দু-একদিনের মধ্যে গ্যাস সংকট কেটে যাবে: নসরুল হামিদ

ঢাকা ও চট্টগ্রামে যে গ্যাস সংকট দেখা দিয়েছে সেটি আগামী দু-এক দিনের মধ্যে কেটে যাবে বলে জানিয়েছে বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ।
রবিবার দুপুরে সচিবালয়ে বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে গণমাধ্যমকর্মীদের সঙ্গে আলাপকালে তিনি এ কথা বলেন।
এসময় নসরুল হামিদ বলেন, গত শুক্র ও শনিবার চট্টগ্রাম অঞ্চলসহ কিছু এলাকায় গ্যাসের মারাত্মক সংকট হয়েছে। আমদানি করা এলএনজি (তরলীকৃত প্রাকৃতিক গ্যাস) সরবরাহে বিঘ্ন ঘটায় এই পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়েছিল।
তিনি বলেন, এলএনজি সরবরাহের জন্য মহেশখালীতে দুটি এফএসআরইউ (ফ্লোটিং স্টোরেজ রি-গ্যাসিফিকেশন ইউনিট) রয়েছে। একটি সার্ভিসিং করার জন্য বিদেশে পাঠানো হয়েছিল। সেটি দেশে নিয়ে আসা হয়েছে। কিন্তু টার্মিনালে সংযুক্ত করার পর সমস্যা দেখা দেয়। আর যে টার্মিনাল থেকে গ্যাস সরবরাহ করা হচ্ছিল সেটিতে কারিগরি ত্রুটির কারণে গ্যাস সরবরাহ সাময়িকভাবে বন্ধ হয়ে যায়। এ কারণে এই সংকট তৈরি হয়েছিল।
তিনি আরও বলেন, বর্তমানে দুটিই চালু হয়েছে। দু-একদিনের মধ্যে গ্যাস সরবরাহ ব্যবস্থা উন্নত হবে।
এক প্রশ্নের জবাবে নসরুল হামিদ বলেন, বর্তমানে গ্যাসের চাহিদা রয়েছে ৩৮০০ মিলিয়নের মতো। আর আমরা সরবরাহ করতে পারছি ৩২০০ মিলিয়নের মতো। এ কারণে কিছুটা ঘাটতি থেকেই যাচ্ছে। আশার কথা হচ্ছে দেশীয় গ্যাস ফিল্ডগুলো থেকে ভালো খবর পাওয়া যাচ্ছে। স্থানীয় পর্যায়ে গ্যাসের উৎপাদন বাড়বে। ফলে ঘাটতি কমে আসবে।
তিনি বলেন, নারায়ণগঞ্জ ও গাজীপুরসহ যে সব শিল্প এলাকায় গ্যাসের সরবরাহ কমে গিয়েছে, আগামীকাল নাগাদ সেগুলো ঠিক হয়ে যাবে, বিদ্যুৎকেন্দ্রও গ্যাস পাবে।
আরেক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, আবাসিক গ্রাহকদের মিটারিং ব্যবস্থায় গ্যাস সরবরাহ করা হবে। ইতোমধ্যে কিছু মিটারিং করা হয়েছে।
প্রতিমন্ত্রী বলেন, অর্থের অভাবে কার্যক্রমটি স্থগিত ছিল। এখন বিশ্বব্যাংক, এশীয় উন্নয়ন ব্যাংক ও ডেভেলপমেন্ট ব্যাংক অব জাপান এ খাতে অর্থায়ন করতে সম্মত হয়েছে। আগামী ২--৩ বছরে সব আবাসিক সংযোগে মিটার স্থাপন করা হবে। কমপক্ষে ২৫ লাখ নতুন মিটার স্থাপন করা হবে।
তিনি বলেন, সরকার যেভাবে ২০২১ সালে শতভাগ বিদ্যুতায়ন করেছে, তেমনি ২০২৬ সালের মধ্যে নিরবচ্ছিন্ন গ্যাস সরবরাহ নিশ্চিত করবে। ২০২৬ সালের মধ্যে দৈনিক চাহিদা হবে ৬ হাজার মিলিয়ন ঘনফুট। সে অনুযায়ী প্রস্তুতি নেওয়া হচ্ছে।
নসরুল হামিদ বলেন, সিস্টেমে মোট ২০ শতাংশ গ্যাস আমদানি থেকে জোগান আসছে। আমাদের লক্ষ্য হচ্ছে এই অনুপাত অব্যাহত রাখা। অগ্রাধিকার নিজস্ব গ্যাস সম্পদের আহরণ বাড়ানো। ২০২৫ সালের মধ্যে ৪৬টি কূপ খননের লক্ষ্যমাত্রা নিয়ে কাজ চলছে।
তিনি বলেন, ইতোমধ্যে সাড়ে সাত লাখ অবৈধ গ্যাস সংযোগ বিচ্ছিন্ন করা হয়েছে। কিন্তু নতুন করে অবৈধ লাইন বাড়ছে। এজন্য এলপিজির পরিধি বাড়ানোর পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে।