২০২৫ সালে সবচেয়ে বেশি বিমানবন্দর রয়েছে যেসব দেশে
আমরা যখন বিমানবন্দর নিয়ে ভাবি, তখন হয়তো লন্ডন, দুবাই বা নিউইয়র্কের মতো বিশাল আন্তর্জাতিক হাবগুলোর কথাই মাথায় আসে। কিন্তু মোট বিমানবন্দরের সংখ্যায় কিছু দেশ বাকি বিশ্বকে অনেক পিছনে ফেলে দিয়েছে। চলুন, ২০২৫ সালের পরিসংখ্যানের ওপর ভিত্তি করে আকাশপথে সংযোগের এই বৈশ্বিক মানচিত্রটি দেখে নেওয়া যাক।
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের একচ্ছত্র আধিপত্য
এই তালিকার শীর্ষে এমন এক দেশ রয়েছে, যার ধারেকাছেও কেউ নেই। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, ১৬,১১৬টি বিমানবন্দর নিয়ে প্রথম স্থান দখল করে আছে। এটি বিশ্বের মোট বিমানবন্দরের ৩৪.১%। দ্বিতীয় স্থানে থাকা ব্রাজিলের চেয়ে এই সংখ্যা তিনগুণেরও বেশি!
এর পেছনের কারণগুলো বেশ স্পষ্ট। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র একটি বিশাল দেশ, যার এক প্রান্ত থেকে অন্য প্রান্তে আকাশপথেই যাতায়াত সবচেয়ে সুবিধাজনক। এর শক্তিশালী অর্থনীতি, অভ্যন্তরীণ বাণিজ্য এবং সাধারণ মানুষের আকাশপথে ভ্রমণের ব্যাপক প্রবণতা দেশজুড়ে এতগুলো বিমানবন্দর গড়ে তোলার পেছনে প্রধান ভূমিকা রেখেছে। এর মধ্যে যেমন রয়েছে বড় আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর, তেমনই আছে ছোট ছোট অসংখ্য ব্যক্তিগত ও কার্গো এয়ারস্ট্রিপ।
বিশাল দেশ, বিশাল চাহিদা
তালিকার শীর্ষ দেশগুলোর দিকে তাকালে একটি বিষয় পরিষ্কার বোঝা যায়—ভৌগোলিক বিশালতা। যুক্তরাষ্ট্রের পর দ্বিতীয় স্থানে থাকা ব্রাজিলের বিমানবন্দরের সংখ্যা ৫,২৯৭টি। এরপরই আছে অস্ট্রেলিয়া (২,২৫৭), মেক্সিকো (১,৫৮০) এবং কানাডা (১,৪৫৯)।
এই দেশগুলোর জন্য বিমান শুধু বিলাসবহুল ভ্রমণ নয়, বরং একটি অপরিহার্য প্রয়োজন। অস্ট্রেলিয়ার বিশাল মরুভূমিময় অঞ্চল, ব্রাজিলের দুর্গম আমাজন জঙ্গল কিংবা কানাডার বরফঢাকা প্রত্যন্ত এলাকায় পৌঁছানোর জন্য আকাশপথই একমাত্র ভরসা। এই বিমানবন্দরগুলো শুধু মানুষ নয়, পণ্য ও জরুরি সেবা পৌঁছে দেওয়ার লাইফলাইন হিসেবেও কাজ করে।
ইউরোপ ও এশিয়ার চিত্র
ইউরোপের দেশগুলোর মধ্যে ফ্রান্স (১,২১৮), যুক্তরাজ্য (১,০৫৭) এবং জার্মানি (৮৪০) শীর্ষ দশে নিজেদের জায়গা করে নিয়েছে। এসব দেশের আয়তন কম হলেও উন্নত অর্থনীতি এবং ইউরোপীয় ইউনিয়নের মধ্যে সহজ যোগাযোগের কারণে আকাশপথের নেটওয়ার্ক বেশ শক্তিশালী।
অন্যদিকে, এশিয়া ও ওশেনিয়া অঞ্চলে পাপুয়া নিউগিনি (৫৬৯) ও ইন্দোনেশিয়ার (৫৫৬) মতো দ্বীপবেষ্টিত দেশগুলোর বিমানবন্দর সংখ্যা চোখে পড়ার মতো। তবে অবাক করার মতো বিষয় হলো, বিশাল জনসংখ্যা ও আয়তনের দেশ হয়েও চীন মাত্র ৫৫২টি বিমানবন্দর নিয়ে তালিকার ১৬ নম্বরে অবস্থান করছে। এর একটি বড় কারণ হতে পারে চীনের দ্রুতগতির রেল নেটওয়ার্কের ওপর অধিক নির্ভরশীলতা।
এক অদ্ভুত তথ্য: অ্যান্টার্কটিকা!
এই তালিকার সবচেয়ে চমকপ্রদ এবং মজার তথ্যটি হলো অ্যান্টার্কটিকা মহাদেশকে নিয়ে। এই জনমানবহীন বরফের রাজ্যেও ৩৫টি বিমানবন্দর রয়েছে! তবে এগুলো আপনার কল্পনার মতো বাণিজ্যিক বিমানবন্দর নয়। বরফের ওপরে তৈরি এসব রানওয়ে বা এয়ারস্ট্রিপগুলো মূলত বিভিন্ন দেশের গবেষণা কেন্দ্রগুলোতে বিজ্ঞানী ও প্রয়োজনীয় রসদ পৌঁছে দেওয়ার জন্য ঋতুভিত্তিক ব্যবহৃত হয়।
