প্রসিকিউশন ভবনের সামনে ককটেল সদৃশ বোমা নিক্ষেপ, পুলিশ বলছে চকলেট বোমা
ঢাকার নিম্ন আদালতের পাবলিক প্রসিকিউটর ভবনের সামনে ককটেল সদৃশ বোমা নিক্ষেপের ঘটনা ঘটেছে। তবে এই ঘটনায় কোনো হতাহতের খবর পাওয়া যায়নি। মঙ্গলবার (১৮ নভেম্বর) বিকেল ৪ টা ১৫ মিনিটের দিকে এই ঘটনায় ঘটে।
ঢাকা মহানগর দায়রা জজ আদালতের পাবলিক প্রসিকিউটর ওমর ফারুক ফারুকী এ তথ্য নিশ্চিত করেন।
তিনি বলেন, 'এই বিল্ডিংয়ে অনেক পাবলিক প্রসিকিউটর বসেন। বিল্ডিংয়ের ওপরে আদালতও রয়েছে। আমরা আমাদের অফিসে বসে কাজ করছিলাম। এমন সময় আমরা একটি ককটেল বিস্ফোরণের বিকট শব্দ শুনতে পাই। রুম থেকে বের হয়ে দেখি ড্রেনের সামনে কাঁদা ছিটকে রয়েছে। ড্রেনের সব কাদা আদালতের দেয়ালে লেগে রয়েছে।'
তিনি আরও বলেন, 'এটা একটি আদালত প্রাঙ্গণে সতর্ক বার্তা। আদালতে আতঙ্ক সৃষ্টি করার জন্য এই কাজটি করা হতে পারে। বিষয়টি প্রশাসন কর্মকর্তাদের গুরুত্বের সঙ্গে দেখা উচিত।'
এই পাবলিক প্রসিকিউটর বলেন, 'শেখ হাসিনার মৃত্যুদণ্ডের রায় ঘোষণার পর সারাদেশেই এমন ঘটনা ঘটেছে। এই ঘটনাটি এর ধারাবাহিকতার একটা অংশ হতে পারে।'
তিনি বলেন, 'পাবলিক প্রসিকিউশনের সামনে এমন ঘটনা আমাদের ভয়ভীতি দেখানোর জন্য করা হয়েছে। তারা বিভিন্নভাবে আতঙ্ক সৃষ্টি করার চেষ্টা করে যাচ্ছে।'
ঢাকা আইনজীবী সমিতির সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ নজরুল ইসলাম বলেন, 'এটি একটি নিন্দিত ঘটনা। আমার ধারণা গতকাল শেখ হাসিনার রায়কে কেন্দ্র করে সারাদেশে নিরবিচ্ছিন্ন ঘটনার এটা একটি অংশ হতে পারে। এই ঘটনাকে আইনজীবী সমাজ থেকে নিন্দা জানাচ্ছে, প্রতিবাদ জানাচ্ছে।'
আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর প্রতি অনুরোধ জানিয়ে তিনি বলেন, 'বিষয়টি গুরুত্বের সঙ্গে দেখে জড়িতদের দ্রুত সময়ের মধ্যে আইনের আওতায় আনতে হবে। যাতে ভবিষ্যতে এই ধরনের কাজ করার সাহস না পায়।'
প্রত্যক্ষদর্শী দুদকের পাবলিক প্রসিকিউট জহিরুল ইসলাম বলেন, 'বিকালের দিকে কোর্টের কাজ শেষ করে এই অফিসে এসে বসি। এরপর এখানে বসে একটি মামলার নথি দেখছিলাম। এমতাবস্থায় একটি বিকট শব্দ শুনতে পাই। বের হয়ে দেখি ককটেলের মত কিছু একটা ফুটে আছে। পরবর্তীতে পিপি এবং কোতোয়ালি থানার ওসিকে বিষয়টি অবগত করি। এরপর তারা এসে বিষয়ে পর্যবেক্ষণ করেছেন।'
তিনি আরও বলেন, 'আমি এই ঘটনাকে অন্তত উদ্বেগজনক বলে মনে করছি। আগামী মাসের দিকে শেখ হাসানির দুর্নীতির বেশ কয়েকটি মামলার রায় ঘোষণা করা হতে পারে। এর আগে এমন ঘটনা ঘটল! আমি মনে করি এটা একটি হুমকি। আমাদের এই মামলার বিচার থেকে বিরত রাখার জন্য এমন অপচেষ্টা হতে পারে।'
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, রেবতী ম্যানশন ভবনের পাশে নির্মাণাধীন আরেকটি ভবনের ৫ বা ৬ তলা থেকে ককটেল সদৃশ বোমা কেউ নিক্ষেপ করতে পারে।
এদিকে রাজধানীর কোতোয়ালি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. মনিরুজ্জামান বলেন, 'ঘটনাস্থল আমরা পরিদর্শক করেছি। ককটেল বিস্ফোরণের কোনো আলামত আমরা পাইনি। এটা ছোট ছোট পটকা বোম বা চকলেট জাতীয় কিছু হতে পারে।'
