নরসিংদীতে ভূমিকম্পে নিহত ৪, শতাধিক আহত
নরসিংদী জেলার সদর ও পলাশ উপজেলার মধ্যবর্তী অঞ্চলে আঘাত হানা ৫ দশমিক ৭ মাত্রার ভূমিকম্পে হওয়া ক্ষয়ক্ষতির সর্বশেষ তথ্য প্রধান উপদেষ্টার ফেসবুক পেজ থেকে জানানো হয়েছে। সন্ধ্যা ৬টা ১৫ মিনিট পর্যন্ত পাওয়া তথ্যে জানানো হয়েছে—
প্রাথমিক তথ্যমতে, ভূমিকম্পে আতঙ্কিত হয়ে হুড়োহুড়ি করে উঁচু ভবন থেকে নামতে গিয়ে জেলার বিভিন্ন স্থানে শতাধিক মানুষ আহত হয়েছেন এবং এখন পর্যন্ত চারজন নিহত হয়েছেন।
১। সদর উপজেলার চিনিশপুর ইউনিয়নের গাবতলিতে নির্মাণাধীন ভবনের মালামাল নিচে পড়ে চারজন আহত হন। এর মধ্যে মারাত্মকভাবে মাথায় আঘাতপ্রাপ্ত দুইজনকে চিকিৎসার জন্য ঢাকা মেডিকেল কলেজে (ঢামেক) হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। এদের মধ্যে কর্তব্যরত চিকিৎসক শিশু হাফেজ ওমরকে (৮) মৃত ঘোষণা করেন এবং তার বাবা দেলোয়ার হোসেন উজ্জ্বলের অবস্থা আশঙ্কাজনক বলে জানান।
২। নরসিংদীর পলাশ উপজেলার চরসিন্দুর ইউনিয়নের মালিতা পশ্চিমপাড়া গ্রামের কাজেম আলী ভূঁইয়া (৭৫) নামের এক বৃদ্ধ মাটির ঘরের নিচে চাপা পড়েন এবং পরবর্তীতে তাকে জেলা হাসপাতালে নেওয়ার পথে মারা যান।
৩৷ পলাশ উপজেলার ডাংগা ইউনিয়নের ইসলামপাড়া নয়াপাড়া গ্রামের বাসিন্দা নাসিরউদ্দিন (৬০) ভূমিকম্পের সময় ফসলী জমি থেকে আতঙ্কিত হয়ে দৌড়ে আসার পথে রাস্তা থেকে নিচে লাফ দিয়ে পড়ে মারা যান (স্থানীয় বাসিন্দাদের ভাষ্যমতে)। তাৎক্ষণিক ঘটনাস্থলে মৃত্যুবরণ করায় নিকটাত্মীয়রা তার লাশ হাসাপাতালে নেননি।
৪৷ শিবপুর উপজেলার জয়নগর ইউনিয়নের গআজকিতলা (পূর্বপাড়া) গ্রামের ফোরকান (আনুমানিক ৪০) কম্পনের ফলে গাছ থেকে পড়ে যান এবং তাৎক্ষণিক নরসিংদী জেলা হসপিটালে নিলে চিকিৎসক তাকে ঢামেকে রেফার্ড করেন। ঢাকায় নেওয়ার পথে রাস্তায় মারা যান তিনি।
ক্ষয়ক্ষতি:
১) ঘোড়াশাল তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্রের সাবস্টেশনে অগ্নিকাণ্ডের সূচনা হলে ফায়ার সার্ভিসের সদস্যরা ঘটনাস্থলে গিয়ে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে এবং সেটি বন্ধ করে দেওয়া হয়। এছাড়াও ওই সাবস্টেশনের বিপুল পরিমাণ পিটি (প্রডাকশন ট্রান্সফরমার) ভূ-কম্পের ফলে ভেঙে পড়ে।
২) ঘোড়াশাল পলাশ ফার্টিলাইজার কারখানার ইউরিয়া প্রডাকশন ভূমিকম্পের কারণে সাময়িক সময়ের জন্য বন্ধ হয়ে গেছে। ভূ-কম্পনের সময় ইঞ্জিন মেশিনারিজ ভাইব্রেশনের মাধ্যমে বন্ধ হয়ে যায় এবং মেশিনারিজ চেকিং অপারেশনে আছে।
৩) জেলা প্রশাসকের কার্যালয় ও সার্কিট হাউসহ শতাধিক ভবনে ফাটল দেখা দিয়েছে। ভূমিকম্প সৃষ্ট ক্ষয়ক্ষতি ও দূর্যোগ সংশ্লিষ্ট তথ্যের জন্য জেলা প্রশাসন থেকে কন্ট্রোল রুম খুলে সার্বিক পরিস্থিতি নিয়ে খোজ খবর রাখা হচ্ছে।
