সিদ্ধান্ত পাল্টে দক্ষিণ আফ্রিকাতেই থাকছেন সাকিব

ঢাকার এভারকেয়ার হাসপাতালে ভর্তি হৃদরোগে আক্রান্ত সাকিব আল হাসানের মা শিরিন আক্তার। অভিজ্ঞ এই অলরাউন্ডারের ছেলে ও দ্বিতীয় কন্যা সন্তান নিউমোনিয়া নিয়ে একই হাসপাতালে ভর্তি। এ ছাড়া সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে (সিএমএইচ) ভর্তি সাকিবের শাশুড়ি, তিনি ক্যান্সারে আক্রান্ত। এ সময়ে পরিবারের সদস্যদের পাশে থাকতে দেশে ফেরার সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন সাকিব।
দক্ষিণ আফ্রিকার স্থানীয় সময় সন্ধ্যা ৬টায় দেশের বিমান চড়ার কথা ছিল বাংলাদেশ অলরাউন্ডারের। বিষয়টি নিশ্চিত করেছিলেন বিসিবির ক্রিকেট কমিটির চেয়ারম্যান জালাল ইউনুস। তবে দেশে ফেরার সিদ্ধান্ত সাকিব নিজেই পাল্টেছেন, দলের সঙ্গে দক্ষিণ আফ্রিকাতেই থাকছেন তিনি। তৃতীয় ওয়ানডের পর তার দেশে ফেরার ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে। দক্ষিণ আফ্রিকা থেকে পাঠানো বিসিবির এক ভিডিও বার্তায় বিষয়টি জানিয়েছেন বাংলাদেশ দলের টিম ডিরেক্টর খালেদ মাহমুদ সুজন।
পরিবারের কয়েকজন সদস্যের অসুস্থতার খবরে বিক্ষিপ্ত হয়ে পড়েন সাকিব। পরিবারের সদস্যদের শারীরিক অবস্থার উন্নতির অপেক্ষায় ছিলেন বিশ্বের অন্যতম সেরা এই অলরাউন্ডার। সেটা না হওয়ায় দেশে ফেরার সিদ্ধান্ত নেন তিনি। বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডও (বিসিবি) তাকে ছুটি দেয়। কিন্তু পরে সাকিব নিজেই মত পাল্টে দলের সঙ্গে থেকে যাওয়ার সিদ্ধান্তের কথা জানান।
সাকিবের দেশে ফেরার বিষয়ে বিকাল সোয়া ৫টার দিকে বিসিবির ক্রিকেট পরিচালনা বিভাগের চেয়ারম্যান জালাল ইউনুস দ্য বিজনেস স্ট্যান্ডার্ডকে বলেছিলেন, 'সাকিবকে ছুটি দেওয়া হয়েছে। আজ রাতেই দেশে ফিরছে সে। পরিবারের এমন অবস্থায় স্বাভাবিকভাবেই সাকিব খুব বিপর্যস্ত। এই অবস্থায় বিসিবি তার পাশে আছে।'
কিন্তু আধা ঘণ্টা পরই দক্ষিণ আফ্রিকা থেকে জানানো হয়, আপাতত দেশে ফিরছেন না সাকিব। বিসিবির পাঠানো ভিডিও বার্তায় খালেদ মাহমুদ সুজন বলেছেন, 'একটা মেডিকেল ইমারজেন্সি আছে, ওর পরিবারের অনেকে অসুস্থ। যে কারণে ওর মনে দ্বিধাদ্বন্দ্ব তো আছেই। বারবার ঢাকা থেকে, ওর পরিবার থেকে কথা হচ্ছে আসা-যাওয়ার ব্যাপারে। ওর জন্য প্রায়ই টিকেট বুক করতে হচ্ছে আমাদের। আজ ওর চলে যাওয়ার একটা কথা হচ্ছিল। তবে সাকিবই যাবে না, ও খেলে যাবে, সে খেলছে।'
'একটা সত্যি কথা, তার যাওয়ার কথা ছিল। বিসিবি থেকে জালাল ভাই হয়তো বলেও দিয়েছেন। এর কিছুক্ষণ পর সাকিব সিদ্ধান্ত নিল যে, ও যাবে না। খেলেই যাবে। এখন সাকিব যাচ্ছে না। হয়তো তৃতীয় ওয়ানডে খেলেই যাওয়ার একটা চিন্তা ভাবনা করবে। কারণ এখানে তো কারোরই হাত। খুবই গুরুতর ব্যাপার। পারিবারিক বিষয়টি তো সব সময়ই যেকোনো মানুষের জন্য গুরুত্বপূর্ণ। ওর জন্যও গুরুত্বপূর্ণ। তবে ও পুরোপুরিভাবে খেলতে চায়। প্রথম থেকেই খেলার ব্যাপারে সে সিরিয়াস। প্রথম ম্যাচে তো ম্যান অব দা ম্যাচ হলো, দ্বিতীয় ম্যাচে রান করেনি, তবে দারুণ বোলিং করেছে।' যোগ করেন খালেদ মাহমুদ।
সাকিব খেলতে চান জানিয়ে বিসিবির এই পরিচালক আরও বলেন, 'সে খেলতে চায়, ও চায় এই সিরিজটা জিততে, নিজে ভালো করতে। ও জানে যে, ও ছাড়া আমাদের জন্য কতটা কঠিন কম্বিনেশন করা। খুশির কথা হচ্ছে, সাকিব এই সিরিজের জন্য হয়তো সেক্রিফাইস করছে। যেটা বাংলাদেশ ক্রিকেটের জন্য ভালো সংবাদ। আশা করি, ওর বাসায় সব ঠিকঠাক থাকবে। আশা করি তৃতীয় ওয়ানডেটা ও খেলবে, ম্যাচটা আমরা জিতব, সিরিজ জিতব। এরপর হয়তো সিদ্ধান্ত নেবে কখন যাবে না যাবে।'