এসডিজি বাস্তবায়নে দরকার অংশীদারিত্ব ও সহযোগিতা: শেখ হাসিনা
টেকসই লক্ষ্যমাত্রা অর্জনে স্থানীয় এবং বৈশ্বিক পর্যায়ে অর্থবহ অংশীদারিত্ব ও সহযোগিতার ওপর গুরুত্ব দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এই গ্রহ ও তার অধিবাসীদের প্রতি অঙ্গীকারে অটুট থাকতেও তিনি বিশ্বনেতৃবৃন্দের প্রতি আহবান জানান।
জাতিসংঘ সদর দপ্তরের ট্রাস্টিশিপ কাউন্সিলে বুধবার বিকেলে (স্থানীয় সময়) টেকসই উন্নয়নের (এসডিজি সম্মেলন) উপর উচ্চ পর্যায়ের রাজনৈতিক ফোরাম ‘লোকালাইজিং দ্য এসডিজিস’এ প্রধানমন্ত্রী এ বক্তব্য রাখেন। তিনি সেখানে কো-মডারেটরের দায়িত্ব পালন করেন।
প্রধানমন্ত্রী আস্থা প্রকাশ করে বলেন, “আমি নিশ্চিত আমরা একসঙ্গে এসডিজির সুবিধাগুলো প্রান্তিক জনগণের কাছে পৌঁছে দিতে পারব।”
২০০০ সালে সহস্রাব্দের ঘোষণাপত্র এবং ২০১৫ সালে এসডিজি গ্রহণের অনুষ্ঠানে ব্যক্তিগতভাবে উপস্থিত থাকার সুযোগ পেয়েছিলেন বলে জানান তিনি।
এসডিজির জন্য স্থানীয়করণ কৌশলের ক্ষেত্রে বাংলাদেশের অভিজ্ঞতা তুলে ধরে প্রধানমন্ত্রী বলেন, “সহস্রাব্দ উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রার অভিজ্ঞতা থেকে শিক্ষা নিয়ে আমরা ৭ম পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনায় এসডিজির লক্ষ্যগুলোকে সম্পৃক্ত করেছি। আবার আমাদের ২০২১ সাল থেকে ২০২৫ পর্যন্ত অনুষ্ঠেয় ৮ম পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনাতেও জুড়ে দিয়েছি।”
সরকার এসডিজি বাস্তবায়নের ক্ষেত্রে বিভিন্ন স্টেকহোল্ডারকে কাজে লাগিয়ে ‘হোল সোসাইটি অ্যাপ্রোচ’ গ্রহণ করেছে। তাছাড়া, সরকারি দপ্তরগুলোকে তাদের নিজ নিজ দায়িত্ব ও কাজগুলো চিহ্নিত করে দেওয়া হয়েছে বলেও জানান তিনি।
প্রধানমন্ত্রী জানান, দপ্তরগুলো নিজস্ব অ্যাকশন প্লান সমন্বিতভাবে বাস্তবায়ন করছে।
সরকার অভিনব পর্যবেক্ষণ কাঠামোও তৈরি করেছে যার মাধ্যমে বাস্তব সময়ে অগ্রগতির অবস্থা পর্যবেক্ষণ করতে একটি অনলাইন এসডিজি ট্র্যাকার চালু করা হয়েছে বলেও উল্লেখ করলেন প্রধানমন্ত্রী।
এরপর এসডিজি বাস্তবায়নে সরকারের আরও কিছু কার্যক্রম থুলে ধরেন শেখ হাসিনা। যার মধ্যে জাতীয় তথ্য সমন্বয় কমিটি গঠন এবং বেসরকারি সেক্টর ও দায়িত্বশীল সুশীল সমাজকে এতে সম্পৃক্তকরণ অন্যতম।
তাছাড়া, জেলা ও উপজেলা পর্যায়ে এসডিজি বাস্তবায়নে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। সরকার অগ্রাধিকার ভিত্তিতে ৪০টি সূচক নির্ধারণ করেছে। এর বাইরে ১৭টি লক্ষ্য থেকে ৩৯টি সূচক বাছাই করা হয়েছে। বাকি একটি সূচক জরুরি প্রয়োজনীয়তার ভিত্তিতে স্থানীয় প্রশাসন শণাক্ত করবে।
তিনি বলেন, “স্থানীয় সরকারগুলো এসডিজি বাস্তবায়নের ক্ষেত্রে অ্যাম্বেসেডরের ভূমিকা পালন করবে। তাই এসডিজির সুফল জনগণের কাছে পৌঁছে দিতে স্থানীয়দের ক্ষমতায়নে ২০৩০ এজেন্ডা বাস্তবায়ন করতে হবে। আমরা তৃণমূল পর্যায়ে কাজ করে একটি ইতিবাচক পরিবর্তন আনতে পারি।জাতীয় ও স্থানীয় এজেন্ডা বাস্তবায়নের জন্য এসডিজি বাস্তবায়নে সংসদ ভূমিকা রাখতে পারে।”
জাতিসংঘ উন্নয়ন কর্মসূচির প্রশাসক অ্যাচিম স্টেইনার, ইন্টার পার্লামেন্টারিয়ান ইউনিয়নের প্রেসিডেন্ট গ্যাবরিয়েলা চ্যুয়েভাস ব্যারন, ইন্দোনেশিয়ার সুরাবায়র মেয়র ত্রি রিসমহারিনি অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন।
প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের এসডিজি বিষয়ক মুখ্য সমন্বয়কারী আবুল কালাম আজাদ মঞ্চে উপস্থিত ছিলেন। পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আবদুল মোমেন এবং পররাষ্ট্র সচিব মোহাম্মদ শহিদুল হকও সেখানে যোগ দেন।
