অবৈধ ও ক্লোন মোবাইল ফোন বন্ধে কোনো ছাড় নয়; কমতে পারে আমদানি শুল্ক: ফয়েজ আহমদ
অবৈধভাবে আমদানি করা, চোরাচালানকৃত এবং ক্লোন করা মোবাইল ফোন বন্ধ করার বিষয়ে কঠোর অবস্থানের কথা জানিয়েছে সরকার। এ ক্ষেত্রে কোনো ছাড় দেওয়া হবে না বলে সাফ জানিয়ে দিয়েছেন ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বপ্রাপ্ত প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী ফয়েজ আহমদ তৈয়্যব।
বুধবার (১৯ নভেম্বর) তার দপ্তর থেকে পাঠানো এক বিবৃতিতে এমনটা জানানো হয়।
বিবৃতিতে ফয়েজ আহমদ বলেন, 'আমরা ক্লোন করা, অবৈধভাবে আমদানিকৃত ও চোরাচালানকৃত ফোন বন্ধ করবো ইনশাআল্লাহ। এখানে কোনো ছাড় দেওয়া হবে না।'
'ভারত বা অন্যদেশে এভাবে গণহারে বিদেশি ফোন ঢুকে না। অবৈধভাবে আমদানি করে বা চোরাই ফোন এনে উচ্চ-মূল্যের ফোনের দাম কমাতে হবে, এটা মানতে রেগুলেটর [নিয়ন্ত্রক] হিসেবে বিটিআরসি বাধ্য নয়', যোগ করেন তিনি।
তিনি জানান, আমদানি শুল্ক কমাতে বিটিআরসির পক্ষ থেকে এনবিআরকে চিঠি পাঠানো হয়েছে এবং শিগগিরই এ নিয়ে এনবিআর চেয়ারম্যানের সঙ্গে বৈঠক হবে। পাশাপাশি দেশীয় উৎপাদকদের মূল্য কমানোর জন্যও বিটিআরসির পক্ষ থেকে অনুরোধ জানানো হয়েছে। গ্রাহকের স্বার্থে বৈধ মোবাইল ফোনের দাম কমাতে প্রয়োজনীয় সব ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
তিনি বলেন, একটি অবৈধ ফোনের সঙ্গে সমাজ, অর্থনীতি ও রাষ্ট্রের বহু স্তরের নিরাপত্তা জড়িত। এর সঙ্গে সংশ্লিষ্ট অপরাধগুলোর মধ্যে রয়েছে—সিমের ভুল রেজিস্ট্রেশন, মোবাইল ফাইন্যান্সিং সংক্রান্ত অপরাধ, অনলাইন জুয়া ও স্ক্যামিং, আয়কর ও শুল্ক ফাঁকি, এবং স্থানীয় হ্যান্ডসেট উৎপাদন শিল্পকে বাধাগ্রস্ত করা।
'এসব অপরাধ দমনের জন্য দেশের আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী, বিডা, মোবাইল ব্যাংকিং কোম্পানি, ব্যাংকিং খাত, বিএফআইইউ এবং এনবিআর-এর পক্ষ থেকে ক্রমাগত অনুরোধ জানানো হয়েছে। টেলিযোগাযোগ খাতে শৃঙ্খলা ও নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে এই পদক্ষেপ অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ', আরও বলেন তিনি।
বিশেষ সহকারী বলেন, 'ট্যাক্স ফাঁকি দিয়ে এক বছর আগেই কোটি খানেক ফোন এনে দেশকে অবৈধভাবে ডাম্পিং করার সুযোগ আর কাউকে দেওয়া হবে না। কোনো ব্যবসায়ীর বৈধ ব্যবসা নষ্ট করা হচ্ছে না—দোকানিরা দেশীয় উৎপাদকদের এবং বৈধ আমদানিকৃত ফোনই বিক্রি করবেন, সৎ পথে ব্যবসা চালাবেন।'
তিনি জানান, বর্তমানে একটি আইএমইআই নম্বরের বিপরীতে লাখ লাখ ক্লোন ফোন তৈরি করে দেশে আনা হচ্ছে, যা 'ন্যাশনাল ইকুইপমেন্ট আইডেন্টিটি রেজিস্টার' (এনইআইআর) ব্যবস্থা চালু হলে আর সম্ভব হবে না। এ কারণেই একটি 'মাফিয়া চক্র' এনইআইআর চালুর বিরোধিতা করছে বলে তিনি উল্লেখ করেন।
সাধারণ ব্যবহারকারী ও প্রবাসীদের জন্য নির্দেশনাও স্পষ্ট করা হয়েছে। জানানো হয়েছে, আগামী ১৬ ডিসেম্বরের আগে সক্রিয় হওয়া সব ফোন বৈধ হিসেবে স্বয়ংক্রিয়ভাবে নিবন্ধিত হয়ে যাবে। প্রবাসীরা নিয়ম অনুযায়ী শুল্ক ছাড়া এক বা দুটি ফোন আনতে পারবেন এবং সহজ পদ্ধতিতে নিবন্ধন করতে পারবেন।
নিজের নামে নিবন্ধিত সিম, ক্লোন করা হয়নি এমন ফোনে ব্যবহার করলে কোনো ঝামেলায় পড়তে হবে না বলে তিনি জানান। এছাড়া, সাধারণ নাগরিকদের জন্য নিবন্ধন, ডি-রেজিস্ট্রেশন এবং রি-রেজিস্ট্রেশন প্রক্রিয়া আরও সহজ করার জন্য যৌক্তিক পরামর্শগুলো গুরুত্বের সঙ্গে বিবেচনা করা হচ্ছে বলেও তিনি উল্লেখ করেন।
