দুই বছর ধরে চলতে পারে করোনার বৈশ্বিক মহামারি: গবেষণা প্রতিবেদন

করোনাভাইরাসের বৈশ্বিক মহামারি আগামী দুই বছর ধরে তাণ্ডব চালাতে পারে। আর যতদিন পর্যন্ত না বিশ্বের দুই-তৃতীয়াংশ মানুষের দেহে এই ভাইরাস প্রতিরোধের ব্যবস্থা গড়ে না উঠছে বা তাদের টিকার আওতায় না আনা হচ্ছে- ততদিন এর বিস্তার নিয়ন্ত্রণ করাও সম্ভব নয়।
সাম্প্রতিক এক গবেষণা প্রতিবেদনে যুক্তরাষ্ট্রের একটি বিখ্যাত বিশ্ববিদ্যালয়ের বিজ্ঞানীরা এমন আশঙ্কার কথা জানিয়েছেন।
'নতুনতম করোনাভাইরাসের সবচেয়ে বড় বিপদ হলো; এর দ্রুত ছড়িয়ে পড়ার সক্ষমতা। অনেক সময় আক্রান্ত ব্যক্তির মাঝে রোগের কোনো লক্ষ্মণ দেখা যায় না। এর ফলে অন্যান্য ইনফ্লুয়েঞ্জার মতো রোগের তুলনায় এটির বিস্তার রোধ করা বেশ কঠিন।'
যুক্তরাষ্ট্রের মিনেসোটা বিশ্ববিদ্যালয়ের সংক্রামক রোগ গবেষণা ও নীতি পরামর্শ কেন্দ্রের (সিআইডিআরএপিঁ) প্রতিবেদনে এভাবেই বৈশ্বিক জনস্বাস্থ্যের জন্য দীর্ঘস্থায়ী বিপদের ইঙ্গিত দেওয়া হয়।
বিশেষজ্ঞরা আরও আশঙ্কা করছেন, রোগের লক্ষ্মণ দেখা দেওয়ার আগেই মানুষের দেহে এই ভাইরাসের বিস্তার চরম আকার ধারণ করতে পারে। অর্থাৎ, একদম শেষ মুহূর্তে এসে ধরা পড়তে পারে সংক্রমিত ব্যক্তি। এর ফলে রোগীর চারপাশে থাকা ব্যক্তিরা সতর্কতা অবলম্বনের কোনো সুযোগ পাবেন না। খবর ব্লুমবার্গের।
করোনাভাইরাসের প্রাথমিক সংক্রমণ প্রতিরোধের চেষ্টায় বিশ্বব্যাপী শত শত কোটি মানুষকে লকডাউনের আওতায় কার্যত গৃহবন্দি করে রেখেছে নানা দেশের সরকার। তবে এখন অর্থনৈতিক চাপ মোকাবেলায় ধীরে ধীরে অনেক দেশ ব্যবসাপাতি এবং জনসমাগমের নানা জায়গা সকলের জন্য উন্মুক্ত করে দেওয়ার দিকে অগ্রসর হচ্ছে।
ফলে করোনাভাইরাসের সংক্রমণ বারবার ফিরে আসবে বলে সতর্ক করেছেন মার্কিন বিশ্ববিদ্যালয়টির প্রতিবেদন লেখকরা। ২০২২ সাল পর্যন্ত এভাবে একের পর এক সংক্রমণের ঢেউ দেখা দিতে পারে বিশ্বব্যাপী।
নানা দেশের সরকারি কর্মকর্তাদের প্রতি জনগণকে সতর্ক রাখার পরামর্শ দেওয়া হয় সেখানে।
প্রতিবেদনে প্রকাশ, 'সহসাই যে চলতি বৈশ্বিক মহামারি দূর হওয়ার সম্ভাবনা নেই- সে কথা সরকারি কর্মকর্তাদের বিবৃতিতে স্পষ্টভাবে উল্লেখ করতে হবে। সাধারণ জনতাকেও আগামী ২ বছরের নানা পর্যায়ে নানা সময়ে করোনাভাইরাসের নতুন নতুন সংক্রমণের ঢেউ মোকাবেলায় প্রস্তুত থাকতে হবে।'
এদিকে করোনাভাইরাসের স্থায়ী প্রতিষেধক বা টিকা আবিষ্কারে বিশ্বব্যাপী দ্রুত গতিতে গবেষণা চলছে। এর ফলে চলতি বছরের শেষ নাগাদ সীমিত সংখ্যায় কিছু টিকা বাজারে আসতে পারে। তবে বিপুল সংখ্যক মানুষের জন্য টিকা সহজলভ্য করতে আরও অনেক সময় লাগবে বলেও সেখানে জানানো হয়।