জীবন বাঁচানোর যুদ্ধে ভারতে বেকার হয়ে পড়েছেন ১২ কোটি মানুষ

১৩০ কোটি জনসংখ্যাকে নিজ বাসস্থানে অবরুদ্ধ করে রাখার মাধ্যমে বিশ্বের সবচেয়ে বড় লকডাউন এখন চলছে ভারতে। চলমান এই লকডাউনে অর্থনীতির সকল খাতে স্থবিরতা নেমে আসায় ১২ কোটি ২০ লাখ মানুষ বেকার হয়ে পড়েছেন। দেশটির বেসরকারিখাতের এক শীর্ষ গবেষণা প্রতিষ্ঠান এই অনুমান করছে।
ভাইরাসের বিস্তার ঠেকাতে গত এপ্রিলে প্রথম ভারত সরকার ৪০ দিন দেশব্যাপী লকডাউনের ঘোষণা করে। এর ফলে ব্যবসা-বাণিজ্য বন্ধ হওয়ায় গত ৩ মে নাগাদ বেকারত্বের হার বেড়ে ২৭ দশমিক ১ শতাংশে উন্নীত হয়।
সেন্টার ফর মনিটরিং ইন্ডিয়ান ইকোনমি-সিএমআইই নামের থিংক ট্যাঙ্কটি পরিচালিত এক জরিপের প্রতিবেদনে এ তথ্য উঠে আসে।
সবচেয়ে বড় বিপর্যয় নেমে এসেছে ক্ষুদ্র ব্যবসায়ে কর্মরতদের জীবনে। এছাড়াও তৃনমূল পর্যায়ের কর্মজীবী মানুষ যেমন; হকার, নির্মাণ শ্রমিক, ফুটপাথের পণ্য বিক্রেতা, ঠেলাগাড়ি ও রিকশাচালকেরাও এর আওতায় পড়েছেন। খবর ইকোনমিক টাইমসের।
গবেষণা জরিপ নিয়ে ভারতীয় বিজনেস স্ট্যান্ডার্ড দৈনিকে সিএমআইই'য়ের প্রধান নির্বাহী মহেশ ভিয়াস একটি প্রবন্ধ লিখেছেন। সেখানে তিনি বলেন, 'এটা কোনো অচিন্ত্যনীয় সংখ্যা নয় বরং সমাজের সবচেয়ে দুর্বল জনগোষ্ঠীর সামগ্রিক মানবিক বিপর্যয় এর মাধ্যমে উঠে এসেছে।'
ভারতে বেকার হয়ে পড়াদের সংখ্যা করোনাভাইরাসে বর্তমানে সবচেয়ে বেশি প্রাণহানির শিকার যুক্তরাষ্ট্রের নাগরিকদের তুলনায় চারগুণ বেশি। যুক্তরাষ্ট্রে চলমান মহামারিতে প্রায় ৩ কোটি নাগরিক কর্মহীন হয়ে পড়ায় সরকারি ভাতার জন্য আবেদন করেছেন।
সিএমআইই হুঁশিয়ার করে বলছে, ভারতের নানা অঞ্চলে লকডাউনের মেয়াদ বাড়ার কারণে (বেকারত্ব) পরিস্থিতি আরও ভয়াবহ আকার ধারণ করবে।
মহেশ ভিয়াস বলেন, ভারতে লকডাউনের কারণে দিশেহারা মানুষের সংখ্যা বেশি। কারণ এদেশে বিপুল সংখ্যক মানুষ অপ্রাতিষ্ঠানিক এবং কিছুটা অনিয়ন্ত্রিতখাতের ওপর দৈনিক জীবিকার জন্য নির্ভর করেন। তবে ধীরে ধীরে এই পরিস্থিতি কিছুটা সুরক্ষিত চাকরিগুলোতেও আঘাত হানা শুরু করেছে। এর ফলে অনেক নতুন ব্যবসায়িক উদ্যোগে কর্মী ছাঁটাই শুরু হয়েছে। নানা শিল্প জোটের তরফ থেকেও চাকরি সঙ্কটের সতর্কতা দেওয়া হচ্ছে।