বাণিজ্যযুদ্ধের যুগেও বাংলাদেশের অর্থনীতি এগিয়ে যাচ্ছে: অর্থমন্ত্রী

বিশ্বব্যাপী চলমান বাণিজ্য যুদ্ধের কারণে সৃষ্ট ক্রান্তিকালেও বাংলাদেশে অর্থনৈতিক অগ্রগতি অব্যাহত রয়েছে বলে জানিয়েছেন অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল।
তিনি জানান, বাংলাদেশের আর্থিক খাতে এখন কোনো ঝুঁকি নেই, আমাদের অর্থনীতি সবচেয়ে সুন্দর সময় পার করছে।
বৃহস্পতিবার (১৭ অক্টোবর) বিশ্ব ব্যাংকের দক্ষিণ এশিয়া অঞ্চলের ভাইস প্রেসিডেন্ট হার্টউইগ শেফার এবং সার্কভুক্ত দেশগুলোর অর্থমন্ত্রীদের সঙ্গে বৈঠকে এ কথা জানান অর্থমন্ত্রী।
বিশ্ব ব্যাংক ও আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) বার্ষিক সভায় যোগ দিতে রোববার (১৩ অক্টোবর) রাতে যুক্তরাষ্ট্রের রাজধানী ওয়াশিংটনের উদ্দেশে রওয়ানা হন অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল। বৈঠকটি অনুষ্ঠিত হয় যুক্তরাষ্ট্রের ওয়াশিংটনে।
গত দু’দশকে বিশ্বের অর্থনৈতিক মন্দার কথা উল্লেখ করে মন্ত্রী বলেন, “১৯৯৭ সালে সারাবিশ্বে যে মহা অর্থনৈতিক বিপর্যয় দেখা দিয়েছিল তাতে ইন্দোনেশিয়া, দক্ষিণ কোরিয়াসহ এশিয়ার বেশ কিছু দেশ চরম অবস্থায় পতিত হয়। ২০০৮ সালের মন্দায় খোদ আমেরিকাসহ অনেক দেশে চরম সংকট দেখা দেয়।কিন্তু তখনও আমাদের অর্থনীতি বিপর্যের সম্মুখীন হয়নি।”
বিশ্বব্যাপী বাণিজ্য যুদ্ধের প্রেক্ষাপটে বাংলাদেশের অবস্থানের উল্লেখ করে তিনি বলেন, “চলমান এই বাণিজ্য যুদ্ধের প্রভাবে সারাবিশ্বের অর্থনীতিতে নিম্নমুখীনতা দেখা দিয়েছে। এতে চীনের প্রবৃদ্ধি ১৪ দশমিক চার শতাংশ থেকে ৭ শতাংশে নেমে গেছে, কিন্তু বাংলাদেশের অর্থনীতি এগিয়ে যাচ্ছে। আমাদের প্রবৃদ্ধি বাড়ছে।”
প্রবৃদ্ধির এই কৃতিত্বের পুরোটাই বাংলাদেশের জনগণের, এমন মন্তব্য করে অর্থমন্ত্রী বলেন, “দেশের প্রবৃদ্ধি অর্জনে সকল পর্যায়ের সকল পেশা ও শ্রেণীর মানুষ অবদান রাখছেন।আমাদের উৎপাদন ও চাহিদা আমরা নিজেরাই তৈরি করি। আমাদের কৃষি খাত ২০ শতাংশ, শিল্প খাত ৩০ শতাংশ এবং সেবা খাত ৫০ শতাংশ অবদান রাখছে।
বিশ্ব ব্যাংক ও আইএমএফ বাংলাদেশের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির প্রভূত প্রশংসা করেছে বলে জানান মন্ত্রী। তিনি বলেন, “আমাদের অগ্রগতি দেখে তারা অভিভূত। অন্য দেশগুলোর কাছে আমাদেরকে তারা ইতিবাচকভাবে উপস্থাপন করছে। আইএমএফ তাদের আউটলুকে বলেছে, এ বছরের শেষে বাংলাদেশের প্রবৃদ্ধি হবে ৭ দশমিক ৮ শতাংশ। যদিও এটি আমাদের প্রক্ষেপণ থেকে বেশ কম, তবু আইএমএফের ইতিহাসে অন্য যে কোনো দেশের তুলনায় এটি এখন পর্যন্ত সর্বোচ্চ।”
প্রসঙ্গত, আজ শুক্রবার (১৮ অক্টোবর) ব্যাংক তহবিল নিয়ে বার্ষিক আলোচনা সভা হবে। এছাড়া আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) একাধিক বৈঠক শেষে আগামী ২৭ অক্টোবর দেশে ফেরার কথা রয়েছে অর্থমন্ত্রীর।
১৪ থেকে ২০ অক্টোবর যুক্তরাষ্ট্রের ওয়াশিংটন ডিসিতে বিশ্ব ব্যাংক ও আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের বার্ষিক সভা অনুষ্ঠিত হচ্ছে। এতে বাংলাদেশি প্রতিনিধিদলের নেতৃত্ব দিচ্ছেন অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল।
এ বৈঠকে যোগ দিয়েছেন বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর ফজলে কবির, অর্থ বিভাগের সচিব আবদুর রউফ তালুকদার, অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগের সচিব মনোয়ার আহমেদ প্রমুখ।
এছাড়া যুক্তরাষ্ট্রে নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত মোহাম্মদ জিয়াউদ্দিন, বিশ্ব ব্যাংকের বিকল্প নির্বাহী পরিচালক মোহাম্মদ মোশাররফ হোসেন ভূঁইয়া এবং ইকোনমিক মিনিস্টার মোহাম্মদ সাহাবুদ্দিন পাটোয়ারী ওয়াশিংটন থেকে প্রতিনিধিদলে যোগ দিয়েছেন।