Skip to main content
  • মূলপাতা
  • অর্থনীতি
  • বাংলাদেশ
  • আন্তর্জাতিক
  • খেলা
  • বিনোদন
  • ফিচার
  • ইজেল
  • মতামত
  • অফবিট
  • সারাদেশ
  • চাকরি
  • প্রবাস
  • English
The Business Standard বাংলা

Thursday
June 05, 2025

Sign In
Subscribe
  • মূলপাতা
  • অর্থনীতি
  • বাংলাদেশ
  • আন্তর্জাতিক
  • খেলা
  • বিনোদন
  • ফিচার
  • ইজেল
  • মতামত
  • অফবিট
  • সারাদেশ
  • চাকরি
  • প্রবাস
  • English
THURSDAY, JUNE 05, 2025
অবনের ঘাড়ে ইজেল বগলে রঙের বাক্স

ইজেল

আন্দালিব রাশদী
04 February, 2023, 07:20 pm
Last modified: 04 February, 2023, 08:57 pm

Related News

  • পোর্ট্রেইট কিউবার্স: রুবিক্স কিউবে ভেসে ওঠা মুখের গল্প!
  • রবীন্দ্রনাথ হো হো হেসে বললেন, ‘অবন চিরকালের পাগলা’
  • রানী চন্দের কলমে অবন ঠাকুর
  • অবন ঠাকুরের ‘অ্যারাবিয়ান নাইটস’
  • অবন ঠাকুরের শুরুর দিনগুলো

অবনের ঘাড়ে ইজেল বগলে রঙের বাক্স

সেই বালকের স্বাধীনতার ধরনটি ঠাকুরবাড়ির সাথে কোনোভাবে মেলানো যায় না — কাকের ছানা ধরে তার নাকে তার দিয়ে নথ পরিয়ে দেওয়া, কুকুরছানা-বিড়ালছানার লেজে কাঁকড়া ধরিয়ে দেওয়া, ঘুমন্ত গুরুমহাশয়ের টিকিতে বিছুটি লাগিয়ে আসা, বাবার চাদরে চোরকাঁটা বিঁধিয়ে রাখা, মায়ের ভাঁড়ারঘরে আমসির হাঁড়িতে আরশোলা ভরে দেওয়া — বাংলা শিশু-কিশোর সাহিত্যে এমন সৃজনশীল দুষ্টুমির কথা তার আগে কেউ লিখেননি; এমন বৈচিত্র্য রবীন্দ্রনাথও যে আনতে পারেননি, এটা মানতেই হবে।
আন্দালিব রাশদী
04 February, 2023, 07:20 pm
Last modified: 04 February, 2023, 08:57 pm
অবন ঠাকুর ও তার আঁকা 'ভারতমাতা'

বোলতার বাসায় ছুঁচোবাজি

আপনারা কেউ কখনো বোলতার বাসায় ছুঁচোবাজি করেছেন?

দশোত্তর বয়সে ব্যাপারটা আমার মাথায় ঢুকেছিল এবং মনে হয়েছিল এটা খুব কৌতূহলোদ্দীপক একটা কাজ, অবশ্যই এর সাথে দুষ্টুমি জড়িত — কিন্তু কাজের ধারাটা আসলে কেমন ষাটোত্তর বয়সেও পুরোপুরি বুঝে উঠতে পারিনি। আমার জীবনের অন্তত অর্ধশতক অবন ঠাকুর বোলতার বাসায় ছুঁচোবাজির ঘোর থেকে আমাকে বেরোতে দেননি। আমি এখনো ভাবি, বোলতার বাসায় ছুঁচোবাজি করতে হলে আমাকে কীভাবে এগোতে হবে?

