টি-২০ ম্যাচ জেতার মিশনে বাংলাদেশ

পারফরম্যান্সের গ্রাফ তলানিতে নামতে বসেছিল। একের পর এক হারে দেয়ালে পিঠ ঠেকার মতো অবস্থা। ভারতের বিপক্ষে একটি টি-টোয়েন্টি জিতলেও দুই টেস্টে করুণ হার। এরপর পাকিস্তানে টি-টোয়েন্টি সিরিজ ও টেস্ট হার। সব মিলিয়ে দিশেহারা হয়ে উঠেছিল বাংলাদেশ ক্রিকেট দল। জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে সিরিজ হলেও বাংলাদেশের কপালে ছিল চিন্তার ভাঁজ, জয়ের সম্ভাবনার আগে বসেছিল প্রশ্নবোধক চিহ্ন।
একমাত্র টেস্ট জয়ে সেই চিন্তা দূর হয়, কাটতে শুরু করে শঙ্কার কালো মেঘ। ওয়ানডে সিরিজ শুরু হতেই বাংলাদেশের সম্ভাবনার আকাশ ঝকঝকে। দেখা মেলে সতেজ এক বাংলাদেশের। জিম্বাবুয়েকে দুমড়ে-মুচড়ে দিয়ে ৩-০ ব্যবধানে সিরিজ জিতেছে। এবার আরও দুটি ম্যাচ জেতার মিশন শুরু হচ্ছে।
ফুরফুরে মেজাজ নিয়ে টি-টোয়েন্টি লড়াইয়ে মাঠে নামতে যাচ্ছে বাংলাদেশ। দুই ম্যাচ সিরিজের প্রথম টি-টোয়েন্টিতে আজ মিরপুর শেরেবাংলা জাতীয় ক্রিকেট স্টেডিয়ামে জিম্বাবুয়ের মুখোমুখি হচ্ছে মাহমুদউল্লাহ রিয়াদের দল। ম্যাচটি সন্ধ্যা ৬টায় শুরু হবে।
দারুণ ছন্দে আছে বাংলাদেশের ব্যাটিং লাই আপ। তিন ম্যাচের ওয়ানডে সিরিজে দুটি করে সেঞ্চুরি করেছেন তামিম ইকবাল ও লিটন দাস। মুশফিকুর রহিম, টি-টোয়েন্টি অধিনায়ক মাহমুদউল্লাহ রিয়াদরা রানের দেখা পাচ্ছেন। শেষ দিকে নেমে মোহাম্মদ সাইফউদ্দিনও ব্যাট চালিয়েছেন। টি-টোয়েন্টিতেও একই ধারায় থাকতে চাইবে বাংলাদেশ। সেটা হলে ক্রিকেটের এই সংক্ষিপ্ত ফরম্যাটেও পরীক্ষা দিতে হবে টানা হারের মধ্যে থাকা জিম্বাবুয়েকে।
বাংলাদেশ যখন একই ধারায় থেকে আরও জয় তুলে নেওয়ার লক্ষ্যে, জিম্বাবুয়ে তখন একটি জয়ের আশায়। টেস্ট হারের পর ওয়ানডে সিরিজ দিয়ে নতুন শুরু আশায় থাকলেও সেটা করতে পারেনি জিম্বাবুয়ে। ডোনাল্ট টিরিপানোর ব্যাটে দ্বিতীয় ম্যাচে আশা জাগলেও শেষ পর্যন্ত হার নিয়েই মাঠ ছাড়তে হয় সফরকারীদের।
তবুও নতুন ফরম্যাটে নতুন আশায় জিম্বাবুয়ের অধিনায়ক শন উইলিয়ামস। কারণ তিনি জানেন টি-টোয়েন্টিতে দুটি বলই ঘুরিয়ে দিতে পারে ম্যাচের মোড়। প্রথম টি-টোয়েন্টির আগে উইলিয়ামস বলেছেন, 'টি-টোয়েন্টিতে সুযোগ থাকে। যে কোনো দিকেই যেতে পারে ম্যাচ। এক ওভার, এমনকি দুটি বলও খেলার মোড় ঘুরিয়ে দিতে পারে। সন্ধ্যায় খেলা, দুই ইনিংসে পিচের আচরণ ভিন্ন হতে পারে। দেখা যাক।'
টানা জয়ের মধ্যে থাকলেও এই ফরম্যাটে জিম্বাবুয়েকে সমীহ দিচ্ছেন টি-টোয়েন্টি অধিনায়ক মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ। তিনি বলছেন, 'আগেই বলেছি যে জিম্বাবুয়ে খুবই ভালো টিম। এই ফরম্যাটে তারা খু্ব ভালো ক্রিকেট খেলছে।'
সর্বশেষ ৫ টি-টোয়েন্টিতে মাত্র একটি ম্যাচে জিতেছে বাংলাদেশ। এখানে বাংলাদেশের চেয়ে বেশ এগিয়ে জিম্বাবুয়ে। সর্বশেষ ৫ ম্যাচের ৪টিতেই জিতেছে সফরকারীরা। ছোট প্রতিপক্ষ হলেও জয়গুলো বাড়তি আত্মবিশ্বাসই দেবে জিম্বাবুয়েকে।
সোমবারের ম্যাচে তিনজন পেসার নিয়ে মাঠে নামতে পারে বাংলাদেশ। মুস্তাফিজুর রহমান ও মোহাম্মদ সাইফউদ্দিনের সঙ্গে পেস আক্রমণে দেখা যেতে পারে শফিউল ইসলামকে। একাদশে দেখা যেতে পারে দুজন স্পিনারকে। মাহেদী হাসানের সঙ্গে লেগ স্পিনার আমিনুল ইসলাম বিপ্লব থাকতে পারেন একাদশে। তবে অনভিষিক্ত নাসুম আহমেদও আছেন বিবেচনায়।
বাংলাদেশ একাদশ (সম্ভাব্য): তামিম ইকবাল, লিটন দাস (উইরেকটরক্ষক), নাঈম শেখ, মুশফিকুর রহিম, মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ (অধিনায়ক), আফিফ হোসেন, মোহাম্মদ সাইফউদ্দিন, মাহেদি হাসান, আমিনুল ইসলাম বিপ্লব/নাসুম আহমেদ, শফিউল ইসলাম ও মুস্তাফিজুর রহমান।
জিম্বাবুয়ে একাদশ (সম্ভাব্য): তিনাশে কামুনহুকামুই, রেজিস চাকাভা, ক্রেইগ আরভিন, ব্রেন্ডন টেলর (উইকেটরক্ষক), শন উইলিয়ামস, সিকান্দার রাজা, ওয়েসলি মাধেভেরে, রিচমন্ড মুতুম্বামি, টিনোটেন্ডা মুতোম্বদজি, ডোনাল্ট টিরিপানো, চার্লটন টিসুমা ও কার্ল মুম্বা।