যুদ্ধবিরতির ঘোষণার মাঝেই তেহরানে বিস্ফোরণের শব্দ, আকাশে প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা সক্রিয়

ইরান ও ইসরায়েলের মধ্যে আসন্ন যুদ্ধবিরতির ঘোষণা দিয়েছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। তবে এ ঘোষণার পরও ইরানের রাজধানী তেহরানে শোনা গেছে একাধিক বিস্ফোরণের শব্দ।
ইরানের আধা-সরকারি সংবাদমাধ্যম তাসনিম জানিয়েছে, রাজধানীজুড়ে বিস্ফোরণের শব্দ শোনা গেছে এবং ইসরায়েলি বিমান হামলার জবাবে ইরানের আকাশ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা সক্রিয় হয়ে উঠেছে।
তেহরানভিত্তিক হামশাহরি নিউজের তথ্যমতে, তেহরানের পশ্চিম ও কেন্দ্রীয় অংশে এবং পাশের কারাজ শহরে 'বেশ জোরালো বিস্ফোরণের শব্দ' শোনা গেছে।
আল জাজিরার তেহরান প্রতিনিধি তোহিদ আসাদি জানান, ট্রাম্পের যুদ্ধবিরতির ঘোষণা একটি সম্ভাব্য শান্তির পথ খুলে দিলেও বাস্তবতা ভিন্ন। এখনো তেহরানের আকাশে বিস্ফোরণের শব্দ শোনা যাচ্ছে এবং ইরানের প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা ইসরায়েলি হামলার জবাব দিচ্ছে।
তিনি বলেন, 'যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের বক্তব্যের পরও এখন পর্যন্ত তেহরান থেকে কোনো আনুষ্ঠানিক প্রতিক্রিয়া পাওয়া যায়নি।'
তোহিদ আসাদি আরও বলেন, ইরানের সর্বোচ্চ নেতা আয়াতুল্লাহ আলি খামেনি সম্প্রতি একটি ভিডিও বার্তায় বলেছেন, তারা কোনো "চাপিয়ে দেওয়া শান্তি" গ্রহণ করবেন না।
'আমরা আগেই শুনেছি ইরানের শীর্ষ নেতাদের বক্তব্য—তারা বলছেন, চাপিয়ে দেওয়া শান্তি মেনে নেওয়া হবে না,' বলেন আসাদি।
তিনি বলেন, ট্রাম্পের এই শান্তির ঘোষণা আদৌ 'চাপিয়ে দেওয়া' নাকি 'পারস্পরিক সম্মতিতে গৃহীত'—তা বোঝার জন্য পরিস্থিতির আরো পর্যবেক্ষণ প্রয়োজন।
ইরানের রাজধানী তেহরানে বিস্ফোরণের শব্দ শোনার কয়েক মুহূর্ত আগে দেশটির বিমান বাহিনী একটি ইসরায়েলি নজরদারি ড্রোন ভূপাতিত করেছে বলে দাবি করেছে ইরানি সংবাদমাধ্যমগুলো।
মেহর নিউজ জানিয়েছে, রাজধানীর আকাশে ইসরায়েলের হারমেস মডেলের একটি ড্রোন গুলি করে নামানো হয়। সংস্থাটি একটি ছবি প্রকাশ করেছে, যেখানে আগুনে পুড়ে ছাই হয়ে যাওয়া ধ্বংসাবশেষ ছড়িয়ে আছে একটি সড়কে, আর সাধারণ মানুষ সেই এলাকায় ভিড় করে আছে।
তাসনিম ও ফার্স নিউজ এজেন্সিও একই ধরনের ছবি ও তথ্য প্রকাশ করেছে, যেখানে ঘটনাস্থলে বিস্ফোরণের চিহ্ন স্পষ্ট দেখা গেছে।
অন্যদিকে, ইরাকের রাজধানী বাগদাদের উত্তরে তাজি সামরিক ঘাঁটিতে একটি অজ্ঞাত ড্রোন হামলা হয়েছে বলে জানিয়েছে দেশটির রাষ্ট্রীয় সংবাদ সংস্থা আইএনএ।
আইএনএ এক সামরিক কর্মকর্তার বরাতে জানিয়েছে, হামলায় কোনো হতাহত হয়নি।
'দ্য ড্রপ সাইট' নামের একটি অনুসন্ধানী সংবাদমাধ্যম সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম 'এক্স'-এ হামলার ভিডিও প্রকাশ করেছে, যেখানে তাজি ঘাঁটিতে বিস্ফোরণের দৃশ্য দেখা গেছে।