বিএনপি সমর্থকদের ‘ষড়যন্ত্রের’ বিরুদ্ধে ঐক্যবদ্ধ থাকার আহ্বান তারেক রহমানের

অদৃশ্য ষড়যন্ত্রের বিরুদ্ধে বিএনপি নেতাকর্মীদের ঐক্যবদ্ধ থাকার আহ্বান জানিয়েছেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান।
তিনি বলেন, 'গণতন্ত্র পুনরুদ্ধার ও জনগণের ভোটাধিকার প্রতিষ্ঠা ব্যাহত করার জন্য নানা ষড়যন্ত্র চলছে, এগুলো প্রতিহত করতে দলীয় নেতাকর্মীদের একযোগে অবস্থান নিতে হবে এবং জনমানুষের বিশ্বাস অটুট রাখতে হবে।'
আজ (১১ আগস্ট) নওগাঁ কনভেনশন সেন্টারে বিএনপি নওগাঁ জেলা পরিষদের দ্বিবার্ষিক কাউন্সিলে দেওয়া ভার্চুয়াল বক্তৃতায় তিনি এসব কথা বলেন।
এসময় তারেক বলেন, বিএনপির মূল আশা ও পরিকল্পনা হলো দেশকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়া এবং মানুষের জীবনমান উন্নত করা। কিন্তু ধীরে ধীরে বিভিন্ন চক্রান্তের মাধ্যমে এসব পরিকল্পনা রোধ করার চেষ্টা চলছে। পাশাপাশি দেশের গণতন্ত্রে প্রত্যাবর্তন বাধাগ্রস্ত করতে এবং জনগণের ভোটাধিকারের জন্য বিভিন্ন মহল থেকে নানা কৌশল অবলম্বন করা হচ্ছে।
তিনি তার দলের নেতাকর্মীদের স্মরণ করিয়ে দেন, স্বৈরাচারী শাসনের পতনের কিছু দিন পরই তিনি তাদের সতর্ক করিয়েছিলেন যে পরবর্তী জাতীয় নির্বাচন হবে দেশের ইতিহাসের সবচেয়ে কঠিন নির্বাচন।
তিনি বলেন, 'এক বছর আগে আমি বলেছিলাম, অদৃশ্য শক্তি সক্রিয় এবং নানা ষড়যন্ত্র চলছে... হ্যাঁ, সামনে কঠিন সময় আসবে। এখন অনেকেই সংবাদমাধ্যম ও বিভিন্ন সূত্র থেকে বুঝতে পারছেন হয়তো আমি ভুল ছিলাম না।'
তারেক বলেন, বিএনপি পরিবারের প্রতিটি নেতা-কর্মী যদি কেবল দুটি কাজ করতে পারে, তাহলে দল সব চ্যালেঞ্জ পেরিয়ে এগিয়ে যাবে এবং ষড়যন্ত্রগুলোকে ব্যর্থ করে পরিকল্পনা অনুসরণ করে দেশকে সঠিক পথে নিয়ে যেতে সক্ষম হবে।
তিনি প্রশ্ন করেন, 'আমি কি তোমাদের বলব ওই দুটি কাজ কী? জনগণের আস্থা ও ভালোবাসা অক্ষুণ্ণ রাখা এবং দলের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্নকারী যেকোনো কাজ থেকে বিরত থাকা। পরিবারের মতো ঐক্যবদ্ধ থাকা। এই কাজগুলো করলে আমরা ষড়যন্ত্রকে পরাজিত করতে পারব।'
তারেক আরও বলেন, একটি রাজনৈতিক দলের সবচেয়ে বড় সম্পদ হলো জনগণের সমর্থন, ভালোবাসা ও বিশ্বাস। তাই তিনি সকল নেতা-কর্মীকে অনুরোধ করেন যেন তারা কোনোভাবেই দলের জনপ্রিয়তা নষ্ট করবে এমন কাজ না করে।
তিনি সতর্ক করেন, 'দেশজুড়ে বিএনপি ও সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীদের এক বিষয়ে সতর্ক থাকতে হবে—আমাদের কখনোই এমন কাজ করা উচিত নয় যা জনগণের আস্থা, বিশ্বাস ও ভালোবাসাকে ক্ষুণ্ন করে। এ ধরনের কর্মকাণ্ড থেকে ১০০% বিরত থাকতে হবে।'
তারেক দলের নেতাকর্মীদের একে অপরের প্রতি নজর রাখতে বলেছেন, যেন কেউ দলের ক্ষতি করতে পারে এমন কোনো কার্যকলাপে জড়িত না হয়।
তিনি অতীত সংগ্রামের কথাও স্মরণ করিয়ে দিয়ে বলেন, অনেক বিএনপিকর্মী স্বৈরাচারী শাসনের সময় মিথ্যা মামলা, গ্রেপ্তার, নির্যাতনের শিকার হয়েছেন। কারাগারে থাকার সময় পরিবারের সদস্যদের হারিয়েছেন।
তিনি বলেন, 'কেউ কেউ হাতকড়া পরা অবস্থায় বাবা-মায়ের জানাজায় গিয়েছিলেন। এমনও নেতাকর্মী রয়েছেন যারা চিকিৎসা ছাড়া হাতকড়া পরে হাসপাতালের করিডোরেই মারা গেছেন। তোমরা এমন দলের কর্মী ও নেতা। তাই আমাদের কখনো এমন কাজ করা উচিত নয় যা দলের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন করে এবং জনগণের আস্থা নষ্ট করে।'