অবনীন্দ্রনাথ ঠাকুর যখন লিখেছেন, কাজটা কী তিনি নিশ্চয়ই জানতেন। তার বুড়ো আংলাতে হৃদয় (রিদয়) নামে দয়ামায়াহীন ছেলেটার কর্মকাণ্ডের মধ্যে ছিল: পাখির বাসায় ইঁদুর, গরুর গোয়ালে বোলতা, ইঁদুরের গর্তে জল, বোলতার বাসায় ছুঁচোবাজি। এমনি নানা উৎপাতে সে মানুষ, পশু-পাখি, কীটপতঙ্গ সবাইকে এমন জ্বালাতন করছিল যে কেউ তাকে দুচক্ষে দেখতে পারত না।

বুড়ো আংলার এই চরিত্রটি শিশু কিংবা কিশোর অবনের ঠিক উল্টোটি। তিনি বেড়ে উঠেছেন ঠাকুরবাড়ির বনেদি সংসার কাঠামোতে নিয়মশৃঙ্খলার প্রতি পূর্ণ আনুগত্য প্রকাশ করে, ছেলে ভোলোনো ছড়া শুনে, বাড়ির স্থায়ী চাকর ও দাসীদের হাতে শাসিত হয়ে। তারাই ঘুম পাড়াত, তারাই ঘুম থেকে তুলে গরম দুধ খাওয়াত — তার ভেতরের ঘরবন্দী সত্তাটিই কি বুড়ো আংলোতে এসে নচ্ছার বালক হয়ে গেল? সেই বালকের স্বাধীনতার ধরনটি ঠাকুরবাড়ির সাথে কোনোভাবে মেলানো যায় না — কাকের ছানা ধরে তার নাকে তার দিয়ে নথ পরিয়ে দেওয়া, কুকুরছানা-বিড়ালছানার লেজে কাঁকড়া ধরিয়ে দেওয়া, ঘুমন্ত গুরুমহাশয়ের টিকিতে বিছুটি লাগিয়ে আসা, বাবার চাদরে চোরকাঁটা বিঁধিয়ে রাখা, মায়ের ভাঁড়ারঘরে আমসির হাঁড়িতে আরশোলা ভরে দেওয়া — বাংলা শিশু-কিশোর সাহিত্যে এমন সৃজনশীল দুষ্টুমির কথা তার আগে কেউ লিখেননি; এমন বৈচিত্র্য রবীন্দ্রনাথও যে আনতে পারেননি, এটা মানতেই হবে।

'বুড়ো আংলা'।

ছবি লিখিয়ে অবন ঠাকুর

অবনীন্দ্রনাথ ঠাকুর পদ্যে নিজের পরিচয় দিয়েছেন:

কোন ঠাকুর

ওবিন ঠাকুর

ছবি লেখে।

রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের পিতামহ দ্বারকানাথ ঠাকুর এবং পিতামহী দিগম্বরী দেবীর তৃতীয় পুত্রের নাম গিরিন্দ্রনাথ ঠাকুর (১৮২০-১৮৫৪), বেঁচে ছিলেন মাত্র চৌত্রিশ বছর। বিয়ে করেছিলেন যোগমায়া দেবীকে। তাদের দুই পুত্র গনেন্দ্রনাথ ও গুণেন্দ্রনাথ এবং দুই কন্যা কাদম্বিনী ও কুমুদিনি।

গিরিন্দ্রনাথ রবীন্দ্রনাথের বাবা দেবেন্দ্রনাথের ছোট। স্বামীর অকাল প্রয়াণের পর যোগমায়া ও দেবেন্দ্রনাথের মধ্যে ওয়ারিশ নিয়ে মামলা-মোকদ্দমা হয়। ঠাকুরবাড়ি ভেঙে ৫ নম্বর দ্বারকানাথ লেন ও ৬ নম্বর দ্বারকানাথ লেন প্রতিষ্ঠিত হয়। দেবেন্দ্রনাথ ঠাকুর মামলায় দক্ষ ছিলেন, ছোটোভাইয়ের স্ত্রীর প্রতি সদয় ছিলেন না। ভাসুর ও ভ্রাতৃবধূর কলহের কারণে দুই বাড়ির নারীকুলের সদ্ভাব রহিত থাকে এবং তারা বাক্য বিনিময় থেকেও নিজেদের নিরস্ত রাখেন। অবনীন্দ্রনাথ ঠাকুর লিখেছেন যে কেবল দিদিমা যোগমায়ার কথা শুনেছেন, ছবিও দেখেননি। ছবি তোলাই হয়নি।

