রেললাইন তুলে ফেলায় ইঞ্জিনসহ দুই বগি লাইনচ্যুত, ঢাকা-ময়মনসিংহ যোগাযোগ বন্ধ
ময়মনসিংহের গফরগাঁওয়ে রেললাইন তুলে ফেলায় ঢাকাগামী অগ্নিবীণা এক্সপ্রেস ট্রেনের ইঞ্জিনসহ দুই বগি লাইনচ্যুত হয়েছে। তবে এ ঘটনায় কোনো হতাহতের খবর এখন পর্যন্ত পাওয়া যায়নি।
সোমবার (২৯ ডিসেম্বর) ভোর ৫ টা ১০ মিনিটে গফরগাঁও স্টেশনের আগে দুর্বৃত্তরা ২০ ফুট রেললাইন সরিয়ে ফেলায় এই ঘটনা ঘটে।
গফরগাঁও রেলওয়ে স্টেশন মাস্টার হানিফ বলেন, "আমি এখনও ঘটনাস্থলে পৌছাতে পারিনি। তবে, রেলওয়ে নিরাপত্তা বাহিনী জানিয়েছে ওই এলাকার ২০ ফুট রেললাইন সরিয়ে ফেলায় তারাকান্দি থেকে ছেড়ে আসা ঢাকাগামী অগ্নিবীণা এক্সপ্রেসের ইঞ্জিনসহ দুই বগি লাইনচ্যুত হয়েছে। তবে, এ ঘটনায় এখনও কোনো হতাহতের খবর পাওয়া যায়নি।"
রেলওয়ে নিরাপত্তা বাহিনী (আরএনবি) ময়মনসিংহের পরিদর্শক মো. সিরাজুল ইসলাম বলেন, রেলওয়ে নিরাপত্তা বাহিনী ঘটনাস্থলে আছে এবং পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা করছে।
প্রসঙ্গত, গত শনিবার (২৭ ডিসেম্বর) দুপুরে ময়মনসিংহ-১০ গফরগাঁও আসনে বিএনপির দলীয় মনোনয়ন পান আক্তারুজ্জামান বাচ্চু। এরপর মনোনয়নবঞ্চিত নেতাদের কর্মীরা রেললাইন এলাকায় আন্দোলন শুরু করেন।
ওইদিন বেলা ৩টা থেকে আন্দোলন শুরু হওয়ার পর রেললাইনসহ উপজেলা ও পৌর শহরের অন্তত ৩০টি পয়েন্টে আগুন দেন বিএনপির নেতা-কর্মীরা। এতে পৌর শহরের মানুষের মাঝে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। ফলে ব্যবসায়ীরা পৌর শহরসহ আশপাশের এলাকায় ব্যবসা প্রতিষ্ঠান বন্ধ রাখেন।
আন্দোলনে নেতা-কর্মীরা স্টেশনের কম্পিউটার সিস্টেম, সিগনাল লাইট, সংযোগ লাইনের কক্ষ আগুন দিয়ে পুড়িয়ে দেন। স্লিপার তুলে নেওয়ায় রেললাইন সরে যায়। এতে বিকাল ৩টা থেকে রাত ১২টা পর্যন্ত ঢাকা-ময়মনসিংহ ট্রেন যোগাযোগ বন্ধ থাকে।
এদিকে, ওই দিন বিকালে গফরগাঁও-ভালুকা সড়ক, গফরগাঁও-কিশোরগঞ্জ সড়ক, নান্দাইল ও ত্রিশালমুখী সড়কে যানবাহন ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগের ঘটনায় যান চলাচল বন্ধ হয়ে যায়।
এরপর, দ্বিতীয় দিনের আন্দোলনে সকাল থেকে ৪ বার গফরগাঁওয়ে ঢাকা-ময়মনসিংহ ট্রেন যোগাযোগ বন্ধ করে দেওয়া হয়। এতে অন্তত ১০টি ট্রেন বিভিন্ন স্টেশনে আটকা পড়ে। খবর পেয়ে পুলিশ, সেনাবাহিনী পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনার চেষ্টা করে। তবে, পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যায়। জনমনে আতঙ্ক সৃষ্টি হলে গফরগাঁও পৌর শহরসহ আশপাশের এলাকায় ব্যবসা প্রতিষ্ঠান আন্দোলন শুরুর পর থেকে এখন পর্যন্ত বন্ধ রয়েছে।
