জাতিসংঘ ও উপসাগরীয় দেশগুলোর সমর্থনে গাজায় অন্তর্বর্তী প্রশাসনের নেতৃত্ব দিতে আলোচনায় টনি ব্লেয়ারের নাম

যুক্তরাজ্যের সাবেক প্রধানমন্ত্রী স্যার টনি ব্লেয়ার গাজায় যুদ্ধবিরতির পর অন্তর্বর্তী প্রশাসন পরিচালনার বিষয়ে আলোচনায় জড়িত আছেন। খবর বিবিসি'র।
মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ও আরব নেতারা জাতিসংঘে আলোচনায় বসে গাজায় জাতিসংঘের সহায়তা ও উপসাগরীয় দেশগুলোর সমর্থনে একটি অন্তর্বর্তী প্রশাসন গঠনের প্রস্তাব দেন। পরে এটি ফিলিস্তিনিদের হাতে তুলে দেওয়ার পরিকল্পনা রয়েছে। এ প্রস্তাবে ব্লেয়ারের নেতৃত্ব দেওয়ার বিষয়টি ওয়াশিংটনে সমর্থন পেয়েছে বলে ধারণা করা হচ্ছে। তবে তার কার্যালয় বলেছে, গাজার মানুষকে সরিয়ে দেওয়ার মতো কোনো পরিকল্পনাকে তিনি সমর্থন করবেন না।
টনি ব্লেয়ার আগস্টে হোয়াইট হাউসে ট্রাম্পের সঙ্গে বৈঠকে অংশ নিয়েছিলেন। বৈঠকে যুদ্ধ-পরবর্তী গাজা নিয়ে পরিকল্পনা আলোচনা হয়।
২০০৭ সালে প্রধানমন্ত্রীর দায়িত্ব ছাড়ার পর ব্লেয়ার আন্তর্জাতিক চতুষ্টয়ের (যুক্তরাষ্ট্র, ইউরোপীয় ইউনিয়ন, রাশিয়া ও জাতিসংঘ) মধ্যপ্রাচ্য দূত হিসেবে কাজ করেছিলেন। তিনি ফিলিস্তিনে অর্থনৈতিক উন্নয়ন এবং দ্বিরাষ্ট্র সমাধানের পথ তৈরি নিয়ে কাজ করেন। তবে ২০০৩ সালে ইরাক যুদ্ধে ব্রিটিশ সেনা পাঠানোর সিদ্ধান্ত নেওয়ায় তিনি ব্যাপক সমালোচিত হন। তদন্তে দেখা যায়, গণবিধ্বংসী অস্ত্রের বিষয়ে নিশ্চিত না হয়েও তিনি যুদ্ধের সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন।
এই খবর এমন সময়ে এলো যখন ফিলিস্তিনি প্রেসিডেন্ট মাহমুদ আব্বাস বৃহস্পতিবার ঘোষণা দিয়েছেন, তিনি ট্রাম্প ও বিশ্বনেতাদের সঙ্গে মিলে দ্বিরাষ্ট্র-ভিত্তিক শান্তি পরিকল্পনা বাস্তবায়নে প্রস্তুত। আব্বাস স্পষ্ট করেছেন, গাজার শাসনে ভবিষ্যতে হামাসের কোনো ভূমিকা থাকবে না, তাদের নিরস্ত্র হতে হবে।
এদিকে এই সপ্তাহে যুক্তরাজ্য, কানাডা ও অস্ট্রেলিয়া ফিলিস্তিন রাষ্ট্রকে আনুষ্ঠানিক স্বীকৃতি দিয়েছে। পরে ফ্রান্স ও ডেনমার্কসহ আরও কয়েকটি দেশ একই পদক্ষেপ নেয়। তবে যুক্তরাষ্ট্র ও ইসরায়েল একে হামাসকে 'পুরস্কৃত করার সমান' বলে সমালোচনা করেছে।
ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী কিয়ার স্টারমার বলেছেন, এই স্বীকৃতি হামাসকে স্পষ্ট বার্তা দেয়—'সরকার বা নিরাপত্তা ব্যবস্থায় তাদের কোনো ভবিষ্যৎ নেই'।
২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর হামাসের নেতৃত্বে দক্ষিণ ইসরায়েলে হামলায় প্রায় ১,২০০ জন নিহত হয় এবং ২৫১ জনকে আটক করা হয়। এর জবাবে ইসরায়েল গাজায় সামরিক অভিযান শুরু করে। গাজার হামাস নিয়ন্ত্রিত স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের হিসাবে এখন পর্যন্ত অন্তত ৬৫,৪১৯ জন ইসরায়েলি হামলায় নিহত হয়েছেন। জাতিসংঘের এক তদন্ত কমিশন জানিয়েছে, ইসরায়েল গাজায় গণহত্যা চালিয়েছে, যদিও ইসরায়েল তা অস্বীকার করছে।