Skip to main content
  • মূলপাতা
  • অর্থনীতি
  • বাংলাদেশ
  • আন্তর্জাতিক
  • খেলা
  • বিনোদন
  • ফিচার
  • ইজেল
  • মতামত
  • অফবিট
  • সারাদেশ
  • চাকরি
  • প্রবাস
  • English
The Business Standard বাংলা

Wednesday
May 14, 2025

Sign In
Subscribe
  • মূলপাতা
  • অর্থনীতি
  • বাংলাদেশ
  • আন্তর্জাতিক
  • খেলা
  • বিনোদন
  • ফিচার
  • ইজেল
  • মতামত
  • অফবিট
  • সারাদেশ
  • চাকরি
  • প্রবাস
  • English
WEDNESDAY, MAY 14, 2025
জীবনানন্দ কি ঈশ্বর বিশ্বাসী!

ইজেল

আমীন আল রশীদ
03 April, 2021, 04:30 pm
Last modified: 03 April, 2021, 04:59 pm

Related News

  • শেষ ট্রাম মুছে গেছে, শেষ শব্দ; কলকাতা এখন…
  • সৃজনশীল ধান বিজ্ঞান কি খুলে দিচ্ছে খাদ্য নিরাপত্তার নতুন দিগন্ত?
  • পাওয়া গেল জীবনানন্দের শেষ স্মৃতি, ৭৫ বছর ধরে আগলে রেখেছে চক্রবর্তী পরিবার
  • আমি সেই ট্রামটিকে খুঁজি! আজ জীবনানন্দ দাশের মৃত্যুদিন
  •  ‘বনলতা সেন’-এর পাণ্ডুলিপি

জীবনানন্দ কি ঈশ্বর বিশ্বাসী!

জীবনানন্দের কমলালেবু হয়ে ফিরে আসতে চাওয়ার একটি কারণ হতে পারে এই যে, কমলালেবুতে রয়েছে সূর্যের ঔজ্জ্বল্য। কমলালেবু শীতের নিষ্প্রভ ও নিরানন্দ পরিবেশে নিয়ে আসে উজ্জ্বল বর্ণচ্ছটা। তবে ঠিক যে, কবি পুনর্জন্মে মানুষ হিসেবে ফিরে আসতে চাচ্ছেন না কেন, সে প্রশ্নের জবাব এই কবিতায় কিংবা রূপসী বাংলায়ও নেই।
আমীন আল রশীদ
03 April, 2021, 04:30 pm
Last modified: 03 April, 2021, 04:59 pm
মা কুসুমকুমারীর জীনাবসানের পর জীবনানন্দ ও তার পরিবারের সদস্যরা

জীবনানন্দ দাশ ধর্ম সম্বন্ধে বিশেষ কোনো মন্তব্য করতে চাননি বা তাঁর সেই ক্ষমতা নেই বলেও তিনি মনে করতেন। তবে তিনি এটি বিশ্বাস করতেন যে, নীতিকে ধর্ম মনে করতে পারলে এবং পৃথিবীকে সেই হিসেবে মোটামুটি ধার্মিক দেখতে পারলে তৃপ্তি বোধ করা যায়। কিন্তু বিশ্বাসী ধর্মাশ্রয়ীরা কেবলমাত্র নীতি ও যুক্তিকে ধর্ম বলে মনে করেন না। তাদের মতে, এগুলো বাদ দিয়েও ধর্ম চলে। তাঁরা মনে করেন, ধর্ম সাধনায় এমন কোনো চৈতন্যের দরকার নেই যার ফলে বিশ্বাস জন্মাবার আগে যুক্তি ও জিজ্ঞাসার জন্ম হয়। 'যুক্তি জিজ্ঞাসা ও বাঙালী' প্রবন্ধে জীবনানন্দ লিখেছেন, 'যারা অশিক্ষিত আধা-শিক্ষিত তারাই শুধু নয়, অনেক সুশিক্ষিত বুদ্ধিমান লোকও ভক্তিকেই ধর্ম মনে করেন—অন্ধ ভক্তিকেও।'১

'দেশ কাল সন্তুতি' কবিতায় সেই খেদোক্তি:
'এক পৃথিবীর ধর্ম নষ্ট হয়ে গেছে,
অন্য এক পৃথিবীর বুদ্ধি ক্ষয়ের সন্ধানে;
ইতিহাস কোনোদিনই নির্দোষ নয়;
কাজ করে চলেছে সজ্ঞানে।'

পারিবারিকভাবে জীবনানন্দ ছিলেন ব্রাহ্মসমাজের অন্তর্ভুক্ত—যারা মূলত একেশ্বরবাদের চিন্তা ধারণ করতেন। তবে হিন্দুদের মতো দেব-দেবীর পূজা করতেন না। সব ধর্মের প্রতি ছিল ব্রাহ্মদের শ্রদ্ধা। আর এই সর্বধর্মের প্রতি শ্রদ্ধা ও সহনশীলতা তথা হিন্দু-মুসলমান ও খ্রিষ্টানদের সম্প্রীতি দেখেই জীবনানন্দ বেড়ে উঠেছেন।২ মূলত অগ্রসর ও আধুনিক এক ব্রাহ্মপরিবারের ভিতর বেড়ে উঠেছিলেন শৈশব-কৈশরের জীবনানন্দ দাশ।৩

বরিশাল ব্রাহ্ম সমাজ মন্দিরের জরাজীর্ণ ভবন

তার দাদা সর্বানন্দ দাশ ব্রাহ্মধর্মে৪ দীক্ষিত হন এবং সেই ধারাবাহিকতা বজায় রাখেন বাবা সত্যানন্দও। প্রথম কাব্যগ্রন্থ প্রকাশের আগ পর্যন্ত জীবনানন্দ তার নাম লিখতেন জীবনানন্দ দাশগুপ্ত।৫ এরপরে তিনি নামের এই পদবি থেকে 'গুপ্ত' শব্দটি বিযুক্ত করেন এবং হয়ে যান জীবনানন্দ দাশ। তার বাবার প্রথম নাম ছিল দুর্গামোহন দাশ। ব্রাহ্ম ধর্মে দীক্ষিত হবার পরে নাম বদলে হয়ে যান সত্যানন্দ দাশ। সর্বানন্দের প্রথম নাম ছিল সর্বানন্দ দাসগুপ্ত। ব্রাহ্ম হবার পরে 'দাস' হয়ে যায় 'দাশ' এবং অপ্রয়োজনীয় মনে করে বৈদ্যত্বের চিহ্নস্বরূপ 'গুপ্ত' বর্জন করেন। সেই ধারা বজায় থাকে তার উত্তরসূরীদের নামের ক্ষেত্রেও।৬

এ প্রসঙ্গে কয়েকটি তথ্য মোটা দাগে উল্লেখ করা যায়:

১. ধর্ম সম্পর্কে জীবনানন্দের ব্যক্তিগত আগ্রহ না থাকলেও তিনি যে পরিবারে ও পরিবেশে বেড়ে উঠেছে, সেখানে ধর্ম ছিল অত্যন্ত প্রভাববিস্তারী। ফলে তিনি না চাইলেও ধর্মীয় অনেক বিধিবিধান এড়াতে পারেননি।

২. জীবনানন্দের প্রথম কবিতা 'বর্ষ আবাহন' প্রকাশিত হয় সত্যানন্দ দাশ-মনমোহন চক্রবর্তী সম্পাদিত ব্রহ্মবাদী পত্রিকায় ১৯১৯ সালে; বরিশালে যে পত্রিকাটি ছিল ব্রাহ্মদের মুখপাত্র।

