুয়ার্টের মতে, এসব কাহিনী যতটাই সত্যি হোক না কেন; এগুলো বর্তমান যুগের কর্পোরেট কাঠামোতে একটা বৃহত্তর ত্রুটিপূর্ণতা নির্দেশ করে। "কোম্পানিগুলো অযথাই অনেক জটিল করে ফেলে তাদের কাঠামো, ফলে এরকম লুপহোল ও 'ডার্ক কর্নার' তৈরি হয়, যেখানে অলস, কর্মবিমুখ, অনুপ্রেরণাহীন কর্মীরা ঘাপটি মেরে লুকিয়ে থাকে।" কারণ অযত্নে পড়ে থাকা বাগানেই আগাছা জন্মায়।

তবে এর চেয়েও খারাপ ব্যাপার হলো, যারা কর্মস্থলে বেকার বসে বেতন নেওয়াকে পাত্তাই দেয় না, এদের অনেকের মধ্যেই কোনো যোগ্যতাও থাকে না যা চোখ এড়িয়ে যায়। স্টুয়ার্টের ভাষ্যে, এর কারণ হতে পারে যে তাদের কিছু সহকর্মী সব নির্দেশ অক্ষরে অক্ষরে পালন করে যা মাঝেমধ্যে খুবই বাহুল্য হয়ে দাঁড়ায় ও ভুল পথে চালিত হয় যে শেষ পর্যন্ত সেগুলোর কমই মূল্য থাকে। আরেক অর্থে বলা যায়, কর্পোরেট অফিসে বিশাল কর্মযজ্ঞের হইচই ও ব্যস্ততার আড়ালে কয়েকজন কর্মীর অনুপস্থিতি চোখেই পড়ে না।

এদের মধ্যে কেউ কেউ খুব সামান্য কাজ করে বা এমনই ভুল উপায়ে করে যে, কে কাজ করছে আর কে করছে না তার মধ্যে পার্থক্য বের করা যায় না।

ড্যানিয়েল তার কর্মহীনতাকে ব্যাখ্যা করেছেন এভাবে: "অফিসে আমার অবসর সময় কাটানো আর বেতন পাওয়াকে আমার কাছে মনে হয়, চাকরি থেকে অবসরে যাওয়ার সময়ের পারফেক্ট প্রশিক্ষণ! কারণ আমি এখন অফিসে যা করছি, অবসরে যাওয়ার পর বাড়িতেও ঠিক সেসব কাজই করবো।" 

Related Topics

টপ নিউজ

কর্মী / কাজ না করা / বেকার / কর্পোরেট / কাঠামো / সমস্যা / ছলচাতুরী

Comments

While most comments will be posted if they are on-topic and not abusive, moderation decisions are subjective. Published comments are readers’ own views and The Business Standard does not endorse any of the readers’ comments.

MOST VIEWED

  • যুদ্ধবিরতি নয়, তারচেয়ে ‘অনেক বড় কারণে’ জি-৭ সম্মেলন ছেড়ে এসেছি: ট্রাম্প
  • টানা ব্যবহারে ফুরিয়ে আসছে ইসরায়েলের প্রতিরোধকারী ক্ষেপণাস্ত্র ভাণ্ডার
  • ‘যুদ্ধবিরতির চেয়েও ভালো কিছু’—ট্রাম্প তাঁর বক্তব্যে কী বোঝাতে চাইলেন?
  • ইরানে হামলার মুখে আলোচনায় ইসরায়েলের গোপন পারমাণবিক অস্ত্রাগার
  • সংসদে নারী আসন ১০০ করতে ঐকমত্য, তবে সরাসরি নির্বাচনে নারাজ বিএনপি
  • ইসরায়েলকে যুদ্ধবিরতির জন্য চাপ দিতে উপসাগরীয় দেশগুলোর মাধ্যমে যুক্তরাষ্ট্রকে বলেছে ইরান

Related News

  • আগামী নির্বাচনে দাঁড়িপাল্লা প্রতীকের পক্ষে গণজোয়ার সৃষ্টি করতে হবে: গোলাম পরওয়ার
  • জুলাই অভ্যুত্থানের শুরু বেকার সমস্যা থেকে, কিন্তু বাজেটে এর সমাধানে উদ্যোগ নেই: নাহিদ
  • দেশে বেকারত্বের হার বেড়ে ৪.৬৩ শতাংশ, বর্তমানে কর্মহীন ২৭.৪ লাখ
  • বাংলাদেশ থেকে সৌদি আরবে আরও দক্ষ কর্মী নিয়োগের আহ্বান আসিফ নজরুলের
  • ভারত-পাকিস্তান নিয়ে মধ্যস্থতায় আগ বাড়িয়ে কিছু করতে চাই না: পররাষ্ট্র উপদেষ্টা

Most Read

1
আন্তর্জাতিক

যুদ্ধবিরতি নয়, তারচেয়ে ‘অনেক বড় কারণে’ জি-৭ সম্মেলন ছেড়ে এসেছি: ট্রাম্প

2
আন্তর্জাতিক

টানা ব্যবহারে ফুরিয়ে আসছে ইসরায়েলের প্রতিরোধকারী ক্ষেপণাস্ত্র ভাণ্ডার

3
আন্তর্জাতিক

‘যুদ্ধবিরতির চেয়েও ভালো কিছু’—ট্রাম্প তাঁর বক্তব্যে কী বোঝাতে চাইলেন?

4
মতামত

ইরানে হামলার মুখে আলোচনায় ইসরায়েলের গোপন পারমাণবিক অস্ত্রাগার

5
বাংলাদেশ

সংসদে নারী আসন ১০০ করতে ঐকমত্য, তবে সরাসরি নির্বাচনে নারাজ বিএনপি

6
আন্তর্জাতিক

ইসরায়েলকে যুদ্ধবিরতির জন্য চাপ দিতে উপসাগরীয় দেশগুলোর মাধ্যমে যুক্তরাষ্ট্রকে বলেছে ইরান

EMAIL US
contact@tbsnews.net
FOLLOW US
WHATSAPP
+880 1847416158
The Business Standard
  • About Us
  • Contact us
  • Sitemap
  • Privacy Policy
  • Comment Policy
Copyright © 2025
The Business Standard All rights reserved
Technical Partner: RSI Lab

Contact Us

The Business Standard

Main Office -4/A, Eskaton Garden, Dhaka- 1000

Phone: +8801847 416158 - 59

Send Opinion articles to - oped.tbs@gmail.com

For advertisement- sales@tbsnews.net