লিবিয়ায় ২৬ বাংলাদেশিকে গুলি করে হত্যা
লিবিয়ায় ২৬ বাংলাদেশিসহ মোট ৩০ জনকে গুলি করে হত্যা করেছে স্থানীয় এক মানবপাচারকারী দলের সদস্যরা। নিহত বাকি চারজন আফ্রিকান নাগরিক।
এ ঘটনায় আহত আরও ১১ বাংলাদেশি হাসপাতালে ভর্তি রয়েছেন। অপর দিকে হত্যাকাণ্ড থেকে প্রাণ বাঁচিয়ে এক বাংলাদেশি স্থানীয় এক লিবিয়ান নাগরিকের বাড়িতে আশ্রয় নিয়েছেন।
বৃহস্পতিবার (২৮ মে) লিবিয়ার ত্রিপলিতে বাংলাদেশ দূতাবাস এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এসব তথ্য নিশ্চিত করে। বেঁচে যাওয়া নাগরিকের সঙ্গে দূতাবাসের কথা হয়েছে বলেও সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে উল্লেখ করা হয়েছে।
সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, লিবিয়ার দক্ষিণাঞ্চলীয় শহর মিজ্দা হতে (ত্রিপলী হতে ১৮০ কি.মি. দক্ষিণে) কমপক্ষে ২৬ (ছাব্বিশ) জন বাংলাদেশিকে লিবিয়ান মিলিশিয়া কর্তৃক গুলি করে হত্যা করার তথ্য পাওয়া গিয়েছে।
তাৎক্ষণিকভাবে দূতাবাস হতে অনুসন্ধানে জানা যায়, লিবিয়ার মিলিশিয়া বাহিনী বাংলাদেশিদের ওপর এলোপাতাড়ি গুলি চালালে আনুমানিক ২৬ (ছাব্বিশ) জন বাংলাদেশি নিহত হন। এক জন প্রাণে বেঁচে যাওয়া বাংলাদেশীর সঙ্গে টেলিফোনে যোগাযোগ করা সম্ভব হয়। তিনি কোনো প্রকারে প্রাণে বেঁচে বর্তমানে একজন হৃদয়বান লিবিয়ানের আশ্রয়ে আত্মগোপন করে আছেন।
বেঁচে যাওয়া বাংলাদেশি যা বললেন
ওই ব্যক্তি জানিয়েছেন, ১৫ দিন আগে বেনগাজী থেকে মরুভূমি পাড়ি দিয়ে কাজের সন্ধানে মানবপাচারকারীরা তাদেরকে লিবিয়ার ত্রিপলী শহরে নিয়ে আসার পথে তিনিসহ মোট ৩৮ (আটত্রিশ) জন বাংলাদেশি মিজ্দাহ শহরে মুক্তিপণ আদায়ের উদ্দেশ্যে দুষ্কৃতিকারীদের হাতে জিম্মি হন। জিম্মি অবস্থায় তাদেরকে অত্যাচার, নির্যাতন করার একপর্যায়ে অপহৃত ব্যক্তিবর্গ মূল অপহরণকারী লিবিয়ান ব্যক্তিকে হত্যা করে।
ওই ব্যক্তি জানান, এর জের হিসেবে অন্যান্য দুষ্কৃতিকারীরা আকষ্মিকভাবে তাদের ওপর এলোপাতাড়ি গুলিবর্ষণ করে যাতে আনুমানিক ২৬ (ছাব্বিশ) জন বাংলাদেশি নিহত হয়, যাদের মৃতদেহ মিজদাহ হাসপাতালে সংরক্ষিত রয়েছে। অবশিষ্ট বাংলাদেশিরা হাতে-পায়ে, বুকে-পিঠে গুলিবিদ্ধ হয়ে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন।
মিজদাহ হাসপাতালের পরিচালক টেলিফোনে এ বিষয়ে বাংলাদেশ দূতাবাসকে জানান, ওই মরদেহগুলো বর্তমানে মিজদাহ হাসপাতালের মর্গে পরিবর্তী প্রক্রিয়ার জন্য সংরক্ষিত রয়েছে। অন্যদিকে দূতাবাসের পক্ষ থেকে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের মহাপরিচালকের সাথে যোগাযোগ করা হলে তারাও ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করেন এবং উক্ত মৃতদেহ সমূহের বিষয়ে আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে বলে জানান।
ঘটনায় আহত অন্তত ১১ জন বাংলাদেশীদেরকে জিনতান হাসপাতালে প্রাথমিক চিকিৎসা প্রদান করে অধিকতর উন্নত চিকিৎসার জন্য ত্রিপলী মেডিকেল সেন্টারে (টিএমসি) প্রেরণের ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে।
২৬ বাংলাদেশিকে হত্যার বিষয়ে খোঁজ-খবর নেয়া হচ্ছে: পররাষ্ট্রমন্ত্রী
এ ব্যাপারে পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. একে আবদুল মোমেন সময় সংবাদকে বলেন, ২৬ জন বাংলাদেশিকে হত্যা করা হয়েছে৷ এ ছাড়া ১১ জন হাসপাতালে রয়েছেন। তাদের মধ্যে একজন সুস্থ রয়েছেন। আমাদের একজন বাংলাদেশি জানিয়েছেন পাচারকারীরা ত্রিপলী থেকে ১০০ কিলোমিটার দূরে তাদের হত্যা করেছে।
তিনি আরো বলেন, আমাদের বাংলাদেশ মিশন সেখানে যাবে। আমরা আরো খোঁজ খবর নেওয়ার চেষ্টা করছি।