গুণেন্দ্রনাথ (১৮৪৭-১৮৮১) গিরিন্দ্রনাথের চতুর্থ সন্তান, তার স্ত্রী সৌদামিনী। তাদের বিয়ের সম্ভাব্য বছর ১৮৬৪। সৌদামিনী খুলনার ফুলতলার মেয়ে। গুণেন্দ্রনাথ বেহিসেবি মদ্যপানের কারণে মাত্র ৩৪ বছর বয়সে প্রয়াত হন। এ সময়ে গুণেন্দ্র ও সৌদামিনীর চার পুত্র-গগনেন্দ্রনাথ, সমরেন্দ্রনাথ, অবনীন্দ্রনাথ ও কুমারেন্দ্রনাথ এবং দুই কন্যা বিনয়িনী ও সুনয়নী জন্মগ্রহণ করে। সমীর সেনগুপ্ত লিখেছেন, তারা সকলেই কোনো না কোনোভাবে ৫ নং দ্বারকানাথ লেনের বাড়িকে বিখ্যাত করেছেন। অবনীন্দ্রনাথ ঠাকুরের বাবা রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের চাচাতো ভাই। অবন ঠাকুর তাই ভাইপো। রবীন্দ্রনাথ ৬ নং দ্বারকানাথ লেনের নিবাসী। ফুলতলা গ্রামের ভবতারিণীকে (রবীন্দ্রনাথ নামটি পছন্দ করেননি, বদলে মৃণালিনী করেছেন) ৬ নম্বর বাড়ির বউ হিসেবে পেয়ে ৫ নম্বর বাড়ির একই গাঁয়ের সৌদামিনী খুশিই হয়েছিলেন।

আর এ খুশির বিবরণ দিয়েছেন স্বয়ং অবন ঠাকুর তার ঘরোয়াতে। মা গায়ে হলুদেও পরে রবিকাকাকে আইবুড়োভাতের নেমতন্ন করলেন। মা খুব খুশি, একে যশোরের মেয়ে তায় রথীর (রথী হচ্ছেন রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের পুত্র রথীন্দ্রনাথ ঠাকুর) মার সম্পর্কে বোন। খুব ধুমধামে খাওয়ার ব্যবস্থা হলো।

অবনীন্দ্রনাথ ঠাকুরের জন্ম ৭ আগস্ট ১৮৭১, রবীন্দ্রনাথের জন্মের ১০ বছর পর এবং মৃত্যু ৫ ডিসেম্বর ১৯৫১, এখানেও ১০ বছর পর। দুজনেই ৮০ বছরের মর্ত্যজীবন যাপন করেছেন। রবীন্দ্রনাথের পর জোড়াসাঁকো ঠাকুরবাড়ির সবচেয়ে কীর্তিমান ব্যক্তিত্ব হচ্ছেন অবনীন্দ্রনাথ ঠাকুর। তিনি আধুনিক ভারতীয় চিত্রশিল্পের প্রথম পুরুষ, বেঙ্গল স্কুল শিল্প ঘরানার সৃষ্টি ও লালন তিনিই করেছেন। কেবল শিশুসাহিত্য যদি বিবেচনা করা যায়, তাহলে তিনি অবশ্যই রবীন্দ্রনাথকে ছাড়িয়ে গেছেন — চিত্রশিল্পে তো বটেই। বাংলা শিশুসাহিত্য এখনো অবন ঠাকুরের প্রভাব বলয় থেকে বেরিয়ে আসেনি।

