পাল্টে গেল বঙ্গবন্ধু স্টেডিয়ামের নাম

শুরুর নাম ছিল ঢাকা স্টেডিয়াম। পরবর্তীতে এসে স্টেডিয়ামটির নামকরণ করা হয় বঙ্গবন্ধু জাতীয় স্টেডিয়াম। এবার নাম পাল্টে করা হলো জাতীয় স্টেডিয়াম, ঢাকা। নতুন নামকরণ করা নিয়ে আজ (শনিবার) নির্দেশনা জারি করেছে ঢাকার পল্টনে অবস্থিত স্টেডিয়ামটির স্বত্ত্বাধিকারী জাতীয় ক্রীড়া পরিষদ (এনএসসি)। যথাযথ কর্তৃপক্ষের অনুমোদনক্রমে জারিকৃত নির্দেশনা অবিলম্বে কার্যক্রর করা হবে বলে জানানো হয়েছে এনএসসির পক্ষ থেকে।
জারিকৃত নির্দেশনায় বলা হয়েছে, উপর্যুক্ত বিষয়ের পরিপ্রেক্ষিতে সংশ্লিষ্ট সকলের সদয় অবগতির জন্য জানানো যাচ্ছে যে, জাতীয় ক্রীড়া পরিষদ কর্তৃক নির্মিত নিমোক্ত ক্রীড়া স্থাপনার নামকরণ নিম্নরূপে নির্দেশক্রমে নির্ধারণ করা হলো। নির্দেশের চিঠিতে এরপর নাম পরিবর্তনের বিষয়টি উল্লেখ করা হয়।
এনএসসির সচিব আমিনুল ইসলামের স্বাক্ষরিত নির্দেশনার চিঠিটি পাঠানো হয়েছে এনএসসির প্রকল্প পরিচালক, পরিকল্পনা ও উন্নয়ন অনুবিভাগের পরিচালক, স্টেডিয়াম প্রশাসক, বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশনের (বাফুফে) সভাপতি ও বাংলাদেশ অলিম্পিক অ্যাসোসিয়েশনের (বিওএ) মহাপরিচালকের কাছে। এ ছাড়া অনুলিপি পাঠানো হয়েছে প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়, মন্ত্রীপরিষদ বিভাগ, এনএসসি, যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়, জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের সচিব বরাবর।
ঐতিহ্যবাহী স্টেডিয়ামটি ১৯৫৪ সালে নির্মাণ করা হয়, নাম দেওয়া হয় ঢাকা স্টেডিয়াম। ১৯৯৬ সালে স্টেডিয়ামটি নামকরণ করা হয় বঙ্গবন্ধু জাতীয় স্টেডিয়াম। ২৯ বছর পর এসে আবারও বদলানো হলো স্টেডিয়ামটির নাম, এখন থেকে এই মাঠটিকে জাতীয় স্টেডিয়াম নামে ডাকা হবে। রাজনৈতিক পট পরিবর্তনের পর অনেক বদলের মিছিলে থাকলো এই স্টেডিয়ামটির নামকরণও।
নানা কারণে এই স্টেডিয়ামটি ঐতিহ্যে সমৃদ্ধ। ক্রিকেট, ফুটবল, হকি, বক্সিংসহ অনেক ধরনের খেলাই হয়েছে এই মাঠে। এই স্টেডিয়ামে পা রেখেছেন মোহাম্মদ আলী, জিনেদিন জিদান, লিওনেল মেসির মতো কিংবদন্তিরা। কেবল খেলাধুলাতেই নয়, বাংলাদেশের জন্মলগ্নের গুরুত্বপূর্ণ অংশেও জড়িয়ে আছে স্টেডিয়ামটি। ১৯৭১ সালের ১৬ ডিসেম্বর ঢাকায় প্রবেশ করা মুক্তিবাহিনীর প্রথম দলটি ক্যাম্প করে এই স্টেডিয়ামে।
নির্মাণের পরের বছর ১৯৫৫ সালে ভারতের বিপক্ষে নিজেদের প্রথম হোম টেস্ট ম্যাচ খেলে তৎকালীন অবিভক্ত পাকিস্তান ক্রিকেট দল। ৪৫ বছর পর ২০০০ সালে এই মাঠে ভারতের বিপক্ষেই অভিষেক টেস্ট খেলে বাংলাদেশ। ১৯৮৫, ১৯৯৩ ও ২০১০ সালের সাফ গেমসের উদ্বোধনী ও সমাপনী অনুষ্ঠান হয় এখানে।
জমজমাট আয়োজনে ২০১১ ক্রিকেট বিশ্বকাপ ক্রিকেটের পর্দা ওঠে জাতীয় স্টেডিয়ামে। ১৯৭৮ সালে এই মাঠে ১২ বছর বয়সী একজন বাঙালি ছেলের সঙ্গে একটি প্রদর্শনী ম্যাচ খেলেন কিংবদন্তি বক্সার মোহাম্মদ আলী। ২০১১ সালে লিওনেল মেসির আর্জেন্টিনা বনাম নাইজেরিয়া মধ্যকার একটি আন্তর্জাতিক প্রীতি ম্যাচও অনুষ্ঠিত হয় এই ঐতিহ্যবাহী স্টেডিয়ামে। ২০০৪-০৫ মৌসুমে মাঠটি বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড (বিসিবি) থেকে বাফুফের কাছে বরাদ্দ দেয়া হয়। এটাই জাতীয় ফুটবল দলের হোম মাঠ।