‘খামেনিকে হত্যা করলেই সংঘাতের অবসান হবে’: নেতানিয়াহু

ইরানের সর্বোচ্চ নেতা আয়াতুল্লাহ আলি খামেনিকে হত্যা করলে ইসরায়েল ও ইরানের চলমান সংঘাতের অবসান হবে বলে মন্তব্য করেছেন ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু।
গতকাল সোমবার (১৬ জুন) মার্কিন সংবাদমাধ্যম এবিসি নিউজকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে নেতানিয়াহু বলেন, 'এটি সংঘাতকে আরও বাড়াবে না, বরং সংঘাতের ইতি টানবে।'
এ মন্তব্যের পেছনে প্রসঙ্গ ছিল এবিসি নিউজের ওয়াশিংটন বিষয়ক প্রধান প্রতিবেদক জোনাথন কার্লের প্রশ্ন। মার্কিন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের ইরানের সর্বোচ্চ নেতাকে হত্যার ইসরায়েলি পরিকল্পনার বিষয়ে নাকচ করার বিষয়ে তিনি নেতানিয়াহুকে প্রশ্ন করেন। ট্রাম্পের আশঙ্কা ছিল, এতে করে মধ্যপ্রাচ্যের উত্তেজনা আরও বেড়ে যেতে পারে।
নেতানিয়াহু ওই আশঙ্কার সঙ্গে দ্বিমত পোষণ করে বলেন, এটি এমন একটি পদক্ষেপ যা সংঘাত বন্ধ করতে সহায়ক হবে।
ইসরায়েল কি সত্যিই ইরানের সর্বোচ্চ নেতাকে টার্গেট করবে—এমন প্রশ্নের জবাবে প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু বলেন, 'আমার যা করা প্রয়োজন, তাই করছি।'
তিনি আরও বলেন, 'আমি বিস্তারিত কিছু বলতে চাই না, তবে আমরা তাদের শীর্ষ পারমাণবিক বিজ্ঞানীদের টার্গেট করেছি। এটি মূলত হিটলারের পারমাণবিক দল।'
নেতানিয়াহু আরও বলেন, ইরানের পারমাণবিক কর্মসূচি ধ্বংস করতে ইসরায়েলকে সমর্থন দেওয়া যুক্তরাষ্ট্রের স্বার্থের মধ্যেই পড়ে।
তিনি আরও বলেন, 'গত অর্ধশতাব্দী ধরে এই শাসকগোষ্ঠী মধ্যপ্রাচ্যে সবার মধ্যে সন্ত্রাসবাদ ছড়িয়ে চলেছে। তাদের সমর্থনে সৌদি আরবের আরামকো তেলক্ষেত্রে হামলা চালানো হয়েছে। তারা সর্বত্র সন্ত্রাসবাদ, ষড়যন্ত্র ও ধ্বংসযজ্ঞ চালাচ্ছে।'
তিনি আরও বলেন, 'এই "চিরস্থায়ী যুদ্ধ" আসলে ইরানই চায় এবং তারা আমাদের পারমাণবিক যুদ্ধের কিনারায় নিয়ে গেছে। প্রকৃতপক্ষে, ইসরায়েল যা করছে, তা হলো এই আগ্রাসন বন্ধ করা, এর ইতি টানা—আর আমরা কেবল তা করতে পারি যদি আমরা এই "অশুভ শক্তির" বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়াই।'
এর আগে, বার্তা সংস্থা রয়টার্সকে দুইজন মার্কিন কর্মকর্তা জানান, সম্প্রতি ইরানের সর্বোচ্চ নেতা আয়াতুল্লাহ আলি খামেনিকে হত্যার ইসরায়েলি পরিকল্পনায় ভেটো দিয়েছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প।
রয়টার্সকে একজন জ্যেষ্ঠ মার্কিন প্রশাসনিক কর্মকর্তা বলেন, 'ইরান কি এখন পর্যন্ত কোনো আমেরিকানকে হত্যা করেছে? না। যতক্ষণ না তারা কোনো আমেরিকানকে হত্যা করে, আমরা রাজনৈতিক নেতৃত্বকে টার্গেট করার কথা চিন্তাও করছি না।'
ট্রাম্প এখনও ইরানের সঙ্গে পারমাণবিক কর্মসূচি নিয়ে আলোচনা পুনরায় শুরুর আশা করছেন। তবে ওমানে গত রোববার যে আলোচনা অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা ছিল, তা ইসরায়েলি হামলার কারণে বাতিল করা হয়েছে।
গত শুক্রবার রয়টার্সকে ট্রাম্প বলেন, 'ইসরায়েলের এই হামলা সম্পর্কে আমরা সব কিছু জানতাম।'
এদিকে কাতার, সৌদি আরব ও ওমানকে অনুরোধ করেছে তেহরান। তারা যেন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পকে প্রভাবিত করে ইসরায়েলকে একটি তাৎক্ষণিক যুদ্ধবিরতিতে সম্মত করাতে অনুরোধ করে তেহরান। এর বিনিময়ে ইরান পারমাণবিক আলোচনায় নমনীয়তা প্রদর্শনের আশ্বাস দিয়েছে।