'মিথস অব দ্য হিন্দুস অ্যান্ড বুড্ডিস্ট' গ্রন্থে অবন ঠাকুরের অলঙ্করণ ( ১৯১৪)।

সমীর সেনগুপ্তের রবীন্দ্রনাথের আত্মীয়স্বজন গ্রন্থের অবনীন্দ্রনাথ ঠাকুর থেকে উদ্ধৃত করে এ রচনায় পরবর্তী অংশ প্রণয়ন করা হয়েছে।

ঠাকুরবাড়ির দাসদাসীর ভৃত্যতান্ত্রিক শাসনব্যবস্থার কথা রবীন্দ্রনাথ নিজেও বলেছেন। অবন ঠাকুর বলছেন তার শিশুকালের পদ্মদাসীর কথা:

একেবারে রাতের অনুকারের মতো কালো ছিল আমার দাসী — সে কাছে বসেই ঘুম পাড়াত, কিন্তু অন্ধকারে মিলিয়ে থাকত সে। দেখতে পেতেম না তাকে, শুধু ছোঁয়া পেতেম থেকে থেকে। কোনো কোনো দিন অনেক রাতে জেগে বসে সে চালভাজা কট কট চিবোত আর তালপাতার পাখা নিয়ে মশা তাড়াত। শুধু শব্দে জানতাম এটা। আমি জেগে আছি জানলে দাসী চুপি চুপি মশারি তুলে একটুখানি নারকেল নাড়ু অন্ধকারেই মুখে গুঁজে দিত — নিত্য খোরাকের উপরি পাওনা ছিল এই নাড়ু।'

বাচ্চা মানুষ করে পদ্মদাসী বিছে হার বকশিস পেয়েছিলেন। তারপর শিশু অবন চলে যান রামলাল ভৃত্যের তত্ত্বাবধানে। এবার পড়াশোনা পর্ব। '...বাড়ির কাছেই নর্মাল স্কুল। কিন্তু হলে হবে কী? নিজের ইচ্ছেয় কোনোদিন যাইনি স্কুলে। পালিয়ে পালিয়ে বেড়াই আজ পেটে ব্যথা কাল মাথা ধরার ছুতো — রেহাই নেই কিছুতেই। স্কুলে যাবার জন্য গাড়ি আসে গেটে। চীৎকার কান্নাকাটি — যাব না, কিছুতেই যাব না। চাকররা জোর করে গাড়িতে তুলবেই তুলবে। মহা ধস্তাধ্বস্তি, অতটুকু ছেলে পারব কেন তাদের সঙ্গে? আমার কান্নায় ছোটো পিসিমার (কুমুদিনী দেবী) এক একদিন দয়া হয়, 'ও গুনু, নাই বা গেল অবা আজ স্কুলে।' ...কোনো কোনোদিন তার কথায় ছাড়া পাই। কিন্তু বেশির ভাগ দিনই চাকররা আমায় দুহাতে ধরে ঠেলে গাড়ির ভিতরে তুলে দিয়ে দরজা বন্ধ করে দেয়... স্কুল ভালো লাগে না মোটেই।'

স্কুল 'অবা'র যত অপছন্দেরই হোক, তার আঁকাআঁকির হাতেখড়ি হলো নর্মাল স্কুলে — মেটে কুঁজো আর মেটে গ্লাস এঁকে। স্কুলে তিনি তখন পড়াশোনা করেন না, আসা-যাওয়া করেন, মানে স্কুলটা অনেকটাই সয়ে গেছে। 'কুঁজো আর গ্লাস আঁকা শিখে ভারি ফুর্তি আমার। যখন তখন সুবিধে পেলেই কুঁজো-গ্লাস আঁকি। বড় মজা লাগে কুঁজোর মুখের গোল রেখাটি যখন টানি। মন একেবারে কুঁজোর ভিতরে কুয়োর তলায় ব্যাঙ্গের মতো টুপ করে ডুব দিতে চায়।'

