সাবেক আইজিপি বেনজীরের বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র দাখিলের অনুমোদন
পুলিশের সাবেক মহাপরিদর্শক (আইজিপি) বেনজীর আহমেদের বিরুদ্ধে সম্পদ অনুসন্ধান শেষে অভিযোগপত্র দাখিলের অনুমোদন দিয়েছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।
সংস্থাটির পরিচালিত অনুসন্ধানে তার বিরুদ্ধে বিপুল পরিমাণ জ্ঞাত আয়ের বাইরে সম্পদ অর্জন ও সম্পদ বিবরণীতে তথ্য গোপনের প্রমাণ পাওয়া গেছে।
দুদকের সহকারী পরিচালক (জনসংযোগ) তানজির আহমেদ সোমবার (১০ নভেম্বর) দ্য বিজনেস স্ট্যান্ডার্ডকে (টিবিএস) বিষয়টি নিশ্চিত করেন।
তদন্ত প্রতিবেদনে দেখা যায়, দুদকের নোটিশে দাখিল করা বেনজীর আহমেদের সম্পদ বিবরণীতে তিনি ৬ কোটি ৪৫ লাখ ৩৭ হাজার ৩৬৫ টাকা মূল্যের স্থাবর সম্পদ এবং ৫ কোটি ৭৪ লাখ ৮৯ হাজার ৯৬৬ টাকা মূল্যের অস্থাবর সম্পদ অর্জনের তথ্য দেন।
কিন্তু তদন্তে তার নামে ৭ কোটি ৫২ লাখ ৬৮ হাজার ৯৮৭ টাকার স্থাবর এবং ৮ কোটি ১৫ লাখ ৩১ হাজার ২৬৪ টাকার অস্থাবর সম্পদের প্রমাণ মেলে।
ফলে তিনি স্থাবর সম্পদের ক্ষেত্রে ১ কোটি ৮৫ লাখ ৩১ হাজার ৬২২ টাকা এবং অস্থাবর সম্পদের ক্ষেত্রে ২ কোটি ৪০ লাখ ৪১ হাজার ২৯৮ টাকার সম্পদ গোপন করেছেন বলে দুদক জানায়।
এছাড়া তদন্তে বেনজীর আহমেদের নাবালিকা কন্যা মিজ যাহরা যারীন বিনতে বেনজীরের নামে অর্জিত কোনো স্থাবর সম্পদও তিনি বিবরণীতে উল্লেখ করেননি।
দুদকের ভাষ্য, এসব কর্মকাণ্ড দুর্নীতি দমন কমিশন আইন, ২০০৪–এর ২৬(২) ধারায় শাস্তিযোগ্য অপরাধ। তদন্ত অনুযায়ী, স্থাবর ও অস্থাবর মিলিয়ে বেনজীর আহমেদ মোট ১৫ কোটি ৬৮ লাখ ২ হাজার ২৫১ টাকার সম্পদের মালিক হন।
ওই সময়কালে তার বৈধ উৎস থেকে আয় ছিল ৬ কোটি ৫৯ লাখ ৪২ হাজার ৬৬৮ টাকা এবং ব্যয় ছিল ১ কোটি ৯৫ লাখ ৮৫ হাজার ৯৯৩ টাকা। ব্যয় বাদে তার নীট সঞ্চয় দাঁড়ায় ৪ কোটি ৬৩ লাখ ৫৬ হাজার ৬৭৫ টাকা।
ফলে তার নামে জ্ঞাত আয় বহির্ভূত সম্পদ পাওয়া যায় ১১ কোটি ৪ লাখ ৪৩ হাজার ৫৭৬ টাকা।
দুদকের অভিযোগ, এই বিপুল অজানা উৎসের অর্থ বিভিন্ন ব্যাংক হিসাব, ব্যবসা প্রতিষ্ঠান ও যৌথ মূলধনী প্রতিষ্ঠানে বিনিয়োগ দেখিয়ে হস্তান্তর ও রূপান্তর করা হয়েছে, যা মানিলন্ডারিং প্রতিরোধ আইন, ২০১২–এর ৪(২) ও ৪(৩) ধারার আওতাভুক্ত অপরাধ।
এছাড়া ১৯৪৭ সালের দুর্নীতি প্রতিরোধ আইন ৫(২) ধারায়ও অপরাধ সংঘটনের যথেষ্ট প্রমাণ পেয়েছে দুদক।
তদন্তের অংশ হিসেবে যুক্তরাষ্ট্র, কানাডা ও যুক্তরাজ্যে বেনজীর আহমেদের নামে থাকা সম্ভাব্য সম্পদের বিষয়ে মিউচুয়াল লিগ্যাল অ্যাসিস্ট্যান্স রিকোয়েস্ট (এমএলআর) পাঠানো হয়েছে। সেসব তথ্য পাওয়া গেলে পরবর্তী আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে জানায় দুদক।
