শাটডাউনে মার্কিন সেনাদের বেতন দিতে ১৩০ মিলিয়ন ডলার দিলেন ট্রাম্পের রহস্যময় সমর্থক
মার্কিন সরকারের কার্যক্রম স্থবির অবস্থায় থাকায় সেনাদের বেতন পরিশোধে সহায়তা করতে এক অজ্ঞাত দাতা পেন্টাগনকে ১৩০ মিলিয়ন ডলার (প্রায় ১০০ মিলিয়ন পাউন্ড) অনুদান দিয়েছেন। তবে এই অনুদান ঘিরে উঠেছে নৈতিকতার প্রশ্ন। খবর বিবিসি'র
মার্কিন প্রতিরক্ষা কর্মকর্তারা এ তথ্যের সত্যতা নিশ্চিত করেছেন।
প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প বলেছেন, এই অর্থ ১৩ লাখ ২০ হাজার সেনাসদস্যের বেতন ঘাটতি পূরণে সাহায্য করবে।
তবে দাতার পরিচয় প্রকাশ করেননি তিনি।
শনিবার ট্রাম্প দাতার পরিচয় সম্পর্কে সামান্য ইঙ্গিত দিয়ে বলেন, 'তিনি আমার বড় সমর্থক' এবং তিনি একজন মার্কিন নাগরিক।
সরকারি কার্যক্রম বন্ধের ২৫তম দিনে পৌঁছেছে যুক্তরাষ্ট্র। তিন সপ্তাহের বেশি সময় ধরে কংগ্রেস অর্থায়ন বিল পাস করতে না পারায় প্রশাসনিক অচলাবস্থা চলছে।
গত সপ্তাহে ট্রাম্প প্রশাসন সামরিক গবেষণা খাত থেকে ৮ বিলিয়ন ডলার স্থানান্তর করে সেনাদের বেতন দেয়। তবে মাসের শেষে পরবর্তী বেতন দেওয়ার বিষয়টি এখনও অনিশ্চিত।
শুক্রবার পেন্টাগনের মুখপাত্র শন পারনেল সাংবাদিকদের বলেন, 'শুধু সেনাসদস্যদের বেতন ও ভাতার ব্যয় মেটাতে ব্যবহার করা যাবে, এই শর্তসাপেক্ষে অনুদান দেওয়া হয়েছে।'
তিনি আরও বলেন, প্রতিরক্ষা দপ্তরের সাধারণ উপহার গ্রহণ নীতির আওতায় এই অর্থ গ্রহণ অনুমোদিত হয়েছে।
ট্রাম্প বৃহস্পতিবারই দানের বিষয়ে ইঙ্গিত দেন, তবে দাতার নাম প্রকাশ না করে বলেন, 'তিনি স্বীকৃতি চান না।'
শনিবার এশিয়া সফরে যাওয়ার আগে ট্রাম্প সাংবাদিকদের বলেন, এই দাতা 'একজন মহান ভদ্রলোক', 'দেশপ্রেমিক' ও 'অসাধারণ মানুষ', যিনি 'জনপ্রচার চান না'।
ট্রাম্প বলেন, 'তিনি চান না তার নাম প্রকাশ করা হোক, যা রাজনীতির জগতে বিরল। রাজনীতির জগতে সবাই চায় নিজের নাম শোনা যাক।'
ট্রাম্প আরও বলেন, 'তিনি ১৩০ মিলিয়ন ডলার দিয়েছেন যাতে আমাদের সেনাদের বেতন নিশ্চিত করা যায় এবং তিনি আমার বড় সমর্থক।'
দানকৃত অর্থ সেনাসদস্যপ্রতি প্রায় ১০০ ডলারের সমান।
গত সপ্তাহে হোয়াইট হাউস প্রতিরক্ষা তহবিল পুনর্বিন্যাস করে বেতন দিতে পারলেও, ৩১ অক্টোবরের পরবর্তী বেতন দেওয়া সম্ভব হবে কি না, তা স্পষ্ট নয়।
কংগ্রেস এখনও এমন কোনো বিল পাস করতে পারেনি, যা সরকার বন্ধ থাকলেও সেনাদের বেতন প্রদানের নিশ্চয়তা দেবে।
অধিকাংশ সরকারি কর্মচারীকে ছুটিতে পাঠানো হয়েছে, আর কেউ কেউ কোনো বেতন ছাড়াই কাজ চালিয়ে যাচ্ছেন।
প্রতিরক্ষা দপ্তরের নীতিমালা অনুযায়ী, ১০ হাজার ডলারের বেশি দানের ক্ষেত্রে নৈতিকতা কর্মকর্তাদের পর্যালোচনা প্রয়োজন। এতে দেখা হয় দাতা কোনো দাবি, ক্রয়, মামলা বা অন্য কোনো প্রতিরক্ষা-সম্পর্কিত বিষয়ে যুক্ত আছেন কি না।
বিদেশি নাগরিকদের দান অতিরিক্ত যাচাইয়ের আওতায় পড়ে।
যদিও এমন দান খুবই বিরল, তবুও পেন্টাগন কখনো কখনো দাতা সংস্থার কাছ থেকে অনুদান গ্রহণ করে। তবে তা সাধারণত নির্দিষ্ট প্রকল্প যেমন- স্কুল, হাসপাতাল, গ্রন্থাগার, জাদুঘর বা কবরস্থান নির্মাণের জন্য দান গ্রহণ করে।
সমালোচকেরা প্রশ্ন তুলেছেন, কেন মার্কিন সামরিক বাহিনী অজ্ঞাত দাতার অর্থ গ্রহণ করবে।
সেনেটের প্রতিরক্ষা বরাদ্দ কমিটির শীর্ষ ডেমোক্র্যাট সদস্য ডেলাওয়্যার অঙ্গরাজ্যের সিনেটর ক্রিস কুনস বলেন, 'অজ্ঞাত দাতার অর্থ দিয়ে আমাদের সেনাবাহিনী পরিচালনা করা উদ্বেগজনক। এতে প্রশ্ন ওঠে, আমাদের সৈন্যরা কি বিদেশি শক্তির হাতে কেনা হয়ে যাচ্ছে?'