১৭ বছর বয়সে ২৭ নভেম্বর ১৮৮৮ সুহাসিনীকে বিয়ে করেন। একই দিনের একই অনুষ্ঠানে তার ঠিক বড় ভাই সমরেন্দ্রনাথ বিয়ে করেন নিশিবালাকে। নিশিবালা ও সুহাসিনী চাচাতো-ফুফাতো বোন। কালের বিচারে সুহাসিনী অনেক স্মার্ট মেয়ে। ঠাকুরবাড়ির জানা-অজানাতে সুমিতেন্দ্রনাথ লিখেছেন:

'বিকেলে প্রতিদিন যেতেন কোথাও না কোথাও, কোনোদিন হোয়াইটওয়েলডন কোনোদিন নিয়ুমার্কেট, হল অ্যান্ড অ্যান্ডার্সন বা আর্মি-নেভিতে বেড়াতে বা জিনিসপত্র কেনাকাটা করতে। এইসব দোকানবাজার ছিল তখনকার ইংরেজদের কলকাতার ল্যান্ডমার্ক।'

সুহাসিনী টি কর্নারে বসে চা পান করতেন। সে কালের কলকাতার ইংরেজ কি অ্যাংলো ইন্ডিয়ান নারীর চায়ের দোকানে বসে চা পানের নজির আছে, কিন্তু কোনো বাঙ্গালি ঘরের বউ? অবন ঠাকুরের মা এই কাজটি করেছেন।

কবি জসীমউদ্দীন খ্যাতিমান অবন ঠাকুরের ঘনিষ্ঠ হয়ে ওঠেন এবং ঠাকুরবাড়ির আঙ্গিনায় গ্রন্থে সুহাসিনীর কথা লিখেছেন: 'অবনীন্দ্রনাথের স্ত্রী ছিলেন সাদাসিধে রকমের ভালো মানুষটি... তিনি রেডিও শুনিতে খুব পছন্দ করিতেন। আমি মাঝে মাঝে রেডিও সম্পর্কে গল্প বলিয়া তাঁহাকে খুশি করিতাম। তাঁহার ঘরে গিয়া রেডিও শুনিতে চাহিলে তিনি যেন হাতে স্বর্গ পাইতেন। অত বড় বাড়িতে সবাই আর্ট-কালচার লইয়া বড় বড় চিন্তাধারা লইয়া মশগুল থাকিত। স্বামীর বিশ্বব্যাপী খ্যাতি কত বিরাট, কত বিস্তৃত! তিনি সেখানে হারাইয়া যাইতেন। তাই তাহার ক্ষুদ্র রেডিও-যন্ত্রটি বাজাইয়া নিজের স্বল্প-পরিসর একটি জগৎ তৈরী করিয়া লইতেন।

'সিদ্ধর্থের বিদায়' (১৯১৪)।

তাদের বিয়ের দিনই রবীন্দ্রনাথের পুত্র রথীন্দ্রনাথ ঠাকুর জন্মগ্রহণ করেন। সমরেন্দ্রনাথকে বিয়ে করা নিশিবালা বয়সে সুহাসিনীর ছোট হলেও সম্পর্কের হিসেবে ভাসুর বধূ হয়ে জ্যেষ্ঠতা অর্জন করে নিয়েছিলেন। 

বিয়ের পর অবন ঠাকুরের জীবনের ধরনটা পাল্টে গেল! উল্টো জামা পরে ধুলো পায়ে ছুটোছুটি করার দিন চলে গেছে।

