কর্ণাটকের হিজাব বিতর্ক ছড়িয়ে পড়েছে আরও দুই অঞ্চলে, বাড়ছে উত্তেজনা

ভারতের কর্ণাটকের সাম্প্রতিক হিজাব বিতর্ক ছড়িয়ে পড়েছে বিজেপি শাসিত আরো এক রাজ্য মধ্যপ্রদেশেও। স্কুল, কলেজে হিজাব নিষিদ্ধ করতে মধ্যপ্রদেশের শিক্ষামন্ত্রী ইন্দর সিংহ পারমার অভিন্ন পোশাকবিধি এবং শৃঙ্খলার দোহাই দিয়েছেন। হিজাব নিয়ে বিতর্ক শুরু হয়েছে পুদুচেরি (পন্ডিচেরি) অঞ্চলেও।
স্কুলে হিজাব পরে আসা যাবে কিনা এই নিয়ে বিতর্ক শুরু হয়েছে ভারতের একটি অংশে। গত মাসে কর্ণাটকের উদুপির একটি কলেজে হিজাব পরা শিক্ষার্থীদের ক্লাস করতে না দেওয়ার অভিযোগকে কেন্দ্র করে শুরু হয় এ বিতর্কের। কট্টর হিন্দুত্ববাদী সংগঠন হিজাব বাতিলের দাবি তোলে; এমনকি দাবি আদায়ে তারা পথেও নামে। আর এই ইস্যুকে কেন্দ্র করেই ব্যাপক উত্তেজনা বিরাজ করছে দক্ষিণের ওই প্রদেশে।
পরিস্থিতি সামলে নিতে তিনদিনের জন্য প্রদেশের সমস্ত স্কুল, কলেজ বন্ধ রাখার নির্দেশ দিয়েছেন কর্ণাটকের মুখ্যমন্ত্রী বাসবরাজ বোম্মাই। আজ বুধবার কর্ণাটক হাইকোর্টে এ সংক্রান্ত মামলার শুনানি হওয়ার কথা রয়েছে। এরই মধ্যে হিজাব বিতর্ক ঢুকে পড়েছে আরো একটি বিজেপি শাসিত রাজ্য মধ্যপ্রদেশে।
স্কুল, কলেজে হিজাব নিষিদ্ধ করার পক্ষে মত দিয়েছেন মধ্যপ্রদেশের শিক্ষামন্ত্রী। নিজের রাজ্যেও এই নিয়ম চালু হতে পারে বলে ইঙ্গিত দিয়েছেন তিনি। পারমার বলেন, "হিজাব স্কুল ইউনিফর্মের অঙ্গ নয়। তাই স্কুলে এটি পরা নিষিদ্ধ হওয়া উচিত। ঐতিহ্য মানুন বাড়িতে, স্কুলে নয়। এটি শৃঙ্খলার প্রশ্ন। কড়া অভিন্ন পোশাক বিধি আনছি আমরা।"
বিরোধী দল কংগ্রেস এ প্রসঙ্গে বিজেপির সমালোচনা করেছে। কংগ্রেস মুখপাত্র আব্বাস হাফিজ বলেছেন, "মন্ত্রী কি জানাবেন, সরকারের অগ্রাধিকার কী? পর্যাপ্ত শিক্ষক নিয়োগ করে ভাল শিক্ষা দেওয়ার উপযুক্ত পরিকাঠামো তৈরি করা, নাকি সাম্প্রদায়িক বিভাজনের রাজনীতির বিষ স্কুলে, কলেজে ছড়িয়ে দেওয়া? শিখদের পাগড়ি ও মুসলিম নারীদের হিজাব পরা তো শতকের পর শতক ধরে চলে আসছে। তাহলে আজ হঠাৎ আপত্তির নেপথ্য উদ্দেশ্য কী?"
একই অভিযোগ উঠেছে পুদুচেরিতেও। সেখানে এক শিক্ষকের বিরুদ্ধে হিজাব পরা শিক্ষার্থীদের ক্লাস করতে না দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে। পুদুচেরির শিক্ষা অফিস জানিয়েছে, তারা এ ব্যাপারে খোঁজ নিয়ে দেখছে।
বাম ছাত্র সংগঠন এসএফআই'র পুদুচেরির এক নেতা বলেছেন, "মেয়েটি গত তিন বছর ধরে রোজ এভাবেই ক্লাসে যোগ দিচ্ছে। তাহলে এখন হঠাৎ আপত্তি করার কারণ কী?" তার দাবি, আরও কয়েকটি স্কুল থেকে একই ধরনের অভিযোগ তারা পেয়েছেন। এমনকি কিছু স্কুলে আরএসএস'র আদলে পড়ুয়াদের বাধ্যতামূলক ধর্মীয় 'ড্রিলে' অংশ নিতে বাধ্য করা হচ্ছে বলেও তিনি সংবাদ সংস্থার কাছে অভিযোগ করেছেন। তার দাবি, এই সমস্ত কার্যকলাপের মাধ্যমে কেবল ধর্মীয় বিভাজনকে উসকে দিতে চাইছে বিজেপি।
- সূত্র: এনডিটিভি