Skip to main content
  • মূলপাতা
  • অর্থনীতি
  • বাংলাদেশ
  • আন্তর্জাতিক
  • খেলা
  • বিনোদন
  • ফিচার
  • ইজেল
  • মতামত
  • অফবিট
  • সারাদেশ
  • কর্পোরেট
  • চাকরি
  • প্রবাস
  • English
The Business Standard বাংলা

এখনও কারা পড়েন আয়ুর্বেদিক, ইউনানী কলেজে?

মেয়েকে নিয়ে হাসপাতালে নিয়মিত যাওয়া-আসার মধ্যেই চোখে পড়ল এখানকার মেডিকেল কলেজ। শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের সঙ্গে কথা বলে আফসানার মায়ের মনে আশা জাগতে লাগল। ডাক্তারি পড়ার ইচ্ছে ছিল মেয়েটির। যদি এখানেই পড়াই, তাহলে কেমন হয়? খোঁজখবর নিয়ে দেখলেন, ভবিষ্যতের সম্ভাবনাও মন্দ নয়।
এখনও কারা পড়েন আয়ুর্বেদিক, ইউনানী কলেজে?

ফিচার

রাফিয়া মাহমুদ প্রাত
18 July, 2025, 03:40 pm
Last modified: 18 July, 2025, 03:41 pm

Related News

  • মাত্র ১৪ বছর বয়সেই তৈরি করেছেন এমন অ্যাপ যা কয়েক সেকেন্ডেই হৃদ্‌রোগ শনাক্ত করবে 
  • কলকাতার ছোট এক কারখানা থেকে ডাবর যেভাবে ১০০-র বেশি দেশে ছড়িয়ে পড়ল

এখনও কারা পড়েন আয়ুর্বেদিক, ইউনানী কলেজে?

মেয়েকে নিয়ে হাসপাতালে নিয়মিত যাওয়া-আসার মধ্যেই চোখে পড়ল এখানকার মেডিকেল কলেজ। শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের সঙ্গে কথা বলে আফসানার মায়ের মনে আশা জাগতে লাগল। ডাক্তারি পড়ার ইচ্ছে ছিল মেয়েটির। যদি এখানেই পড়াই, তাহলে কেমন হয়? খোঁজখবর নিয়ে দেখলেন, ভবিষ্যতের সম্ভাবনাও মন্দ নয়।
রাফিয়া মাহমুদ প্রাত
18 July, 2025, 03:40 pm
Last modified: 18 July, 2025, 03:41 pm

পরিচিত মহলে আফসানার খ্যাতি একজন মেধাবী ছাত্রী হিসেবেই। ভর্তি পরীক্ষায় রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়, শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় এবং চট্টগ্রাম প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় (চুয়েট)—তিনটিতেই তার মেধাক্রম ছিল শুরুর দিকেই।

তবে আফসানার ইচ্ছে ছিল ডাক্তারি পড়ার। মেডিকেলে ভর্তি পরীক্ষা দিয়ে বুঝতে পেরেছিলেন, তার ইচ্ছেপূরণের পথ খুলতে যাচ্ছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত তা হয়নি। মেধাতালিকায় সুযোগ না পাওয়ায় ডাক্তারি পড়ার স্বপ্ন স্বপ্নই রয়ে গেল।

এদিকে আফসানার ছোট বোন তখন গুরুতর অসুস্থ। লিভারের জটিলতায় প্রায় ছয় মাস ধরে ভুগছিল সে। একদিন আফসানার মা ছোট মেয়েকে নিয়ে চলে গেলেন মিরপুরে অবস্থিত সরকারি ইউনানী ও আয়ুর্বেদিক মেডিকেল হাসপাতালে। পাশের বাসার এক আপা এখানকার চিকিৎসার কথা বলেছিলেন। আফসানার মা বলছিলেন, "কত চেষ্টাই তো করলাম, একবার করিয়েই দেখি এখানে!"