বিয়ের পর চাকরবাকররা ছোট বাবু মহাশয় বলে ডাকে, দারোয়ানরা ছোট হুজুর বলে সেলাম করে। দুবেলা কাপড় ছাড়া অভ্যাস করতে হলো, শিমলের কোঁচালো ধুতি পরে ফিটফাট হয়ে গাড়ি চড়ে বেড়াতে যেতে হলো, একটু-আধটু আতর-ল্যাভেন্ডার গোলাপও মাখতে হলো, তাকিয়া ঠেস দিয়ে বসতে হলো, গুড়গুড়ি টানতে হলো, ড্রেস বুট এঁটে থিয়েটারে যেতে হলো, ডিনার খেতে হলো। এককথায় আমাদের বাড়ির ছোট বাবু সাজতে হলো।'

ছবি আঁকাআঁকির ব্যাপারটা বিয়ের পরের ঘটনা। সংস্কৃত কলেজে এক ক্লাসমেটের কাছে শিখেছেন লক্ষ্মী আর স্বরস্বতী আঁকা। ঠাকুরবাড়িতে নারীশিক্ষা ও স্বাধীনতার বিপ্লব ঘটানো নারী জ্ঞানদানন্দিনী দেবী (রবীন্দ্রনাথের বড়দা, ভারতের প্রথম আইসিএস সত্যেন্দ্রনাথ ঠাকুরের স্ত্রী) চিত্রশিল্পের বিপ্লব আনতে অগ্রণী ভূমিকা পালন করলেন। তিনি অবনের আর্ট স্কুলে পড়ার আয়োজন করলেন। প্রতি লেসন কুড়ি টাকা। প্যাস্টেল, তেলরং, প্রতিকৃতি আঁকা — 'ছ' মাসের মধ্যে স্টুডিয়োর সমস্ত শিক্ষা শেষ করে ঘরে পড়লুম।'

উৎসাহ দিলেন রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর, অবনের রবিকাকা। ততদিনে চিত্রাঙ্গদা লেখা হয়ে গেছে। রবিকাকার আদেশের সাথে ছবি এঁকে দিতে হবে। 'সেই সময় চিত্রাঙ্গদার সমস্ত ছবি নিজ হাতে এঁকেছি, ট্রেস করেছি। ...এই হলো রবিকাকার সঙ্গে আর্ট নিয়ে আমার প্রথম যোগ। তারপর থেকে এতকাল রবিকাকার সঙ্গে বহুবার আর্টের ক্ষেত্রে যোগাযোগ হয়েছে, প্রেরণা পেয়েছি তার কাছ থেকে।'

প্যাস্টেলে মন না ভরায় ইংরেজ শিল্পী সি এল পামারকে ধরে তার কাছে অয়েল পেন্টিং শিখলেন, জলরঙের কাজও শিখলেন তার কাছে। তারপর 'ল্যান্ডস্কেপ আর্টিস্ট হয়ে, ঘাড়ে ইজেল, বগলে রঙের বাক্স নিয়ে ঘুরে বেড়াতে লাগলুম। আর্নেস্ট বিনফিল্ড হ্যাভেল কলকাতা আর্ট স্কুলের প্রিন্সিপাল হয়ে এলেন, এতোদিনকার পাশ্চাত্য রীতির চিত্রাঙ্কন শিক্ষাদান রহিত হলো-নতুন ভাবনার উন্মেষ হলো-ইউরোপীয় শিল্পরীতিতে ভারতীয় সংস্কৃতিকে তুলে আনতে হবে, ভারতীয় শিল্পরীতিকেও এগিয়ে দিয়ে যেতে হবে। হ্যাভেল সাহেব চিত্রশিল্পের নবদিগন্ত উন্মোচন করলেন। অবন ঠাকুর শুক্লাভিসার নামের যে ছবি আঁকলেন, তা কিন্তু 'দেশি রাধিকা হলো না-মনে হলো, মেমসাহেবকে শাড়ি পরিয়ে শীতের রাত্তিরে ছেড়ে দিয়েছি। বড়ো মুষড়ে গেলুম না: ও হবে না। দেশী টেকনিক শিখতে হবে।'

