লিবিয়া উপকূলে নৌকাডুবিতে চার বাংলাদেশি অভিবাসনপ্রত্যাশীর মৃত্যু
লিবিয়ার উপকূলীয় শহর আল খোমসের কাছে অবৈধ অভিবাসনপ্রত্যাশীবাহী দুটি নৌকাডুবে অন্তত চারজনের মৃত্যু হয়েছে। শনিবার (১৫ নভেম্বর) লিবিয়ান রেড ক্রিসেন্ট এ তথ্য জানিয়েছে।
সংস্থাটি জানায়, নৌকা দুটিতে মোট ৯৫ জন অভিবাসনপ্রত্যাশী ছিলেন।
রেড ক্রিসেন্ট তাদের ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে দেওয়া এক বিবৃতিতে জানায়, প্রথম নৌকাটিতে ২৬ জন বাংলাদেশি অভিবাসনপ্রত্যাশী ছিলেন। তাদের মধ্যে চারজনের মৃত্যু হয়েছে। দ্বিতীয় নৌকাটিতে ৬৯ জন অভিবাসনপ্রত্যাশী ছিলেন। এর মধ্যে দুইজন মিশরীয় এবং অনেক সুদানি নাগরিক ছিলেন।
তবে শেষ পর্যন্ত তাদের কী হয়েছে, রেড ক্রিসেন্ট সে সম্পর্কে কোনো তথ্য জানায়নি।
লিবিয়ার উপকূলীয় শহর খোমস ত্রিপলি থেকে প্রায় ১১৮ কিলোমিটার পূর্বে অবস্থিত।
গত বুধবার আন্তর্জাতিক অভিবাসন সংস্থা (আইওএম) জানায়, আল বুরি তেলক্ষেত্রের কাছে একটি রাবারের নৌকাডুবে অন্তত ৪২ জন অভিবাসনপ্রত্যাশী নিখোঁজ হয়েছেন।
ধারণা করা হচ্ছে, তাদের সবার মৃত্যু হয়েছে।
তেলক্ষেত্রটি লিবিয়ার উত্তর-উত্তরপশ্চিম উপকূলের সাগরপৃষ্ঠে অবস্থিত।
২০১১ সালে ন্যাটো-সমর্থিত গণবিপ্লবে স্বৈরশাসক মুয়াম্মার গাদ্দাফির পতনের পর; লিবিয়া সংঘাত ও দারিদ্র্য থেকে পালিয়ে ভূমধ্যসাগর পাড়ি দিয়ে ইউরোপমুখী অভিবাসনপ্রত্যাশীদের অন্যতম ট্রানজিট রুটে পরিণত হয়েছে।
খোমস রেড ক্রিসেন্ট প্রকাশিত ছবিতে দেখা যায়, মেঝেতে কালো ব্যাগে মোড়ানো বেশ কয়েকটি মৃতদেহ সারিবদ্ধভাবে রাখা আছে।
স্বেচ্ছাসেবকদের বেঁচে যাওয়া অভিবাসনপ্রত্যাশীদের প্রাথমিক চিকিৎসা দিতে দেখা যায়।
অন্য ছবিতে উদ্ধার হওয়া অভিবাসনপ্রত্যাশীদের তাপরোধক কম্বলে মোড়ানো অবস্থায় মেঝেতে বসে থাকতে দেখা যায়।
বিবৃতিতে আরও বলা হয়েছে, কোস্টগার্ড ও খোমস পোর্ট সিকিউরিটি এজেন্সি উদ্ধার তৎপরতায় অংশ নেয়। এছাড়া শহরের পাবলিক প্রসিকিউশনের নির্দেশে মৃতদেহগুলো সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কাছে হস্তান্তর করা হয়।
অক্টোবরের মাঝামাঝি সময়ে রাজধানী ত্রিপলির পশ্চিম উপকূলে আরও ৬১ অভিবাসনপ্রত্যাশীর মৃতদেহ উদ্ধার করা হয়।
এর আগে গত সেপ্টেম্বরে আইওএম জানায়, লিবিয়ার উপকূলে ৭৫ সুদানি অভিবাসনপ্রত্যাশী বহনকারী একটি নৌযানে আগুন ধরে অন্তত ৫০ জনের মৃত্যু হয়েছে।
গত সপ্তাহে জেনেভায় জাতিসংঘের এক বৈঠকে ব্রিটেন, স্পেন, নরওয়ে ও সিয়েরা লিওনসহ কয়েকটি দেশ লিবিয়ার প্রতি অভিবাসনপ্রত্যাশী আটককেন্দ্রগুলো বন্ধ করার আহ্বান জানায়।
মানবাধিকার সংগঠনগুলোর অভিযোগ, এই কেন্দ্রগুলোতে অভিবাসনপ্রত্যাশী ও শরণার্থীদের নির্যাতন, নির্যাতনজনিত মৃত্যু এবং নানা ধরনের সহিংসতার শিকার হতে হয়।
