বাইডেনকে এবার সরে যেতে বললেন হলিউড তারকা ও অন্যতম অর্থদাতা জর্জ ক্লুনি

নভেম্বরে আসন্ন মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচন থেকে জো বাইডেনকে সরে যাওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন ডেমোক্র্যাটদের অন্যতম শীর্ষ অর্থ সংগ্রাহক এবং হলিউড তারকা জর্জ ক্লুনি।
এর কয়েক ঘণ্টা আগেই জ্যেষ্ঠ ডেমোক্র্যাট ও সাবেক হাউজ স্পিকার ন্যান্সি পেলোসি বাইডেনকে নির্বাচনে তার প্রার্থিতা নিয়ে দ্রুতই সিদ্ধান্ত নেওয়ার আহ্বান জানিয়েছিলেন।
পেলোসি বলেছিলেন, "গত মাসের নির্বাচনী বিতর্কে এরকম নাস্তানাবুদ হওয়ার পর আমরা তাকে প্রার্থিতার বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিতে বলেছি কারণ তার হাতে খুব বেশি সময় নেই।"
পেলোসির মতো হলিউড তারকা ক্লুনির কণ্ঠেও শোনা গেল একই কথা। তিনি বলেন, "প্রেসিডেন্ট তার ক্যারিয়ারে অনেক লড়াইয়েই জিতলেও, একটি লড়াইয়ে তিনি জিততে পারেননি। আর তা হচ্ছে সময়ের বিরুদ্ধে লড়াই।"
দ্য নিউ ইয়র্ক টাইমস পত্রিকায় ক্লুনি লিখেছেন, "যদিও এটা বলা কষ্টজনক, তবুও তিন সপ্তাহ আগে আমি একটি অর্থ উত্তোলন অনুষ্ঠানে যে জো বাইডেনকে দেখেছি তিনি ২০১০ এর বাইডেন নন। এমনকি তিনি ২০২০ এর ও বাইডেন নন।"
তিনি আরো লিখেছেন, "বাইডেন হচ্ছেন সে মানুষটি যাকে আমরা নির্বাচনী বিতর্কে (২৭ জুন) দেখেছি। এটি বয়সের ব্যাপার, আর কিছুই নয়। আমরা এ প্রেসিডেন্টকে নিয়ে নভেম্বরের নির্বাচনে জিততে পারব না।"
বাইডেনের প্রার্থীতা নিয়ে উদ্বেগ বাড়ছে ডেমোক্র্যাটদের মধ্যে। ট্রাম্পের বিরুদ্ধে বাইডেনের জয় পাওয়ার ক্ষমতা আছে কি না— তা নিয়ে সন্দেহ প্রকাশ করে কয়েকজন ডেমোক্র্যাট তাকে ইতোমধ্যেই সরে যাওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন।
একদিকে যেমন ন্যান্সি পেলোসি এবং মাইকেল বেনেটের মতো জ্যেষ্ঠ ডেমোক্র্যাটরা তাদের উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন, তেমনি মার্কিন সিনেটর পিটার ওয়েলচ বুধবার বাইডেনকে নির্বাচন থেকে প্রার্থীতা প্রত্যাহার করার আহ্বান জানিয়েছেন।
তবে বাইডেনের নির্বাচনী ক্যাম্পেইন থেকে তার জয় নিয়ে আশাবাদ ব্যক্ত করা হয়েছে। তিনি ক্যালিফোর্নিয়ার গভর্নর গ্যাভিন নিউজম এবং কংগ্রেশনাল ব্ল্যাক ককাসসহ (৬০ জন রাজনীতিবিদের একটি গ্রুপ) মূল ডেমোক্র্যাটদের উল্লেখযোগ্য সমর্থন ধরে রেখেছেন।
ওয়াশিংটন ডিসিতে আয়োজিত ন্যাটো সম্মেলনেও বাইডেনের প্রার্থিতার বিষয়টি নিয়ে আলোচনা করা হয়েছে।
নভেম্বরে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনকে সামনে রেখে প্রথম প্রেসিডেন্সিয়াল বিতর্কে ডোনাল্ড ট্রাম্পের কাছে নাস্তানাবুদ হওয়ার পর থেকেই একের পর এক চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি হতে হচ্ছে জো বাইডেনকে।
নিজ দল ডেমোক্রেট-এর সদস্য এবং সমর্থকদের অনেকেই ইতোমধ্যে নির্বাচনে বাইডেনের অংশগ্রহণকে প্রশ্নবিদ্ধ করে তাকে সরে দাঁড়াতে বলেছেন।
ট্রাম্পের সঙ্গে বিতর্কের পরই ৮১ বছর বয়সী বাইডেনকে ভোটের মাঠ ছাড়ার জন্য প্রচণ্ড চাপ তৈরি হয়েছে কারণ যুক্তরাষ্ট্রের পরবর্তী প্রেসিডেন্ট হিসেবে বয়স্ক বাইডেনকে আর যোগ্য বলে বিবেচনা করছেন না বড় সংখ্যক মানুষ। বিতর্ক অনুষ্ঠানেও বাইডেনের আচরণে বয়সের ছাপ স্পষ্ট বোঝা গেছে।
বাইডেন স্বীকার করেছেন, বিতর্কের রাতে তিনি ভুল করেছেন। তবে নভেম্বরের অনুষ্ঠিত হতে যাওয়া প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে ডোনাল্ড ট্রাম্পের বিরুদ্ধে তিনিই দলের নেতৃত্বে থাকবেন বলে জানিয়ে দিয়েছেন।