‘বিনিময়’ মাধ্যমে লেনদেনের জন্য আলাদা অ্যাকাউন্ট খোলার নির্দেশনা কেন্দ্রীয় ব্যাংকের

ব্যাংক, মোবাইল ব্যাংকিং সার্ভিসেস (এমএফএস) ও পেমেন্ট সার্ভিস প্রোভাইডারের (পিএসপি) মধ্যে আন্তঃলেনদেন নিষ্পত্তির জন্য থাকা 'বিনিময়' প্ল্যাটফর্মে অ্যাকাউন্ট খোলা, ব্যবহার ও ব্যবস্থাপনার জন্য পৃথক অ্যাকাউন্ট খোলার নির্দেশনা দিয়েছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক।
মঙ্গলবার (৯ জুলাই) কেন্দ্রীয় ব্যাংকের পেমেন্ট সিস্টেম ডিপার্টমেন্ট (পিএসডি) এ নির্দেশনা জারি করে।
বাংলাদেশ ব্যাংক ২০২২ সালের নভেম্বরে বিনিময় প্ল্যাটফর্ম চালু করে। দেড় বছরের বেশি সময় পর বিনিময় পরিচালনার জন্য নির্দেশিকা প্রকাশিত হলো।
কেন্দ্রীয় ব্যাংকের এক ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা জানিয়েছেন, গাইডলাইন অনুযায়ী এই প্ল্যাটফর্মে আলাদা অ্যাকাউন্ট খুলতে হবে গ্রাহকদের। এসময় গ্রাহকদের ই-কেওয়াইসি নিশ্চিত করতে হবে।
এজেন্ট পয়েন্ট থেকে টাকা তোলার প্রয়োজন ছাড়াই বিভিন্ন অ্যাকাউন্টে নির্বিঘ্নে অর্থ স্থানান্তর করতে পারবেন বিনিময় ব্যবহারকারীরা। উপরন্তু, এটি বীমার প্রিমিয়াম বা ইএমআই প্রদানের ক্ষেত্রেও ব্যবহার করা যাবে; যদিও এরজন্য নির্দিষ্ট পরিমাণে চার্জ দিতে হবে ব্যবহারকারীকে। এছাড়া, ইউটিলিটি বিল, সরকারি বিল পেমেন্ট, সরকারি বকেয়া, সামাজিক নিরাপত্তা বেষ্টনীর পেমেন্ট, সরকারি চাকরিজীবীদের বিতরণ এবং ই-কমার্স পেমেন্টের ক্ষেত্রেও এই প্ল্যাটফর্ম ব্যবহার করার সুযোগ রয়েছে।
বাংলাদেশ ব্যাংকের সার্কুলার অনুযায়ী, বিনিময় প্ল্যাটফর্মের মাধ্যমে বিকাশ থেকে রকেটের মতো এক এমএফএস থেকে আরেক এমএফএসে টাকা পাঠাতে প্রতি ১,০০০ টাকায় ৫ টাকা ফি দিতে হবে। এছাড়া, মোবাইল ব্যাংকিং থেকে ব্যাংক অ্যাকাউন্টে টাকা পাঠাতে প্রতি ১,০০০ এ ফি দিতে হবে ১০ টাকা। একইভাবে, মোবাইল ব্যাংকিং থেকে পেমেন্ট পরিষেবা প্রদানকারীর ই-ওয়ালেটে টাকা পাঠাতে প্রতি ১,০০০ টাকায় ৫ টাকা খরচ হবে। উপরন্তু, বিনিময় ব্যবহার করে সম্পন্ন প্রতিটি লেনদেনের জন্য প্রাপক প্রতিষ্ঠান বাংলাদেশ ব্যাংককে ০.৫ টাকা করে প্রদান করবে।
বর্তমানে, আটটি ব্যাংক এবং তিনটি এমএফএস সেবা প্রদানকারীসহ মোট ১১টি প্রতিষ্ঠানের মধ্যে লেনদেন শুরু হয়েছে। এতে যুক্ত ব্যাংকগুলো হলো— সোনালী ব্যাংক, ব্র্যাক ব্যাংক, ইউসিবি, ইস্টার্ন ব্যাংক, মিউচুয়াল ট্রাস্ট ব্যাংক, পূবালী ব্যাংক, আল-আরাফাহ ইসলামী ব্যাংক এবং মিডল্যান্ড ব্যাংক। এমএফএস প্রতিষ্ঠানগুলো হল— বিকাশ, রকেট এবং এমক্যাশ। এছাড়া, ট্যালি পে নামে একটি পেমেন্ট সার্ভিসও যোগ হতে পারে এই পরিষেবায়।
বিনিময় ছাড়াও শুধু আন্তঃব্যাংক লেনদেন নিস্পত্তিতে বর্তমানে বাংলাদেশ ব্যাংকের চারটি প্ল্যাটফর্ম রয়েছে। এরমধ্যে শুধু বাংলাদেশ অটোমেট চেক প্রোসেসিং সিস্টেম (বিএসিপিএস) ছাড়া অন্যক্ষেত্রে কোনো চার্জ নেয় না কেন্দ্রীয় ব্যাংক।
বিএসিপিএস এর ক্ষেত্রেও ৫০ হাজার টাকা পর্যন্ত চেক নিস্পত্তি হয় বিনা চার্জে। আর ৫০ হাজার টাকার বেশি থেকে ২ লাখ টাকা পর্যন্ত প্রতি লেনদেনে ১০ টাকা এবং এর বেশি হলে ৪০ টাকা নেয় কেন্দ্রীয় ব্যাংক।
এছাড়া বাংলাদেশ ইলেকট্রনিক ফান্ড ট্রান্সফর নেটওয়ার্ক (বিইএফটিএন), ন্যাশনাল পেমেন্ট সুইচ বাংলাদেশ (এনপিএসবি) এবং রিয়েল টাইটম গ্রস সেটেলমেন্ট (আরটিজিএস) ব্যবস্থায় লেনদেনে গ্রাহক বা ব্যাংকগুলোকে কোনো চার্জ, ফি বা কমিশন দিতে হয় না।