অগ্রণী ব্যাংকের লকার থেকে উদ্ধার ৮৩২ ভরি সোনা হাসিনার একার নয়: দুদক
অগ্রণী ব্যাংকের দুটি লকার থেকে যেই ৮৩২ ভরি সোনা উদ্ধার করা হয়েছে, তা ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার একার নয় বলে জানিয়েছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। এসব সোনার মধ্যে সোনার নৌকা ও হরিণ রয়েছে।
আজ বুধবার দুদকের প্রধান কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানান সংস্থাটির মহাপরিচালক মো. আক্তার হোসেন।
সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, অগ্রণী ব্যাংকের প্রিন্সিপাল শাখায় শেখ হাসিনা ও সায়মা ওয়াজেদের নামে থাকা একটি লকারে ৪২২ ভরির কিছু বেশি সোনা পাওয়া যায়। শেখ হাসিনা ও শেখ রেহানার নামে থাকা একটি লকারে পাওয়া গেছে ৪১০ ভরি সোনা। এসব সোনার মধ্যে সোনার নৌকা ও হরিণ রয়েছে।
এছাড়াও পূবালী ব্যাংকেও শেখ হাসিনার নামে একটি লকার থাকার কথা জানিয়েছে দুদক। তবে সেখানে পাওয়া গেছে একটি ছোট চটের ব্যাগ।
দুদক বলছে, লকারের রক্ষিত চিরকুট ও বর্ণনা অনুযায়ী স্বর্ণালঙ্কারগুলো শেখ হাসিনা, সায়মা ওয়াজেদ, শেখ হাসিনার ছেলে সজীব ওয়াজেদ জয় এবং শেখ রেহানা ও তার ছেলে রাদওয়ান মুজিব সিদ্দিক ববির বলে ধারণা করা যাচ্ছে। সংস্থাটি সোনার মালিকানা সুনির্দিষ্ট করে আইনগত দায় নিরূপণ করবে বলে জানিয়েছে।
দাখিলকৃত সম্পদ বিবরণী পুনঃযাচাইয়ের অংশ হিসেবে হাসিনার নামে থাকা দুটি ব্যাংকের তিনটি লকার খুলে ৯ কেজি ৭০৭ গ্রাম (৮৩২ ভরি) স্বর্ণ উদ্ধার করে দুদক।
দুদক জানায়, দুদকের উপপরিচালক (বিশেষ অনু. ও তদন্ত-১) মো. মাসুদুর রহমানের নেতৃত্বে গঠিত অনুসন্ধান দল ২০২৫ সালের ১৪ সেপ্টেম্বর মহানগর সিনিয়র স্পেশাল জজ আদালতে লকার খোলার অনুমতির আবেদন করেন।
আদালত একজন জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট, বাংলাদেশ ব্যাংকের বুলিয়ন শাখার একজন স্বর্ণ বিশেষজ্ঞ, এনবিআরের একজন কর গোয়েন্দা ও কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থা (সিআইসি) মনোনীত দুই কর্মকর্তাসহ সংশ্লিষ্ট ব্যাংক কর্মকর্তাদের উপস্থিতিতে লকার খোলার নির্দেশ প্রদান করেন।
পরবর্তীতে আদালতের নির্দেশনা অনুযায়ী গতকাল মঙ্গলবার (২৫ নভেম্বর) পূবালী ব্যাংক পিএলসির মতিঝিল করপোরেট শাখা ও অগ্রণী ব্যাংক পিএলসির প্রিন্সিপাল শাখায় থাকা মোট তিনটি লকার খোলা হয়। এর মধ্যে পূবালী ব্যাংকের লকার নম্বর ১২৮—গ্রাহক শেখ হাসিনার নামে থেকে একটি খালি ছোট পাটের ব্যাগ পাওয়া যায়।
একই ব্যাংকের গ্রাহক শেখ হাসিনা ও শেখ রেহানা সিদ্দিকীর নামে থাকা লকার (নম্বর ৭৫৩/বড়/২০০) থেকে পাওয়া যায় ৪ হাজার ৭৮৩ দশমিক ৫৬ গ্রাম স্বর্ণালঙ্কার।
দুদক বলেছে, ইনভেন্টরি তালিকা পর্যালোচনা, মালিকানা সুনির্দিষ্টকরণ ও স্বর্ণকারের মাধ্যমে স্বর্ণের মূল্য নির্ধারণ শেষে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের মালিকানা ও আইনগত দায়-দায়িত্ব নিরূপণ করা হবে।
