ব্রিকসের পক্ষ নিলেই বাড়তি ১০ শতাংশ শুল্ক আরোপের হুমকি ট্রাম্পের

মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প হুঁশিয়ারি দিয়েছেন, যেসব দেশ যুক্তরাষ্ট্রের স্বার্থবিরোধী ব্রিকস জোটের নীতিকে সমর্থন করবে, তাদের ওপর অতিরিক্ত ১০ শতাংশ শুল্ক আরোপ করা হবে।
ট্রাম্প দীর্ঘদিন ধরেই ব্রিকসের সমালোচনা করে আসছেন। এই জোট মূলত সদস্য দেশগুলোর আন্তর্জাতিক অবস্থান শক্তিশালী করে যুক্তরাষ্ট্র ও পশ্চিম ইউরোপকে চ্যালেঞ্জ জানানোর লক্ষ্যেই গঠিত হয়েছে।
রোববার নিজের সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্ম ট্রুথ সোশ্যাল-এ দেওয়া পোস্টে ট্রাম্প বলেন, 'কোনো দেশ ব্রিকসের যুক্তরাষ্ট্রবিরোধী নীতির সঙ্গে যুক্ত হলে তাদের ওপর বাড়তি ১০ শতাংশ শুল্ক চাপানো হবে। এই নীতির কোনো ব্যতিক্রম হবে না।'
ব্রিকস সদস্যরা যুক্তরাষ্ট্রের শুল্ক নীতির সমালোচনার পাশাপাশি আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল (আইএমএফ) ও প্রধান মুদ্রাগুলোর বিনিময় হার নির্ধারণ পদ্ধতিতে সংস্কারের প্রস্তাব দেওয়ার পরই ট্রাম্পের এই মন্তব্য এল।
গত বছর ব্রিকসের সদস্য দেশের তালিকা আরও বড় হয়েছে। ব্রাজিল, রাশিয়া, ভারত, চীন ও দক্ষিণ আফ্রিকার সঙ্গে নতুন করে যুক্ত হয়েছে মিশর, ইথিওপিয়া, ইন্দোনেশিয়া, ইরান, সৌদি আরব ও সংযুক্ত আরব আমিরাত।
এই জোটের দেশগুলোতে বিশ্বের অর্ধেকেরও বেশি মানুষের বসবাস।
চলতি সপ্তাহান্তে (উইকএন্ড) ব্রাজিলের রিও ডি জেনিরোতে ব্রিকস নেতাদের বৈঠক শুরু হয়েছে। ক্রমবর্ধমান বাণিজ্য সংঘাত ও ভূরাজনৈতিক উত্তেজনার মধ্যে তারা বৈশ্বিক প্রতিষ্ঠানগুলোতে সংস্কারের আহ্বান জানিয়েছেন এবং জোটটিকে কূটনীতির মঞ্চ হিসেবে তুলে ধরেছেন।
রোববার ব্রিকস দেশগুলোর অর্থমন্ত্রীদের এক যৌথ বিবৃতিতে শুল্ককে বিশ্ব অর্থনীতির জন্য হুমকি হিসেবে উল্লেখ করে বলা হয়েছে, এটি 'আন্তর্জাতিক অর্থনৈতিক ও বাণিজ্যিক কার্যক্রমে অনিশ্চয়তা' তৈরি করছে।
ব্রিকস নেতারা গত জুনে ইরানের ওপর সামরিক হামলারও নিন্দা করেছেন। তারা এই হামলাকে আন্তর্জাতিক আইনের লঙ্ঘন বলে সমালোচনা করেন।
উল্লেখ্য, গত ১৩ জুন থেকে ইসরায়েল ও যুক্তরাষ্ট্র উভয়েই ইরানের পারমাণবিক স্থাপনাসহ বিভিন্ন লক্ষ্যবস্তুতে হামলা চালিয়েছে।
ব্রিকস সম্মেলনে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি ও দক্ষিণ আফ্রিকার প্রেসিডেন্ট সিরিল রামাফোসা ব্যক্তিগতভাবে উপস্থিত ছিলেন।
চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং এবারই প্রথম সম্মেলনে অনুপস্থিত ছিলেন। তার পরিবর্তে দেশটির প্রধানমন্ত্রী লি ছিয়াং যোগ দেন।
ইউক্রেনে যুদ্ধাপরাধের অভিযোগে আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালতের গ্রেপ্তারি পরোয়ানা থাকায় রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন অনলাইনে সম্মেলনে যোগ দেন।
এর আগে ২০২৪ সালে ট্রাম্প হুমকি দিয়েছিলেন, ব্রিকস দেশগুলো যদি মার্কিন ডলারের বিকল্প হিসেবে নিজস্ব মুদ্রা চালুর দিকে এগোয়, তবে তাদের ওপর ১০০ শতাংশ শুল্ক আরোপ করা হবে।