আলোচনায় ‘অগ্রগতি’; পারমাণবিক চুক্তির রূপরেখা তৈরি করছেন ইরান-যুক্তরাষ্ট্রের বিশেষজ্ঞরা

ইরান ও যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে সম্ভাব্য পারমাণবিক চুক্তির প্রাথমিক রূপরেখা তৈরিতে সম্মত হয়েছে দুই দেশ। শনিবার রোমে চার ঘণ্টার আলোচনা শেষে ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী আব্বাস আরাকচি একথা জানান। মার্কিন কর্মকর্তারাও আলোচনাকে 'খুবই ইতিবাচক অগ্রগতি' হিসেবে উল্লেখ করেছেন।
২০১৮ সালে প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ইরান ও বিশ্ব শক্তিগুলোর মধ্যে হওয়া ২০১৫ সালের পারমাণবিক চুক্তি থেকে যুক্তরাষ্ট্রকে সরিয়ে নেন। এরপর থেকেই তিনি তেহরানকে হুমকি দিয়ে আসছেন—ইরান যদি নতুন চুক্তিতে না আসে, তবে সামরিক ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
শনিবার রোমে মধ্যপ্রাচ্য বিষয়ক ট্রাম্পের দূত স্টিভ উইটকফ এবং আরাকচির মধ্যে এটি ছিল এক সপ্তাহের মধ্যে দ্বিতীয়বারের মতো পরোক্ষ বৈঠক। ওমানের এক মধ্যস্থতাকারীর মাধ্যমে বার্তা আদান-প্রদান হয়।
রাষ্ট্রায়ত্ত টেলিভিশনে আরাকচি বলেন, 'আলোচনাটি গঠনমূলক পরিবেশে হয়েছে এবং বেশ কিছু নীতিগত বিষয়ে অগ্রগতি হয়েছে। দুই পক্ষের মধ্যে একটি ভালো বোঝাপড়া হয়েছে।'
তিনি জানান, আগামী বুধবার ওমানে বিশেষজ্ঞ পর্যায়ে আলোচনা শুরু হবে। এ বৈঠকে সম্ভাব্য চুক্তির একটি রূপরেখা তৈরির কাজ শুরু হবে। এরপর আগামী শনিবার প্রধান আলোচকরা আবারও ওমানে বৈঠকে বসবেন, বিশেষজ্ঞদের অগ্রগতি মূল্যায়নে।
তবে আরাকচি বলেন, 'আমরা খুব সতর্কভাবে এগোচ্ছি। আশা করার মতো অবস্থায় নেই, আবার হতাশাও নই।'
ইরান বরাবরই দাবি করে আসছে, তাদের পারমাণবিক কর্মসূচি শান্তিপূর্ণ এবং আন্তর্জাতিক নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহারের বিনিময়ে তারা আংশিক সীমাবদ্ধতা মেনে নিতে প্রস্তুত।
যুক্তরাষ্ট্রের এক কর্মকর্তা বলেন, 'রোমে আমাদের চার ঘণ্টার আলোচনায় উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি হয়েছে। দুই পক্ষ আবারও বৈঠকে বসার বিষয়ে একমত হয়েছে।'
শুক্রবার ট্রাম্প বলেন, 'আমি চাই ইরানের পারমাণবিক অস্ত্র তৈরি বন্ধ হোক। তারা কখনোই এটা পাবে না। আমি চাই ইরান ভালো করুক, উন্নত হোক, সমৃদ্ধ হোক।'
এদিকে যুক্তরাষ্ট্রের মিত্র ইসরায়েল ইঙ্গিত দিয়েছে, ইরানের পারমাণবিক স্থাপনায় হামলা চালানোর বিষয়টি তারা বাতিল করেনি।
২০১৯ সাল থেকে ইরান ২০১৫ সালের চুক্তির সীমা লঙ্ঘন করে অতিরিক্ত মাত্রায় ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধ করে আসছে। পশ্চিমা বিশ্ব বলছে, এই মজুত শান্তিপূর্ণ জ্বালানি প্রকল্পের চেয়ে অনেক বেশি।
ইরানের এক ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা জানান, ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধকরণ বন্ধ করা, সেন্ট্রিফিউজ অপসারণ কিংবা ২০১৫ সালের চুক্তির চেয়ে মজুত ইউরেনিয়ামের পরিমাণ কমানো—এই তিনটি ইস্যুকে তারা অপরিবর্তনযোগ্য শর্ত বা সর্বোচ্চ সীমা হিসেবে ধরে রেখেছে।