৩. জীবনানন্দের প্রথম গদ্যও (কালীমোহন দাশের শ্রাদ্ধবাসরে) প্রকাশিত হয় এই পত্রিকায়। লেখাটি স্মৃতিচারণমূলক হলেও এতে তরুণ জীবনানন্দের ধর্ম ও বিশ্বাস সম্পর্কে কিছুটা ধারণা মেলে।

৪. দেশভাগের আগে বরিশাল ছিল একটি হিন্দুপ্রধান শহর। এই জেলার মোট জনসংখ্যার ৭২ শতাংশ মুসলমান হলেও বরিশাল শহরের অধিবাসীদের মধ্যে মাত্র ২৯ শতাংশ ছিলেন মুসলমান। ড. আকবর আলি খানের ভাষায়, জীবনানন্দের সময়ে বরিশাল শহর ছিল 'মুসলিম জনসমুদ্রে একটি হিন্দুদ্বীপ'। তাই মুসলমানদের ধর্মবিশ্বাস ও আচার-আচরণ সম্পর্কে তার সুস্পষ্ট ধারণা ছিল। তার প্রথম কাব্যগ্রন্থ 'ঝরাপালকে' প্রচুর আরবি-ফারসি শব্দের সাবলীল প্রয়োগ তার প্রমাণ।৭

৫. ১৯১৭ সালে বরিশাল ব্রজমোহন কলেজ থেকে আই.এ পাস করার পরে জীবনানন্দ যখন কলকাতার প্রেসিডেন্সি কলেজে ভর্তি হন, তখন থাকতে শুরু করেন খ্রিষ্টান মিশনারি পরিচালিত অক্সফোর্ড মিশন হোস্টেলে (এখন ওয়াইএমসিএ)। ব্রাহ্মদের সাথে খ্রিষ্টানদের একটা যোগাযোগ ছিল।

৬. কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে এম.এ পাস করার পরে ১৯২২ সালে জীবনানন্দ কর্মজীবন শুরু করেন কলকাতার সিটি কলেজে শিক্ষকতার মধ্য দিয়ে, সেই কলেজটিও ছিল ব্রাহ্মসমাজ পরিচালিত এবং এখানে তার চাকরি পাওয়ার ক্ষেত্রে বাবা সত্যানন্দের ব্রাহ্ম পরিচয়টি কাজে লাগে। সত্যানন্দ নিজেও এই কলেজের ছাত্র ছিলেন। আবার ছয় বছরের মাথায় এই কলেজ থেকে জীবনানন্দের চাকরিটাও যায় আবাসিক হলে স্বরস্বতী পূজাকে কেন্দ্র করে হিন্দু ও ব্রাহ্ম ছাত্রদের মধ্যে বিরোধের ফলে সৃষ্ট সংকটের কারণে।৮

৭. ১৯৩০ সালের ৯ মে লাবণ্য দাশকে জীবনানন্দ ব্রাহ্ম ধর্মমতে বিয়ে করেন, ঢাকার ব্রাহ্মসমাজ মন্দিরে।

৮. হিন্দু-মুসলমান উত্তেজনা ও সাম্প্রদায়িক দাঙ্গা কবিকে ব্যথিত করেছে। বিভিন্ন কবিতা-গল্প-উপন্যাসে তার উল্লেখ আছে। এ বিষয়ে তার সবচেয়ে উল্লেখ্যযোগ্য কবিতা '১৯৪৬-৪৭'।

৯. ১৯৫৪ সালের ২২ অক্টোবর মধ্যরাতে কলকাতার শম্ভুনাথ পণ্ডিত হাসপাতালে মৃত্যু হয় জীবনানন্দের। হাসপাতালে মৃত্যুশয্যায় একবার তিনি রবীন্দ্রসংগীত শুনতে চেয়েছিলেন।৯ ছোট ভাই অশোকানন্দের বাসায় জীবনানন্দের মরদেহ ঘিরে নারীরা ব্রাহ্মমতে রবীন্দ্রসংগীত গেয়েছিলেন।১০ মৃত্যুর পরদিন কেওড়াতলা শ্মশানে তাকে দাহ করা হয়। এটি হিন্দু ধর্মের রীতি।

ঢাকা ব্রাহ্মসমাজ লাইব্রেরি, এখানে জীবনানন্দের বিয়ে হয়েছিল

ঈশ্বরচিন্তা

জীবনানন্দ ঈশ্বরে বিশ্বাসী ছিলেন কি না সে বিষয়ে সরাসরি তিনি কিছু বলেননি। 'রূপসী বাংলা'র একটি কবিতায় লিখেছেন:

'জানি না ঈশ্বর কে বা,
জানি শুধু ভুখা ভগবান,
দিনগত পাপ ক্ষয় করে পাব ত্রাণ;
তারপর একদিন নিমতলা ঘাটে কিংবা
কাশী মিত্রের তল্লাটে পড়ে রব।'

আকবর আলি খান মনে করেন, জীবনানন্দের মতে, ঈশ্বর মানুষের প্রয়োজনে সৃষ্টি করা হয়েছে। 'সুরঞ্জনা' কবিতায় ঈশ্বর প্রসঙ্গে তিনি লিখেছেন:

'মানুষ কাউকে চায়—তার সেই নিহত উজ্জ্বল
ঈশ্বরের পরিবর্তে অন্য কোনো সাধনার ফল।'

অর্থাৎ ঈশ্বর অপরিহার্য নয়। তার বিকল্প সাধনা করে বের করা যেতে পারে। প্রশ্ন হলো কী সেই বিকল্প? অচিন্ত্য কুমার সেনগুপ্ত একদিন জীবনানন্দকে জিজ্ঞেস করেছিলেন, কী মানো? ভেবেছিলেন জীবনানন্দ বলবেন ঈশ্বর মানি। কিন্তু মৃদু হেসে তিনি বলেছিলেন, মানুষের নীতিবোধ মানি। বলেন, মানুষের নীতিবোধ যা ঈশ্বরও তাই।১১

ইন্দ্র মিত্র জানাচ্ছেন, জীবনানন্দের সঙ্গে একদিন ঈশ্বর নিয়ে কথা হয়। মিত্র বললেন তিনি ঈশ্বরে বিশ্বাস করেন। কিন্তু জীবনানন্দ একেবারে উল্টো করে বললেন, তিনি ঈশ্বরে বিশ্বাস করেন না। মানুষের নীতিবোধে বিশ্বাস করেন।১২

'যুক্তি জিজ্ঞাসা ও বাঙালী'তে জীবনানন্দ লিখেছেন, 'যাঁরা (কম বেশি আন্তরিকভাবে) ঈশ্বর ও ধর্ম মানেন তাঁদের ধর্মে পর্যন্ত জাতীয়তাবাদ ঢুকেছে, ধারণা জন্মেছে যে ঈশ্বর কোনো বিশেষ ধর্ম ও জাতির জন্য। একই ধর্মের মানুষদের ভিতরে চিড় দেখা দিচ্ছে জাতির ব্যাপার নিয়ে—যদিও ইংরেজও খ্রিষ্টান, জার্মানও খ্রিষ্টান।' এখন দেখা যাচ্ছে জীবনানন্দের এই পর্যবেক্ষণ অন্য ধর্মের বেলায়ও অভিন্ন। জীবনানন্দ মনে করেন, ঈশ্বর আছেন কি না স্বতন্ত্র কথা। কিন্তু খুব সম্ভব কারো নেহাতই ভাবাবেগের ফলের ভেতরে তিনি তাঁর শুদ্ধ স্বরূপের বিশেষ কিছু আছে বলে মনে হয় না।