অ্যালোপ্যাথির ডাক্তার যেখানে তিন মাসের ডোজ দিয়েছিলেন, সেখানে ইউনানীর ডাক্তার দিলেন মাত্র এক মাসের ওষুধ। কিন্তু মেয়ে সুস্থ হয়ে উঠল।

মেয়েকে নিয়ে হাসপাতালে নিয়মিত যাওয়া-আসার মধ্যেই চোখে পড়ল এখানকার মেডিকেল কলেজ। শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের সঙ্গে কথা বলে আফসানার মায়ের মনে আশা জাগতে লাগল। ডাক্তারি পড়ার ইচ্ছে ছিল মেয়েটির। যদি এখানেই পড়াই, তাহলে কেমন হয়? খোঁজখবর নিয়ে দেখলেন, ভবিষ্যতের সম্ভাবনাও মন্দ নয়।

এরপর ভর্তি পরীক্ষা দিল আফসানা। টিকেও গেল। এমবিবিএস বা বিডিএস (ব্যাচেলর অব ডেন্টাল সার্জারি) না হোক, অন্তত বিইউএমএস (ব্যাচেলর অব ইউনানী মেডিসিন অ্যান্ড সার্জারি) পাশ করে হলেও তো ডাক্তার হওয়া যাবে।

দেশের মধ্যে একমাত্র সরকারি স্নাতক বা ব্যাচেলর পর্যায়ের মেডিকেল কলেজ

মিরপুরে অবস্থিত সরকারি ইউনানী ও আয়ুর্বেদিক মেডিকেল কলেজটি দেশের একমাত্র স্নাতক (ব্যাচেলর) পর্যায়ের ইউনানী ও আয়ুর্বেদিক মেডিকেল কলেজ। কলেজটিতে দুটি কোর্স চালু আছে—ব্যাচেলর অব ইউনানী মেডিসিন অ্যান্ড সার্জারি (বিইউএমএস) এবং ব্যাচেলর অব আয়ুর্বেদিক মেডিসিন অ্যান্ড সার্জারি (বিএএমএস)। এই দুটি কোর্সই ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মেডিসিন অনুষদের অধিভুক্ত।

মোট ৫০টি আসনের মধ্যে ২৫টি ইউনানী, ২৫টি আয়ুর্বেদিক শাখার জন্য বরাদ্দ। লিখিত (এমসিকিউ) পদ্ধতিতে ১০০ নম্বরের পরীক্ষার মাধ্যমে শিক্ষার্থী বাছাই করা হয়। প্রতিবছর গড়ে প্রায় এক হাজার পরীক্ষার্থী এই ভর্তি পরীক্ষায় অংশ নেন। সরকারি–বেসরকারি ইউনানী ও আয়ুর্বেদিক কলেজের পাশাপাশি হোমিওপ্যাথিক মেডিকেল কলেজগুলোর (বিইউএমএস, বিএএমএস, বিএইচএমএস) ভর্তির পরীক্ষাও একসাথে অনুষ্ঠিত হয়। এই ভর্তি কার্যক্রম পরিচালিত হয় সরকারের স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের আওতায়।

আফসানা ভর্তি হয়েছে ইউনানী শাখায়। এখন সে প্রথম বর্ষের শিক্ষার্থী। আরও চার বছর পর তার স্নাতক ডিগ্রি শেষ হবে। এরপর এক বছরের শিক্ষানবীশকাল। অর্থাৎ একাডেমিক শিক্ষা পাঁচ বছর ও ইন্টার্নশিপ এক বছর—মোট ছয় বছরে এমবিবিএস সমমানের ডিগ্রি অর্জন সম্ভব। এরপর আফসানার ইচ্ছে বিদেশে উচ্চশিক্ষা গ্রহণের।

এই কলেজ থেকে স্নাতক শেষ করে ভারত, চীন, জাপান, শ্রীলঙ্কা, কোরিয়া, জার্মানি, যুক্তরাষ্ট্রসহ বিশ্বের বিভিন্ন দেশে উচ্চশিক্ষার সুযোগ রয়েছে। দেশের ভেতরেও সাইকোলজি, নিউট্রিশন, মাইক্রোবায়োলজির মতো বিভিন্ন বিষয়ে স্নাতকোত্তর করার সুযোগ রয়েছে।

এই কলেজের নবম ব্যাচের ছাত্র ছিলেন ড. মো. নাজমুল হুদা। এখান থেকে পাশ করে তিনি রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে আয়ুর্বেদিক ফার্মাকোলজিতে এমফিল করেন এবং ২০০৯ সালে পিএইচডি সম্পূর্ণ করেন। পরে ভারত সরকারের বৃত্তি পেয়ে তিনি সেখানে আয়ুর্বেদ শাস্ত্রে ডক্টর অব মেডিসিন ডিগ্রি অর্জন করেন। ২০১৩ সালে দেশে ফিরে হামদর্দ বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রভাষক হিসেবে যোগ দেন। এর এক বছর পরই চলে আসেন সরকারি ইউনানী ও আয়ুর্বেদিক মেডিকেল কলেজে। ২০১৪ সাল থেকে তিনি এখানেই শিক্ষকতা করছেন। বর্তমানে তিনি কলেজের জ্যেষ্ঠ প্রভাষক।

