লস অ্যাঞ্জেলেসে অভিবাসনবিরোধী অভিযান: আরও ২০০০ ন্যাশনাল গার্ড, ৭০০ মেরিন পাঠালেন ট্রাম্প

যুক্তরাষ্ট্রের লস অ্যাঞ্জেলেস অভিবাসনবিরোধী অভিযানের বিরুদ্ধে চলমান বিক্ষোভ দমনে আরও ২ হাজার ন্যাশনাল গার্ড সেনা মোতায়েন ও ৭০০ মেরিন সদস্যকে সক্রিয় করা হচ্ছে। পেন্টাগন জানিয়েছে, মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের নির্দেশে এ পদক্ষেপ নিয়েছে ফেডারেল প্রশাসন। খবর বিবিসি'র।
যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের প্রধান মুখপাত্র শন পারনেল জানিয়েছেন, প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের নির্দেশে লস অ্যাঞ্জেলসে আরও ২ হাজার ন্যাশনাল গার্ড সদস্যকে ফেডারেল দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে।
তিনি বলেন, 'ইমিগ্রেশন অ্যান্ড কাস্টমস এনফোর্সমেন্ট -কে (আইসিই) সহায়তা এবং ফেডারেল আইনপ্রয়োগকারী কর্মকর্তাদের নিরাপদে দায়িত্ব পালনের সুযোগ করে দিতে প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় এই বাহিনী মোতায়েন করছে।'
সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্স-এ দেওয়া এক পোস্টে যুক্তরাষ্ট্রের ভাইস প্রেসিডেন্ট জেডি ভ্যান্স লস অ্যাঞ্জেলসের অভিবাসনবিরোধী অভিযানের বিরুদ্ধে বিক্ষোভ দমনে সেনা মোতায়েনের পক্ষে দৃঢ় অবস্থান পুনর্ব্যক্ত করেছেন।
তিনি লিখেছেন, 'এই প্রশাসন কোনও বিশৃঙ্খলার কাছে মাথা নত করবে না। প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প পিছু হটবেন না।'
এদিকে, লস অ্যাঞ্জেলেস শহরে ন্যাশনাল গার্ড মোতায়েনের ঘটনায় প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের প্রশাসনের বিরুদ্ধে মামলা করার কথা জানিয়েছেন ক্যালিফোর্নিয়া অঙ্গরাজ্যের গভর্নর গ্যাভিন নিউজম।
তিনি বলেছেন, তিনি ট্রাম্পের বিরুদ্ধে মামলা করছেন। কারণ ট্রাম্প তার অনুমতি ছাড়াই শহরটিতে ন্যাশনাল গার্ড মোতায়েন করেছেন।
নিউজম এক্স-এ লিখেছেন, ট্রাম্প ঠিক এটাই চেয়েছিলেন। তিনি পরিস্থিতিকে আরও উসকে দিয়েছেন এবং অবৈধভাবে ন্যাশনাল গার্ডের নিয়ন্ত্রণ নিয়েছেন।
তিনি লিখেছেন, 'ট্রাম্প যে আদেশে সই করেছেন, তা শুধু ক্যালিফোর্নিয়ার জন্য নয়। এখন তিনি যেকোনো রাজ্যের জন্য একই কাজ করতে পারবেন। এজন্যই ক্যালিফোর্নিয়া তার বিরুদ্ধে মামলা করছে।'
এর আগে নিউজম ন্যাশনাল গার্ড মোতায়েন 'বেআইনি' বলে উল্লেখ করেন এবং জানান যে তারা এ বিষয়ে আদালতের আইনের আশ্রয় নেবেন।
উল্লেখ্য, গত শনিবার শহরটিতে দ্বিতীয় দিনের মতো বিক্ষোভ ছড়িয়ে পড়লে ট্রাম্প নিজের ক্ষমতা ব্যবহার করে লস অ্যাঞ্জেলেস শহরে ন্যাশনাল গার্ড মোতায়েন করেন—যা সাধারণত কোনো অঙ্গরাজ্যের গভর্নর সিদ্ধান্ত নিয়ে থাকেন।
প্রসঙ্গত, শুক্রবার রাতে প্রথম দফা অভিবাসন বিরোধী বিক্ষোভ শুরু হয় আইসিই-র অভিযানের পর, যেখানে অন্তত ৪৪ জনকে অভিবাসন আইন লঙ্ঘনের অভিযোগে আটক করা হয়।
ডিপার্টমেন্ট অভ হোমল্যান্ড সিকিউরিটি (ডিএইচএস) দাবি করেছে, শুক্রবারের বিক্ষোভে 'প্রায় ১ হাজার দাঙ্গাবাজ' অংশ নেয়।
অভিবাসীদের অধিকার সংগঠন সিএইচআইআরএলএর নির্বাহী পরিচালক অ্যাঞ্জেলিকা সালাস বলেন, শুক্রবার আটক হওয়া ব্যক্তিদের সঙ্গে আইনজীবীরা দেখা করতে পারেননি, যা 'গভীর উদ্বেগজনক'।
সালাস বলেন, অভিযান চালানো হয়েছে হোম ডিপোর আশেপাশে। সেখান থেকে পথচারী শ্রমিক ও হকারদের আটক করা হয়েছে। পাশাপাশি একটি পোশাক কারখানা ও একটি গুদাম থেকেও লোকজন গ্রেপ্তার হয়েছে।