১৯০৪ সালে অবন হ্যাভেলের চাপাচাপিতে যোগ দিলেন কলকাতা আর্ট স্কুলে। শুধু নামে মাত্র শিক্ষকতা নয়, তার হাতেই সৃষ্টি হলো বেঙ্গল স্কুল ঘরানা।অবনীন্দ্রনাথ ঠাকুরকে কেন্দ্র করে ভারতীয় চিত্রকলার একটি রেনেসাঁর জন্ম হলো।

Related Topics

টপ নিউজ

অবনীন্দ্রনাথ ঠাকুর / অবন ঠাকুর / জোড়াসাঁকোর ঠাকুরবাড়ি / চিত্রকলা

Comments

While most comments will be posted if they are on-topic and not abusive, moderation decisions are subjective. Published comments are readers’ own views and The Business Standard does not endorse any of the readers’ comments.

MOST VIEWED

  • নিরাপত্তা উদ্বেগে ১২ দেশের নাগরিকের যুক্তরাষ্ট্রে প্রবেশে ট্রাম্পের নিষেধাজ্ঞা
  • আঞ্চলিক পরমাণু জোট নিজ দেশে হলে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে চুক্তি করবে ইরান
  • ডিজিটাল ওয়ালেটের লাইসেন্স পেল গ্রামীণ টেলিকমের প্রতিষ্ঠান 'সমাধান'
  • টাকার নতুন নোটের খোলাবাজারে দ্বিগুণ মূল্য, গ্রাহক হয়রানি চরমে
  • দোকানে হানা দিলো হাতি, খাবার খেয়ে ‘টাকা না দিয়েই’ পালালো!
  • সাভার ট্যানারির কঠিন বর্জ্য থেকে জেলাটিন ও শিল্প প্রোটিন গুঁড়া উৎপাদন করবে চীনা কোম্পানি

Related News

  • পোর্ট্রেইট কিউবার্স: রুবিক্স কিউবে ভেসে ওঠা মুখের গল্প!
  • রবীন্দ্রনাথ হো হো হেসে বললেন, ‘অবন চিরকালের পাগলা’
  • রানী চন্দের কলমে অবন ঠাকুর
  • অবন ঠাকুরের ‘অ্যারাবিয়ান নাইটস’
  • অবন ঠাকুরের শুরুর দিনগুলো

Most Read

1
আন্তর্জাতিক

নিরাপত্তা উদ্বেগে ১২ দেশের নাগরিকের যুক্তরাষ্ট্রে প্রবেশে ট্রাম্পের নিষেধাজ্ঞা

2
আন্তর্জাতিক

আঞ্চলিক পরমাণু জোট নিজ দেশে হলে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে চুক্তি করবে ইরান

3
বাংলাদেশ

ডিজিটাল ওয়ালেটের লাইসেন্স পেল গ্রামীণ টেলিকমের প্রতিষ্ঠান 'সমাধান'

4
অর্থনীতি

টাকার নতুন নোটের খোলাবাজারে দ্বিগুণ মূল্য, গ্রাহক হয়রানি চরমে

5
অফবিট

দোকানে হানা দিলো হাতি, খাবার খেয়ে ‘টাকা না দিয়েই’ পালালো!

6
অর্থনীতি

সাভার ট্যানারির কঠিন বর্জ্য থেকে জেলাটিন ও শিল্প প্রোটিন গুঁড়া উৎপাদন করবে চীনা কোম্পানি

EMAIL US
contact@tbsnews.net
FOLLOW US
WHATSAPP
+880 1847416158
The Business Standard
  • About Us
  • Contact us
  • Sitemap
  • Privacy Policy
  • Comment Policy
Copyright © 2025
The Business Standard All rights reserved
Technical Partner: RSI Lab

Contact Us

The Business Standard

Main Office -4/A, Eskaton Garden, Dhaka- 1000

Phone: +8801847 416158 - 59

Send Opinion articles to - oped.tbs@gmail.com

For advertisement- sales@tbsnews.net