পড়তে হচ্ছে আধুনিক চিকিৎসা নিয়েও

বিকল্প চিকিৎসাপদ্ধতি হলেও বিইউএমএস ও বিএএমএস কোর্সের পাঠ্যসূচিতে শিক্ষার্থীদের জন্য অ্যানাটমি, ফিজিওলজি, বায়োকেমিস্ট্রি, প্যাথলজি, মাইক্রোবায়োলজি, ফার্মাকোলজি, মেডিসিন, সার্জারি, স্ত্রীরোগ ও প্রসূতিবিদ্যা, শিশু রোগবিদ্যা, কমিউনিটি মেডিসিন এবং ফরেনসিক মেডিসিনের মতো আধুনিক চিকিৎসাশাস্ত্রের মৌলিক বিষয়গুলো অন্তর্ভুক্ত রয়েছে। পাশাপাশি আছে ন্যাচারাল মেডিসিনের জন্য পৃথক সিলেবাসও।

তবে এই কারিকুলামে রয়েছে কিছু পার্থক্য। ড. নাজমুল হুদা বলেন, "অন্য যেকোনো ফার্মেসি ডিপার্টমেন্ট মূলত কেমিক্যাল নিয়েই পড়াশোনা করে। কিন্তু এখানে একটি ওষুধে কী কী কম্পোজিশন আছে, কোন গাছ কীভাবে কাজ করে, একটি গাছ বা হার্বসে এল্কালয়েড, রেজিন—এসব কী কী থাকে, তা নিয়েই পড়ানো হয়।"

আরও বলেন, "ফার্মাকোলজিতে যেমন পশ্চিমা মেডিসিন ২০-৩০ শতাংশ রয়েছে, তবে ফার্মাকোগনসিতে আমরা সম্পূর্ণটাই ন্যাচারাল হার্বস ও প্ল্যান্টস নিয়ে পড়ি। আবার ফার্মেসি ও ফার্মাসিউটিক্সে একটি ওষুধের কাঁচামাল সংগ্রহ থেকে শুরু করে প্রস্তুতপ্রণালি, সংরক্ষণ, মান রক্ষা, বাজারজাতকরণ—সবকিছু নিয়েই আমাদের কারিকুলামে পড়ানো হয় এবং শিক্ষার্থীদের হাতে-কলমে শেখানো হয়।"

চিকিৎসক -ফার্মাসিস্ট দুদিকই থাকছে খোলা

কলেজ ও হাসপাতাল প্রাঙ্গণে রয়েছে বিভিন্ন ধরনের ওষুধি গাছের বাগান। চিকিৎসাশিক্ষার পাশাপাশি যেন উৎপাদন ও গবেষণার দিকে যাওয়া যায়, সে উদ্দেশ্যে রয়েছে গবেষণাগার, প্যাথলজি, আয়ুর্বেদিক ও ইউনানী ফার্মাকোলজির পৃথক ল্যাব, ফার্মেসি ল্যাব এবং অ্যানাটমি মিউজিয়াম। ফলে এখান থেকে বের হয়ে একজন শিক্ষার্থী শুধু চিকিৎসক নয়, বরং ফার্মাসিস্ট হিসেবেও কাজ করতে পারেন।

তৃতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী ওমর ফারুক পড়ছেন আয়ুর্বেদিক বিষয়ে। তার ইচ্ছে, ভবিষ্যতে প্রোডাকশনে যুক্ত হওয়ার। ফারুক বলেন, "আমার ইচ্ছে প্রোডাকশনে যাবার। আবার ধরুন, সারাসপ্তাহ প্রোডাকশনে থেকে শুক্র ও শনিবার চেম্বারে বসতে পারব। এতে আমি আয়ুর্বেদিক ওষুধ তৈরি থেকে শুরু করে চিকিৎসা পর্যন্ত পুরো প্রক্রিয়ার সাথেই যুক্ত থাকতে পারব।"