জীবনানন্দের পূর্ব পুরুষেরা যেমন ঈশ্বরে বিশ্বাসী ছিলেন এবং ধর্ম চর্চায় শুধু আত্মনিয়োগই করেননি, বরং তার বাবা সত্যানন্দ অনেকটা ধর্মীয় নেতার পর্যায়ে চলে গিয়েছিলেন, জীবনানন্দ সেই জায়গা থেকে বেরিয়ে যান। অম্বুজ বসু লিখছেন, 'পিতার ধর্মশীলতা পুত্রের মধ্যে পুরোপুরি আশ্রয় পায়নি। অথচ ঐতিহাসিকভাবে ধর্মের কার্যকারিতা ও ভূমিকা সম্পর্কে চেতনা ছিল তাঁর। কিন্তু বর্তমান যুগপ্রেক্ষিতে সম্ভবত ধর্মের রূপান্তরের প্রয়োজন অনুভব করতেন তিনি। অন্তত ঈশ্বরের অস্তিত্ব সম্পর্কে তাঁর খুব বেশি শ্রদ্ধা ছিল না।'১৩

পিতার ধর্মবিশ্বাস সম্পর্কে জীবনানন্দ লিখেছেন, 'তারঁ ধর্মের ভিতরে গতি ছিল। তাঁর ধর্মবিশ্বাস কোনোদিন আঘাত পেতে ভয় পেত না। ব্রাহ্মসমাজের পুরাচার্যদের কাছ থেকে ও নিজের পিতার কাছ থেকে যে ধর্মবিশ্বাস তিনি পেয়েছিলেন পুনরায় নিজের অণ্বেষায় সে জিনিস অর্জন না করে ভোগ করবার মতন মনের অলস পাণ্ডিত্য তাঁর কোনোদিন ছিল না। তাই তিনি সেকালের উনবিংশ শতাব্দীর ডারউইন, হাক্সলি, মিল-এর মতামত যেমন পর্যালোচনা করেছেন—তেমনি ওয়েলস, রাসেল এমনকি রাশিয়ার নববিধানের সঙ্গেও তিনি অপরিচিত ছিলেন না।' অর্থাৎ জীবনানন্দ এখানে ধর্মের বিষয়টাকে চলমান বিষয় তথা সমসাময়িকতা থেকে দূরে রেখে নিছকই বিশ্বাস ও ভক্তির বিষয় বলে মনে করতেন না এবং তার বাবা সত্যানন্দ দাশও যে সেই আধুনিক চিন্তার মানুষ ছিলেন, এই প্রবন্ধে সেটিই তুলে ধরেছেন। তবে এও ঠিক যে, মাঝে মাঝে সত্যানন্দ এই ভেবে কষ্ট পেতেন যে, তাঁর সন্তান-সন্ততি এবং স্থানীয় মানুষেরাও তাঁর প্রিয় ধর্মের সম্বন্ধে এখন আর তেমন আগ্রহান্বিত নয়।

জীবনানন্দের বোন সুচরিতা দাশ 'তাঁর তিরোধানের আঠারো বছর পরের জন্মদিনে' শীর্ষক একটি স্মৃতিকথায় জানাচ্ছেন, 'শিশিরস্নানের শেষ নম্র কোমল প্রত্যুষ পূর্বগগনে আবির্ভুত হতে না হতেই বাবার মন্দ্রমধুর কণ্ঠে ধ্বনিত হতো ঔপনিষদিক শ্লোক। সহসা সমস্ত পটভূমি প্রসারতায় থমথম করত নিলয়-স্রোতে, থরথর কাঁপত যেন সার্বিক প্রকৃতি-ছন্দ। মনে হয় সেই গম্ভীর গাঢ় আনন্দের আবহাওয়ায় বুঝি দাদারই (জীবনানন্দ) স্বচ্ছন্দতা ছিল বেশি।' এখানে বাবার কাছ থেকে পাওয়া এই স্থিরতা আর গুরুগম্ভিরতা পরবর্তীকালে তাঁর চারিত্রিক অনন্য বৈশিষ্ট্যে পরিণত হয়। এখানে ধর্মের বাণীর চেয়ে জীবনানন্দকে এই ধর্মীয় আবহের শান্ত ও কোমলতা বেশি আকৃষ্ট করে।
জীবনানন্দের ছোটভাই অশোকানন্দ দাশের জবানিতে জানা যাচ্ছে, জীবনানন্দ ধর্মীয় আচার-অনুষ্ঠান পছন্দ করতেন না। তবে ব্রাহ্মধর্মের সারবস্তুতে বিশ্বাস করতেন। যে ধর্মের হাওয়ায় তিনি বেড়ে উঠেছেন, উপনিষদের সে ধর্মের নির্দেশ হচ্ছে অন্ধকার থেকে আলোকে যাওয়ার সাধনা। মানুষের জীবনে পতন আছে, অন্ধকার আছে, কিন্তু তা চিরন্তন নয়।১৪

জীবনানন্দের সবশেষ কর্মস্থল হাওড়া গার্লস কলেজের সহকর্মী অজিতকুমার ঘোষের সঙ্গে তার একটি বিশেষ সখ্যতা গড়ে উঠেছিল। থাকতেনও কলকাতা শহরের একই জায়গায়। কখনো কলেজ শেষ করে একসাথে বাড়ি ফেরার বাস ধরতেন। তাদের 'দর্শনচক্র' নামে একটি নিয়মিত আলোচনাসভা হতো। তাতে জীবনানন্দকে একদিন কিছু একটা বলার অনুরোধ করা হলো। তিনি ক্যাথলিক ধর্ম সম্পর্কে কিছু একটা বলার আগ্রহ দেখান। কিন্তু পরে আর যাননি। প্রসঙ্গত একদিন অজিতকুমারকে বলেছিলেন, ব্রাহ্মধর্ম এবং ব্রাহ্মসংস্কৃতির মধ্যে একটা পার্থক্য থাকা দরকার। প্রভাতকুমার দাস বলছেন, কখনো ভগবান বা আত্মা সম্পর্কেও গভীর আগ্রহ প্রকাশ করতেন। কথা বলতেন পূর্বজন্মের বিষয়ে। তবে হয়তো বিশ্বাস করতেন না।১৫

জীবনানন্দের বিয়েতে উপহার পাওয়া রুবাইয়্যাত

সুহৃদ সুরজিৎ দাশগুপ্ত একদিন সরাসরি তাকে জিজ্ঞেস করেছিলেন, আপনি কি ব্রাহ্ম? জীবনানন্দ এই লঘু প্রশ্নের জন্য প্রস্তুত ছিলেন না। জবাবে বলেছিলেন, 'গডে বিশ্বাস না করলে খ্রিষ্টান হওয়া যায় না। ব্রহ্মে বিশ্বাস না করলে ব্রাহ্ম হওয়া যায় না।' সুরজিৎ পাল্টা প্রশ্ন করেন, আপনি কি ব্রহ্মে বিশ্বাস করেন না? জবাবে জীবনানন্দ বলেন, 'না, আমি মানবে বিশ্বাস করি। যে মানবোচিত গুণকে মনুষ্যত্ব বলে সেই মনুষ্যত্বে বিশ্বাস করি।' কিন্তু আপনি তো ব্রাহ্মসন্তান। সুরজিতের এই দ্বিতীয় পাল্টা প্রশ্নের জবাবে জীবনানন্দ বলেছিলেন, 'ব্রাহ্মসন্তান কিন্তু ব্রহ্মবাদী নই।'১৬

