গ্রেপ্তার হলেন ভারতের ‘খালিস্তানি নেতা’ অমৃতপাল সিং

ভারতের পাঞ্জাবের একটি গ্রাম থেকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে খালিস্তানি নেতা অমৃতপাল সিংকে। গ্রেপ্তারের পর তাকে আসামের দিব্রুগড়ে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে।
রবিবার ভোরে পাঞ্জাবের মোগা জেলার রোডে গ্রামের একটি গুরুদ্বারের সামনে পুলিশের কাছে আত্মসমর্পণ করেন অমৃতপাল। শনিবার রাতেই মোগায় তিনি চলে এসেছিলেন বলে খবর। তার আগমনের খবর অমৃতপাল নিজেই পুলিশকে জানান। তারপর রবিবার ভোরে গুরুদ্বারে হাজির হন পলাতক নেতা। সেখানে তাকে দেখতে জড়ো হয়েছিলেন অনেকে। সকলের সামনে গুরুদ্বারে বসেই ভাষণ দেন অমৃতপাল।
এর আগে অমৃতপালের ঘনিষ্ঠ সব সহযোগীকেই আসামে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল গ্রেপ্তারির পর। অমৃতপালকেও সেখানেই রাখা হবে বলে জানা গেছে। নিরাপত্তাজনিত কারণে পাঞ্জাবে রাখা হচ্ছে না অমৃতপালকে। ভাতিন্ডা এয়ার ফোর্স স্টেশন থেকে তাকে আসামের উদ্দেশে উড়িয়ে নিয়ে যাওয়া হবে।
ভারতের জাতীয় নিরাপত্তা আইনে অমৃতপালকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তার বিরুদ্ধে বিভিন্ন জাতির মধ্যে বৈষম্য ছড়ানো, হত্যা চেষ্টা, পুলিশকে আক্রমণ এবং পুলিশের কাজে বাধা দেওয়ার মতো গুরুতর অভিযোগ রয়েছে। অভিযোগ, অমৃতসরের কাছে অঞ্জলা থানার লকআপে বন্দি সঙ্গীকে ছাড়ানোর জন্য কয়েকশো মানুষ নিয়ে গত ১৮ মার্চ হামলা চালান অমৃতপাল এবং তার ঘনিষ্ঠ সঙ্গী পপ্পলপ্রীত সিংহ। ওই ঘটনার পর থেকেই দু'জন পলাতক ছিলেন। শ১০ এপ্রিল পপ্পলপ্রীতকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। অমৃতপাল অধরাই ছিলেন। অবশেষে ৩৬ দিন পর তাকে গ্রেপ্তার করা হল।
এদিকে অমৃতপালের গ্রেপ্তারির পরই পাঞ্জাবে অশান্তি ছড়ানোর আশঙ্কা করা হচ্ছে। এই আবহে পুলিশের পক্ষ থেকে জনসাধারণকে সতর্ক করা হয়েছে।
গোয়েন্দা সূত্রে দাবি, 'ওয়ারিস পাঞ্জাব দে' গোষ্ঠীর নেতা অমৃতপাল সিং একজন 'আইএসআই এজেন্ট'। পাকিস্তানি গুপ্তচর সংস্থা তাকে ভারতে নিয়ে এসেছে খালিস্তানি বিচ্ছিন্নতাবাদী আন্দোলন গড়ে তুলতে। ভারতে সহিংসতা ছড়িয়ে দেওয়াই তার মূল উদ্দেশ্য।
গত মার্চ মাসে অমৃতপালকে ধরার জন্য অভিযান শুরু করে পাঞ্জাব পুলিশ। তার সহযোগীদের গ্রেপ্তার করতে সমর্থ হলেও অমৃতপাল নিজে নাটকীয়ভাবে পুলিশকে বোকা বানিয়ে পালিয়ে গিয়েছিল। এই অমৃতপাল সিং নিজের সেনা তৈরি করছিল বলে জানা গিয়েছে। নিষিদ্ধ খালিস্তান টাইগার ফোর্সের মতো 'আনন্দপুর খালসা ফোর্স' তৈরি করছিল সে। 'ওয়ারিস পাঞ্জাব দে' সংগঠনের প্রধান মানব বোমা স্কোয়াডও তৈরি করছিল বলে জানা গিয়েছে।
আরও জানা গেছে, নিজের 'নেশামুক্তি কেন্দ্র' এবং এক গুরুদ্বারে অস্ত্র মজুত করছিল অমৃতপাল। সেখানে যুব সমাজকে খালিস্তানি বিচ্ছিনতাবাদের পাঠ পড়ানো হত। মজুত অস্ত্র সহকারে সেই যুবকদের 'আত্মঘাতী' হামলার জন্য তৈরি করছিল অমৃতপাল সিং। আর এই সবই অমৃতপাল করছিল আইএসআই-এর মদদে।
- সূত্র- হিন্দুস্তান টাইমস, আনন্দবাজার পত্রিকা