শিক্ষার্থীদের দুই পক্ষের সংঘর্ষ: অনির্দিষ্টকালের জন্য রাজশাহী নার্সিং কলেজ বন্ধ ঘোষণা

রাজশাহী নার্সিং কলেজে ডিপ্লোমা এবং বিএসসি ইন নার্সিং শিক্ষার্থীদের মধ্যে সংঘর্ষের জেরে অনির্দিষ্টকালের জন্য রাজশাহী নার্সিং কলেজ বন্ধ ঘোষণা করেছে কলেজ কর্তৃপক্ষ।
বুধবার (১৪ মে) সকালে কলেজটির অধ্যক্ষ মোসা. মতিয়ারা খাতুন এক নোটিশে বন্ধের এ নির্দেশ দেন।
এছাড়া, আজ দুপুর ১২টার মধ্যে সব শিক্ষার্থীকে আবাসিক হল ত্যাগের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
নোটিশে উল্লেখ করা হয়, 'রাজশাহী নার্সিং কলেজে ডিপ্লোমা এবং বিএসসি ইন নার্সিং শিক্ষার্থীদের মধ্যে অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা ঘটায় পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত সব ধরনের শিক্ষা কার্যক্রম বন্ধ থাকবে।'
নির্দেশ অমান্যকারীদের বিরুদ্ধে কঠোর শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়ার কথাও বলা হয়েছে নোটিশে।
তবে এ নির্দেশের পরও নার্সিং কলেজের শিক্ষার্থীরা হল কিংবা ক্যাম্পাস ছেড়ে যাননি। তারা দুপুর থেকে প্রতিবাদ কর্মসূচি পালন করছেন এবং ক্যাম্পাসে ভেতর অবস্থান নিয়ে বিক্ষোভ মিছিল করছেন এবং নানা স্লোগান দিচ্ছেন।
শিক্ষার্থীদের দাবি, তাদের ওপর হামলা করে রক্তাক্ত করা হয়েছে। অথচ তারাই শাস্তির মুখোমুখি হচ্ছেন। লেখাপড়া বাদ দিয়ে হল ছাড়তে চান না তারা।
তাই তাদের ওপর হামলার সুষ্ঠু বিচার না হওয়া পর্যন্ত আন্দোলন চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা দেন শিক্ষার্থীরা।
রাজশাহী নার্সিং কলেজের বিএসসি ইন নার্সিং এর চতুর্থ বর্ষের শিক্ষার্থী জহিরুল ইসলাম বলেন, 'গতকালের হামলার সঙ্গে জড়িতদের আগামী ২৪ ঘণ্টার মধ্যে বিচারের আওতায় আনতে হবে। কারণ হাসপাতালে ডিউটিরত নার্সরা কীভাবে এসে হামলা করতে পারে? যদি আগামী ২৪ ঘণ্টার মধ্যে বিচারের আওতায় না আনা হয় তাহলে আমরা কঠিন থেকে কঠিন আন্দোলন করতে বাধ্য হব।'
তিনি আরও বলেন, 'একইসঙ্গে ১৬ তারিখের অ্যাডমিশন টেস্ট বন্ধের দাবি জানাচ্ছি। কারণ যেখানে বিএসসি নার্সদের কোনো ধরনের সুযোগ সুবিধা নাই। সেখানে নতুন ব্যাচকে ভর্তি করা প্রহসনের নামান্তর।'
রাজশাহী নার্সিং কলেজের অধ্যক্ষ মোসা. মতিয়ারা খাতুন বলেন, 'আগামী ১৬ তারিখ থেকে ভর্তি পরীক্ষা। বিশৃঙ্খলা ঠেকাতে অনির্দিষ্টকালের জন্য কলেজ বন্ধের সিদ্ধান্ত নিয়েছি।'
এর আগে, গত মঙ্গলবার দুপুরে রাজশাহী নার্সিং কলেজে বিএসসি ইন নার্সিং কোর্সের শিক্ষার্থীদের ওপর ডিপ্লোমা ইন নার্সিং এর শিক্ষার্থীরা হামলা চালায়। হামলায় ডিপ্লোমা নার্সিং- এর শিক্ষার্থীদের সঙ্গে যোগ দেয় হাসপাতালে ডিউটিরত নার্সরা। এসময় তাদের হামলায় ১০ জন আহত হন।
আহতরা রাজশাহী মেডিকেল কলেজ (রামেক) হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে গেলে সেখানেও তাদের মারধর করা হয় বলে অভিযোগ উঠে।
পরে পুলিশ ও সেনাবাহিনী গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।