আবদুল মান্নান সৈয়দ লিখছেন, 'পিতার মতো বলিষ্ঠ, ব্রাহ্মসমাজের আচার্যর ভূমিকা পালন করা ছিল তার পক্ষে অসম্ভব।' কিন্তু জীবনানন্দ মানুষের নীতিবোধে বিশ্বাস করলেও সেই নীতিবোধ যখন বিপর্যস্ত হতে দেখেছেন নিজের দেশ ও সারা পৃথিবীতে, তখন তার লেখায় উঠে আসে মানুষে মানুষে এই রক্তপাত, রীরংসা, জিঘাংসা আর নিরাসার কথা।

দাঙ্গায় ব্যথিত মুখ

জীবনানন্দের জীবদ্দশায় দুবার বড় ধরনের সাম্প্রদায়িক দাঙ্গা হয়। একটি ১৯২৬ সালে, এরপর ১৯৪৬ সালে। এ দুবারই কবি হিসেবে তিনি তার অভিমত ও বক্তব্য কবিতায় উচ্চারণ করেন।

বঙ্গবাণী পত্রিকার যে সংখ্যায় (জ্যৈষ্ঠ ১৩৩৩) কাজী নজরুলের 'কাণ্ডারী হুঁশিয়ার' ছাপা হয়েছিল, সেই সংখ্যাতেই জীবনানন্দের 'হিন্দু-মুসলমান' কবিতাটি প্রকাশিত হয়: 

'মহামৈত্রীর বরদ তীর্থে পুণ্য ভারতপুরে
পুজার ঘণ্টা মিশিছে হরষে নামাজের সুরে সুরে।'

এর দুই দশক পরে ১৯৪৬ সালে ফের হিন্দু-মুসলমান দাঙ্গা শুরু হয়। তখন জীবনানন্দ বরিশাল ব্রজমোহন কলেজে শিক্ষকতা করেন। জীবন-জীবিকা ও ভবিষ্যৎ নিয়ে চিন্তিত অধ্যাপক কলেজ থেকে ছুটি নিয়ে চলে যান কলকাতায়। এই সময়ে তিনি লেখেন তার বিখ্যাত বতা '১৯৪৬-৪৭':

'মানুষ মেরেছি আমি—তার রক্তে আমার শরীর
বলে গেছে; পৃথিবীর পথে এই নিহত ভ্রাতার
ভাই আমি।'

এই দাঙ্গায় যারা নিহত হলেন, রক্তাক্ত হলেন, তাদের ধর্ম পরিচয় কী, সেটি জীবনানন্দের কাছে গুরুত্বপূর্ণ নয়। তিনি জানেন, যারা মরেছে তারা সবাই মানুষ। তারা সবাই তার বন্ধু-পরিজন।

'বলে যাবে কাছে এসে, ইয়াসিন আমি
হানিফ মহম্মদ মকবুল করিম আজিজ
আর তুমি? আমার বুকের পরে হাত রেখে মৃত মুখ থেকে,
চোখ তুলে শুধাবে সে রক্তনদী উদ্বেলিত হয়ে
বলে যাবে, গগন, বিপিন, শশী পাথুরেঘাটার।'

নির্জনতার কবি বলে একসময় যাকে চিহ্নিত করেছিলেন বুদ্ধদেব বসু, তার সেই নির্জনতার স্বপ্ন ভঙ্গ করে দেয় মানুষের এই হানাহনি। কিন্তু তারপরও তিনি মানুষের উপর থেকে বিশ্বাস হারাননি। ব্যক্তি মানুষের মৃত্যুর পরও মানবের ধারাবাহিকতায় আস্থা রেখেছেন। রেডিওতে পড়া সবশেষ কবিতায় (মহাজিজ্ঞাসা) উচ্চারণ করেছিলেন:

'ইতিহাস অবিরল শূন্যের গ্রাস
যদি না মানব এসে তিন ফুট জাগতিক কাহিনীতে 
হৃদয়ের নীলাভ আকাশ
বিছিয়ে অসীম করে রেখে দিয়ে যায়।'

নায়কের অবিশ্বাস

একটা অদ্ভুত বিষয় হলো, জীবনানন্দের উপন্যাসের নায়কেরাও (বস্তুত সব উপন্যাসের নায়ক তিনি নিজেই) ঈশ্বরে বা পরকালে বিশ্বাসী নন। 'কারুবাসনা' উপন্যাসের নায়ক হেম পরকালে বিশ্বাস করেন না। করার কোনো কারণও খুঁজে পান না। পিতাপুত্রের একটি সংলাপ:

বাবা: মন্দ বলেনি, কিন্তু পরলোকে আমি তো বিশ্বাস করি।
হেম: আমি তো কিছুতেই করে উঠতে পারলাম না।
বাবা: পারলে না?
হেম: মৃত্যুর পর কী আর থাকে?
বাবা: থাকে বৈকি। সমস্তই থাকে। আরো গভীর আধ্যাত্মভাবে থাকে, উপনিষদের...।
হেম: উপনিষদ যারা তৈরি করেছেন তারা পরলোক থেকে ফিরে এসে রচনা করেননি তো; রক্তমাংসের শরীরের ইহলোকে বসে যে ধারণা তাঁদের ভালো লেগেছে তাই ব্যক্ত করে গেছেন; তাঁদের বিশ্বাসে আশ্বস্ত হবার কোনো কারণ দেখি না।'

বরিশাল মহাশশ্মান

জীবনানন্দ নাস্তিক ছিলেন?

গোপালচন্দ্র রায় লিখেছেন, 'জীবনানন্দ পরবর্তী জীবনে ঈশ্বরে বিশ্বাস করুন আর নাই করুন, আমরা কিন্তু তার এই পরবর্তী কালেররই অসংখ্য কবিতায় ঈশ্বর, নানা দেব দেবী, স্বর্গ, নরক, প্রভৃতির যথেষ্ট উল্লেখ পাই। এবং ঈশ্বর নেই এ কথা তিনি কোথাও স্পষ্ট করে বলেননি।'১৮ মি. রায় মনে করেন, ঈশ্বরের অস্তিত্বের ব্যাপারে তিনি (জীবনানন্দ) সংশয়বাদী ছিলেন।  

১৯৪৯ সালে লেখা 'সত্য, বিশ্বাস ও কবিতা' শীর্ষক প্রবন্ধে ধর্ম-দর্শন ও বিজ্ঞান সম্পর্কে তার ব্যক্তিগত ধারণা খুব পরিস্কার। লিখেছেন, 'গত তিন-চার হাজার বছর মানুষের সভ্যতায় দর্শন কাজ করে গেছে; এইবারে বিজ্ঞান কাজ করবে বলে মনে হয়। কাজেই রাষ্ট্রে ও সমাজে পরপর কয়েকটি বিপ্লব দেখা দেবার কথা। বিপ্লব যে রক্তাক্ত হবে ও দুর্ধষভাবে নিষ্ঠুর, এমন কথা আমি বলছি না। কিন্তু মানুষের তিন-চার হাজার বছরের ভাবনা-ধারণা অভ্যাস সরিয়ে দিয়ে সে জায়গায় নতুন সত্যে দীক্ষা-শিক্ষা বসাতে গেলে সে বিপ্লব খুব ছোট বা সোজা বা দুয়েকটা বিষম বিলোড়নে মাত্র যে তার শেষ, সে কথা মনে করতে পারা যায় না।'

এখানে ধর্ম ও বিশ্বাস সম্পর্কে জীবনানন্দের অবস্থান ও ভাবনা পরিস্কার। তিনি বিজ্ঞানেই আস্থা রাখছেন। তবে তিনি এও মনে করেন, পুরনো মতে ও মীমাংসায় আস্থা মরে যেতে সময় নেয়; নতুন সত্যে—মানে, সত্যের নির্মলতর মর্মে—বিশ্বাসও খুব ধীরে ধীরে আসে জীবনে।

এই প্রবন্ধেই লিখেছেন, 'ধর্ম এখনো দাঁড়িয়ে আছে বটে, কিন্তু সত্য—নিজের এলাকার সত্যগুলোও তার বিজ্ঞানের হাতে চলে যাচ্ছে—দেখছে সে, তার সত্য ভুল? বিজ্ঞানের সমস্তই সত্য? ধর্মের নষ্ট সত্যগুলোর স্থিরতর মানে বেরুবে কিন্তু বিজ্ঞানে খণ্ডিত না হয়ে? না সত্যই বদলে যাবে ধর্মের? অন্য এক নতুন জিনিসকে ধর্ম বলা হবে?'

এই প্রবন্ধ লেখার প্রায় ২৫ বছর আগে তারুণ্যের উচ্ছ্বল দিনগুলিতে মাতামহ চন্দ্রনাথ দাশের অগ্রজ কালীমোহন দাশের (জীবনানন্দ যাকে দাদা ডাকতেন) মৃত্যুতে একটি প্রবন্ধ (শোকপ্রস্তাব জাতীয় লেখা) লেখেন 'কালীমোহন দাশের শ্রাদ্ধবাসরে' শিরোনামে। মূলত এটিই তার প্রথম প্রকাশিত গদ্য; ছাপা হয় ব্রহ্মবাদী পত্রিকায় অগ্রহায়ণ-পৌষ ১৩৩২ সংখ্যায়। এই প্রবন্ধে তিনি দাদার স্মৃতিচারণ করলেও সেখানে প্রসঙ্গত ধর্ম ও পুনর্জন্মের প্রসঙ্গও আসে। এই বয়সেই তিন উপলব্ধি করতে পারেন, 'প্রাজ্ঞ ব্যক্তির কাছে মৃত্যু সলীল সঞ্চরমান আত্মার একটি নবতর লীলা—নবীন সঞ্চার। সৃষ্টির ভেতরে কোনো সুপ্তি বা মাত্রা নেই—আছে শুধু অন্তহীন বিকাশ।' মানুষের জীবন নিয়ে এমন আশাবাদী তিনি সারা জীবনই ছিলেন। এই প্রবন্ধে বরিশালে ব্রাহ্মসমাজের ম্রিয়মাণ হয়ে পড়ার প্রসঙ্গও রয়েছে।

জীবনানন্দের কবিতায় ব্যক্তিগত ধর্মবিশ্বাসের প্রসঙ্গ সেভাবে সরাসরি আসেনি। কিন্তু ২৫ বছর বয়সে তার যে ধর্মচেতনা ও বিশ্বাস, ৫০ বছরে বয়সে লেখা 'সত্য, বিশ্বাস ও কবিতা' শীর্ষক প্রবন্ধেও সেই অবস্থান থেকে তিনি সরেননি। অনেক বিখ্যাত কবি-সাহিত্যিকের বেলায় যেটি দেখা যায় যে, তারুণ্যের বিশ্বাস শেষ বয়সে গিয়ে আমূল পাল্টে যায় এবং ব্যক্তিগত জীবনাচারেও ঢের পরিবর্তন আসে; জীবনানন্দের বেলায় সেরকমটি ঘটেনি।

পুনর্জন্মে হয়তো শঙ্খচিল

ধূসর পাণ্ডুলিপির 'মৃত্যুর আগে' কবিতায় যিনি পাখপাখালির ডাক ও কাকের উড়ে যাওয়ার ভেতরে জীবনকে দেখেন, 'আট বছর আগের একদিন' কবিতায় আত্মহত্যা করতে যাওয়া একজন সংসারী মানুষের গলায় দড়ি হাতে ঝুলতে যাওয়ার মুহূর্তেও জীবনের মানে খোঁজার কথা বলেন, সেই কবিই আবার 'রূপসী বাংলা'য় মৃত্যুর পরে শঙ্খচিল শালিখ হয়ে ফিরে আসতে চান। প্রশ্ন হলো তিনি কি হিন্দু বা বৌদ্ধ ধর্মের জন্মান্তরবাদ বা পুনর্জন্মে বিশ্বাস করতেন?

'পুনর্জন্ম' বা 'জন্মান্তরবাদ'সম্পর্কে জীবনানন্দের সবচেয়ে জনপ্রিয় কবিতা 'আবার আসিব ফিরে'। যেখানে বলছেন: 

'আবার আসিব ফিরে, ধানসিড়িটির তীরে; এই বাংলায়,
হয়তো মানুষ নয়, হয়তোবা শঙ্খচিল শালিখের বেশে।'

তবে 'বনলতা সেন' কাব্যগ্রন্থের 'কমলালেবু' কবিতায় পুনর্জন্মের প্রসঙ্গটি একেবারে ভিন্ন। এখানে তিনি ফিরে আসতে চেয়েছেন মানুষ কিংবা কোনো প্রাণি নয়, খাদ্য হিসেবে। কোনো একজন মুমূর্ষুর বিছানার কিনারে।

'একবার যখন দেহ থেকে বার হয়ে যাবো
আবার কি ফিরে আসব না আমি পৃথিবীতে? 
আবার যেন ফিরে আসি 
কোনো এক শীতের রাতে
একটা হিম কমলালেবুর করুণ মাংস নিয়ে
কোনো এক পরিচিত মুমূর্ষুর বিছানার কিনারে।'

আকবর আলি খান মনে করেন, কবির কমলালেবু হয়ে ফিরে আসতে চাওয়ার একটি কারণ হতে পারে এই যে, কমলালেবুতে রয়েছে সূর্যের ঔজ্জ্বল্য। কমলালেবু শীতের নিষ্প্রভ ও নিরানন্দ পরিবেশে নিয়ে আসে উজ্জ্বল বর্ণচ্ছটা। তবে ঠিক যে, কবি পুনর্জন্মে মানুষ হিসেবে ফিরে আসতে চাচ্ছেন না কেন, সে প্রশ্নের জবাব এই কবিতায় কিংবা রূপসী বাংলায়ও নেই।

মি. খান মনে করেন, জীবনানন্দের কবিতায় বৌদ্ধদর্শনের গভীর প্রভাব লক্ষ্য করা যায়। বৌদ্ধদর্শন অনুসারে, নির্বাণ লাভ না করা পর্যন্ত মানুষকে পূর্বজন্মের পাপের বোঝা বইতে হয়। তাই প্রতিটি জন্মেই দুঃখ হচ্ছে মানুষের নিয়তি। অথচ গাছপালা, লতাপাতা, পশুপাখিকে পূর্বজন্মের পাপের বোঝা বইতে হয় না। পরবর্তী জন্মেও তাদের দুঃখ অনিবার্য নয়। সে কারণেই অর্থাৎ এই দুঃখ ও পাপ থেকে দূরে থাকতেই জীবনানন্দ হয়তো কখনো শঙ্খচিল-শালিখ আবার কখনো কমলালেবু হয়ে পৃথিবীতে ফিরে আসতে চেয়েছেন।১৯

