নির্বাচনের মাধ্যমে সমস্যার সমাধান করতে হবে: মির্জা ফখরুল

নির্বাচনের মাধ্যমে সমস্যার সমাধান করতে হবে বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।
তিনি বলেন, আমরা বার বার বলছি, এখন যে সমস্যা, সংকট, চ্যালেঞ্জ; সেগুলো মোকাবিলা করার জন্য অত্যন্ত দ্রুত নির্বাচন অনুষ্ঠিত করা দরকার। নির্বাচন করতে যতটুকু সংস্কার করা দরকার, ততটুকু করেই নির্বাচনের মাধ্যমে সমস্যার সমাধান করতে হবে।
শুক্রবার (২১ মার্চ) সন্ধ্যায় ঢাকা লেডিস ক্লাবে বিশিষ্ট নাগরিক ও পেশাজীবী নেতৃবৃন্দের সম্মানে বিএনপির ইফতার মাহফিলে তিনি একথা বলেন।
এসময় ফখরুল বলেন, শুধু অলীক ধারণা থেকে, বিভিন্ন রকম ইউটোপিও চিন্তাভাবনা করলে সমস্যার সমাধান করা যাবে না। অথবা আবেগের মধ্য দিয়েও সমস্যার সমাধান করা যাবে না। আমাদের বাস্তববাদী চিন্তা করে, ভবিষ্যতের কথা চিন্তা করে, পরিবর্তনকে সামনে নিয়ে নতুন বাংলাদেশ, গণতান্ত্রিক বাংলাদেশ গড়ার লক্ষ্যে কাজ করতে হবে।
তিনি বলেন, অন্তর্বর্তী সরকার সংস্কার কমিশন গঠন করেছেন, আমরা তাদের সঙ্গে যোগাযোগ রাখছি এবং তাদের যে প্রস্তাব তা পরীক্ষা করছি এবং আমরা আমাদের মতামতগুলো উপস্থাপন করছি। তবে একটা জিনিস আমাদের মনে রাখতে হবে, বাংলাদেশের মানুষের রাজনৈতিক ঐতিহ্য, তাদের ধর্মীয় মূল্যবোধ, তাদের কৃষ্টি, সংস্কৃতি সব কিছুকে সামনে রেখেই আমাদের সামনের দিকে সংস্কার এবং এগিয়ে যাবার পথ বেছে নিতে হবে।
বিএনপির সিনিয়র এই নেতা বলেন, আমরা অত্যন্ত কঠিন সময় পার করছি। ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানের মধ্য দিয়ে ভয়াবহ ফ্যাসিস্ট সরকারকে পরাজিত করে, বিতাড়িত করে অন্তর্বর্তী সরকার গঠিত হয়েছি। একটি নতুন গণতান্ত্রিক সংসদ গঠন হবে সেই প্রত্যাশা নিয়ে মানুষ ও গোটা জনগণ অপেক্ষা করছে।
সবাইকে দায়িত্বশীল হবার আহ্বান জানিয়ে মির্জা ফখরুল বলেন, আমরা বিশ্বাস করি, এই সময়টা আমরা যে যেখানে আছি, সবাই দায়িত্বশীলতার সঙ্গে আমরা আমাদের ভূমিকা পালন করব। আমরা যারা রাজনীতি করছি তারা, যারা বিভিন্ন পেশাতে আছি তারা, যারা বিভিন্নভাবে সরকার অথবা জনগণের সঙ্গে আছি তারা সবাই আমরা এমনভাবে কথা বলব, কাজ করব তা যেন আমাদের গণতন্ত্রে উত্তরণের পথ সুগম করে দেয়।
৩১ দফার কথা উল্লেখ করে বিএনপি মহাসচিব বলেন, রাষ্ট্র ব্যবস্থা যে ভেঙে পড়ছে, সেই কারণেই প্রায় দুই বছর আগে আমাদের নেতা তারেক রহমান সাহেব একটি ৩১ দফা কর্মসূচি দিয়েছিলেন। সেই কর্মসূচির মধ্যে আমাদের রাষ্ট্র সংস্কারের যে কথাগুলো বলা হয়েছে, আমরা মনে করি সে কথাগুলো যথেষ্ট পরিবর্তনের জন্য।
তিনি বলেন, আমি সবাইকে আবারও অনুরোধ করব, আপনারা সবাই সতর্কতার সঙ্গে ভূমিকা পালন করবেন। বিশেষ করে বিএনপির সঙ্গে আমরা যারা জড়িত আছি, আমরা যেন এমন কোনো পদক্ষেপ না নেই, যেই পদক্ষেপ আমাদের কোনো ভুল পথে এগিয়ে নিয়ে যেতে পারে। জনগণের কাছেও আমাদের আহ্বান থাকবে, এই ট্রানজিশনাল সময়টাতে আমরা যেন ধৈর্যের সঙ্গে সামনে এগিয়ে নিয়ে যেতে পারি।
বিএনপির মহাসচিব বলেন, আমাদের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান বার বার একই কথা বলছেন, আমরা যেন আমাদের পথকে ভুলে না যাই, আমরা যেন আমাদের সঠিক পথে পরিচালিত হই। একই সঙ্গে এমন কোন ব্যবস্থা না নেই যা আমাদের ক্ষতিগ্রস্ত করে।
তিনি আরও বলেন, বিশেষ করে তিনি [তারেক] গত পরশু যে বক্তব্য দিয়েছেন, বাংলাদেশে যে উগ্রবাদের জন্ম হচ্ছে, এই উগ্রবাদ আমাদের গণতান্ত্রিক পথকে বিঘ্নিত করবে। আমরা যেন সে পথে না যাই।
বিএনপির ইফতার মাহফিলে প্রধান অতিথি হিসেবে ভার্চুয়ালি যুক্ত ছিলেন দলটির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান।