৩৫ বছর বয়সে বিশ্বকাপ জয় মেসির, পেলে-ম্যারাডোনারা কত সময় নিয়েছিলেন?

নিজের খেলা পঞ্চম এবং শেষ বিশ্বকাপে এসে শিরোপা জেতার স্বপ্ন পূরণ করেছেন লিওনেল মেসি। ৩৫ বছর বয়সী আর্জেন্টাইন কিংবদন্তি টগবগে যুবক থাকা অবস্থায় যা করতে পারেননি, বয়সের ভার সইয়ে করে দেখিয়েছেন সেটি। সর্বকালের সেরার প্রশ্নে মেসিকে যাদের সঙ্গে তুলনা করা হয়, সেই পেলে, ম্যারাডোনা, জিদানদের সবাই মেসির থেকে অনেক কম বয়সেই জিতেছেন বিশ্বকাপ।
সর্বকালের সেরাদের বিতর্কে নাম উচ্চারিত হয় যাদের, তাদের মধ্যে সবচেয়ে বেশি বয়সে বিশ্বকাপ জিতেছেন লিওনেল মেসি। সবচেয়ে কম বয়সে বিশ্বকাপ জেতার কৃতিত্ব পেলের।
নিজের প্রথম বিশ্বকাপ খেলার সময় মেসির বয়স ছিল ১৯ বছর। ২০০৬ জার্মানি বিশ্বকাপে খুব বেশি খেলার সুযোগ পাননি তিনি। তবে এরপরে খেলা সব বিশ্বকাপেই নিজের দলের সর্বেসর্বা ছিলেন তিনি।
পেলে, ম্যারাডোনা, জিদান এবং মেসির প্রথম বিশ্বকাপ জয়ের সময়ে তাদের বয়স এবং পারফরম্যান্স কেমন ছিল?
পেলে

ফুটবলের রাজা বলে খ্যাত পেলে এখন পর্যন্ত বিশ্বকাপ জেতা সর্বকনিষ্ঠ খেলোয়াড়। ১৭ বছর ২৩৪ দিন বয়সে ব্রাজিলের হয়ে বিশ্বকাপ জেতেন তিনি। ১৯৫৮ বিশ্বকাপের ফাইনালে দুটি গোলও করেছিলেন কালো মানিক খ্যাত এই কিংবদন্তি।
এরপর আরো দুটি বিশ্বকাপ জিতেছেন পেলে। যার সর্বশেষটি ১৯৭০ বিশ্বকাপে, তখন পেলের বয়স ছিল ২৯ বছর।
দিয়েগো ম্যারাডোনা

আর্জেন্টিনার ১৯৮৬ বিশ্বকাপ জয়ের পেছনে সবচেয়ে বড় অবদান ছিল ম্যারাডোনার। প্রায় একা হাতেই বিশ্বকাপ জিতিয়েছিলেন তিনি। তখন ম্যারাডোনার বয়স ছিল ২৬ বছর। নিজের ফর্মের তুঙ্গে ছিলেন তিনি।
এরপর ১৯৯০ বিশ্বকাপে আর্জেন্টিনাকে নিয়ে ফাইনালে উঠেন ম্যারাডোনা। কিন্তু পশ্চিম জার্মানির কাছে ১-০ গোলের ব্যবধানে হেরে যায় আর্জেন্টিনা। ১৯৯৪ বিশ্বকাপে শেষবারের মতো খেলেন ৩৪ বছর বয়সী দিয়েগো ম্যারাডোনা।
জিনেদিন জিদান

বিশ্বকাপে জিনেদিন জিদানের গল্পটা হাসি-কান্নার মিশেল। ১৯৯৮ বিশ্বকাপে ফ্রান্সকে চ্যাম্পিয়ন করার সময় জিদানের বয়স ছিল ২৬ বছর। ব্রাজিলের বিপক্ষে ফাইনালে করেছিলেন দুটি গোল। যা ফ্রান্সের ৩-০ গোলের ব্যবধানে জয়ের পেছনে বড় ভূমিকা রেখেছিল।
২০০৬ বিশ্বকাপেও দলকে ফাইনালে নিয়ে গিয়েছিলেন ৩৪ বছর বয়সী জিদান। কিন্তু সেই স্মৃতি সুখকর নয় জিদানের জন্য। মাতেরাজ্জিকে ঢুস মেরে লাল কার্ড দেখে ম্যাচ শেষ হওয়ার আগেই মাঠ ছাড়তে হয় তাকে। ফ্রান্সও টাইব্রেকারে ইতালির কাছে হেরে যায়।
লিওনেল মেসি

নিজের প্রথম বিশ্বকাপ খেলেছিলেন ২০০৬ এ জার্মানিতে। সেখানে বিশ্বকে জানিয়েছিলেন নিজের আগমনী বার্তা। এরপর ২০১০ বিশ্বকাপে ম্যারাডোনার সঙ্গে জুটি বেঁধেও আর্জেন্টিনাকে কোয়ার্টার-ফাইনালের বেশি নিয়ে যেতে পারেননি।
মেসির সামনে সবচেয়ে বড় সুযোগ ছিল ২০১৪ বিশ্বকাপে, ব্রাজিলে হওয়া সেই বিশ্বকাপের ফাইনালে জার্মানি কাছে হেরে গিয়ে হাত ছোঁয়া দূরত্ব থেকে ফিরে আসতে হয় মেসিকে। ২৭ বছরের মেসির তখন ফর্ম যাচ্ছিল দুর্দান্ত।
২০১৮ বিশ্বকাপে ৩১ বছর বয়সী মেসিও ব্যর্থ হন দলকে শেষ ষোলোর গন্ডি পার করাতে। অবশেষে ২০২২ কাতার বিশ্বকাপে ৩৫ বছর বয়সী মেসি সফল হন এতোদিনের ব্যর্থতার বৃত্ত ভাঙতে। টুর্নামেন্টজুড়ে দুর্দান্ত খেলে গোল্ডেন বলও জেতেন তিনি।