তবে নিছকই একটি ফল হয়ে নয় বরং তিনি আসতে চেয়েছেন কোনো এক পরিচিত মুমূর্ষু রোগীর বিছানার কিনারে। অর্থাৎ এই ফিরে আসতে চাওয়ার পেছনেও মানুষের প্রতি তার মমত্ববোধ এবং ঈশ্বরে নয় বরং মানুষের নীতিবোধে তার যে বিশ্বাস—সেটিই স্পষ্ট।

বরিশাল শহরের পাশে কীর্তনখোলা নদী

ধূসর পাণ্ডুলপির 'পিপাসার গান' কবিতায়ও তার মৃত্যুর পরে ফিরে আসার ব্যাকুলতা:

'আবার পাব কি আমি ফিরে
এই দেহ! এ মাটির নিঃসাড় শিশিরে
রক্তের তাপ ঢেলে আমি
আসিব কি নামি!
হেমন্তের রৌদ্রের মতন 
ফসলের স্তন আঙুলে নিঙাড়ি
এক ক্ষেত ছাড়ি
অন্য ক্ষেতে 
চলিব কি ভেসে
এ সবুজ দেশে
আর একবার!'

এখানে ফিরে আসাতে চাওয়াটা আরও ভিন্নতর। মানুষ, পশুপাখি কিংবা ফল হয়ে নয়; তিনি আসতে চান তার সবচেয়ে প্রিয় ঋতু হেমন্ত হয়ে। প্রসঙ্গত, এই হেমন্তেই তিনি পৃথিবীকে বিদায় জানান। তিনি হেমন্তে ফিরে আসতে চান ফসলের সাথে অন্য এক গভীর প্রেমের সম্পর্ক গড়ে তুলে। ফসলের স্তন আঙুলে নিঙড়ায়ে এক ক্ষেত ছেড়ে অন্য ক্ষেতে ছুটে চলতে চান। তখন বস্তুত এই হেমন্ত ঋতু আর একটি সময়ে আবদ্ধ না থেকে সে রক্তমাংসের মানুষে পরিণত হয়। এখানেও যতটা না তার পুনর্জন্মে বিশ্বাস তার চেয়ে ঢের বেশি বাংলার রূপ প্রকৃতির প্রতি তার ভীষণ অনুরাগ, মমতা আর ভালোবাসা। মৃত্যুর পরেও তিনি এ সবুজ বাংলায় ভেসে বেড়াতে চান—হোক তা শঙ্খচিল শালিখ, কমলালেবু কিংবা হেমন্ত রূপে। 

যতীন সরকার মনে করেন, জীবনানন্দের কবিতায় পুনর্জন্মের বিষয়টি অনেক গভীর ও সূক্ষ্ম। এর সঙ্গে কোনো ধর্মবিশ্বাসজনিত জন্মান্তরবাদের সম্পর্ক আছে বলে তিনি মনে করেন না। কারণ জীবনানন্দের আস্তিকতা এখানে এক নতুন ধরনের সর্বাস্তিবাদের রূপ পরিগ্রহ করেছে, তাঁর কবিতা অদ্বৈত-চেতনায় লালিত হয়েছে। এ কারণে মি. সরকার আরও মনে করেন, মৃত্যুর পরে কোনো মুমূর্ষুর বিছানার কিনারায় কমলালেবুর করুণ মাংস হয়ে ফিরে আসতে চাওয়ার তার যে আকুতি, সেই কামনার উৎস হচ্ছে মানুষের নীতিবোধে বিশ্বাস করারই আস্তিকতা।২০

এই আস্তিক্যভূমিতে দাঁড়িয়ে কবির ঘোষণা:

'মানুষের মৃত্যু হলে তবুও মানব থেকে যায়;
অতীতের থেকে উঠে আজকের মানুষের কাছে
আরো ভালো—আরো স্থির দিক নির্ণয়ের মতো চেতনার
পরিমাপে নিয়ন্ত্রিত কাজ
কতোদূর অগ্রসর হয়ে গেলে জেনে নিতে আসে।'

তবে আকবর আলি খান বিষয়টিকে অন্যভাবে দেখতে চান। তিনি ইংরেজি Rebirth ও Reincarnation-এর থিওরি দিয়ে বিষয়টি বুঝতে চান। Rebirth মানে পুনরায় জন্ম, অর্থাৎ একই ব্যক্তির পুনরায় জন্মগ্রহণের প্রক্রিয়া।২১

Oxford Advanced Learner's Dictionnary-তে Rebirth-এর অর্থে লেখা হয়েছে: The process of coming or ringining sth back into existence or use. আর এর বিস্তারিত ব্যাখ্যায় লেখা হয়েছে: A complete spiritual change in which a person finds a stronger religious faith, is conerted to a new religion, etc.অর্থাৎ এখানে Rebirth বলতে ব্যক্তির ধর্মীয় বিশ্বাস পরিবর্তনকে বোঝানো হয়েছে বা আরও পরিস্কার করে বললে ধর্মান্তর। 

আর Reincarnation মানে পুনর্ভব যা আত্মার ধারাবাহিক অন্তহীন আত্মপ্রকাশ। এখানে হিন্দু ও বৌদ্ধধর্মের মূল তফাৎ। হিন্দুরা Rebirthঅর্থাৎ মৃত্যুর পরে পুনর্জন্মে বিশ্বাস করে আর বৌদ্ধরা Reincarnation বা পুনর্ভব বা আত্মার অন্তহীন আত্মপ্রকাশে। মানে পুনর্ভব একটি বিরামহীন প্রক্রিয়া, যার শুরু আছে কিন্তু শেষ নেই। 

Oxford Advanced Learner's Dictionnary-তে Reincarnation-এর অর্থে লেখা হয়েছে: The belief that after sb's death their soul transfers to a new body. A person or an animal in whom a soul reincarnated. অর্থাৎ মৃত্যুর পরে কোনো মানুষ বা প্রাণির আত্মার অন্য কারো শরীরে প্রবেশ।

উপসংহার

…মৃত্যুর পরে কী হবে না হবে, পুনর্জন্মে পাখি হয়ে ফিরবেন কি ফিরবেন না, সেই তর্কের বাইরে গিয়ে জীবনানন্দ তার 'টেবিলের অনেক বই' কবিতায় পৃথিবীতে মানুষের প্রেমেরই জয়গান গেয়েছেন:

'হয়তো এ ব্রহ্মাণ্ডের অবিনাশ অন্ধকার ছাড়া
মানুষের ভবিষ্যতে কিছু নেই আর
…
তবু এই পৃথিবীতে প্রেমের গভীর গল্প আছে
জীবনে রয়েছে তার (অপরূপ) প্রতিভাত আলো'।

 


টিকা ও উৎস নির্দেশ

১. জীবনানন্দ রচনাবলি, চতুর্থ খণ্ড, ঐতিহ্য, পৃষ্ঠা ৫৬৫

২. আবদুল মান্নান সৈয়দ রচনাবলি, ষষ্ঠ খণ্ড, পৃ. ৬৫৪

৩. মাহমুদ নাসির জাহাঙ্গীরি, কবি জীবনানন্দ দাশ, আদ্যন্ত সম্পসারণশীল চেতনা, পৃষ্ঠা ১২

৪. ব্রাহ্ম আন্দোলন : ডেভিড কফ তাঁর 'দ্য ব্রাহ্মসমাজ অ্যান্ড দ্য শেপিং অব দ্য মডার্ন ইন্ডিয়ান মাইন্ড' গ্রন্থে লিখেছেন: 'হিন্দু ধর্মাচার সম্পর্কে ইউরোপীয় মিশনারিদের সমালোচনার প্রতিক্রিয়া হিসেবে উনিশ শতকের বিশের দশকের শেষদিকে কলকাতায় গঠিত হয় ব্রাহ্মসমাজ (নির্গুণ ব্রহ্মর নামের সঙ্গে সমাজ বা গোষ্ঠী যুক্ত করে বিশেষণমূলক এই নামকরণ)। ব্রাহ্ম আন্দোলনের প্রতিষ্ঠাতা রাজা রামমোহন রায় (১৭৭৪-১৮৮৩) চেয়েছিলেন হিন্দু ধর্মকে সেমেটিক আদলের একটি একেশ্বরবাদী ধর্মে রূপান্তরিত করতে। এরই ধারাবাহিকতায় ১৮২৮ সালে তিনি প্রতিষ্ঠা করেন ব্রাহ্মসমাজ। ক্লিন্টন বি সিলি (অনন্য জীবনানন্দ, ফারুক মঈন উদ্দীন সম্পাদিত, পৃষ্ঠা ২৩) লিখেছেন, ব্রাহ্ম মতাদর্শের বেশিরভাগ আচার হিন্দু ধর্মগ্রন্থের সূত্র সমর্থন করে, তবুও অনেক আচার খ্রিষ্টধর্মের মতো। তাত্ত্বিকভাবে ব্রাহ্মরা জাতভেদ স্বীকার করে না। যার প্রমাণ মেলে সর্বানন্দ দাশগুপ্তর সর্বানন্দ দাশ-এপরিণত হওয়ার মধ্য দিয়ে। সমসাময়িক হিন্দুত্ববাদের বহু দেব-দেবীর পরিবর্তে ব্রাহ্মরা বিশ্বাস করে উপনিষদের একক নিরাকার ঈশ্বরে। ব্রাহ্মসমাজে মূর্তিপূজা অশুভ হিসেবে পরিগণিত। ব্রাহ্মসমাজের নবোত্থানের যুগে (১৮৬০-১৮৭০) বরিশালে ব্রাহ্মসমাজের গোড়াপত্তন এবং সর্বানন্দ পরিবারের হাত ধরেই বরিশালে ব্রাহ্মসমাজের নবজাগরণের উদ্ভব, বিকাশ ও গতি। 

জীবনানন্দের বোন সুচরিতা দাশ (ভোরের পাখি, সম্পাদনা অশোক পাল, পৃষ্ঠা ৬) লিখছেন, সর্বানন্দ যখন ব্রাহ্মধর্ম অবলম্বন করেন তখন ঠাকুমা ও তার বাবাকে (দুর্গামোহন, পরবর্তীকালে সত্যানন্দ) নিয়ে বরিশাল চলে আসেন। সর্বানন্দ হিন্দুসমাজে থাকা অবস্থায় তার দুই পুত্রের জন্ হয়। জ্যেষ্ঠ পুত্র হরিচরণকে তিনি হিন্দু আত্মীয়স্বজনের সান্ত¦নার জন্য কিছুকালের জন্য দেশে (মুন্সিগঞ্জের গাউপাড়া গ্রাম) রেখে এসেছিলেন। তাই তার নাম হরিচরণই রয়ে গেলো। অর্থাৎ তিনি ব্রাহ্ম হননি। আর দ্বিতীয় সন্তান দুর্গামোহন দাস হয়ে গেলেন সত্যানন্দ দাশ। পরে এই পরিবারের সব পুত্রের নামের সঙ্গে 'আনন্দ' শব্দটি যুক্ত হয়েছে।

৫. ক্লিন্টন বি সিলি, অনন্য জীবনানন্দ, ফারুক মঈন উদ্দীন সম্পাদিত, পৃষ্ঠা ৬০

৬. দাস ও দাশ: বাংলা একাডেমির আধুনিক বাংলা অভিধানে (পরিমার্জিত সংস্করণ, সেপ্টেম্বর ২০১৭) 'দাশ' ও 'দাস' শব্দের আলাদা অর্থ রয়েছে। 'দাশ' শব্দের অর্থ লেখা হয়েছে মৎস্যজীবী জাতি বিশেষ। আর 'দাস'-এর অর্থ লেখাহয়েছে পরিচারক, ক্রীতদাস, অনুগত ব্যক্তি, অভ্যাসের দাস। বাংলা একাডেমির Bengali-Englsih Dictionary তেও 'দাশ'-এর ইংরেজি লেখা হয়েছে a little of Benglai Baidya caste, সেখানে উদাহরণ হিসেবে 'জীবনানন্দ দাশ'-এর নাম উল্লেখ আছে। অন্য অর্থে লেখা হয়েছে fisherman; one belonging to the caste of fisherman.আর 'দাস'-শব্দের ইংরেজি লেখা হয়েছে Slave, Servant, Bondsman ইত্যাদি। 

গোপালচন্দ্র রায় (জীবনানন্দ, পৃষ্ঠা ২২) জানাচ্ছেন, জীবনানন্দ তার কলেজ জীবন পর্যন্ত বরাবরাই 'দাস' ছিলেন। কলেজ জীবনের শেষদিকে পত্রিকায় লেখা প্রকাশের সময়ই কেবল নামের সঙ্গে দাশগুপ্ত লিখতেন। সিটি কলেজে চাকরির ক্ষেত্রে তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ের এম.এ সার্টিফিকেট অনুযায়ী দাসই ছিলেন। 

তার মা কুসুমকুমারী দেবীও কবিতা লিখতেন। ব্রহ্মবাদী পত্রিকায় তার যেসব কবিতা প্রকাশিত হয়েছে সেগুলোতে নাম লেখা আছে কুসুমকুমারী দাস। ব্রহ্মবাদী পত্রিকায় জীবনানন্দেরও কবিতা ছাপা হয়েছে। সেখানেও তার নাম লেখা আছে জীবনানন্দ দাস। তবে কলেজ জীবনের শেষদিকে জীবনানন্দ যেসব লেখা পাঠাতেন, সেগুলোতে তিনি নাম লিখতেন জীবনানন্দ দাশগুপ্ত। শুধু লেখাতেই নয়, নিজের নাম হিসেবেও তিনি জীবনানন্দ দাশগুপ্তই বলতেন। 

১৯৩০ সালে বিয়ের আগে পাত্রী লাবণ্যকে দেখতে গিয়েছিলেন জীবনানন্দ। তখন লাবণ্যর জেঠামশাই পরিচয় করিয়ে দিয়ে বলেছিলেন: 'এই যে মা এস আলাপ করিয়ে দিই। এঁর নাম জীবনানন্দ দাশগুপ্ত। দিল্লী থেকে এসেছেন (লাবণ্য দাশ, মানুষ জীবনানন্দ, পৃ. ২১)। তবে পরবর্তীকালে তিনিও তার দাদা ও বাবার মতো নামের শেষাংশ শেষে 'গুপ্ত' শব্দটি বাদ দিয়ে হয়ে যান জীবনানন্দ দাশ। 