কলেজের সঙ্গে একটি মাত্র আবাসিক হল—'আবুল কাশেম হল' রয়েছে, যা ছেলেদের জন্য বরাদ্দ। ছাত্রী সংখ্যা তুলনামূলকভাবে কম হওয়ায় কলেজ কর্তৃপক্ষ তাদের জন্য পৃথক থাকার ব্যবস্থা রেখেছে। চুয়াডাঙ্গার ছেলে ফারুক থাকছেন কলেজ হোস্টেলেই। বর্তমানে তিনি তৃতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী।

তৃতীয় বর্ষ থেকে শিক্ষার্থীদের প্রোডাকশন বিষয়ক পাঠ দেওয়া হয়। পাঁচ বছর মেয়াদি একাডেমিক পাঠক্রমে মোট তিনটি প্রফেশনাল পরীক্ষা (প্রফ) হয়। প্রতি দেড় বছর পরপর একটি করে প্রফ ফাইনাল হয়। প্রথম প্রফের সময়সীমা দেড় বছর, দ্বিতীয় প্রফের দুই বছর এবং তৃতীয় প্রফের দেড় বছর। প্রথম প্রফে পাঁচটি কোর্স, দ্বিতীয় প্রফে আটটি এবং তৃতীয় প্রফে চারটি কোর্স থাকে।

ফারুক বর্তমানে দ্বিতীয় প্রফে অংশ নিতে প্রস্তুতি নিচ্ছেন। এই পরীক্ষাটিকেই সবচেয়ে কঠিন বলে মনে করেন তিনি। তাই দিনরাত এক করে পড়াশোনা করছেন।

ফারুক বা আফসানার মতো বেশিরভাগ শিক্ষার্থীই এখানে এসেছে ডাক্তারি পড়ার স্বপ্ন নিয়ে। এমনই আরেকজন হলেন চতুর্থ বর্ষের শিক্ষার্থী আহসান হাবীব। এর আগে ইউনানী-আয়ুর্বেদিক চিকিৎসা পদ্ধতির ওপর তেমন আস্থা ছিল না তার। কিন্তু পড়তে এসে বুঝেছেন, এ চিকিৎসাপদ্ধতি এখনো অধিকাংশ মানুষের কাছে অজানা।

তিনি বলেন, "বেশিরভাগ মানুষের ধারণা হলো, আমরা যারা ন্যাচারাল মেডিসিন প্র্যাকটিস করি, তারা এমবিবিএস পাশ করা শিক্ষার্থীদের মতো পড়াশোনা করি না। কিন্তু বাস্তবতা হলো, আমাদের ওপর চাপ এমবিবিএস ছাত্রদের চেয়ে কোনো অংশে কম নয়। আমরা কোনো ডিপ্লোমা করছি না বা ছোটখাটো কোর্স করে নামের আগে 'ডাক্তার' বসাচ্ছি না। আমাদেরও আইটেম পরীক্ষা, কার্ড ফাইনাল, টার্ম, প্রফ দিতে হয়। আর প্রফগুলোতে পাশ করতেও হিমশিম খেতে হয়।"

পড়াশোনা একই, কিন্তু সুযোগ কম 

ইউনানী ও আয়ুর্বেদিক শত শত বছরের পুরোনো ও আদি চিকিৎসাপদ্ধতি। গ্রিক থেকে ইউনানী, ভারতীয় উপমহাদেশ থেকে আয়ুর্বেদিক এবং জার্মানি থেকে হোমিওপ্যাথিক চিকিৎসার উৎপত্তি। মূলত ভেষজ, প্রাণিজ ও খনিজ উপাদাননির্ভর এই ইউনানী ও আয়ুর্বেদিক চিকিৎসা।

সারা বিশ্বেই বিকল্প চিকিৎসা পদ্ধতির চাহিদা এখন বাড়ছে। প্রাকৃতিক উপায়ে, তুলনামূলক কম খরচে এবং পার্শ্বপ্রতিক্রিয়াহীন হওয়ায় এই চিকিৎসাপদ্ধতির প্রতি আগ্রহ বাড়ছে। বিশেষ করে, ডায়াবেটিস, উচ্চ রক্তচাপ, কিডনি রোগের মতো অসংক্রামক রোগগুলোতে যেখানে অ্যালোপ্যাথি প্রায়শই ব্যর্থ হচ্ছে, সেখানে বিকল্প চিকিৎসা উল্লেখযোগ্য সাফল্য দেখাচ্ছে।

