জুলাই সনদ বাস্তবায়ন আদেশে সই করেছেন রাষ্ট্রপতি
রাষ্ট্রপতি মোহাম্মদ সাহাবুদ্দিন আজ (১৩ নভেম্বর) 'জুলাই জাতীয় সনদ (সংবিধান সংস্কার) বাস্তবায়ন আদেশ ২০২৫'-এ সই করেছেন।
এর ফলে ত্রয়োদশ জাতীয় নির্বাচন এবং জুলাই সনদের প্রস্তাবের ওপর গণভোট একই দিনে অনুষ্ঠিত হওয়ার পথ সুগম হলো।
জুলাই জাতীয় সনদ বাস্তবায়ন আদেশ অনুসারে, আসন্ন জাতীয় নির্বাচনের দিন একই সময়ে গণভোট অনুষ্ঠিত হবে।
চারটি বিষয়ে অনুষ্ঠিত হবে গণভোট। গণভোটের দিন এই চার বিষয়ের ওপর একটিমাত্র প্রশ্নে 'হ্যাঁ' বা 'না' ভোট দিয়ে জনগণ মতামত জানাবেন।
গণভোটের ব্যালটে উপস্থাপিত প্রশ্ন:
(১) গণভোটে নিম্নলিখিত প্রশ্ন উপস্থাপন করা হবে:
'আপনি কি জুলাই জাতীয় সনদ (সংবিধান সংস্কার) বাস্তবায়ন আদেশ, ২০২৫ এবং জুলাই জাতীয় সনদে লিপিবদ্ধ সংবিধান সংস্কার সম্পর্কিত নিম্নলিখিত প্রস্তাবগুলোর প্রতি আপনার সম্মতি জ্ঞাপন করছেন?'
ক) নির্বাচনকালীন সময়ে তত্ত্বাবধায়ক সরকার, নির্বাচন কমিশন এবং অন্যান্য সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠান জুলাই সনদে বর্ণিত প্রক্রিয়ার আলোকে গঠন করা হবে।
খ) আগামী সংসদ হবে দুই কক্ষ বিশিষ্ট। জাতীয় সংসদ নির্বাচনে দলগুলোর প্রাপ্ত ভোটের অনুপাতে ১০০ জন সদস্য বিশিষ্ট একটি উচ্চকক্ষ গঠিত হবে এবং সংবিধান সংশোধন করতে হলে উচ্চকক্ষের সংখ্যাগরিষ্ঠ সদস্যের অনুমোদন দরকার হবে।
গ) সংসদে নারীর প্রতিনিধি বৃদ্ধি, বিরোধী দল থেকে ডেপুটি স্পিকার ও সংসদীয় কমিটির সভাপতি নির্বাচন, প্রধানমন্ত্রীর মেয়াদ সীমিতকরণ, রাষ্ট্রপতির ক্ষমতা বৃদ্ধি, মৌলিক অধিকার সম্প্রসারণ, বিচার বিভাগের স্বাধীনতা ও স্থানীয় সরকার-সহ বিভিন্ন বিষয়ে যে ৩০টি প্রস্তাবে জুলাই জাতীয় সনদে রাজনৈতিক দলগুলোর ঐক্যমত হয়েছে সেগুলো বাস্তবায়নে আগামী নির্বাচনে বিজয়ী দলগুলো বাধ্য থাকবে।
ঘ) জুলাই সনদে বর্ণিত অন্যান্য সংস্কার রাজনৈতিক দলগুলোর প্রতিশ্রুতি অনুসারে বাস্তবায়ন করা হবে।
বাস্তবায়ন আদেশে বলা হয়েছে, গণভোট ব্যালটের মাধ্যমে অনুষ্ঠিত হবে এবং প্রতিটি ভোটার নির্বাচন কমিশন নির্ধারিত ব্যালট পত্রে গোপনে তাদের ভোট প্রদান করবেন।
এর আগে আজ জাতির উদ্দেশে দেওয়া ভাষণে প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস বলেন, 'আমরা সিদ্ধান্ত নিয়েছি, আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনের দিনই গণভোট অনুষ্ঠিত হবে। অর্থাৎ, জাতীয় নির্বাচনের মতোই গণভোটও ফেব্রুয়ারির প্রথমার্ধে একই দিনে হবে।'
জুলাই জাতীয় সনদ বাস্তবায়ন, সনদের প্রস্তাবগুলো নিয়ে গণভোট এবং আসন্ন জাতীয় নির্বাচন ইস্যু নিয়ে এদিন দুপুর ২টা ৩০ মিনিটে জাতির উদ্দেশে ভাষণ দেন প্রধান উপদেষ্টা।
ভাষণটি বাংলাদেশ টেলিভিশন (বিটিভি), বিটিভি নিউজ এবং বাংলাদেশ বেতারে একযোগে সম্প্রচারিত হয়েছে।
তার আগে, আজ সকালে জুলাই সনদ বাস্তবায়ন, গণভোট, নির্বাচন এবং অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ বিষয় চূড়ান্ত করার পদ্ধতি নির্ধারণে উপদেষ্টা পরিষদের বৈঠকের পর প্রধান উপদেষ্টা জাতির উদ্দেশে ভাষণ দেন। তিনি ওই বৈঠকে সভাপতিত্ব করেন।
