ইসরায়েলের অংশগ্রহণের প্রতিবাদে ট্রফি ফিরিয়ে দেওয়ার ঘোষণা ইউরোভিশনজয়ীর
আগামী বছর ইউরোভিশন সংগীত প্রতিযোগিতায় ইসরায়েলকে অংশগ্রহণের অনুমোদন দেওয়ার প্রতিবাদে নিজের জেতা ট্রফি ফিরিয়ে দেওয়ার ঘোষণা দিয়েছেন সুইস গায়ক নিমো। ২০২৪ সালের ইউরোভিশনে বিজয়ী হয়েছিলেন তিনি।
ইউরোভিশনের ইতিহাসে প্রথম নন–বাইনারি বিজয়ী ২৬ বছর বয়সী এই গায়ক গেল বৃহস্পতিবার বলেন, ইউরোভিশনের মূল আদর্শ হলো 'সবার জন্য ঐক্য, অন্তর্ভুক্তি ও মর্যাদা'। কিন্তু ইসরায়েলকে প্রতিযোগিতায় অংশ নেওয়ার সুযোগ দেওয়াটা এই আদর্শের সঙ্গে 'পরিষ্কারভাবে সাংঘর্ষিক'।
সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ইনস্টাগ্রামে দেওয়া এক বিবৃতিতে নিমো বলেন, 'এই প্রতিযোগিতাকে ঘিরে যে কমিউনিটি গড়ে উঠেছে এবং একজন ব্যক্তি ও শিল্পী হিসেবে আমি যা শিখেছি, তার জন্য আমি অত্যন্ত কৃতজ্ঞ। কিন্তু আজ আমার মনে হচ্ছে, এই ট্রফি আর আমার শেলফে থাকার যোগ্য নয়।'
বিবৃতিতে নিমো আরও বলেন, 'বিষয়টি কোনো ব্যক্তি বা শিল্পীর নয়। এমন একটি রাষ্ট্রের ভাবমূর্তি উজ্জ্বল করতে বারবার এই প্রতিযোগিতাকে ব্যবহার করা হয়েছে, যে রাষ্ট্রের বিরুদ্ধে গুরুতর অন্যায়ের অভিযোগ রয়েছে। অথচ ইউরোপিয়ান ব্রডকাস্টিং ইউনিয়ন (ইবিইউ) বলে আসছে, ইউরোভিশন নাকি অরাজনৈতিক।'
নিমো বলেন, এই বৈপরীত্যের কারণে যখন একের পর এক দেশ সরে যাচ্ছে, তখন বুঝতে হবে, নিশ্চয়ই কোথাও বড় ধরনের সমস্যা আছে। এ কারণেই তিনি তার ট্রফিটি জেনেভায় ইবিইউর সদর দপ্তরে ফেরত পাঠানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছেন।
২০২৬ সালের ইউরোভিশন আয়োজন নিয়ে আগে থেকেই বিতর্ক চলছিল। এরই মধ্যে ইসরায়েলের অংশগ্রহণের প্রতিবাদে পাঁচটি দেশ এবারের আসর বয়কটের ঘোষণা দিয়েছে।
গাজায় যুদ্ধ এবং ভোটে অনিয়মের অভিযোগে ইসরায়েলকে বাদ দেওয়ার দাবি জানিয়েছিল কয়েকটি দেশ। তবে প্রতিযোগিতার আয়োজক ইবিইউ সেই দাবি নাকচ করে দেয়। এর পরপরই স্পেন, আয়ারল্যান্ড, নেদারল্যান্ডস ও স্লোভেনিয়া প্রতিযোগিতা বয়কটের ঘোষণা দেয়।
সবশেষ গত বুধবার এই তালিকায় যুক্ত হয়েছে আইসল্যান্ড। দেশটির জাতীয় সম্প্রচারমাধ্যম আরইউভি জানিয়েছে, পর্ষদের ভোটাভুটিতে তারা প্রতিযোগিতায় অংশ না নেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে।
অবশ্য ইসরায়েলের সম্প্রচারমাধ্যম 'কান' ইবিইউর সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানিয়েছে। রাজনৈতিক হস্তক্ষেপের অভিযোগও তারা প্রত্যাখ্যান করেছে। ইসরায়েলের প্রেসিডেন্ট আইজ্যাক হারজগ বলেছেন, বিশ্বের প্রতিটি মঞ্চেই ইসরায়েলের প্রতিনিধিত্ব করার অধিকার রয়েছে।
ইউরোভিশনের আগামী আসর শুরু হতে এখনও ছয় মাস বাকি। এখন পর্যন্ত ৩৪টি দেশ এতে অংশ নেওয়ার কথা রয়েছে। তবে কয়েকটি দেশ এখনো চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত জানায়নি। যুক্তরাজ্যের প্রতিনিধি নির্বাচনের দায়িত্ব থাকে বিবিসির ওপর। তারা ইবিইউর সিদ্ধান্তকে সমর্থন জানালেও আগামী আসরে যুক্তরাজ্য অংশ নেবে কি না, সে বিষয়ে স্পষ্ট করে কিছু বলেনি।