২০১৩ সালে ইন্টারমিডিয়েট পাস করার পর ভর্তি পরীক্ষার মাধ্যমে এখানে ভর্তি হন ডা. মহিউদ্দীন আহমেদ। তারও স্বপ্ন ছিল ডাক্তারি পড়ার। এখান থেকে পাশ করে তিনি নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয় থেকে জনস্বাস্থ্য বিষয়ে স্নাতকোত্তর সম্পন্ন করেন। ভারত এবং ঢাকা মেডিকেল কলেজ থেকে বার্ন পেশেন্ট ম্যানেজমেন্ট ও ক্রিটিক্যাল ইলনেস অ্যান্ড অ্যাসেসমেন্টে প্রশিক্ষণ নিয়ে বর্তমানে কলেজের বহির্বিভাগে মেডিকেল অফিসার হিসেবে কর্মরত।

তিনি বলেন, "আমাদের কিন্তু অ্যালোপ্যাথি নিয়েও যথেষ্ট পড়াশোনা করতে হয়েছে বা হচ্ছে। কারণ, কোনো রোগী যখন আগে অ্যালোপ্যাথির ডাক্তার দেখিয়ে আমাদের কাছে আসেন, তখন জানতে হয় আগের ডাক্তার কী ওষুধ দিয়েছেন। যদি হার্টের জন্য ইকোস্প্রিন দিয়ে থাকেন, সেটা বন্ধ করলে কী সমস্যা হতে পারে বা পাশাপাশি আর কী ওষুধ চলতে পারে—এসব জানার জন্য আমাদের অ্যালোপ্যাথি সম্পর্কেও জানতে হয়।" 

"পাশাপাশি আমাকে ন্যাচারাল মেডিসিনের ওপরও বাড়তি পড়াশোনা করতে হয়। হয়তো বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে হাতেকলমে কাজ করার সুযোগ এখনও কম, কিন্তু চিকিৎসা বা পড়াশোনায় কোনো কমতি নেই," যোগ করেন তিনি।

তবে বড় সীমাবদ্ধতা হলো—দেশে উচ্চশিক্ষার সুযোগ নেই, গবেষণাও সীমিত। প্রায় ৩০ বছর ধরে সরকারি দুটি কলেজ ও হাসপাতালে শিক্ষক ও চিকিৎসকরা প্রভাষক ও মেডিকেল অফিসার হিসেবে চাকরিতে প্রবেশ করছেন। কিন্তু পদোন্নতির সুযোগ না থাকায়, প্রভাষক ও মেডিকেল অফিসার হিসেবেই তারা অবসর নিচ্ছেন।

তবু ইউনানী ও আয়ুর্বেদিকে ব্যাচেলর ডিগ্রি বা ডিপ্লোমা নেওয়ার পর কাজের সুযোগের অভাব নেই। সরকারি মেডিকেল অফিসার হওয়ার সুযোগ রয়েছে, স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের বিভিন্ন প্রকল্পেও কাজ করার সুযোগ আছে। ওষুধ প্রশাসন অধিদপ্তরেও নিয়োগের সুযোগ রয়েছে।

বিভিন্ন বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থার স্বাস্থ্য প্রকল্পে মেডিকেল প্রতিনিধি হিসেবে কাজ করা যায়। কেউ ফার্মাসিউটিক্যালস-এ, কেউ ক্লিনিশিয়ান হিসেবে, কেউ বা প্রোডাকশন অফিসার, এক্সিকিউটিভ বা ম্যানেজমেন্ট বিভাগে যুক্ত হচ্ছেন। ইউনানী ও আয়ুর্বেদিক ওষুধ প্রস্তুতকারী বিভিন্ন কোম্পানিতে এখানকার পাস করা ছাত্ররা কাজ করছেন।

এমনকি অনেক অ্যালোপ্যাথিক কোম্পানি ইউনানী ও আয়ুর্বেদিক শাখা খুলেছে। যেমন—স্কয়ার, একনে, ড্রাগ ইন্টারন্যাশনাল, রেডিয়েন্ট—এই কোম্পানিগুলোতেও এখানকার গ্র্যাজুয়েটরা কাজ করছেন। চার-পাঁচ বছর কাজ করলে অনেকে নিজ নিজ ক্ষেত্রে দক্ষ হয়ে ওঠেন। এনজিওতেও কাজের সুযোগ রয়েছে।

ডা. নাজমুল হুদা বলেন, "এখান থেকে এখন পর্যন্ত প্রায় ১৩০০ জন বের হয়েছে। এর মধ্যে প্রায় ৩০০ জন সরকারি চাকরিতে আছে। বাকি এক হাজার চেম্বার করছে, মেডিসিন ব্যবসা বা প্র্যাকটিস করছে। কেউ বসে নেই। কাজ করার সুযোগ কিন্তু আছে!"

ঢাকার মিরপুরে অবস্থিত সরকারি ইউনানী ও আয়ুর্বেদিক মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালের তিনটি প্রধান শাখা—কলেজ, হাসপাতাল ও গবেষণা/উৎপাদন বিভাগ। এই প্রতিষ্ঠানের যাত্রা শুরু হয় ১৯৮৪ সালে 'দেশীয় চিকিৎসা উন্নয়ন প্রকল্প' হিসেবে। এরপর ১৯৮৯ সালে এটি সরকারি ইউনানী-আয়ুর্বেদিক মেডিকেল কলেজ হিসেবে স্বীকৃতি পায়। ১৯৯০ সালের ১০ মার্চ শুরু হয় প্রথম ব্যাচের ক্লাস।

এখন পর্যন্ত ২৯টি ব্যাচ পাশ করে বেরিয়ে গেছে। ৩০তম ব্যাচ শিক্ষানবীশ পর্যায়ে রয়েছে। ৩১ থেকে ৩৫তম ব্যাচ বর্তমানে একাডেমিক পর্যায়ে এবং ৩৬তম ব্যাচের ভর্তি পরীক্ষা চলছে।

'ন্যাচারাল মেডিসিনেই ফিরে যেতে হবে'

বিকল্প চিকিৎসায় প্রকৃতি থেকে প্রাপ্ত উদ্ভিজ্জ, প্রাণিজ ও খনিজ উপাদান এবং সেগুলো থেকে প্রস্তুত ওষুধ, ব্যায়াম, খাদ্য, পথ্য, জীবনযাত্রার পরিবর্তন ইত্যাদি রোগ নিরাময়ের উপাদান হিসেবে ব্যবহৃত হয়। এই চিকিৎসাপদ্ধতিতে কেবল ওষুধ নয়—কাপিং থেরাপি, আকু প্রেসার, আকুপাংচার, লিচ থেরাপি, যোগব্যায়াম, মেডিটেশন, রেজিমেন্টাল থেরাপি, ঔষধি খাদ্য ও জীবনযাত্রার পরিবর্তনের মতো নানা পদ্ধতি বিভিন্ন দেশে স্থানীয়ভাবে প্রয়োগ করা হয়।

এই চিকিৎসাপদ্ধতিকে স্বীকৃতি দিয়েছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থাও। সংস্থাটির তথ্য অনুযায়ী, পৃথিবীর প্রায় ৭০ ভাগ মানুষ অল্টারনেটিভ মেডিকেল কেয়ারের (এএমসি) মাধ্যমে চিকিৎসাসেবা গ্রহণ করে থাকে।

বর্তমানে বাংলাদেশে পরিপাকতন্ত্র, শ্বসনতন্ত্র, হেপাটোবিলিয়ারি সিস্টেম, ইউরিনারি সিস্টেম, নারী ও পুরুষের প্রজননতন্ত্র, অপুষ্টি এবং বাতব্যথার মতো রোগে আক্রান্ত অনেক রোগী বিকল্প চিকিৎসকদের কাছে চিকিৎসা নিচ্ছেন এবং ভালো ফলাফলও পাচ্ছেন।

তবু বাংলাদেশে বিকল্প চিকিৎসা এখনও পুরোপুরি আস্থা অর্জন করতে পারেনি। তবে এর সম্ভাবনাময় ভবিষ্যৎ বুঝতে পেরেছিলেন রাকিবুল সিয়াম। চতুর্থ বর্ষে পড়ছেন তিনি। বাকিদের মতো তারও স্বপ্ন ছিল ডাক্তারি পড়ার। জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের ঘ ইউনিটে সুযোগ পেয়েও তিনি এখানে ব্যাচেলর ডিগ্রি নিতে আসেন সবকিছু হিসাব-নিকাশ করেই।

তিনি বলেন, "অল্টারনেটিভ মেডিসিনের যেমন কিছু সীমাবদ্ধতা রয়েছে, তেমনি মডার্ন মেডিসিনও একটা সময় পর আর কাজ করবে না। অলরেডি আমাদের শরীরে অ্যান্টিবায়োটিক রেজিস্ট্যান্স দেখা দিচ্ছে। তাই দরকার মডার্ন এবং ন্যাচারাল—এই দু'য়ের মধ্যে ইন্টিগ্রেশন। ভারতে অ্যালোপ্যাথিকে আয়ুর্বেদিকের সঙ্গে ব্রিজিং করে নেওয়া হয়েছে। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা সবসময় বলছে, সর্বোচ্চ সেবা নিশ্চিত হবে ইন্টিগ্রেশন হলে। আর খুব বেশিদিন বাকি নেই, যখন আমাদের এই ন্যাচারাল মেডিসিনেই ফিরে যেতে হবে।"


  • ছবি: রাফিয়া মাহমুদ প্রাত/দ্য বিজনেস স্ট্যান্ডার্ড 

Related Topics

টপ নিউজ

ইউনানি / আয়ুর্বেদিক / আয়ুর্বেদিক চিকিৎসা / চিকিৎসাশাস্ত্র

Comments

While most comments will be posted if they are on-topic and not abusive, moderation decisions are subjective. Published comments are readers’ own views and The Business Standard does not endorse any of the readers’ comments.

MOST VIEWED

  • ‘নতুন প্রজন্মের সাথে আপনারা প্রতারণা করছেন, ইতিহাস আপনাদের ক্ষমা করবে না’: ব্যারিস্টার সুমন
  • উত্তরার মাইলস্টোনে প্রশিক্ষণ বিমান বিধ্বস্ত, শিশু ও পাইলটসহ নিহত অন্তত ২০, হাসপাতালে ১৭১
  • গলায় ভারী ধাতব চেইন, নিউইয়র্কে এমআরআই মেশিন টেনে নেওয়ায় আটকা পড়ে মৃত্যু
  • সারজিসের মন্তব্যের জেরে বান্দরবানে এনসিপিকে ‘অবাঞ্ছিত’ ঘোষণা 
  • যুক্তরাষ্ট্রের শুল্ক: বাণিজ্যিক শর্তে ছাড় দিতে চায় ঢাকা, অ-বাণিজ্যিক শর্ত প্রত্যাখান করবে
  • এত ধরনের ডাকাত পৃথিবীর আর কোথাও নেই: পরিকল্পনা উপদেষ্টা

Related News

  • মাত্র ১৪ বছর বয়সেই তৈরি করেছেন এমন অ্যাপ যা কয়েক সেকেন্ডেই হৃদ্‌রোগ শনাক্ত করবে 
  • কলকাতার ছোট এক কারখানা থেকে ডাবর যেভাবে ১০০-র বেশি দেশে ছড়িয়ে পড়ল

Most Read

1
বাংলাদেশ

‘নতুন প্রজন্মের সাথে আপনারা প্রতারণা করছেন, ইতিহাস আপনাদের ক্ষমা করবে না’: ব্যারিস্টার সুমন

2
বাংলাদেশ

উত্তরার মাইলস্টোনে প্রশিক্ষণ বিমান বিধ্বস্ত, শিশু ও পাইলটসহ নিহত অন্তত ২০, হাসপাতালে ১৭১

3
আন্তর্জাতিক

গলায় ভারী ধাতব চেইন, নিউইয়র্কে এমআরআই মেশিন টেনে নেওয়ায় আটকা পড়ে মৃত্যু

4
বাংলাদেশ

সারজিসের মন্তব্যের জেরে বান্দরবানে এনসিপিকে ‘অবাঞ্ছিত’ ঘোষণা 

5
অর্থনীতি

যুক্তরাষ্ট্রের শুল্ক: বাণিজ্যিক শর্তে ছাড় দিতে চায় ঢাকা, অ-বাণিজ্যিক শর্ত প্রত্যাখান করবে

6
বাংলাদেশ

এত ধরনের ডাকাত পৃথিবীর আর কোথাও নেই: পরিকল্পনা উপদেষ্টা

The Business Standard
Top

Contact Us

The Business Standard

Main Office -4/A, Eskaton Garden, Dhaka- 1000

Phone: +8801847 416158 - 59

Send Opinion articles to - oped.tbs@gmail.com

For advertisement- sales@tbsnews.net

Copyright © 2022 THE BUSINESS STANDARD All rights reserved. Technical Partner: RSI Lab