পার্লামেন্ট স্থগিত ‘বেআইনি’ জানিয়ে যুক্তরাজ্যের সুপ্রিম কোর্টের রুলিং

যুক্তরাজ্যের সুপ্রিম কোর্ট প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসনের পার্লামেন্ট স্থগিতের সিদ্ধান্ত ‘বেআইনি’ বলে রুল জারি করেছেন।
সেপ্টেম্বরের শুরুতে জনসন পাঁচ সপ্তাহের জন্য পার্লামেন্ট স্থগিত করেন। কিন্তু আদালত বলছেন যে, ৩১ অক্টোবর ব্রেক্সিট ইস্যুতে চূড়ান্ত ফয়সালার আগে এমপিদের কার্যক্রম চালানোর সুযোগ সঙ্কুচিত করা বেআইনি।
বিবিসি জানিয়েছে, সুপ্রিম কোর্টের প্রেসিডেন্ট লেডি হেইল বরিসের সিদ্ধান্তটি ‘গণতন্ত্রের মৌলিকত্বের ওপর ভয়াবহ প্রভাব রেখেছে’ বলে মন্তব্য করেছেন।
ব্রেন্ডা মারজারি হেইল, ব্যারোনেস হেইল অফ রিচমন্ড ‘লেডি হেইল’ নামেই পরিচিত। ৭৪ বছর বয়সী এই ব্রিটিশ বিচারক ২০১৭ সাল থেকে যুক্তরাজ্যের সুপ্রিম কোর্টের প্রেসিডেন্টের দায়িত্ব পালন করছেন।
লেডি হেইলসহ ১১ বিচারপতির সর্বসম্মত সিদ্ধান্তের পর ডাউনিং স্ট্রিট বলেছে, সরকার উচ্চ আদালতের রায়টি ‘পর্যবেক্ষণ করছে।’
পার্লামেন্ট স্থগিতের বিষয়ে জনসনের যুক্তি ছিল, তিনি রানির ১৪ অক্টোবরের ভাষণের জন্য তাঁর সরকারের নতুন নীতিগুলো তৈরি করতে চেয়েছিলেন। কিন্তু সমালোচকরা তাঁর এ যুক্তি প্রত্যাখ্যান করে বলেন, তিনি ব্রেক্সিট পরিকল্পনা নিয়ে এমপিদের ভূমিকা রাখার সুযোগ দিতে চাননি।

এমপিদের কয়েকজন জনসনকে পদত্যাগ করতে এবং যত দ্রুত সম্ভব পার্লামেন্ট চালু করতে আহ্বান জানিয়েছেন।
লেবার নেতা জেমস করবিন বলেছেন, উচ্চ আদালতের রুলিংটি গণতন্ত্রের প্রতি ‘জনসনের অশ্রদ্ধার বিষয়টি’ দেখিয়ে দিয়েছে।
“জনসনকে আহ্বান জানাচ্ছি, তাঁর অবস্থানের পুনর্বিবেচনা করার জন্য,” যোগ করেন করবিন।
কোর্ট প্রেসিডেন্ট উপসংহার টানেন এভাবে, “রানিকে পার্লামেন্ট স্থগিতের অনুরোধের সিদ্ধান্ত আইনসম্মত ছিল না। কারণ এর প্রভাব ছিল হতাশাজনক অথবা কোনো যৌক্তিক কারণ ছাড়াই পার্লামেন্টের সাংবিধানিক দায়িত্ব চালিয়ে যাওয়ার ক্ষমতা কেড়ে নেওয়া।”
লেডি হেইল বলেন, ১১ বিচারপতির সর্বসম্মত সিদ্ধান্ত হল, পার্লামেন্ট স্থগিত হয়নি-- এই সিদ্ধান্ত বাতিল, এর কোনো কার্যকারিতা নেই-- হাউজ অব কমন্স ও হাউজ অব লর্ডসের স্পিকারদ্বয় করণীয় বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেবেন।
আদালতের রায়কে স্বাগত জানিয়েছেন হাউজ অব কমন্সের স্পিকার জন বারকাউ। তিনি বলেছেন, “আর দেরি না করেই পার্লামেন্ট চালু হবে। জরুরি ভিত্তিতে বিভিন্ন দলের নেতাদের সঙ্গে আলোচনা করবেন তিনি।”