উত্তাল মিয়ানমার: দেশজুড়ে হাজারও জনতার আন্দোলনে যোগ দিলেন শ্রমিকরা

মিয়ানমারের সামরিক বাহিনী কর্তৃক রাষ্ট্রীয় ক্ষমতা দখলের পর গণতন্ত্র পুনরুদ্ধার ও দেশটির স্টেট কাউন্সিলর অং সাং সূচির মুক্তির দাবিতে তৃতীয় দিনের মতো চলমান আন্দোলনে রাজপথে নেমেছেন হাজার হাজার শ্রমিক।
বিবিসি'র এক প্রতিবেদনে বলা হয়, সেনা নিয়ন্ত্রণে থাকা রাজধানী নেপিডোতে জল কামান মোতায়েন করায়, সাবেক রাজধানী ইয়াংগুন ও মান্দালয়ে জড়ো হয়েছেন হাজার হাজার মানুষ।
গত এক যুগেরও বেশি সময় পর মিয়ানমারে এতো বিশাল আকারে প্রতিবাদ হচ্ছে বলে বলা হয় ওই প্রতিবেদনে।
শনিবার, সামরিক বাহিনী দেশের ইন্টারনেট সংযোগ বন্ধ করে দিলেও মানুষকে দলবেঁধে বিক্ষোভে আসা থেকে বিরত রাখা যায়নি।
রাস্তার মাঝখানে তিন আঙ্গুলের স্যালুট প্রদর্শন করে মিছিল করে যাচ্ছিলেন তারা। এই স্যালুট অভ্যুত্থান বিরোধী প্রতীক হয়ে উঠেছে। তারা ইয়াঙ্গুনের রাস্তায় পদযাত্রা করার সময় গাড়ি এবং বাসগুলো হর্ন বাজিয়ে তাদের প্রতি সমর্থন জানাতে থাকে।
মিও উইন (৩৭) নামের একজন বিক্ষোভকারী এএফপি নিউজ এজেন্সিকে বলেন, "যতক্ষণ পর্যন্ত আমরা গণতন্ত্র না পাচ্ছি ততক্ষণ আমরা বিক্ষোভ চালিয়ে নিজেদের দাবি জানাব"।
পুলিশের ট্রাক ও অফিসাররা ইয়াঙ্গুন বিশ্ববিদ্যালয়ের নিকটবর্তী রাস্তায় অবস্থান করেছিল।
বিবিসির দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার সংবাদদাতা জোনাথন হেড জানান, এখন পর্যন্ত সামরিক কর্তৃপক্ষ এই গণবিরোধের বিপক্ষে কোনো পদক্ষেপ গ্রহণ করেনি তবে সবাই ধরে নিয়েছে যে এটি লম্বা সময় ধরে চলতে দেয়া হবে না।
গত ১ ফেব্রুয়ারি থেকেই সু চি, প্রেসিডেন্ট উইন মিন্টসহ ক্ষমতাসীন দলের অন্য নেতাদের গৃহবন্দী করে সেনাবাহিনী দেশটির শাসন ক্ষমতা গ্রহণ করে। তারা এক বছরের জন্য মিয়ানমারে জরুরি অবস্থা ঘোষণা করেছে।
'আমরা কাজে যাচ্ছি না'
বিবিসি বার্মিজের খবর অনুযায়ী, সোমবার সকাল থেকে রাজধানী নেপিডো এবং অন্যান্য সড়কের রাজপথে হাজার হাজার মানুষ প্রতিবাদে যোগ দিয়েছে।
আন্দোলনকারীদের মধ্যে রয়েছেন শিক্ষক, আইনজীবী, ব্যাংক কর্মকর্তা, সরকারী কর্মকর্তা এবং বিভিন্ন শ্রেণী-পেশার মানুষ।
আন্দোলনে যোগ দেওয়া হিন থাজিন নামে একজন গার্মেন্ট শ্রমিক বার্তা সংস্থা এএফপি'কে বলেন, 'আজকে আমাদের ওয়ার্ক ডে, কিন্তু আমাদের বেতন কাঁটা হলেও আমরা কেউ কাজে যোগ দিতে যাচ্ছি না।"
রাজধানী নেপিডোতে আন্দোলনকারীদের ওপর জলকামান ব্যবহার করেছে পুলিশ। এতে হতাহতের ঘটনাও ঘটেছে বলে বিবিসি'র ওই প্রতিবেদনে বলা হয়।
অনলাইনে ছড়িয়ে পড়া এক ভিডিও দেখা যায়, জলকামানের গরম পানিতে ভেজার পর আন্দোলনকারীরা একে অন্যকে সহায়তা করছেন।