সিলেট-২ আসনে বিএনপির প্রার্থী লুনা, মনোনয়নপত্র সংগ্রহ করেছেন ছেলে আবরারও
সিলেট-২ (বিশ্বনাথ-ওসমানীনগর ও বালাগঞ্জ) আসনে আসন্ন সংসদ নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতার লক্ষ্যে বিএনপির দলীয় মনোনয়ন পেয়েছেন চেয়ারপার্সনের উপদেষ্টা তাহসীনা রুশদীর লুনা। তবে একই আসন থেকে লুনার পাশাপাশি তার বড় ছেলে ব্যারিস্টার আবরার ইলিয়াসও মনোনয়নপত্র সংগ্রহ করেছেন।
তাহসীনা রুশদীর লুনা বিএনপির নিখোঁজ সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক ও এই আসনের সাবেক সংসদ সদস্য এম. ইলিয়াস আলীর স্ত্রী।
বুধবার (২৪ ডিসেম্বর) মা ও ছেলের মনোনয়নপত্র সংগ্রহের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন বিশ্বনাথ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও নির্বাচনের সহকারী রিটার্নিং কর্মকর্তা উম্মে কুলসুম রুবি।
তিনি বলেন, 'আমার অফিস থেকে এখন পর্যন্ত চার জন মনোনয়নপত্র সংগ্রহ করেছেন। তাদের মধ্যে তাহসীনা রুশদীর লুনা এবং আবরার ইলিয়াসও রয়েছেন। তারা ১৮ ডিসেম্বর মনোনয়নপত্র সংগ্রহ করেন।'
একই আসন থেকে কেন মা ও ছেলে দুজনই মনোনয়নপত্র সংগ্রহ করেছেন—এ বিষয়ে জানতে মঙ্গলবার (২৩ ডিসেম্বর) বিকেলে তাহসীনা রুশদীর লুনার মোবাইল ফোনে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তাকে পাওয়া যায়নি। এছাড়া যুক্তরাজ্য প্রবাসী আবরার ইলিয়াসের সাথেও তাৎক্ষণিকভাবে যোগাযোগ করা সম্ভব হয়নি।
তবে দলীয় সূত্র থেকে জানা গেছে, মূলত আইনি জটিলতা এড়াতেই মায়ের পাশাপাশি ছেলে আবরার মনোনয়নপত্র সংগ্রহ করেছেন। কোনো কারণে লুনার মনোনয়নপত্র বাতিল হয়ে গেলে যাতে আসনটি শূন্য না থাকে, সেক্ষেত্রে আবরার নির্বাচন করবেন বলে জানিয়েছেন স্থানীয় বিএনপি নেতারা।
উল্লেখ্য, এর আগে ২০১৮ সালের নির্বাচনেও এই আসন থেকে তাহসীনা রুশদীর লুনা ও আবরার ইলিয়াস মনোনয়নপত্র সংগ্রহ করেছিলেন। সেবারও বিএনপি থেকে লুনাকেই মনোনয়ন দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু উচ্চ আদালতের নির্দেশে তার প্রার্থিতা স্থগিত হওয়ায় তিনি নির্বাচনে অংশ নিতে পারেননি। পরবর্তীতে এই আসনে বিএনপি নেতৃত্বাধীন ঐক্যফ্রন্টের প্রার্থী করা হয় গণফোরামের মোকাব্বির খানকে এবং তিনি নির্বাচিত হন।
জানা যায়, ২০১৮ সালের নির্বাচনের আগে সিলেট-২ আসনের মহাজোটের শরিক জাতীয় পার্টির তৎকালীন প্রার্থী এ এম ইয়াহহিয়া চৌধুরী এহিয়ার করা এক রিট আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে লুনার মনোনয়নপত্র স্থগিতের আদেশ দিয়েছিলেন উচ্চ আদালত। রিট আবেদনে ইয়াহহিয়া চৌধুরী অভিযোগ করেছিলেন, 'আরপিও অনুযায়ী সরকারি চাকরি থেকে অবসর নেওয়ার তিন বছর পর সংসদ সদস্যপদে প্রার্থী হওয়ার বিধান রয়েছে। তাহসীনা রুশদীর লুনা ছয় মাস আগে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ডেপুটি রেজিস্ট্রার পদ থেকে অব্যাহতি নেন।'
প্রসঙ্গত, তাহসীনা রুশদীর লুনার স্বামী ও আবরার ইলিয়াসের বাবা এম. ইলিয়াস আলী ২০০১ থেকে ২০০৬ সাল পর্যন্ত এই আসনের সংসদ সদস্য ছিলেন। ২০১০ সালে তিনি বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক নির্বাচিত হন। ২০১২ সালের ১৭ এপ্রিল রাজধানী থেকে মধ্যরাতে ব্যক্তিগত গাড়িচালক আনসার আলীসহ নিখোঁজ হন তিনি। আজ অবধি তাদের কোনো সন্ধান পাওয়া যায়নি।