পূর্ব পুরুষের ছেঁটে ফেলা 'গুপ্ত' পদ তিনি কেন নামের সাথে যুক্ত করেছিলেন, তার কারণ জানাচ্ছেন ভাই অশোকানন্দ দাশ: 'আমার ঠাকুরদা ব্রাহ্ম হয়ে জাতিভেদ মানতেন না বলে নিজের পদবী থেকে বৈদ্যত্বসুচক গুপ্তটা বাদ দিয়েছিলেন। কিন্তু দাদা (জীবনানন্দ) একসময় আমাদের পদবির সঙ্গে গুপ্তটা বসিয়েছিলেন। তিনি তখন বলেছিলেন: আগে আমরা বৈদ্যই থাকি, আর যাই থাকি, এখন তো আর আমরা জাতিভেদ মানি না। অতএব শুধু শুধু মূল পদবীটাকে বদলেই বা লাভ কি? এই বলে তিনি ঠাকুরদার আমলের ত্যাগ করা গুপ্তটাকে আবার পদবীর শেষে বসিয়েছিলেন। তবে দাদা ওই সময় দাসগুপ্ত না লিখে দাশগুপ্ত লিখতেন। এর কারণ, আমার মনে আছে, দেশবন্ধু চিত্তরঞ্জন দাশ একবার বৈদ্যজাতির লোকদের বলেছিলেন: বৈদ্য সম্প্রদায়ের মধ্যে যাদের পদবী দাস অথবা দাসগুপ্ত তারা দাসগুপ্তের বদলে দাশ অথবা দাশগুপ্ত লিখলেই ভাল হয়। দেশবন্ধু নিজেই বৈদ্য ছিলেন বলে নিজেও নাম লিখতেন চিত্তরঞ্জন দাশ।' তবে প্রথম কাব্যগ্রন্থ 'ঝরাপালক'-এ নামের শেষের এই 'গুপ্ত' বাদ দিয়ে শুধু জীবনানন্দ দাশ ছাপা হয় (ফরিদ আহমেদ, দাস আর দাশ এই নিয়েই জীবনানন্দ দাশ, বাংলা নিউজ ৮ ডিসেম্বর ২০১৪)।

৭. আকবর আলি খান, চাবিকাঠির খোঁজে, পৃষ্ঠা ৪৯

৮. শ্রীকুমার বন্দ্যোপাধ্যায় ও তপস্যা ঘোষ সম্পাদিত সিটি কলেজ স্মরণিকা, ২০০৭

৯. মঞ্জুশ্রী দাশ, জীবনানন্দ দাশ: আমার বাবা, জীবনানন্দ আকাদেমি পত্রিকা, ৩ আগস্ট ১৯৯৫

১০. ভূমেন্দ্র গুহর সাক্ষাৎকার, আনিসুল হক ও জাফর আহমদ রাশেদ, জীবনানন্দ-চর্চার পত্রিকা জীবনানন্দ, অক্টোবর ২০১৮, পৃষ্ঠা ১৭

১১. অচিন্ত্যকুমার সেনগুপ্ত, অন্তরঙ্গ জীবনানন্দ, ময়ূখ ১৩৬১-৬২

১২. ইন্দ্র মিত্র, আমি চলে যাব, আনন্দবাজার পত্রিকা, ১৮ অগ্রহায়ণ ১৩৬১

১৩. অম্বুজ বসু, একটি নক্ষত্র আসে, পৃ. ৫০৪

১৪. প্রভাতকুমার দাস, জীবনানন্দ দাশ, তৃতীয় সংস্করণ, পৃ. ১৫৭

১৫. দাস, প্রাগুক্ত, পৃ. ১৫৮ 

১৬. সুরজিৎ দাশগুপ্ত, স্মৃতির দর্পণে তিন কবি, পৃষ্ঠা ৯০

১৭. যতিন সরকার, জীবনের দর্শন: 'মৃত্যুর আগে' ও আস্তিক কবি জীবনানন্দ, জীবনানন্দ জন্মশতবার্ষিক স্মারকগ্রন্থ, পৃ. ৬৪

১৮. গোপালচন্দ্র রায়, জীবনানন্দ, পৃষ্ঠা ১০২

১৯. খান, প্রাগুক্ত 

২০. সরকার, প্রাগুক্ত

২১. খান, প্রাগুক্ত

Related Topics

টপ নিউজ

জীবনানন্দ দাশ

Comments

While most comments will be posted if they are on-topic and not abusive, moderation decisions are subjective. Published comments are readers’ own views and The Business Standard does not endorse any of the readers’ comments.

MOST VIEWED

  • জমির দলিলমূল্য ও বাজারমূল্যের ব্যবধান কমাতে উদ্যোগ সরকারের
  • আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধ: মুক্ত ও গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়াকে সমর্থন করে যুক্তরাষ্ট্র
  • চীনের যুদ্ধবিমান ও ক্ষেপণাস্ত্র পাকিস্তানকে ভারতের বিরুদ্ধে জয় এনে দিয়েছে
  • সার্বভৌমত্ব রক্ষায় আ.লীগ নিষিদ্ধ জরুরি ছিল, নির্বাচন অভ্যন্তরীণ বিষয়: দিল্লির মন্তব্যের জবাবে প্রেস সচিব
  • উপহার হিসেবে কাতারের বিমান না নেওয়াটা ‘বোকামি’ হবে: ট্রাম্প
  • এনবিআর বিলুপ্ত করে পৃথক ২ বিভাগ: প্রতিবাদে তিন দিনের কলম-বিরতি ঘোষণা কর্মকর্তা-কর্মচারীদের

Related News

  • শেষ ট্রাম মুছে গেছে, শেষ শব্দ; কলকাতা এখন…
  • সৃজনশীল ধান বিজ্ঞান কি খুলে দিচ্ছে খাদ্য নিরাপত্তার নতুন দিগন্ত?
  • পাওয়া গেল জীবনানন্দের শেষ স্মৃতি, ৭৫ বছর ধরে আগলে রেখেছে চক্রবর্তী পরিবার
  • আমি সেই ট্রামটিকে খুঁজি! আজ জীবনানন্দ দাশের মৃত্যুদিন
  •  ‘বনলতা সেন’-এর পাণ্ডুলিপি

Most Read

1
বাংলাদেশ

জমির দলিলমূল্য ও বাজারমূল্যের ব্যবধান কমাতে উদ্যোগ সরকারের

2
বাংলাদেশ

আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধ: মুক্ত ও গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়াকে সমর্থন করে যুক্তরাষ্ট্র

3
আন্তর্জাতিক

চীনের যুদ্ধবিমান ও ক্ষেপণাস্ত্র পাকিস্তানকে ভারতের বিরুদ্ধে জয় এনে দিয়েছে

4
বাংলাদেশ

সার্বভৌমত্ব রক্ষায় আ.লীগ নিষিদ্ধ জরুরি ছিল, নির্বাচন অভ্যন্তরীণ বিষয়: দিল্লির মন্তব্যের জবাবে প্রেস সচিব

5
আন্তর্জাতিক

উপহার হিসেবে কাতারের বিমান না নেওয়াটা ‘বোকামি’ হবে: ট্রাম্প

6
বাংলাদেশ

এনবিআর বিলুপ্ত করে পৃথক ২ বিভাগ: প্রতিবাদে তিন দিনের কলম-বিরতি ঘোষণা কর্মকর্তা-কর্মচারীদের

EMAIL US
contact@tbsnews.net
FOLLOW US
WHATSAPP
+880 1847416158
The Business Standard
  • About Us
  • Contact us
  • Sitemap
  • Privacy Policy
  • Comment Policy
Copyright © 2025
The Business Standard All rights reserved
Technical Partner: RSI Lab

Contact Us

The Business Standard

Main Office -4/A, Eskaton Garden, Dhaka- 1000

Phone: +8801847 416158 - 59

Send Opinion articles to - oped.tbs@gmail.com

For advertisement- sales@tbsnews.net